নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ এএম, ২৪ অগাস্ট, ২০১৯
রাজধানীর পল্লবী ঝিলপাড় এলাকায় আগুনে পুড়ে যাওয়া চলন্তিকা বস্তির উপর দিয়ে নির্মাণ করা হবে চলাচলের রাস্তা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা অত্র এলাকার সাংসদ ও কমিশনার এমন কথা বলেছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত রিপন শেখ এর সাথে কথা বলে জানা যায়, আগুন লাগার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছিলেন সেই এলাকার সাংসদ ইলিয়াস মোল্লা। তখন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ জানতে চান তাদের কি হবে। তাদের প্রশ্নের জবাবে সাংসদ বলেন, এখানে নতুন করে যাতায়াতের জন্যে রাস্তা নির্মাণ করে দেওয়া হবে। এতে করে নাগরিকরা পাবে যাতায়াত সুবিধা।
রাস্তা হলে এখানে বসবাসকারী মানুষগুলো কোথায় যাবে জানতে চেয়েছিলেন কি? এমন প্রশ্নের জবাবে রিপন বলেন, এমপি আর কমিশনার সাহেব বলছেন রাস্তা হওনের পরে এখানে যারা বসবাস করতো তাদেরকে জায়গা দিয়ে পুর্নবাসন করা হবে। কিসের ভিত্তিতে পুর্নবাসন করবে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, সবাইকে সমান ভাবে জায়গা দেওয়া হবে। আগুন লাগার কয়েক দিন পরেই সবাইকে স্লিপ দেওয়া হইছে সেই স্লিপের ভিত্তিতে জায়গা বন্টন করা হবে সমান ভাবে।
সমানভাবে বলতে কি বোঝাতে চাইছেন? তিনি বলেন, সমান ভাবে বলতে হইল, কারো পরিবারে পাঁচ জন সদস্য, কারো পরিবারে তিন কিংবা কারো পরিবারে যদি দুই জন সদস্য যদি থাকে তাইলেও একই পরিমাণ যায়গা দেওয়া হবে। এইডাই সমান ভাবে বন্টন।
কত দিনের মধ্যে পুনর্বাসনের কাজ শুরু হবে এই ব্যাপারে তিনি কিছু জানাতে না পারলেও পুর্নবাসন হবে এমনটাই আশাবাদ ব্যক্ত করেন রিপন।
আবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন,এখানে রাস্তা হবে কি না জানি না। তবে এলাকার রাজনীতির সাথে জড়িত অনেককেই তারা বলতে শুনেছেন এই চলন্তিকা বস্তি উঠিয়ে দিয়ে এখানে হাতিরঝিলের মতো মেগা প্রজেক্ট করা হবে। অবশ্য এমন তথ্যের কোন সত্যতা মেলেনি খোঁজ করে।
উল্লেখ্য,চলতি মাসের গত ১৬ই আগস্ট সন্ধ্যা সাতটার পরে আগুন লাগে ঝিলপাড়ের চলন্তিকা বস্তিতে। এই অগ্নীকাণ্ডের ঘটনায় একেবারে পুড়ে ছাই হয়ে যায় আনুমানিক সাত হাজার পরিবারের ঘর। সাত হাজার পরিবারের মধ্য এই বস্তিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছিলো আনুমানিক পাঁচ হাজার পরিবার। অগ্নীকাণ্ডের ঘটনার পরে পাঁচ হাজার পরিবারের প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষ জীবন ও দিন যাপন করছে খোলা আকাশের নিচে তাবু টানিয়ে আর কিছু লোক জায়গা পেয়েছে স্থানীয় বঙ্গবন্ধু স্কুলে সাময়ীকভাবে খোলা আশ্রয়কেন্দ্রে। বাদ বাকি যে দুই হাজার পরিবার আছে তারা ছিলো এখনাকার ভাড়াটিয়া। আগুন লাগার পরে এই দুই হাজার পরিবারের প্রায় বিশ হাজার মানুষ অন্যত্র চলে যাচ্ছে আবার কেও কেও যা কিছু অবশিষ্ট ছিলো তাই নিয়ে ফিরে গেছে নিজেদের গ্রামের বাড়িতে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।