সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন
ব্যক্তিরা সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদের জীবনমান উন্নয়নে সরকার কাজ করছে।
মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে
১৭তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. দীপু মনি বলেন, অটিজম বিষয়ক সচেতনতা সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তির
মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিরাও যেন দেশের অন্যান্য নাগরিকের
মতো সমান অধিকার ও সম্মান পায়, সেই দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে হবে। তাদের যথাযথ পরিচর্যা
ও প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে তাদের সমাজে টিকে থাকার মতো সক্ষম করতে
হবে।
অটিজম বিষয়ে সচেতনতা তৈরি ও প্রাথমিক জ্ঞানের বিষয়ে তথ্য প্রযুক্তির
ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা তথ্যের অবাধ প্রবাহের যুগে বাস করছি। দেশ এখন শতভাগ
ডিজিটাল। প্রচলিত গণমাধ্যমের বাইরেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আমরা তাৎক্ষণিক দেশ-বিদেশের
খবরাখবরসহ অনেক কিছু সম্পর্কে জানতে পারি। ইন্টারনেটের ওপেন সোর্সের মাধ্যমে আমরা অটিজমসহ
স্নায়ুবিক অন্যান্য ডিজঅর্ডার সম্পর্কে জেনে সচেতন হতে পারি।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, অটিজম বিষয়ক
গবেষক ও চিকিৎসকের বাইরেও ব্যক্তিগত বা সামাজিক উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা এ বিষয়ে সচেতনতা
তৈরি করতে পারি। একটি শিশুর বিকাশের প্রথম দিকেই যদি বাবা-মা বা তার অভিভাবক যদি বুঝতে
পারে যে, তার শিশুটির স্নায়ুবিক প্রতিবন্ধিতা রয়েছে... তাহলে তার চিকিৎসা, পরিচর্যা,
জীবনধারণ ও বেড়ে ওঠা অনেক সহজ হবে। অটিজম বা স্নায়ুবিক প্রতিবন্ধিতা নিয়ে সমাজে প্রচলিত
বিভিন্ন কুসংস্কার থেকেও তারা রেহাই পাবে।
অনুষ্ঠানের শেষে অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তি ও শিশুদের পরিবেশনায়
মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল, ‘সচেতনতা-স্বীকৃতি-মূল্যায়ন:
শুধু বেঁচে থাকা থেকে সমৃদ্ধির পথে যাত্রা’।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খায়রুল আলম সেখের সভাপতিত্বে
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয়
কমিটির সভাপতি আ. ফ. ম. রুহুল হক এমপি।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি অটিজম
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।