নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫০ পিএম, ২১ অগাস্ট, ২০১৮
বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ের সামনে ২০০৪ এর ২১ আগস্ট এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে সমাবেশের মঞ্চে বক্তৃতা শেষে নিচে নেমে আসতে শুরু করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ঠিক সে সময়ই মঞ্চ লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা শুরু হয়। মাত্র দেড় মিনিটের মধ্যে ১১টি শক্তিশালী গ্রেনেডের বিস্ফোরণে পুরো এলাকা পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে। এই হামলায় নিহত হন ২৪ জন।
সে সময়টাতে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের দিকেই নজর ছিল সবার। কিন্তু হামলার পরদিন ২২ আগস্টেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ঘটেছিল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার পর পরই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে একটি গ্রেনেড পাওয়া যায়। কারা নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে কে বা কারা গ্রেনেডটি রেখেছিল, কী উদ্দেশ্য রেখেছিল ঘটনার ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও তা আজও উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র জানা গেছে, গ্রেনেডটি উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গেই চকবাজার থানায় নেওয়া হয়। কারা কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় একটি মামলাও দায়ের করে। বিএনপি-জামাত জোট সরকার এই মামলার বিষয়ে উদাসীনতা দেখায়। তবে মামলাটি এখন তদন্ত করছে পুলিশের বিশেষ শাখা সিআইডি। কিন্তু সিআইডিও এই রহস্যের কূলকিনারা করতে পারেনি। তবে সিআইডির ধারণা, যারা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করেছে তারাই কারাগারে গ্রেনেডটি রেখেছিল।
ঠিক কী উদ্দেশ্যে কারাগারে গ্রেনেড নিয়ে রাখা হয়েছিল সে বিষয়ে নিশ্চিত না হওয়া গেলেও গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, সে সময়টাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পাঁচ আসামি। কারাগারে আটক বঙ্গবন্ধু হত্যার আসামি ও হুজিসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের বন্দীদের মুক্ত করার জন্য কারাগারে গ্রেনেড হামলার নীল নকশা প্রণয়ন করা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হয়।
কারাগারের ভেতরের যে অংশে গ্রেনেডটি পাওয়া গিয়েছিল সেখানে কারারক্ষী ছাড়া কোনো সাধারণ মানুষ অথবা কারাবন্দীদের প্রবেশ সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে সিআইডির একটি সূত্র। তাই এই ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এই ঘটনায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের তৎকালীন জেল সুপার হারুন উর রশিদের সম্পৃক্ততা রয়েছে কী না সে বিষয়ও খতিয়ে দেখছে সিআইডি। বিভিন্ন অভিযোগে হারুন উর রশিদকে ইতিমধ্যে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার কয়েকজন আসামিকেও কারাগারের গ্রেনেড সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু সন্তোষজনক কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
অতীতে বিভিন্ন সময় সিআইডির পক্ষ থেকে অতিদ্রুত কারাগারের গ্রেনেড রহস্য উদঘাটনের ব্যাপারে আশ্বাস পাওয়া গেলেও কিন্তু তা আজ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচটি/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।