ইনসাইড বাংলাদেশ

ব্যর্থতা ঢাকতে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ২১ মে, ২০২০


Thumbnail

করোনা মোকাবেলায় করোনা ভাইরাস, কোভিড-১৯ ইত্যাদি কথার পাশাপাশি সবচেয়ে যে আলোচিত শব্দটি এসেছে, তা হলো ‘ষড়যন্ত্র’। এটি এখন শুধু নয়, বাংলাদেশে যখনই কোনও সংকট দেখা দেয়, যখন কোনও সন্ধিক্ষণ দেখা দেয়, তখন এই ষড়যন্ত্রতত্ত্বটি আসে। নির্বাচনে যে দল পরাজিত হয়, তারা বলে ষড়যন্ত্র। সরকারের সমালোচনা করলে বলা হয় ষড়যন্ত্র। অর্থনীতির গতি প্রকৃতি যদি মন্থর হয়ে যায়, সেখানেও দেখা হয় ষড়যন্ত্র। বাংলাদেশে সরকার, বিরোধীদল সবারই ব্যর্থতা ঢাকার ভালো উপায় হলো ষড়যন্ত্র তত্ত্ব। করোনার সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশে আস্তে আস্তে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ডালপালা মেলছে। আমরা যদি এখন দেখি, মোটামুটি ৫ রকমের ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বাজারে ভাসছে। সেগুলো একটু দেখা নেওয়া যাক-

১. স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ষড়যন্ত্র তত্ত্ব

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মনে করছে যে করোনা মোকাবেলায় তারা যথেষ্ট সফল হয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকার চেয়েও তারা সফল হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সমালোচনা সহ্য করতে পারছে না। যারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজের সমালোচনা করছেন, তাদেরকে এই মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিরা মনে করছেন ষড়যন্ত্রকারী এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে যে, ভেতরে-বাইরে ষড়যন্ত্র চলছে, কাজেই আমাদের চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। ষড়যন্ত্র মোকাবেলার জন্য গণমাধ্যম যেন উল্টোপাল্টা না করে, সেজন্য একটা মিডিয়া সেলও গঠন করা হয়েছে। জেএমআই এর দুর্নীতির কথা যেন গণমাধ্যমে বারবার না আসে, সেজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সদা তৎপর। অর্থাৎ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করলেই সেটি হবে ষড়যন্ত্র। এটি যেন একটি গর্হিত অপরাধ।

২. ত্রাণের তালিকা নিয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি মহৎ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ৫০ লাখ কর্মহীন পরিবারকে তিনি আড়াই হাজার টাকা করে ঈদ উপহার দেওয়ার যে পরিকল্পনা করেছিলেন, সেটা বাংলাদেশে শুধু নয়, সারা বিশ্বেই এক বিরল দৃষ্টান্ত। কিন্তু এই উদ্যোগটি ভেস্তে যেতে বসেছে। এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে এক অদ্ভুত কায়দায়। দেখা যাচ্ছে যে, তালিকায় ভুয়া নামের ছড়াছড়ি। ইতিমধ্যে তালিকা থেকে প্রায় ৮ লাখ নাম দুর্যোগ এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয় বাদ দিয়েছে।

দুর্যোগ এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, একই মোবাইল নম্বরে দুবার টাকা দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সবই তো হলো, কিন্তু এই তালিকা নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হলো, তাতে কার ইমেজ নষ্ট হলো? সরকারেরই তো।

তালিকা নিয়ে সত্যানুসন্ধান করা হচ্ছে, কথা বার্তা বলা হচ্ছে, তখন এর মধ্যে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। বলা হচ্ছে যে, একটি ভালো উদ্যোগকে বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে। একটি ভালো জিনিসকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু এই তালিকা প্রণয়নটাই যে একটা ষড়যন্ত্র, সেই কথাটা আর কে বলবে।

৩. সরকারের সমালোচনা করলেই ষড়যন্ত্র

এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে, কোনও বিষয়েই সরকারের সমালোচনা করা ষড়যন্ত্রের নামান্তর হয়ে গেছে। বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী এখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার। এই আইনটি প্রণয়নের পর থেকেই এর সমালোচনা করা হচ্ছিল। বলা হচ্ছিল যে, এর অপপ্রয়োগ ঘটবে। বাস্তবে তা-ই ঘটেছে। এখন রাষ্ট্রের সমালোচনা আর সরকারের সমালোচনা যেন এক হয়ে গেছে।

সরকারের সমালোচনা করাই গণমাধ্যমের প্রধান কাজ। সরকারের খারাপ কাজগুলো দেখিয়ে দেওয়া, তার অনিয়ম এবং অন্যায়গুলোকে সামনে তুলে আনাই গণমাধ্যমের দায়িত্ব। কিন্তু এখন গণমাধ্যম সমালোচনার জন্য নয়। এখন গণমাধ্যম যদি সমালোচনা করে, সেটা হবে ষড়যন্ত্র।

৪. আওয়ামী লীগের দুর্নীতি নিয়ে ষড়যন্ত্র

করোনাকালে সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছে আওয়ামী লীগের তৃণমূল। স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিরা ত্রাণ চুরির দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন। অনেকের চাকরি চলে গেছে, অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। কিন্তু এই সব নিয়ে যখন আওয়ামী লীগের সমালোচনা করা হবে, আওয়ামী লীগের অবক্ষয় নিয়ে যখন কেউ হতাশা প্রকাশ করবে, সেটার মধ্যেও ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুঁজবে কেউ কেউ। বলা হবে যে, আওয়ামী লীগকে দুর্বল করার জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আওয়ামী লীগের কয়েকজন জনপ্রতিনিধির দুর্নীতি ফুলিয়ে ফাপিয়ে পুরো আওয়ামী লীগকেই দোষারোপ করার একটা প্রবণতা চলছে, এটাও একটা ষড়যন্ত্র।

৫. বিরোধী দলকে বাধা দেওয়ার ষড়যন্ত্র

বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র তত্ত্বে সরকার, বিরোধীদল সবাই সমান। বিরোধী দল তো সারাক্ষণই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব দিয়ে বেড়ায়। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর থেকেই তারা নানারকম ষড়যন্ত্র তত্ত্ব নিয়ে এগিয়ে আসছে। তবে এবার তাদের ষড়যন্ত্র তত্ত্বটি সবচেয়ে চমকপ্রদ। বিরোধীদলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, তাদের ত্রাণ তৎপরতা চালাতে বাধা দেওয়া হচ্ছে এবং এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেছেন যে, ষড়যন্ত্র করে বিএনপির নেতা-কর্মীদেরকে ত্রাণ দিতে দেওয়া হচ্ছে না এবং তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। অবশ্য এই ষড়যন্ত্রের লাভ কি, সেই উত্তর রিজভীর কাছে নেই।

বাংলাদেশে সবকিছুর মধ্যে ষড়যন্ত্র খোঁজার যে অদ্ভুতুরে বাতিক, সেটা বন্ধ করা সরকার। যেকোনো সমালোচনা আসলে প্রশংসার নামান্তর। সমালোচনাকে আলিঙ্গন করে, নিজেদের সংশোধন করেই সরকার এবং বিরোধীদল এগিয়ে যেতে পারে। কিন্তু অসহিষ্ণুতার কারণে সমালোচনাগুলো সহ্য করার মানসিকতা ইদানিং প্রায় লোপ পেতে চলেছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্য এটি কখনই শুভ নয়।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

জাতীয় অর্থনীতির চাকা সচল রাখে শ্রমিকরা: খাদ্যমন্ত্রী

প্রকাশ: ০২:০৯ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন,  শ্রমিকরাই জাতীয় অর্থনীতির চাকা সচল রাখে। তাই শ্রমিকদের জন্য কর্মবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। উন্নত কর্মপরিবেশ শ্রমিকের কর্মদক্ষতা ও প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। তাই শোভন কর্মপরিবেশ তৈরিতে বিনিয়োগ করতে হবে।

‘শ্রমিক মালিক গড়ব দেশ; স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ এ প্রতিপাদ্যে দেশে পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস। বুধবার (১ মে) সকালে নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয় শ্রমিক লীগ নওগাঁ জেলা শাখা আয়োজিত মহান মে দিবসের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমার বাংলার মাটি যদি থাকে, মানুষ যদি থাকে, একদিন এই বিধ্বস্ত বাংলাকেই আমি সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলা বাংলায় রূপান্তরিত করব।’ বাংলাদেশ এখন খাদ্য শষ্য উৎপাদনে স্বয়সম্পূর্ণ। বঙ্গবন্ধু বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন সর্বদা। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ উন্নয়ন হয়েছে, হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। শ্রমিকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের কল্যাণে মালিকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের মজুরি বৃদ্ধি করেছেন। দেশের ভেতরে ও বাইরে কর্মরত শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রমে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অচিরেই স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে।

অনুষ্ঠানে নওগাঁ সদর আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এম এ খালেক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাভেদ জাহাঙ্গীর সোহেল, বিভাস মজুমদার গোপাল, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ বকুল, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. আব্দুল মজিদ, ছাত্রলীগের সভাপতি সাব্বির রহমান উপস্থিত ছিলেন।

পরে এক বর্ণাঢ্য র্যালি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।


খাদ্যমন্ত্রী   সাধন চন্দ্র মজুমদার   শ্রমিক   মে দিবস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বেনাপোলে সড়ক দুর্ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যু


Thumbnail বেনাপোল পোর্ট থানা

বেনাপোল পৌরসভার ঢাকা-বেনাপোল হাইওয়ে সড়কের রজনী ক্লিনিক এর সামনে দুইজন বাইসাইকেল চালক ও ঢাকা থেকে বেনাপোলগামী বাসের মধ্যে দুর্ঘটনায় গোলাম মোস্তফা (৪৮) নামে এক ধান কাটা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় তার সঙ্গী আনিসুর রহমান (৩৩) নামে আর একজন শ্রমিক মারাত্মক আহত হয়েছেন। 

 

বুধবার (০১ মে) সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত গোলাম মোস্তফা ও আহত আনিসুর রহমান উভয় শার্শা উপজেলার লাউতাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় বাসের চালক, সুপারভাইজার এবং হেলপার পলাতক রয়েছে। 

 

বেনাপোল পৌরসভার কাউন্সিলর শাহীন আলম জানান, ‘আমার পার্শ্ববর্তী লাউতাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফা ও আনিসুর রহমান দুইজনই মাঠে ধান কাটার শ্রমিক। তারা কাজের সন্ধানে বাইসাইকেল চালিয়ে বেনাপোল বাজারের উদ্দেশ্যে স্থানীয় রজনী ক্লিনিকের সামনে দিয়ে আসছিল। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দ্রুতগামী একটি বাস তাদেরকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে গোলাম মোস্তফা মারা যায়। এবং আনিসুর রহমান মারাত্মকভাবে আহত হয়। আনিসুরকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে নাভারন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।’

বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সুমন ভক্ত সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন শ্রমিক হতাহতের ঘটনা স্বীকার করে জানান, সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে সেখানে ফোর্স পাঠায়। সেখান থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার এবং আহতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহটি যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 


সড়ক দুর্ঘটনা   শ্রমিক   ধানকাটা   ময়নাতদন্ত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা বঞ্চিত করলে ছাড় নেই: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০১:১১ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা বঞ্চিত করলে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন হলেও ছাড় নেই বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ৯৬ সালে বিরোধী দলে থাকাকালে আমি শ্রমিকদের দেখেছি তাদের মজুরি ছিল মাত্র ৮০০ টাকা। তখন সরকারে এসে আমরা মজুরি বাড়িয়েছিলাম। যতবার সরকারে এসেছি ততবারই মজুরি বৃদ্ধি করেছি। শ্রমিকদের আরো উপযুক্ত করে গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।

বুধবার (১ মে) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মে দিবস উপলক্ষ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, খেটে খাওয়া মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য। সরকার চায় দক্ষ জনশক্তি গড়ে উঠুক। আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়েছে। শ্রমিকদের কল্যাণ দেখা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বাধীনতার পর মে দিবসকে প্রথমে শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন। রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতিও দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, মা যেমন একটা রুগ্ন সন্তানকে বুকে নিয়ে লালন-পালন করে গড়ে তোলেন, ঠিক সেভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বাধীনতার পর শূন্য হাতে একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব হাতে নিয়ে সব কলকারখানা জাতীয়করণ করেন। শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নেন। তাদের কর্মসংস্থান যাতে ঠিক থাকে সে পদক্ষেপটাই তিনি হাতে নিয়েছিলেন। 

শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য মজুরি কমিশন গঠনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, মে দিবসের সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু। এদেশে মানুষের মধ্যে যে বৈষম্য সে বৈষম্য তিনি দূর করতে চেয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, খেটে খাওয়া মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই আওয়ামী লীগের একমাত্র লক্ষ্য। আমরা সব সময় সেই পদক্ষেপ নিই। জাতির পিতা যখন দেশটাকে গড়ে তুলেছেন, তখন যে সব মালিক বাংলাদেশে ছিল শিল্প কলকারখানা মালিক তারা হবেন। আর যেগুলো মালিকানাবিহীন সেগুলো সরকার চালাবে। সে ব্যবস্থাও তিনি করেছিলেন, সরকারি খাতকেও গুরুত্ব দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, মাত্র নয় মাসের তিনি আমাদের একটি সংবিধান দেন। সংবিধানের ১৩ অনুচ্ছেদে আমাদের অর্থনৈতিক নীতিমালা কী? সেটা কিন্তু স্পষ্ট বলা আছে। সেখানে যেমন সরকারি প্রতিষ্ঠার থাকবে, সমবায় হবে এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থাকবে। অর্থনীতিকে বহুমুখী করে মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, মানুষের জীবনমান উন্নত করার এটাই ছিল জাতির পিতা লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়ে তিনি কাজ করেছেন।

সরকারপ্রধান বলেন, ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। আমরা সরকার গঠন করে আমাদের প্রধান কাজ হলো মানুষের কল্যাণ করা। সেই প্রচেষ্টাই আমরা হাতে নিয়েছিলাম। আমরা আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। ২০০৮ নির্বাচনের ইশতেহারে আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।

আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মো. মাহবুব হোসেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এইচ এম ইব্রাহীম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) সভাপতি আরদাশীর কবির, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর কুতুব আলম মান্নান।

 


প্রধানমন্ত্রী   মে দিবস   শ্রমিক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

নওগাঁয় অবৈধ ইটভাটায় অভিযান, ৯ লক্ষ টাকা জরিমানা

প্রকাশ: ০১:১০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail নওগাঁয় অবৈধ ইটভাটায় অভিযান

জেলায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ৬ টি ইটভাটাকে ৯ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় ইটভাটাগুলোর কিলন ভেঙ্গে দিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) এ তথ্য জানান নওগাঁ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মলিন মিয়া।

 

এর আগে, রোববার (২৮ এপ্রিল) ও সোমবার (২৯ এপ্রিল) জেলার পত্নীতলা ও বদলগাছী উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে ওই ছয়টি ভাটাকে জরিমানা করা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট উইংয়ের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা সালেহা সুমী এ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে মোবাইল কোর্টে প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নওগাঁ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয়ের পরিদর্শক উত্তম কুমার। এ সময় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সহযোগিতা করেন।


ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, পত্মীতলা ও বদলগাছী উপজেলায় বেশ কিছু অবৈধভাবে ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে। বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরের নজরে আসে। সেই সূত্র ধরে অভিযানে নামে পরিবেশ অধিদপ্তর।

 

অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্র না থাকা, খড়ি পোড়ানো ও সঠিক পদ্ধতিতে ভাটার কার্যক্রম পরিচালনা না করায় পত্নীতলা উপজেলার ছালিগ্রাম এলাকার মেসার্স এমএবি ব্রিকসকে ৫০ হাজার টাকা, কাশিপুর এলাকার বিএসপি ব্রিকসকে ৫০ হাজার টাকা, বালুঘা এলাকার এসবিবি এফ ব্রিকসকে ১ লাখ টাকা ও চক দুর্গারায়াম এলাকার ফাতেমা ব্রিকসকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

 

এছাড়া বদলগাছী উপজেলার বুড়িগঞ্জ বাজার এলাকার আদিল ব্রিকসকে ৩ লাখ টাকা এবং এমবিএফ ব্রিকসকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি ইটভাটা ভেঙ্গে দিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।


অভিযান পরিচালনা শেষে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা সালেহা সুমী বলেন, যেসব অবৈধ ইটভাটা রয়েছে সেগুলো পরিবেশ সুরক্ষায় বিরূপ প্রভাব ফেলছে। আমাদের মন্ত্রণালয়ের নতুন মন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দেশে যেসব অবৈধ ইটভাটা আছে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে জিরো টলারেন্স পদক্ষেপ নিয়েছে। এজন্য অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করতে সারা দেশে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সেই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গত দুইদিন থেকে নওগাঁর পত্নীতলা ও বদলগাছি উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করে ছয়টি ইটভাটাকে ৯ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরিবেশ সুরক্ষায় এমন অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।


এর আগে, মার্চ মাসে সদর ও মান্দা উপজেলায় অবৈধভাবে গড়ে উঠা ৬ টি ইটভাটায় ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।


ইটভাটা   অবৈধ   বন্ধ   জরিমানা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

চার মাসে নিহত ৩৬ শ্রমিক

প্রকাশ: ০১:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

দেশে নানা কারণে নির্যাতনের পাশাপাশি শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনাও বাড়ছে। দেশে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) পর্যন্ত ১২৯ জন শ্রমিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৬ জন। আহত হয়েছেন ২১৩ জন। কারখানা, বাসাবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং সড়ক ও নৌপথে এসব ঘটনা ঘটেছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর পাশাপাশি মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রতিটি ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছে। তবে পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। প্রায়ই শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনায় নিহতের ঘটনা ঘটছে।

এইচআরএসএসের তথ্যে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে ৯২টি শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১২৮ জন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাবে দুর্ঘটনায় ৪৪ জন শ্রমিক মারা গেছেন। এ সময়ে সাতটি গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় ছয়জন নিহত হয়েছেন।

আহত হয়েছেন একজন। এ ছাড়া এপ্রিল মাসে ৩৭টি শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১১ জন শ্রমিক। এ সময়ে নির্যাতনে আহত হয়েছেন ৮৫ জন। এপ্রিল মাসে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাবে দুর্ঘটনায় ১৭ জন শ্রমিক মারা গেছেন।


শ্রমিক   নিহত ৩৬  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন