গত ১০ মার্চ মারা গেছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। ৩ সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এই পদে কাউকেই নিয়োগ দেওয়া হয়নি। সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর এই পদটির জন্য কাকে নিয়োগ দেওয়া হবে তা নিয়ে বিভিন্নমুখী আলোচনা চলছে। তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এই পদে এখন পর্যন্ত কাউকে না দেওয়াটাকেও অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তবে ইহসানুল করিমের মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম অঘোষিত ভাবে এই দায়িত্ব পালন করছেন।
বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছেন, তাকেই হয়তো প্রেসসচিব পদে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সূত্রগুলো বলছে, যদি তাকেই প্রেস সচিব পদে নিয়োগ দেওয়া হত তাহলে এতদিনে তাকে এই দায়িত্ব অর্পণ করা হতো। প্রধানমন্ত্রী অন্য কোনো চিন্তা করছেন বলেও বিভিন্ন সূত্র ধারণা করছে। তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, যেহেতু ইহসানুল করিমের মৃত্যু ১০ মার্চ হয়েছে৷ তার মৃত্যুর পর এখন পর্যন্ত ৪০ দিন পেরিয়ে যায়নি, এই জন্য এই সময়টি বিরতি রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব হিসেবে কাকে নিয়োগ দেওয়া হবে সে বিষয়টি এই ৪০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরেই চূড়ান্ত হবে।
বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলামের প্রেস সচিব হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে সাংবাদিকদের মধ্যে থেকেও একাধিক ব্যক্তির নাম আলোচনায় উঠে এসেছে। নজরুল ইসলাম ছাড়াও আরও তিনজন ব্যক্তির নাম এখন বেশ আলোচিত হচ্ছে। যারা প্রেস সচিব হতে পারেন বলে বিভিন্ন মহলে আলোচনা এবং গুঞ্জন রয়েছে।
যাদেরকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রেস সচিব এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ। তিনি এর আগেও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিবের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী যখন দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন, তখন আবুল কালাম আজাদ প্রেস সচিব হিসেবে নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে যোগ দেন।
এছাড়াও, ডিবিসি নিউজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী মঞ্জুরুল ইসলামের নামও প্রেস সচিব হিসেবে বেশ জোরেশোরে আলোচিত হচ্ছে।
মঞ্জুরুল ইসলাম বাংলার বাণী পত্রিকায় কাজ করতেন। সেখান থেকে তিনি আজকের কাগজের প্রথম চিফ রিপোর্টার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার নেতৃত্বেই ডিবিসি টেলিভিশন চ্যানেলটি এখন জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
এছাড়াও প্রেস সচিব হিসেবে আলোচনায় নাম আছে শ্যামল দত্তের। শ্যামল দত্ত ভোরের কাগজের সম্পাদক এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক। তবে এই নামগুলোর বাইরেও বেশ কয়েকজনের নাম আলোচনা হচ্ছে এবং তারা প্রেস সচিব হতে পারেন বলে সাংবাদিক মহলে আলাপ আলোচনা আছে। এর মধ্যে ডেইলি সানের সম্পাদককে নাম এবং বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মনজুরুল হাসান বুলবুলের নাম আলোচনায় রয়েছে। তবে, এই পদটি প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তার পদ। এখানে কাকে নিয়োগ দেয়া হবে না হবে এটি একান্তই প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তিনি সব কিছু বিবেচনা করে যাকে তার এই ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে যোগ্য মনে করবেন তাকেই নিয়োগ দিবেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মঞ্জুরুল ইসলাম শ্যামল দত্ত
মন্তব্য করুন
গত ১৭ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে যে সহিংসতা এবং তাণ্ডব চলে তার প্রেক্ষিতে সরকারকে বেশ কিছু কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়েছে। বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সারাদেশে সেনা মোতায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কয়েক দিনের জন্য মোবাইলের ফোর জি সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল চার দিন। সবকিছু মিলিয়ে সরকারকে এক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে।
বেশ কিছু শক্ত অবস্থান গ্রহণ করে এই সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করতে হয়েছে। আস্তে আস্তে জনজীবনে এখন স্বস্থি ফিরে আসতে শুরু করেছে। গত সপ্তাহ থেকে যে কারফিউ ছিল তা ধাপে ধাপে কমিয়ে ফেলা হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার এবং আজ ভোর ৬ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। কারফিউ কতদিন থাকবে এবং জনজীবন কত দিনে স্বাভাবিক হয়ে ফিরে আসবে- এটি এখন মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। এই সংকটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আমাদের শিক্ষা খাত। বিশেষ করে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষার মাঝপথে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। যারা এইচএসসি পাস করেছিল তাদের কলেজে ভর্তি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকার ফলে সেশনজটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে শিক্ষাঙ্গনে একটা জটিল পরিসিস্থির তৈরি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা দ্রুত ক্লাসে ফিরে যেতে চায়।
এই সংকটে অর্থনীতিও বড় ধাক্কা খেয়েছে। এখন পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ ৭৭ হাজার কোটি টাকা বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। এই ক্ষতি কীভাবে পুষিয়ে নেওয়া হবে সেটিও এখন একটি বড় প্রশ্ন এবং এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য অর্থনীতিতে যে গতি আনা যাবে তা আনতে হবে। সেই বাস্তবতা বাংলাদেশের আছে কিনা তা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
সবকিছু মিলিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলে মনে করছেন যে ক্ষয়ক্ষতি এবং বিভীষিকা হয়েছে সেখান থেকে ঘুড়ে দাঁড়াতে হলে বাংলাদেশকে দ্রুত স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে হবে। স্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পুনরায় জীবনযাত্রা শুরু করতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে সবকিছুর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে কবে এবং কীভাবে স্বাভাবিক হবে? এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোন রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয় নি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কারফিউ প্রত্যাহার করা হবে। কিন্তু কবে এবং কিভাবে সেই সম্পর্কে তিনি কিছু বলেন নি। বিভিন্ন সূত্র থেকে বর্তমানে জানা যাচ্ছে যে সহিংসতা এবং তাণ্ডব হয়েছিল তাদের মূল হোতা এবং তাণ্ডবকারীদের অনেকে এখনও ‘গা ঢাকা’ দিয়ে আছে। সরকার গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করছে। এখনও শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের একাংশ দাবি করছে , তারা চার দফা, আট দফা ইত্যাদি না মানা হলে আবার আন্দোলন করবে। কাজেই এই পরিস্থিতি সরকারকে সামাল দিতে হবে। যারা এই নাশকতা এবং সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি যে সমস্ত ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেই সমস্ত ঘটনাগুলোর নির্মোহ এবং নিরপেক্ষ তদন্তের প্রয়োজন। এই তদন্ত নিশ্চিত করার পর পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হবে বলে অনেকে মনে করছেন। এটি করতে গেলে আরও এক থেকে দুই সপ্তাহ লাগতে পারে।
কেউ কেউ মনে করছেন আগামী মাস জুড়ে সরকার পরিস্থিতি
পর্যবেক্ষন করবেন এবং কারফিউসহ অন্যান্য বিধিনিষেধগুলো বহাল রাখবেন। কারণ আগস্ট মাস
অত্যন্ত স্পর্শকাতর মাস। তারপর হয়তো সেপ্টেম্বর নাগাত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তবে
আগস্টের প্রথম সপ্তাহ নাগাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ধাপে ধাপে খুলে দেওয়া,এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়াসহ শিক্ষার জরুরি কার্যক্রম
গুলো চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।
মন্তব্য করুন
কোটা আন্দোলন আল জাজিরা তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে ও জিজ্ঞাসাবাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তারা এখন ডিবি কার্যালয়ে আছেন।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ এবং আবু বাকের মজুমদারকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোটা আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবি
মন্তব্য করুন
গত ১৭ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে যে সহিংসতা এবং তাণ্ডব চলে তার প্রেক্ষিতে সরকারকে বেশ কিছু কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়েছে। বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সারাদেশে সেনা মোতায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কয়েক দিনের জন্য মোবাইলের ফোর জি সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল চার দিন। সবকিছু মিলিয়ে সরকারকে এক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে।