তারুণ্যের প্রাণশক্তি আর প্রবীণের বিচক্ষণতায় এগিয়ে যায় সমাজ। কিন্তু প্রবীণেরা প্রাপ্য সম্মান-শ্রদ্ধা কতটুকু পান তরুণদের কাছ থেকে? বয়জোষ্ঠদের দাবি, সমাজ যত তথাকথিত ‘আধুনিক’ হচ্ছে, ততই যেন কমছে মূল্যায়ন। ফলে স্বকীয় সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ও নৈতিকতার মেলবন্ধন তৈরি হচ্ছে না, প্রবীণ-নবীনে।
বয়জোষ্ঠ এক ব্যক্তির বলেন, সম্মান আগের থেকে অনেকটাই কমে গেছে। যেমন একজন মুরুব্বির সাথে পথে দেখা হলে তাকে সালাম দিবে তা কিন্তু দিচ্ছে না। এছাড়া কোনো পরিচিত ব্যক্তিকে দেখলে মোবাইলফোন হাতে নিয়ে সেটার দিকে তাকিয়ে থেকে তাকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়।
এদিকে হুবহু একইরকম না হলেও কাছাকাছি ধরণের অভিজ্ঞতা ও মনোভাবের বয়ান মিললো অন্য প্রবীণ কিংবা মুরুব্বিদের কাছ থেকেও। তারা বলেন, অনেকেই বলে যে তোমরা কি বুঝেঅ তোমার মুরুব্বি হয়ে গেছো। তোমরা কি বেশি বুঝ নাকি। আগের যেই ছিল সেই যুগ এখন আর নাই। এখনকার মডেলে তোমাদের চলতে হবে। এই ধরণের কথা বলে।
জনপদ গ্রামীণ হোক কিংবা শহরের অনেক তরুণ প্রজন্মের কাজ-কারবার নিয়ে অনেক প্রবীণেরই দেখা যায়, এমন তেতো দৃষ্টিভঙ্গি। আর মুদ্রার ওপাশটায় যারা- সেই কিশোররা, তরুণরা তারাও জানেন দুই প্রজন্মের এই প্রায় বিপরীতমুখী অবস্থানের কথা।
এ বিষয়ে এক তরুণ বলেন, ছোট সময়ের কথা যখন চিন্তা করি। তখন ভাবি আমরা তখন বা হাইস্কুলে পড়ার আগে বা পড়ার সময় দাদা-দাদি বা নানা-নানির সেঙ্গে সুন্দর একটা সম্পর্ক ছিল। তারা যা বলতেন তখন আমরা সেগুলো আগ্রহ নিয়ে শুনতাম। তাদের সাথে গল্প করতে পছন্দ করতাম। কিন্তু দিন দিন যখন আমরা বড় হচ্ছি তখন কোনো একটা জায়গার থেকে মনে হচ্ছে এই লিংকগুলো ছুটে যাচ্ছে।
এছাড়া অন্য আরেকজন তরুণ বলেন, বয়স্কদের সাথে আমাদের যোগাযোগ কমে যাচ্ছে। তাদের মতের সাথে আমাদের অমিল রয়েছে। তারা যেটা চিন্তা করে সেটা হয়তে আমরা চিন্তা করি না। তারা আবার অনেক ধরণের কুসংস্কারও বিশ্বাস করে।
নবীন-প্রবীণের এই চিন্তার ফারাক হয়তো চিরায়ত সব সমাজেই। কিন্তু এরপরও উন্নত সমাজ তো সেটাই যেখানে মূল্যবোধ-নৈতিকতা ও স্বকীয় সংস্কৃতির শিক্ষা ছোটরা পায় বড়দের কাছ থেকে। অন্তত সমাজবিজ্ঞান সেটাই বলে। এ বিষয়ে সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বললেন, সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে, সমৃদ্ধ হতে, প্রজন্মের মাঝে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহানুভূতি থাকা জরুরি।
তিনি আরও বলেন, একজন নবীন তার পুরনো মানুষের কাছে বা বয়স্ক মানুষের থেকে মূল্যবোধ, দায়িত্ব সচেতনতা, স্বাস্থ্যবিধি, সুস্বাস্থ্যের খাবার, চিকিৎসা পদ্ধতি, নিয়মকানুন, জীবনের ধর্মবোধ, সমাজবোধ শেখার আছে। আবার তরুণের প্রযুক্তির থেকে জ্ঞান প্রবীণেরও নেয়ার আছে। কারণ সে তো আধুনিক সমাজের একজন মানুষ। সুতরাং নবীন-প্রবীণের মধ্যে যত বেশি সমন্বয় হবে তত বেশি সবাই মিলে আধুনিকতাকে গ্রহণ করতে পারবো।
তরুণরা প্রবীণদের প্রতিপক্ষ নয়। প্রবীণরাও নয় তরুণদের মুখাপেক্ষী। তবে নবীনরা যে বয়োজ্যেষ্ঠদের শ্রম-চিন্তা ও কর্মের সুফল ভোগ করছে সে কথা মনে রাখতে বলছেন সমাজবিজ্ঞানী। এজন্য দরকার সামাজিক, পারিবারিক নানা উদ্যোগ, যেখানে নবীণ-প্রবীণের অভিজ্ঞতা, গল্প ও শিক্ষা বিনিময় হবে। অশ্রদ্ধা, অবজ্ঞা-উপেক্ষার ছিটেফোঁটা দূর হবে শ্রদ্ধায়-স্নেহে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিমানবন্দর বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী জাতীয় সংসদ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
অতিরিক্ত গরমে মাথা ঘোরানো, দুশ্চিন্তা, স্ট্রোক, মুখের ভেতর শুকিয়ে যাওয়া, অ্যাজমা, মাংসপেশিতে খিঁচুনি, চামড়ায় ফুসকুড়ি, কিডনি অকার্যকর হওয়ার মতো অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের গরমে বয়স্ক, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী, শ্রমজীবী মানুষেরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তাই তাপপ্রবাহ থেকে সুরক্ষার জন্য কী কী করতে হবে, তা জানিয়ে প্রথমবারের মতো জাতীয় গাইডলাইন বা নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে সরকার।