নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১৭ পিএম, ২১ অগাস্ট, ২০১৮
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সন্ত্রাসবিরোধী কর্মসূচিতে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার ঘটনায় যে জিয়া পরিবার জড়িত ছিল, সে বিষয়ে তাঁর কোনো সন্দেহ নেই।
আজ মঙ্গলবার সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনাস্থলে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক স্মরণ অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে বিএনপি-জামাত জোট ওই গ্রেনেড হামলা চালায়। এই হত্যাকাণ্ডের যে চেষ্টা; এর সঙ্গে বিএনপি যে একেবারে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, খালেদা জিয়া, তার ছেলেরা যে জড়িত তাতে কোনো সন্দেহ নাই।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ের সামনে ২০০৪ এর ২১ আগস্ট এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে সমাবেশের মঞ্চে বক্তৃতা শেষে নিচে নেমে আসতে শুরু করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ঠিক সে সময়ই মঞ্চ লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা শুরু হয়। মাত্র দেড় মিনিটের মধ্যে ১১টি শক্তিশালী গ্রেনেডের বিস্ফোরণে পুরো এলাকা পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে। এই হামলায় নিহত হন ২৪ জন। অনেকে চিরতরে পঙ্গু হন, ঘটে অঙ্গহানি। সেদিন বেঁচে গেলেও স্থায়ীভাবে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সরকার শুরুতে ওই সমাবেশের অনুমতি না দিলেও পরে ২০ অগাস্ট রাত সাড়ে ১১টায় সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছিল। জানতাম না, এর পেছনে একটা ষড়যন্ত্র আছে।
প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, নিয়মমাফিক ভাবে র্যালি-সমাবেশের আগে বিভিন্ন ভবনের ছাদে আওয়ামী লীগের ভলান্টিয়াররা নিয়োজিত থাকলেও সেদিন তাদের কাউকে ছাদে উঠতে দেওয়া হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার এটা মনে হয়, আল্লাহর কোনো একটা ইশারা ছিল। নইলে আমরা যেখানে ট্রাক দাঁড়া করাই সেখানে যদি থাকত, তাহলে কিন্তু ওই গ্রেনেডটা আমাদের ট্রাকের ভেতরে এসে পড়ত।
শেখ হাসিনা বলেন, একটি হামলার পর আলামত সংগ্রহ করার নিয়ম থাকলেও তখনকার সরকার আর পুলিশ লিপ্ত হয়েছিল আলামত নষ্ট করার কাজে। হামলায় আহতদের সাহায্য করতে আওয়ামী লীগের অন্য নেতাকর্মীরা যখন ছুটে গেলেন, তখন পুলিশ তাদের ওপর টিয়ার শেল ছোড়ে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।