নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১৩ পিএম, ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
জাকিরুল ইসলাম, পেশায় ব্যাংক কর্মকর্তা। অফিস মতিঝিলে হলেও থাকেন মিরপুর শেওড়াপাড়াতে। যৌথ পরিবার হওয়ার কারণে আর্থিক সামর্থ্যানুযায়ী পছন্দসই বড় ফ্লাট নিয়ে ভাড়া থাকতেই কর্মস্থল থেকে এত্তদূরে থাকা। কেননা ঢাকার অন্যান্য স্থানের তুলনায় মিরপুরের বাড়ি ভাড়া তুলনামূলক একটু কমই। পেশাগত কারণে জাকিরুল ইসলামকে সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত মাসের অন্যান্য দিন শেওড়াপাড়া থেকে মতিঝিলের বাস ধরতে হয়। প্রতিদিন মিরপুর শেওড়াপাড়ার বাসস্ট্যান্ড থেকেই বাসে উঠেন তিনি। তার অফিস টাইম নয়টা থেকে হওয়ায় বাসা থেকে সাড়ে সাতটার দিকে রওনা দেন তিনি। সকালে রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকার কারণে দেড় ঘণ্টার বেশি লাগেনা তার কর্মস্থলে পৌঁছাতে। যদিও অফিস শেষে ফিরতে এই সময়টা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। দিনে প্রায় চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা বাস যাত্রাতেই কাঁটে তার, এতে তার আক্ষেপের পাশাপাশি অভিযোগের শেষ নেই।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আশফাক মাহমুদের কপালে চিন্তার আজ ভাঁজ। বার বার তাকাচ্ছেন ঘড়ির দিকে। সময় সকাল ১০ টা, ভার্সিটিতে সাড়ে বারোটায় মিড টার্ম পরীক্ষা তার কিন্তু এখনো বাসে উঠতে ব্যর্থ তিনি। অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ একটু আগেই রওনা দিয়েছিলেন আশফাক। কিন্তু বিধি বাম, আধাঘণ্টার বেশি সময় ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করেও বাস পাননি। ২০/২৫ মিনিট পর যাও দুই একটা বাস আসছে, তাও গেটলক করে, সিটিং সার্ভিস। পরীক্ষা টা আজ আর দেওয়া হলো না, সারারাত পড়াটাই বৃথা। এভাবেই আক্ষেপের কথা বলছিল আশফাক।
জাকিরুল ইসলাম, আশফাক মাহমুদ এরা প্রত্যেকেই যেন রাজধানীতে গণপরিবহনে চলাচলকারীর প্রতিনিধিত্ব করছে। প্রতিদিনই পরিবহণ সংকটে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পাবলিক বাসে যাতায়াতকারীরা। এই কয়দিন ঈদের ছুটিতে রাজধানীতে লোকসংখ্যা কম থাকায় সেভাবে সমস্যাটি বোঝা যায়নি, তবে ছুটি শেষে সবাই শেকড় ছেড়ে ঢাকায় ফিরে আসায় বাস সংকটি তীব্র আকারে দেখা দিয়েছে। ফলশ্রুতিতে যাতায়াতে ব্যাপক ভোগান্তির হচ্ছে রাজধানীবাসীরা। নির্ধারিত বাসে উঠতে রীতিমত গলদঘর্ম হচ্ছে যাত্রীরা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর কোনো বাস এলেও তাতে উঠতে হলে ধস্তাধস্তি করতে হচ্ছে যাত্রীদের। বাসে উঠার যুদ্ধে পুরুষরা গায়ের শক্তি খাটিয়ে জয়ী হলেও, বয়স্ক এবং নারীদের জন্য তা হয়ে দাঁড়ায় রীতিমত অসম্ভব।
মাত্র কয়েকদিন আগেও রাজধানীর রাস্তাগুলোতে গণপরিবহনের দীর্ঘ লাইন দেখা যেত, সেখানে এখন যেন ম্যাজিকের মতো সব গনপরিবহনগুলো উধাও হয়ে গেছে। যেখানে যাত্রী নেওয়ার জন্য গনপরিবহনগুলো নিজেদের মধ্যে পাল্লাপাল্লি ও ধাক্কাধাক্কি করতো, সেখানে আজ রাস্তা ভর্তি অপেক্ষারত যাত্রী কিন্তু বাসের দেখা নেই।
এ বিষয়ে বাসের চালক ও সহকারীরা জানান, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর লাইসেন্সহীন চালক ও ফিটনেস এবং অনুমোদনহীন বাস চলাচলের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। সেজন্য মামলার ভয়ে কাগজপত্রহীন গাড়ি রাস্তায় নামাচ্ছে না কোম্পানিগুলো।
ধানমণ্ডি এরিয়ার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর পল্লব কুমার সাহা জানান, গতকাল রোববার ধানমণ্ডি ট্রাফিক জোন ৭৯ টি মামলা ও ২২ টি গাড়িতে র্যাকার লাগিয়েছে। এমন চিত্র রাজধানীর অন্যান্য এলাকাগুলোতেও।
জগাতলা থানার ট্রাফিক সার্জেন্ট ইফতেখার আহমেদ জানান, আজ সোমবার সকাল থেকেই তিনি এগারোটা মামলা দিয়েছেন। অধিকাংশ মামলা লাইসেন্সহীন চালক ও ফিটনেস না থাকার কারণে।
মামলার ভয়ে অধিকাংশ বাস মালিকরাই তাদের বাস রাস্তায় নামাচ্ছেন না। প্রতিটা পরিবহণ কোম্পানির চার ভাগের মাত্র এক ভাগ বাস রাস্তায় চলাচল করছে। বিভিন্ন ঝামেলার কারণে ইতিমধ্যে অনেক বাস মালিকরাই বাসের ব্যবসা বন্ধ করে দেয়ার চিন্তা করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেছেন, পরিবহনের কাগজ-পত্র ঠিক করার ব্যাপারে পরিবহনের মালিকরা কাজ করছে। খুব জলদি তাদের কাগজ-পত্রের সমস্যার সমাধান হলে পরিবহণ সংকট কমে আসবে।
বাংলা ইনসাইডার/বিকে/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বাসিন্দা ইতালি প্রবাসী বাচ্চু শেখ অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে মারা যান ৩ বছর আগে। সেই মামলার রহস্যের জট খুলেছে ৩ বছর পর। আসামী আমির হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই-এর এসআই ফিরোজ আহমেদ জানান, বিগত ২০২১ সালের ৯ মার্চ ইতালি প্রবাসী বাচ্চু শেখ হানিফ এন্টারপ্রাইজের একটি বাসে করে তার গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার তপারকান্দি গ্রামে আসছিলেন। পথিমধ্যে অজ্ঞান পার্টির সদস্য আমির হোসেন ও তার দলবল কায়দা করে ভিকটিমের সাথে ভাব জমিয়ে তাকে বিস্কুটের সাথে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে খ্ইায়ে দেয় এবং তার কাছে থাকা মালামাল নিয়ে যায়। এতে সে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে বাসের হেলপার তার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে ছাগলছিড়া এলাকায় তাকে বুঝে দিয়ে বরিশালের দিকে বাস চলে যায়।
পরে
মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় বাচ্চু শেখকে প্রথমে মাদারীপুরের রাজৈর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মৃত বাচ্চু শেখের স্ত্রী মুকসুদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে গোপালগঞ্জ পিবিআই মূল অভিযুক্ত আমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে এবং সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে গোপালগঞ্জের পিবিআই-এর পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন
নওগাঁয় ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে খরিপ মৌসুমে উফশী আউশ, পাট ও গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।
এসময় নওগাঁ সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা শওকত মেহেদী সেতু’র সভাপতিত্বে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। এসময় নওগাঁ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল হক কমল ও সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম এবং পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ সহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রণোদনার অংশ হিসেবে মোট ৭ হাজার ১৫০ জন কৃষকের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে প্রতি বিঘা ফসলের জন্য উফশী আউশ ৬ হাজার ৬৭০ জনকে ৫ কেজি বীজ, ডিএপি ১০ কেজি ও এমওপি ১০ কেজি। এছাড়া ২৩০ জনের প্রত্যেককে এক কেজি করে পাট বীজ এবং গ্রীষ্মকালিন ২৫০ জন কৃষককে পেয়াঁজ চাষে এক কেজি বীজ, ডিএপি ২০ কেজি এবং এমওপি ২০ কেজি দেয়া হয়।
মন্তব্য করুন
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জানা গেছে, ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গতকাল রবিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরের পর দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে একাধিক বার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশের গাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটে।
পুলিশের গাড়িতে হামলার ঘটনায় বিজয়ী চেয়ারম্যান ওমর হোসাইন ভুলু ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আকতার হোসেন বোরহান চৌধুরী সহ ১১ জনের নাম উল্লেখ ও আরো ৪/৫শ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে পুলিশবাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেছে।
এঘটনায় বিজয়ী ও পরাজিত দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফ উদ্দিন আনোয়ার।গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (২৮ এপ্রিল) রাতে সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের আঁধার মানিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার পর আবারও দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫ রাউন্ড রাবার বুলেট, ৪ রাউন্ড গ্যাস সেল ও ২ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিজয়ী ও ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এবং জেলা কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি ওমর ইবনে হোসাইন ভুলু এবং পরাজিত প্রার্থী তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আকতার হোসেন বোরহান চৌধুরীকে আটক করেছে।
ইউপি নির্বাচন সংষর্ঘ চেয়ারম্যান প্রার্থী গ্রেপ্তার
মন্তব্য করুন
আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম ফেনী-১
মন্তব্য করুন