নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫৫ পিএম, ২১ মে, ২০১৯
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সির বিরুদ্ধে মানহানিকর খবর পরিবেশন করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এসএ টিভির সিইও সালাহউদ্দিন জাকিসহ চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
রবিবার বিকেলে রংপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আরিফা ইয়াসমিন মুক্তা এ আদেশ দেন।
মামলার অন্য তিন আসামি হলেন এসএ টিভির চিফ রিপোর্টার বাদশা, স্টাফ রিপোর্টার সোহেল ও ফেসবুক আইডির অ্যাকাউন্ট হোল্ডার সালাহ উদ্দিন তালুকদার।
মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী হারুনর রশীদের আইনজীবী ফিরোজ কবীর চৌধুরী গুঞ্জন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরীর মনোহর চওড়া পাড়া এলাকার যুবলীগ কর্মী হাবিবুর রহমানের ছেলে হারুনুর রশীদ মামলায় অভিযোগ করেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৎ যোগ্য ও নিষ্ঠাবান সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে মন্ত্রী পরিষদ গঠন করেন। তারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আসামীরা মন্ত্রী পরিষদের সম্মানিত সদস্যদের সুনাম ক্ষুণ করার জন্য রাষ্ট্রবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এসএ টেলিভিশনে জহির মিয়াকে প্ররোচিত করে তার একটি উদ্দেশ্যমূলক ও মনগড়া সাক্ষাৎকার ধারন করে তা সুকৌশলে সালাহ উদ্দিন তালুকদারের ফেসবুক পেজে প্রচার করেন।
ওই সাক্ষাৎকারটি এসএ টিভির ক্যামেরায় স্টাফ রিপোর্টার সোহেল কর্তৃক ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে ধারন করা হয়। আসামি এসএ টিভির স্টাফ রিপোর্টার ফেসবুক পেজে দেওয়া ভিডিওতে তার উপস্থাপনা ও বর্ণনায় মানহানিকর মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করে প্রচার করেন। সেখানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সির নাম উল্লেখ করে ৪০ বিঘা সম্পত্তি যা জহিরের, তা মন্ত্রী জবরদখল করে ভোগ করছেন বলে উল্লেখ করা ছাড়াও আরও বেশ কিছু মানহানিকর বক্তব্য প্রচার করা হয়।
ফেসবুকে আপলোড করা ওই ভিডিও ৭ লাখ ৬৫ হাজারবার দেখা হয়েছে এবং ১৭ হাজারের বেশি শেয়ার করা হয়েছে। এমন মানহানিকর খবর প্রকাশের মাধ্যমে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সিকে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়েছে বলে রোববার সাকালে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়। মামলার বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে ওই দিন বিকেলে বিচারক চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলার পরবর্তী তারিখ ২২ জুলাই নির্ধারণ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।