কক্সবাজারের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বিট কর্মকর্তা ও মহেশখালী সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা হত্যার প্রতিবাদ ও বনাঞ্চল রক্ষার দাবীতে মহেশখালীতে শনিবার (২০ এপ্রিল) ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ওয়াটার কিপার্স ও গ্রীণ কক্সবাজারের উদ্যোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মহেশখালীর শাপলাপুর সাইটমারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন ধরা মহেশখালী উপজেলা শাখার আহবায়ক মোঃ ইউনুচ এবং সঞ্চালনা করেন ধরা মহেশখালী শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক এম হোবাইব সজীব ও রকিয়ত উল্লাহ।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) কক্সবাজার জেলার আহ্বায়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, ‘পাহাড়, বন সৃষ্টি কর্তার অমূল্য নেয়ামক, যা মানুষের কল্যানে সৃষ্টি হয়েছে। যারা পাহাড় বনাঞ্চল ধ্বংস করছেন তাদের ছাড় দেয়া যাবেনা। সে যতবড় শক্তিশালীই হোক। মহেশখালীর প্যারাবন মহেশখালীর পাহাড় যারা ধ্বংস করছেন তা চিহ্নিত করুন। আর যারা বন কর্মকর্তাদের হতাহত করছেন তাদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে ‘
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা ‘ধরা’ কক্সবাজার জেলার যুগ্ন-আহবায়ক সাংবাদিক এইচএম ফরিদুল আলম শাহীন বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মহেশখালীতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চাইতে উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এভাবে পাহাড়ি বনাঞ্চল ও প্যারাবন কাটা অব্যাহত থাকলে মহেশখালী দেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে। উদ্বাস্তু হবে হাজার হাজার মানুষ। এবং যারা বন কর্মকর্তাদের হত্যার মিশনে নেমেছে তাদের দৃশ্যমান শাস্তি দেখতে চাই।’
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহেশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা এনামুল হক, ধরা কক্সবাজার শাখার যুগ্ম আহবায়ক তৌহিদ বেলাল, ধরা মহেশখালীর উপদেষ্ঠা আব্দু ছালাম কাকলী, সদস্য সচিব আজিজ সিকদার, শাপলাপুর বিট কর্মকর্তা নুরে আলম মিয়া, দিনেশপুর বিট কর্মকর্তা মনজুর মুর্শেদ, কেরুনতলী বিট কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুবাইর, ঝাপুয়া বিট কর্মকর্তা আবুল কাসেম, নিহত সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা ইউসুফ এর ভাই মিনহাজ, সাংবাদিক কায়সার হামিদ স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা হুমায়ুন।
বক্তারা বলেন, বন প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে উঠা রাষ্ট্রীয় সম্পদ। এ সম্পদের পাহারাদার বন কর্মকর্তারা। বন খেকোরা কতটা শক্তিশালী হয়ে উঠেছে ওই অঞ্চলে দুইজন কর্মকর্তাকে নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করলো আর কতটা অসহায় আমাদের বন বিভাগ। এই শক্তির উৎস কোথায় তা প্রশাসনকে খুঁজে বের করে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বন বিভাগের জনবল বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের আত্ন রক্ষায় সরঞ্জাম দিয়ে শক্তিশালী করে বনাঞ্চল রক্ষার্থে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের দাবী জানায় বক্তারা।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মার্চ উখিয়া দোছড়ি বিট কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জান সজলকে দায়িত্ব পালন কালে ভূমিদস্যু পাহাড়খেকোরা ডাম্পারের চাকায় পিষ্ট করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এর আগেও মহেশখালীর বন কর্মকর্তা ইউসুফকে ২০২০ সালের ৬ আগষ্ট বনখেকোরা হত্যা করে।
বন কর্মকর্তা হত্যা মানববন্ধন প্রতিবাদ সমাবেশ বনাঞ্চল রক্ষা
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।