নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:১৩ পিএম, ২৪ জুলাই, ২০১৯
পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর এসআই মোশারফ হোসেনের হুমকিতে তিন ছেলে সন্তানকে নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছেন গৃহবধু আসমা সুলতানা। এসআই মোশারফের বিরুদ্ধে মামলা করেও হয়নি কোন সমাধান। উল্টা ওই মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকীর পাশাপাশি বড় ধরণের ক্ষতি করার কথা জানিয়েছে মোশারফ।
আসমা সুলতানা বলেন, প্রায় ২৫ বছর আগে মোশারফের (৪৫) সাথে তার বিয়ে হয়। তার বাবার বাড়ী ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা পৌরসভা এলাকায়। আর এসআই মোশারফের বাড়ী ফরিদপুর সদর উপজেলার নদীযারচাঁদ ঘাট এলাকায়। বর্তমানে তাদের সংসারে তিনটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে সোহেল আরমান শুভ আনার্স তৃতীয় বর্ষ, মেজো ছেলে হাসিবুল হাসান সাগর এইচএসসি প্রথম বর্ষ এবং ছোট ছেলে রাত সাহামাত দীপ্ত তৃতীয় শ্রেণীতে পড়াশোনা করে। প্রায় ৬ বছর ধরে এসআই মোশারফ রাজবাড়ী জেলা পুলিশের হয়ে বিভিন্ন থানায় চাকুরী করেন। রাজবাড়ীর পাংশা থানায় চাকুরী করা কালিন সময়ে কাতার প্রবাসী রকিবুল ইসলামের এক সন্তানের জননী স্ত্রী আরজু বেগমের সাথে এসআই মোশারফের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যার ধারাবাহিকতায় মোশারফ ২০১৭ সালের ৩০ আগষ্ট আরজু বেগমকে বিয়ে করে। এর পর থেকে মোশারফ পাল্টে যায়। তার এবং তার ছেলেদের খোজ খবর নেয়া এবং থাকা খাওয়া ও পড়াশোর খরচ দেয়া বন্ধ করে দেয়। যে কারণে তিনি রাজবাড়ীর ২০১৮ সালের ২৭ জুলাই তিনি রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দম ট্রাইব্যুনালে এসআই মোশারফ, আরজু বেগমসহ ৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় যৌতুকের দাবী পুরণ না করায় রাজবাড়ী জেলা শহরের ভবানীপুরের ভাড়াবাসার মধ্যে স্ত্রীকে মারপিট করার অভিযোগ করা হয়। সে সময় মারপিটে আহত আসমা সুলতানাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে আসমা সুলতানা রাজবাড়ীর সদর পারিবারিক জজ আদালতে দেনমোহর, খোরপোষ, ভরণপোষণ আদায় এবং ফরিদপুর আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে আরো একটি মামলা দায়ের করেন। ফরিদপুর আদালতের ওই মামলার কাজে গত ৮ জুলাই গেলে উকিল লাইব্রেরীর সামনের পাকারাস্তার উপর এসআই মোশারফ হোসেনসহ আরো ২/৩ জন তাকে গালাগাল করে। সেই সাথে এসআই মোশারফ মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকী প্রদান করে। আর মামলা না তুলে নিলে বড় ধরণের ক্ষতি করবে বলেও জানায়। ওই ঘটনার পর তিনি (আসমা সুলতানা) ফরিদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেন, এসআই মোশারফের বিরুদ্ধে। এদিকে, রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দম ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলা নিয়ে গত রবিবার দুপুরে রাজবাড়ী বার এসোসিয়েশনে উভয় পক্ষের লোকজন আপাষ মিমাংশার জন্য বসলেও এসআই মোশারফ সমাধানের পথে আসেন নি।
আসমা পারভীনের ভাই খোকন বলেন, এসআই মোশারফ একজন খারাপ প্রকৃতির মানুষ। তার বোন কে বিয়ে করার আগেও মোশারফের আরো একটি স্ত্রী ছিলো। সে সংসারে তার একটি মেয়ে সন্তানও রয়েছে। যাকে বিয়ে দেয়া হয়েছে। এর পরও সে এ বয়সে এসে আরেকটি মেয়ের সংসার ভেঙ্গেছে। তার দাবী এ ধরণের পুলিশ অফিসারদের কারণেই বাংলাদেশ পুলিশের বদনাম হয়। তাই মোশারফের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানান।
এ বিষয়ে জানতে গত রবিবার বিকালে এসআই মোশারফ হোসেন-এর মোবাইল ফোন কল করা হয়। সে সময় তার তৃতীয় স্ত্রী আরজু বেগম ফোনটি রিসিভ করেন। তিনি বলেন, এসআই মোশারফের বান্দরবন জেলার থানচি থানায় বদলী করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি ছুটিতে ফরিদপুরের গ্রামের বাড়ীতে তাকে নিয়ে আছেন।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।