নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৪৯ পিএম, ২০ জানুয়ারী, ২০২০
এরশাদের শাসনামলে ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি এরশাদ বিরোধী তীব্র আন্দোলনের এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম মহাসমাবেশে যান। উত্তাল জনস্রোত যেন রাজপথে নেমে আসে। শেখ হাসিনা যখন সমাবেশ স্থলে যাচ্ছিলেন তখন মুসলিম হাইস্কুল মোড়ে শেখ হাসিনার গাড়ী বহরে পুলিশ বাধা দেয়। অতর্কিতে শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। সেই মুহূর্তে শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে গুলির মুখ থেকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বাঁচাতে গিয়ে সেই গুলিতেই প্রাণ হারান যুবলীগ কর্মী আবুল হাশেম।
এরপর শুরু হয় পুলিশি তান্ডব। আইনজীবীরা কোন রকমে শেখ হাসিনাকে আদালত ভবনে নিয়ে যান। ওইদিন দুপুর ১টার দিকে শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রাকটি আদালত ভবনের দিকে আসার সময় গুলিবর্ষণ শুরু হয়। ওইদিন পুলিশের গুলিতে ২৪ জন মারা যান। গুলিবর্ষণের পর আইনজীবীরা মানববেষ্টনী তৈরির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সভাপতিকে রক্ষা করে আইনজীবী সমিতি ভবনে নিয়ে গিয়েছিলেন। গুলিতে নিহতদের কারও লাশ পরিবারকে নিতে দেয়নি তৎকালীন সরকার। হিন্দু-মুসলিম নির্বিচারে সবাইকে বলুয়ার দীঘি শ্মশানে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
১৯৯২ সালের ৫ মার্চ এ মামলাটি করেন আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা। কিন্তু বিএনপি সরকারের সময় এ মামলার কার্যক্রম থমকে ছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হলে আদালতের আদেশে সিআইডি মামলাটি তদন্ত করে। ১৯৯৭ সালের ১২ জানুয়ারি প্রথম ও অধিকতর তদন্ত শেষে ১৯৯৮ সালের ৩ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় সিআইডির দেওয়া অভিযোগপত্রে আসামি করা হয় আট পুলিশ সদস্যকে।
আট আসামি হলেন চট্টগ্রামের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মির্জা রকিবুল হুদা, কোতোয়ালি অঞ্চলের প্যাট্রোল ইনসপেক্টর জে সি মণ্ডল, কনস্টেবল আবদুস সালাম, মুশফিকুর রহমান, প্রদীপ বড়ুয়া, বশির উদ্দিন, মো. আবদুল্লাহ ও মমতাজ উদ্দিন। তাদের মধ্যে রকিবুল হুদা, বশির উদ্দিন ও আবদুস সালাম মারা গেছেন। জে সি মণ্ডল পলাতক এবং বাকি চারজন আদালতে নিয়মিত হাজিরা দেন। মামলার বাদী মো. শহীদুল হুদা ও সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি আবদুল কাদেরও মারা গেছেন।
মির্জা রকিবুল হুদাকে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে প্রধান পুলিশ কমিশনার করে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় পাঁচ আসামিকে আজ মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। সোমবার বিকালে চট্টগ্রামের বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেন চার আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত আসামিরা হলেন- চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কোতোয়ালি অঞ্চলের তৎকালীন পেট্রোল ইনসপেক্টর জে সি মণ্ডল, কন্সটেবল মোস্তাফিজুর রহমান, প্রদীপ বড়ুয়া, শাহ মো. আবদুল্লাহ ও মমতাজ উদ্দিন। প্রথম জন পলাতক আছেন। মারা গেছেন রকিবুল হুদা, বশির উদ্দীন ও আব্দুস সালাম।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রথম পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত। ১৫০টি উপজেলায় এখন জনগণ ভোটের অপেক্ষায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৫৯টি উপজেলায় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন গতকাল শেষ হয়েছে। সেখানেও এখন নির্বাচনী প্রচারণার ডামাডোল শুরু হয়েছে। কিন্তু উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে কি না, উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে কি না এবং উপজেলা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে কি না তা নিয়ে একদিকে যেমন জনগণের সংকট রয়েছে তেমনই নির্বাচন কমিশনও এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।
লক্ষ্মীপুর সদরের তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপরই হামলার শিকার হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নেপথ্যে নির্বাচনে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ। এঘটনায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী দুই প্রার্থীকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ ৯১১ জনের বিরুদ্ধে দুইটি মামলাও দায়ের করেন। ফলে নির্বাচনের পর আনন্দের বদলে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে ওই ইউনিয়নে।