নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৫ পিএম, ২২ জুন, ২০১৮
সিটি নির্বাচন ঘিরে গাজীপুরে এখন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। প্রার্থী, কর্মী-সমর্থকদের প্রচার-প্রচারণায় মুখরিত গাজীপুর সিটির প্রতিটি অঞ্চল। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে মাত্র কয়েকদিন সময় থাকার কারণে দম ফেলারও সুযোগ পাচ্ছেন না প্রার্থীরা।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনের সময় যতটা কাছাকাছি আসছে, প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণায় ততটাই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। মেয়র প্রার্থীরা ভোটারদের সমর্থন আদায়ে নানা প্রতিশ্রুতি প্রদান করছেন। পাশাপাশি নিজেদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর দোষ ত্রুটি তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করছেন।
স্থানীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতারাও নিজ নিজ দলের প্রাথীর পক্ষে প্রচারণা চালাতে ও ভোট চাইতে দেখা যায়।
মূল প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পার্থীর পাশাপাশি অন্যান্য দলের মেয়র প্রার্থীরাও নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী প্রচারণা চালাচ্ছে।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনের আজ শুক্রবার প্রচারণার পঞ্চম দিনে দেখা যায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এ্যাড. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ১৩ নং ওয়ার্ড কলাবাগান থেকে প্রচারণা শুরু করে। এরপর মজলিসপুর, খলাপাড়া, বাংলাবাজারে গণসংযোগ ও পথসভা করেন। জাহাঙ্গীর আলম চান্দনা চৌরাস্তা জামে মসজিদে জুম্মার নামায আদায় করেন। বিকাল ৩ টা থেকে পুনরায় ১৯ নং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রচারণা শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে আজকে ১৬, ১৮, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ ও পথসভা করবেন বলে তার মিডিয়া সেল থেকে জানা যায়।
অপরদিকে বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার জগিতলা, চান্দনা, মুগলখাল ১৭ নং ওয়ার্ডের এই তিনটি এলাকায় প্রচারনা চালান। বাইতুল ইসলাম জামে মসজিদে হাসান সরকার জুম্মার নামাজ আদায় করেন। বিকালে তিনি বাসাইল এলাকায় প্রচারনা চালাবেন বলে জানা যায়।
ইতিমধ্যে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছেন। প্রার্থীদের আশ্বাসের কারণে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে আরো বেশি আশাবাদী হয়ে উঠেছেন গাজীপুরবাসী।
ভোটাররা চান যানজট, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত, উন্নত-আধুনিক নগরী। সেই সাথে নতুন নির্বাচিত নগরপিতা সুখে দুঃখে সবসময় যেন পাশে থাকেন। নির্বাচনে জয় পরাজয় থাকবে বিরোধীতাও থাকবে কিন্তু নগরীর উন্নয়নে সবাই এক হয়ে কাজ করবেন সেই প্রত্যাশাই করেন নগরবাসীর।
বাংলা ইনসাইডার/আরকে
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জেলা প্রশাসক সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।