দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২৮ অক্টোবরের সহিংসতার ঘটনায় বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের অধিকাংশ নেতা এখন কারামুক্ত।
শীর্ষ নেতারা কারামুক্ত হওয়ায় বিএনপির অভ্যন্তরে এবং রাজনৈতিক মহলে সর্বত্র আলোচনা, বিএনপি এখন কী করবে।
বর্তমান সংসদ ভেঙে তারা আবারও নতুন নির্বাচনের দাবি তুলবে নাকি পরবর্তী নির্বাচনের জন্য পাঁচ বছর অপেক্ষা করবে।
বিএনপির দায়িত্বশীলরা বলছেন, কারামুক্ত নেতারা চাইছেন দাবি আদায়ে ঈদের পর কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করতে। আর মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বলছেন টানা তিন মেয়াদে দাবি আদায়ে ব্যর্থতা ও মামলা-হামলায় তারা ক্লান্ত। এ অবস্থায় দোটানায় পড়েছে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, যেসব দাবিতে বিএনপি নির্বাচনের আগে আন্দোলনে নেমেছিল সে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আন্দোলন চলমান। জোর করে পুলিশ প্রশাসন দিয়ে জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া আওয়ামী লীগ নির্বাচন করেছে। আওয়ামী লীগের পায়ের নিচে মাটি নেই। আমরা ঈদের পর নতুন উদ্যমে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামব। বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে কোনো ক্লান্তি বা হতাশা নেই। অতীত আন্দোলনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নতুন উদ্যমে মাঠে নামবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
জানা যায়, বিএনপির আগে যে একদফা দাবি ছিল সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং বেগম জিয়ার মুক্তি। সেই দাবির সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিলের বিষয়টি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ কারামুক্ত সব নেতা ঈদের পর কঠোর আন্দোলনের কথা বলছেন।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবির আন্দোলন থেকে পিছু হটবে না বিএনপি। গত ১৫ বছরে তিন দফায় আন্দোলনে ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়বে না। নতুন করে সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। বিএনপি নেতৃবৃন্দ মনে করছেন সরকার নৈতিকভাবে দুর্বল অবস্থানে রয়েছে। সামনে অর্থনৈতিক সংকট আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দেশি-বিদেশি সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে রাজপথে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তুলতে চায় বিরোধী দলটি। এ লক্ষ্যে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগের আন্দোলনের ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর পথে হাঁটতে চায় তারা।
স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, সম্প্রতি দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নানা বিষয় বিবেচনা করে কারামুক্ত নেতারা কঠোর কর্মসূচির কথা বললেও কয়েকজন নেতা আপাতত কঠোর কর্মসূটি নিয়ে দোটানায় রয়েছেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, নেতৃবৃন্দ কারামুক্ত হলেও অনেকে এখনো অসুস্থ। তাছাড়া বিএনপি আন্দোলনের মধ্যেই আছে। পবিত্র রমজান মাসেও ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে দলীয় কার্যক্রম চলছে। রজমানের পর দল ও যুগপৎ আন্দোলনের সমমনাদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
বিএনপি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২৮ অক্টোবর সহিংসতা কারামুক্ত
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জয়পুরহাটের
আক্কেলপুরে তীব্র দাবদাহে হিট স্ট্রোকে বাবলু খন্দকার (৪৫) নামে এক ভ্যানচালকের মৃত্যু
হয়েছে। আজ সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকালে উপজেলার গোপীনাথপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত
ভ্যান চালক জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার বড়াইল সরকারপাড়া গ্রামের শুকুর মাহমুদ খন্দকারের
ছেলে বলে জানা গেছে।
পুলিশ
ও স্থানীয়রা জানান, বিক্রির জন্য বাবলু খন্দকার ভ্যান যোগে কয়েক বস্তা আলু নিয়ে গোপীনাথপুর
হাটে যান। সেখানে আলুর বস্তা নামিয়ে রেখে চা খেতে দোকানে বসেন তিনি। এসময় হঠাৎ করে
বুকে ব্যাথা উঠলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্তে কর্মকর্তা নয়ন হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মন্তব্য করুন
নওগাঁ সদর উপজেলায় কৃষি কাজে ব্যবহৃত একটি গভীর নলকূপ বন্ধ রাখা হয়েছে। পানির অভাবে এই সেচযন্ত্রের আশ পাশের প্রায় ১০০ বিঘা জমি অনাবাদি পড়ে আছে। সেচ সংকটের কারণে কিছু কৃষক ধানের আবাদ না করে জমিতে তিলের চাষ করেছেন। অনাবৃষ্টির কারণে তিলের গাছও মরে যেতে বসেছে।
সেচ নিয়ে কৃষকদের এমন দুরাবস্থা নওগাঁ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপাড়া, মাদ্রাসা পাড়া, সরদার পাড়া, শেখপুরা ও মন্ডলপাড়া এলাকায়।
কৃষকদের দাবি, পৌরসভার হাজীপাড়া মহল্লা সংলগ্ন মাঠে একটি গভীর নলকূপ রয়েছে। গভীর নলকূপটি মকবুল হোসেন ওরফে গ্যাদো নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করে থাকেন। ওই এলাকায় প্রায় ২০০ বিঘা জমি রয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমের শুরুতে নলকূপটির মালিক মকবুল হোসেন কৃষকদের কাছ থেকে বোরো ধান আবাদের জন্য প্রতি বিঘা জমিতে সেচের জন্য ২ হাজার টাকা করে দাবি করেন। আশপাশের অন্যান্য নলকূপের সেচ খরচের তুলনায় বেশি টাকা দাবি করায় কৃষকেরা ওই পরিমান টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। চাহিদা অনুযায়ী সেচ খরচ দিতে রাজি না হওয়ায় সেচযন্ত্রটি বন্ধ রেখেছেন গভীর নলকূপের মালিক মকবুল হোসেন। এ নিয়ে জেলা প্রশাসন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেও কৃষকেরা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
গত ১৯ মার্চ ৬০ জন কৃষক স্বাক্ষরিত ওই লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ পৌরসভার হাজীপাড়া, সরদারপাড়া ও মাদ্রাসাপাড়া মহল্লার মধ্যবর্তী মাঠে প্রায় ৩০০ বিঘা ফসলি জমি আছে। এসব জমিতে প্রতি মৌসুমে কয়েক হাজার মণ ধান হয়। বোরো মৌসুমে ওই এলাকার কৃষকদের কথা মাথায় রেখে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ওই মাঠে দুটি গভীর নলকূপ স্থাপন করে দিয়েছে। ওই দুটি সেচ যন্ত্রের মধ্যে মকবুল হোসেন পরিচালিত গভীর নলকূপের অধীনে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ হয়ে থাকে। বিগত তিন বছর ধরে মকবুল হোসেনের ছেলে সবুজ কৃষকদের জিম্মি করে সেচ বাবদ বেশি টাকা আদায় করছে।
পার্শ্ববর্তী বোয়ালিয়া, শেখপুরা এলাকায় গভীর নলকূপ থেকে প্রতি বিঘা জমিতে সেচ খরচ বাবদ যেখানে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে, সেখানে সবুজ তার সেচযন্ত্র থেকে সেচ খরচ দাবি করে ২ হাজার টাকা।
অধিকাংশ কৃষক এই পরিমাণ টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় মকবুল হোসেনের ছেলে সবুজ সেচ যন্ত্রটি থেকে পানি তোলা বন্ধ করে দেন। ধানের বীজ তলায় সেচ দিতে না পারায় কৃষকদের চারা নষ্ট হয়ে যায়। জমিতে ধান লাগাতে না পেরে অনেক কৃষক জমিতে তিলের চাষ করেছেন। কিন্তু দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কারণে এবং সেচ যন্ত্র বন্ধ থাকায় অধিকাংশ তিল গাছ মরে যেতে বসেছে। এই দূরাবস্থা নিরসনে জেলা ও উপজেলা সেচ কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কৃষকেরা।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) পৌরসভার হাজীপাড়া সংলগ্ন ওই ফসলি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ওই মাঠে অনেক জমি অনাবাদি পড়ে আছে। কিছু জমিতে তিলের চাষ করা হয়েছে। কিন্তু পানির অভাবে অনাবাদি জমি ও তিলের খেতের জমি শুকিয়ে আছে। পানির অভাবে শুকনো মাটিতে বপন করা তিল বীজ থেকে চারা গজায়নি। আবার কিছু কিছু জমিতে চারা গজালেও পানির অভাবে তিলের গাছগুলোর পাতা শুকিয়ে লালচে হয়ে মরতে বসেছে।
কৃষকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সেচ যন্ত্রের মালিক মকবুল হোসেন ওরফে গ্যাদো বলেন, ‘একটা মৌসুমে একটা ডিপ টিউবওয়েল চালালে তিন থেকে চার লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে। এছাড়া ট্রান্সফরমার বা সেচ যন্ত্রের অন্য কোনো অংশ নষ্ট হয়ে গেলেও বাড়তি খরচ হয়ে যায়। মেশিন চালাতে যে খরচ হবে, সেটা তুলতে না পারলে লোকসান গুনতে হবে। তাই পানি তোলা বন্ধ রেখেছি।’
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি এস এম রবিন শীষ বলেন, ‘বেশ কিছু দিন আগে এ ধরণের একটি অভিযোগ পেয়েছিলাম। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে সম্ভবত এ বিষয়ে তদন্ত করতে বলেছিলাম। কৃষকদের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে সেচ যন্ত্রটি চালু করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বাসিন্দা ইতালি প্রবাসী বাচ্চু শেখ অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে মারা যান ৩ বছর আগে। সেই মামলার রহস্যের জট খুলেছে ৩ বছর পর। আসামী আমির হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই-এর এসআই ফিরোজ আহমেদ জানান, বিগত ২০২১ সালের ৯ মার্চ ইতালি প্রবাসী বাচ্চু শেখ হানিফ এন্টারপ্রাইজের একটি বাসে করে তার গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার তপারকান্দি গ্রামে আসছিলেন। পথিমধ্যে অজ্ঞান পার্টির সদস্য আমির হোসেন ও তার দলবল কায়দা করে ভিকটিমের সাথে ভাব জমিয়ে তাকে বিস্কুটের সাথে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে খ্ইায়ে দেয় এবং তার কাছে থাকা মালামাল নিয়ে যায়। এতে সে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে বাসের হেলপার তার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে ছাগলছিড়া এলাকায় তাকে বুঝে দিয়ে বরিশালের দিকে বাস চলে যায়।
পরে
মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় বাচ্চু শেখকে প্রথমে মাদারীপুরের রাজৈর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মৃত বাচ্চু শেখের স্ত্রী মুকসুদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে গোপালগঞ্জ পিবিআই মূল অভিযুক্ত আমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে এবং সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে গোপালগঞ্জের পিবিআই-এর পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন