নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৩৯ এএম, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ’প্রত্যাবাসন বিলম্বিত করার জন্য মিয়ানমার নানা অজুহাত দিচ্ছে। ঘনবসতি পূর্ণ বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে বসবাসের কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না। সীমান্ত সংঘাত চাই না বলেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।’ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে ১০ দিনের সফরে বর্তমানে নিউ ইয়র্কে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারের মূল ক্ষমতা দেশটির নেত্রী অং সান সু চি এবং তাদের সেনাবাহিনীর হাতে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সুচি কোনও দ্বন্দ্বে জড়াতে চান না। তবে কোনো পরিস্থিতিতেই শরণার্থীরা স্থায়ীভাবে ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশে থাকতে পারে না।
রয়টার্সের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বাংলাদেশ তার অবস্থান থেকে সরে আসবে কিনা। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই ১৬ কোটি মানুষ রয়েছে। আমরা আর কোনও বোঝা নিতে পারি না।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের পক্ষে রোহিঙ্গাদের জন্য কোনও স্থায়ী আবাস তৈরি সম্ভব নয়। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক এবং তাদের অবশ্যই নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। কিন্তু মিয়ানমার সব বিষয়ে একমত হলেও বাস্তবে সে অনুযায়ী কাজ না করায় সংকট তৈরি হয়েছে। সব সময়ই তারা কোনও না কোনও অজুহাত সামনে তুলে ধরে।
প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগের বিষয়টি মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ্য হতে’র কাছে জানতে চাওয়া তিনি সাফ জানিয়ে দেন, নিয়মিত সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনের বাইরে ফোনে তিনি সংবাদমাধ্যমের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেবেন না।
জাতিসংঘের সূত্রমতে, বাংলাদেশে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি। তবে বাংলাদেশ বলছে, এ সংখ্যা ১১ লাখেরও বেশি। প্রায় প্রতি রাতেই সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে রোহিঙ্গা পরিবার।
বাংলা ইনসাইডার/জেডআই/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।