নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
র্যাবের প্রাথমিক অনুসন্ধানে পাপিয়া-মফিজুরের বিপুল পরিমাণ অর্থবিত্ত অর্জনের নেপথ্যের কিছু তথ্য বেরিয়ে এসেছে বলে জানান র্যাব সিও লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল। তিনি বলেন, পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান নরসিংদী এলাকায় অবৈধ অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়ে প্রতারণা, জমির দালালি, সিএনজি পাম্পের লাইসেন্স ও গ্যাস সংযোগ দেওয়ার নামে মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে।
এ পর্যন্ত র্যাবের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পাপিয়া-মফিজুর দম্পত্তি পুলিশের এসআই ও বাংলাদেশ রেলওয়েতে বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার নামে ১১ লাখ টাকা, একটি কারখানায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কথা বলে ৩৫ লাখ টাকা ও একটি সিএনজি পাম্পের লাইসেন্স দেওয়ার নাম করে ২৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। তবে টাকার বিনিময়ে কাউকে চাকরি কিংবা পাম্পের লাইসেন্স ও গ্যাসের সংযোগ দিতে দিতে পারেননি তারা। তবে নরসিংদী এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক, অস্ত্র ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড রয়েছে তাদের, যার মাধ্যমে তারা কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করেছেন।
শাফী উল্লাহ বুলবুল বলেন, পাপিয়া-মফিজুর দম্পত্তির আয়ের আরও একটি উৎস নারীদের দিয়ে জোরপূর্বক অনৈতিক কাজ করানো। তারা চাকরি দেওয়ার নাম করে নরসিংদী থেকে তরুণীদের ঢাকায় নিয়ে আসত। এরপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে তাদের অনৈতিক কাজে যুক্ত হতে বাধ্য করত। রাজধানীর বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেলে অবস্থান করে এসব মেয়েদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করত বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন উদ্ধার হওয়া মেয়েরা।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, নরসিংদীতে পাপিয়া-মফিজুর দম্পত্তির একটি ক্যাডার বাহিনী রয়েছে। ওই ক্যাডার বাহিনীর নাম দিয়েছেন ‘কিউ অ্যান্ড সি’। এই বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যদের হাতে ট্যাটু করা আছে। তাদের কাছে সবসময় আগ্নেয়াস্ত্র থাকে। তাদের দুইটি হাইয়েস গাড়ি দেওয়া হয়েছে, তারা সেই গাড়িতে করে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করে বেড়ায়। তাদের পাঁচটি মোটরসাইকেলও রয়েছে। এসব গাড়িতে করে মাসোহারা আদায়, চাঁদাবাজির টাকা তোলা এবং অস্ত্র ও মাদকের ব্যবসা দেখাশোনা করত তারা। র্যাব তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব-১-এর অধিনায়ক বলেন, তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এই টাকা হুন্ডির কি না, তা এখনো জানতে পারিনি। তবে টাকা ব্যাংকে না রেখে বাসায় কেন রেখেছে- এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি পাপিয়া। আমরা অনুসন্ধান করছি, টাকার উৎস বের হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে র্যাব সিও বলেন, অর্থ পাচার ও জাল মুদ্রা রয়েছে- এমন তথ্যের ভিত্তিতে পাপিয়া, তার স্বামী মফিজুর রহমান ও তাদের দুই সহযোগীকে আটক করা হয়। এরপর সব চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসতে থাকে।
প্রভাবশালী অনেকের সঙ্গেই পাপিয়ার ছবি দেখা গেছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শাফী উল্লাহ বুলবুল বলেন, কোনো অপরাধীর সঙ্গে কারও ছবি থাকা মানেই যে তিনি অপরাধে জড়িত, এমন নয়। কোনো ধরনের পরিস্থিতিতে অনেকের সঙ্গেই অনেকে ছবি তুলে থাকতে পারেন। এগুলো ব্যক্তির অনুমতির বিষয়।
পাপিয়া-মফিজুর দম্পতি ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় অস্ত্র, মাদক ও অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা দায়ের করে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান র্যাব সিও লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।