নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২১ পিএম, ০৯ জুলাই, ২০১৭
সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরকারি কাজে দায়মুক্তি চান। কাজ করার জন্য তাদের যেন মামলা, হয়রানি ইত্যাদি না হয় সেজন্য আইন প্রণায়নের দাবি এবার বেশ জোরেসোরেই উঠেছে।
অতিবৃষ্টির কারণে হাওরের আগাম বন্যায় সরকারি কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ অঞ্চলে বাঁধ নির্মাণ কাজ যথাসময়ে শুরু এবং সম্পন্ন করার বিষয়টি নিয়ে পর্যবেক্ষণ ও বাস্তবায়নে অবহেলা ও অদক্ষতার প্রমাণ পান। এজন্য ১৩ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে শেষ পর্যন্ত সুনামগঞ্জ ও সিলেটের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ১৫ কর্মকর্তা ও ৪৬ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। গত ২৮-৩০ এপ্রিল, সুনামগঞ্জ ও সিলেটের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখান্ত করা হয়। অনিয়ম, দুর্নীতি ও ধীরগতি সংক্রান্ত গুরুতর অভিযোগ তদন্তের জন্য মন্ত্রণালয়ে তদন্ত কমিটি গঠনও করা হয়।
হাওরের দুর্নীতি নিয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ও তাদের ওয়েবসাইটে গত ১৯ জুন একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তবে দুদক এই প্রতিবেদন আমলেই নেয় নি। বরং দুদক নিজস্ব অনুসন্ধানের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে।
এদিকে. সুনামগঞ্জের বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির ঘটনা নিয়ে যুগান্তরের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন আমলে নিয়ে অনুসন্ধানের কাজ করে দুদক। তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করে। সেইসময় ৬১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। তবে দুদক অনুসন্ধানে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ সরাসরি প্রমাণিত হয়নি।
দুদক তার প্রতিবেদনে অভিযোগ করেছে, মন্ত্রণালয় অর্থ ছাড়ে ৫৭ দিন সময় নিয়েছে। কিন্তু হাওর এলাকায় আগাম বন্যা প্রতিরোধ নিস্কাশন ও উন্নয় প্রকল্পের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে এডিপি বরাদ্দ ৮০ কোটি টাকা থেকে ১ম কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব পাওয়ার ৭ কর্মদিবসের মধ্যে ২০ কোটি টাকা এবং ২য় কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব পাওয়ার ৫ কর্মদিবসের মধ্যে ২০ কোটি টাকা ছাড় করা হয়।এতে আরও বলা হয়, আগাম বন্যার কারণে ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে কাজ সমাপ্ত করা যায়নি তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৌখিক নির্দেশে বিল পরিশোধ স্থগিত করা হয়। এ জন্যই ৩য় ও ৪র্থ কিস্তির অর্থ অবমুক্ত করা হয়নি।
সেই ওয়ান ইলেভেন থেকে এমন অবস্থা শুরু হয়েছে। সেই সময় দুদকের বিভিন্ন দুর্নিতী মামলায় অনেক সচিবকে অপদস্ত করা হয়। তখন তারা প্রশাসনের কাজ প্রায় বন্ধই করে দিয়েছিল। সব মামলা প্রত্যাহার করা হবে প্রধানমন্ত্রীর এমন আস্বস্ততায় আবারও কাজে যোগদান তারা।
এরপর পদ্মা সেতু দুর্নীতির ঘটনায় সেতু সচিবকে গ্রেপ্তার করে জনসম্মুখে অপদস্ত করা হয়েছিলো। সেইসময়ও সচিবদের মধ্যে একটা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ওই সময়তেও তারা সরকারের কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেয়। তখন এর সমাধান হিসেবে বলা হয়, সচিবদের বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ জনপ্রসাশনের আয়তায় সমাধান করা হবে।
তবে বর্তমানে হাওরের ঘটনায় যা ঘটেছে, তাতে দুদক তদন্ত করেছে, তদন্ত করে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তারা এ সময় সচিবসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা প্রণয়নের সুপারিশ করে যা তাদের কোনো আইনের মধ্যেই পরে না। এর মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের জনসম্মুখে অনেকটা অপদস্ত করা হয়েছে। এতে আমলাদের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে।
বাংলা ইনসাইডার/টিআর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রথম পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত। ১৫০টি উপজেলায় এখন জনগণ ভোটের অপেক্ষায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৫৯টি উপজেলায় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন গতকাল শেষ হয়েছে। সেখানেও এখন নির্বাচনী প্রচারণার ডামাডোল শুরু হয়েছে। কিন্তু উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে কি না, উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে কি না এবং উপজেলা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে কি না তা নিয়ে একদিকে যেমন জনগণের সংকট রয়েছে তেমনই নির্বাচন কমিশনও এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।
লক্ষ্মীপুর সদরের তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপরই হামলার শিকার হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নেপথ্যে নির্বাচনে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ। এঘটনায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী দুই প্রার্থীকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ ৯১১ জনের বিরুদ্ধে দুইটি মামলাও দায়ের করেন। ফলে নির্বাচনের পর আনন্দের বদলে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে ওই ইউনিয়নে।