বৈদেশিক বাণিজ্যে বাধাবিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের
প্রতিবন্ধকতাসমূহ। প্রতিবেদনে ঘুষ, দুর্নীতি ও অসচ্ছতাকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে বাধা হিসেবে
চিহ্নিত করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য
প্রতিনিধি দপ্তর- ইউএসটিআর।
বিদেশি বিনিয়োগ বাধা নিয়ে ২০২৪ জাতীয় বাণিজ্য প্রাক্কল শীর্ষক ওই
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র ও বাছাই প্রক্রিয়ার
কথা বলে থাকে। তবে নিজের শুল্ক মূল্যায়ন নীতি সম্পর্কে এখনো বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে
(ডাব্লিউটিও) অবহিত করেনি দেশটি।
এদিকে বাংলাদেশ জাতীয় ইলেকট্রনিক প্রকিউরমেন্ট পোর্টাল চালু করলেও
যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদাররা বিভিন্ন দরপত্রে প্রত্যাশিত পণ্যের পুরোনো কারিগরি মান নিয়ে
উদ্বেগ জানিয়েছে। এ ছাড়া কারিগরি মান পছন্দের দরদাতাদের কাজ দেওয়ার উদ্দেশ্যে নির্ধারণ
করা হয় কি-না, তা নিয়ে মার্কিন অংশীদারদের সন্দেহ আছে। একই সঙ্গে স্বচ্ছতার অভাব নিয়েও
উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এতে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি কোম্পানির দাবি, ক্রয় প্রক্রিয়ায়
প্রভাব খাটাতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানির দরপত্র ঠেকাতে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া
বিদেশি প্রতিদ্বন্দ্বীরা স্থানীয় অংশীদারদের ব্যবহার করে। এমনকি দরপত্র বাছাইয়ে কারচুপির
অভিযোগও ওঠে এসেছে। ডব্লিউটিওর সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত চুক্তির অংশীদার নয় বাংলাদেশ।
ডব্লিউটিওর এ সংক্রান্ত কমিটির পর্যবেক্ষক হয়নি দেশটি।
মেধাস্বত্ব সুরক্ষায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশকিছু আইনগত উদ্যোগ
নিলেও বাংলাদেশে এর কার্যকর প্রয়োগ অনিশ্চিত। মার্কিন প্রতিবেদনে উদাহরণ হিসেবে বলা
হয়েছে, সারা বাংলাদেশেই নকল ও পাইরেটেড পণ্য সহজলভ্য। ভোগ্যপণ্য, পোশাক, ওষুধ ও সফটওয়্যার
খাতের পণ্যগুলো বাংলাদেশে নকল হচ্ছে বলে মার্কিন অংশীদাররা অভিযোগ করেছেন।
বাংলাদেশে ডিজিটাল বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন বাধার কথা উল্লেখ
করেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের
(২০১৩ সালে সংশোধিত) কথা বলা হয়েছে। যেখানে উল্লেখ করা হয় এই আইনের মাধ্যমে কীভাবে
বাংলাদেশ সরকার তথ্য বা উপাত্ত প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে যে কোনো কম্পিউটার সিস্টেম প্রবেশ
এবং তথ্য আটকানোর কাজ করতে পারে।
ডিজিটাল বাণিজ্যে বাধা হিসেবে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন
রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) মোবাইল অপারেটরদের রাজনৈতিক কারণে ২০১৯, ২০২০ এবং ২০২৩
সালে স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচনসহ রাজনৈতিক কর্মসূচির আগে বিভিন্ন সময়ে
ডেটা ট্রান্সমিশন সীমিত করার নির্দেশ দিয়েছে। বলা হয়, বিটিআরসি মোবাইল অপারেটরদের
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে ভয়েস কল ব্যতীত সেপ্টেম্বর ২০১৯ থেকে আগস্ট
২০২০ পর্যন্ত সমস্ত পরিষেবা ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছে।
২০২৩ সালের নভেম্বরে মন্ত্রিসভা থেকে নীতিগতভাবে অনুমোদন পাওয়া
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (আইসিটি
বিভাগ) ডেটা সুরক্ষা আইনের বিষয়ে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। যেখানে শিল্প এবং সুশীল
সমাজের প্রতিনিধিদের উদ্বেগের বিষয়টি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিনিয়োগ থেকে লভ্যাংশ বিদেশে নিয়ে
যাওয়ার প্রক্রিয়ায় অসচ্ছতার কথা যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা তুলে
ধরেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে রেমিট্যান্স বিদেশে পাঠাতে আইনি জটিলতার কথাও প্রতিবেদনে
বলা হয়েছে।
শ্রম ইস্যুতে উদ্বেগের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৩ সালে বাংলাদেশকে
অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) পাওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য ঘোষণা করে। এটি এখনো
বহাল রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে দুর্নীতি একটি বিস্তৃত এবং দীর্ঘস্থায়ী
সমস্যা, এবং দুর্নীতি দমন আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হয় না। সুবিধা প্রদান এবং উপহারের
অবৈধতা সত্ত্বেও বাণিজ্যিক লেনদেনে ঘুষ এবং চাঁদাবাজি ব্যবসার সাধারণ বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশের
সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ চাওয়ার কারণে মার্কিন কোম্পানিগুলো লাইসেন্স ও বিডের অনুমোদন
পেতে দীর্ঘ বিলম্বের অভিযোগ করেছে।
প্রতিবেদনে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে এমন বিষয় তুলে ধরে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের অক্টোবরে প্রণীত সরকারি চাকরি আইন বিল হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, যে কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করার আগে দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। একই সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে দুদকের ক্ষমতা সীমিত করা হয়েছে। এরপরও দুদক ক্রমবর্ধমানভাবে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করছে। তবে সেখানে বহু মামলাই অমীমাংসিত থেকে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য যুক্তরাষ্ট্র
মন্তব্য করুন
হিট স্ট্রোক তীব্র তাপদাহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ শিল্পমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
প্রায় ১৩ বছর পর লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনে তিনটিতে চেয়ারম্যান পদে নতুন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। আর দক্ষিণ হামছাদী ও তেওয়ারীগঞ্জ এ দুইটি ইউনিয়নে এ পদে পুরাতনেই আস্থা রেখেছেন ভোটাররা। তবে পাঁচটি ইউনিয়নে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরকে পেয়ে উল্লাস প্রকাশ করছে পুরো নেট দুনিয়া।