নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:২৩ এএম, ২০ মে, ২০১৭
গণমাধ্যমজুড়ে স্বর্ণালংকার (জুয়েলার্স) ব্যবসায়ীদের বড় বড় সব বিজ্ঞাপন। সুবিশাল ঝকঝকে দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। স্বর্ণালংকার ব্যবসায়ীদের ব্যবসা যে রমরমা তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। ব্যবসার অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় দেশে অন্তত হাজার কোটি টাকার স্বর্ণ ব্যবসা।
সম্প্রতি গুলশানের সুবাস্তু টাওয়ারে থাকা আপন জুয়েলাসের্র মূল শাখা থেকে ২১২ কেজি স্বর্ণ জব্দ করা হয়। এই বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ আমদানির কোনো কাগজ দেখাতে পারেনি আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষ। তাহলে কি প্রশ্ন ওঠে না যে ওই স্বর্ণ তাঁরা পেল কোথা থেকে? বাংলাদেশে তো স্বর্ণের খনি নেই, আবার আমদানি করার অনুমতিও নেই। অথচ দেশজুড়ে দিব্যি গড়ে উঠেছে ২০ হাজারেরও বেশি সোনার দোকান। এসব দোকানে নিয়মিতভাবে গয়না তৈরি হচ্ছে, ভাঙাও হচ্ছে; কাজ করে যাচ্ছেন কারিগরসহ দেড় লাখেরও বেশি শ্রমিক।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উদ্ধারকৃত স্বর্ণের পরিমাণ ৮৫ দশমিক ৯৮ কেজি যার দাম ১৯ কোটি এক লাখ টাকা। ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত উদ্ধার করা স্বর্ণের পরিমাণ ৬৯ দশমিক ২৪ কেজি যার দাম ৩৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। ২০১৫ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৬৭ দশমিক ২১ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। ২০১৪ সালে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ৪৯টি চালানে ১৯১ দশমিক ২৯০ কেজি স্বর্ণ জব্দ করা হয়। এর বাজারমূল্য প্রায় ৮২ কোটি টাকা। । ২০১৩ সালের ২০ আগস্ট পর্যন্ত ২১০ কেজি স্বর্ণ আটক করা হয়েছে শাহজালাল বিমানবন্দরে।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সহ-সভাপতি এনামুল হক শামীম বলেন, বর্তমান বাজারে স্বর্ণ বড় অংশের জোগান আসে কালোবাজারের মাধ্যমে। এছাড়াও সামান্য অংশ আসে বিদেশ থেকে ব্যক্তিগতভাবে আনার বৈধ অনুমতিপত্রের মাধ্যমে। মাত্র ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ ব্যবসায়ী দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে স্বর্ণ কিনে থাকেন। বাকিরা কালোবাজার ও ভারত থেকে সোনা সংগ্রহ করে।
গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র থেকে জানা যায়, দেশের স্বর্ণের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের স্বর্ণালঙ্কারের চাহিদা মেটাতে সোনার বার দুবাই, মালয়েশিয়া, ওমান, সৌদি আরব ও সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে আনা হয়। এসব বার পরে বেনাপোল স্থলবন্দর ও ভোমরা স্থলসীমান্ত দিয়েও পাচার করা হয়। চোরাচালান চক্রগুলোর মধ্যে দেশে অবস্থান করা চক্রগুলো সরাসরি জড়িত থেকে মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে, মানি চেঞ্জারের ব্যবসার আড়ালেও স্বর্ণ চোরাচালান করছে।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তা থেকে জানা যায়, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর বিভিন্ন বিমানবন্দর থেকে স্বর্ণ আটক করে। ওই স্বর্ণ ঢাকা কাস্টমস হাউজের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে একটি জিআরও নম্বরের মাধ্যমে জমা দেওয়া হয়। ঢাকা কাস্টমস হাউজ উদ্ধারকৃত ওই স্বর্ণের নিস্পত্তি করে বাংলাদেশ ব্যাংকে। উদ্ধারকৃত স্বর্ণের মালিকানা দাবি করে কেউ যদি ওই স্বর্ণ নির্ধারিত শুল্ক পরিশোধ করে তাহলে তারা তা নিয়ে যেতে পারে। তবে কেউ যদি দাবি না করে তখন বাংলাদেশ ব্যাংক ওই স্বর্ণ নিলাম করে। এরপর বাংলাদেশে জুয়েলারি ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা তখন ওই স্বর্ণ নিলামে কিনে বিক্রি করে। আর নিলামে বিক্রি করা ওই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়। তবে কি পরিমাণ স্বর্ণ নিলাম হয় তার কোনো হিসাব নেই তাদের কাছে।
সম্প্রতি শুল্ক গোয়েন্দারা বলছেন, চোরাচালাচালের মাধ্যমেই স্বর্ণ আসছে এ দেশে। তাহলে কি এভাবেই চলবে স্বর্ণের বাজার?
তাহলে স্বর্ণ ব্যবসা কীভাবে চলছে তার কী কোনো নজরদারি আছে সরকারের?
বাংলা ইনসাইডার/টিআর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
হেফাজতে ইসলাম মাওলানা মামুনুল হক
মন্তব্য করুন
উন্মুক্ত কারাগার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে এবার নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই ও ভাগনে। ছোট ভাই শাহদাত হোসেন প্রার্থী হয়েছেন চেয়ারম্যান পদে। আর ভাগনে মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু প্রার্থী হয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান পদে।