নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৯ জুন, ২০২০
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এবং ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রের দুই মহীরুহ। দুজনেই জীবন্ত কিংবদন্তি। ডা. জাফরুল্লাহর লন্ডনে উচ্চতর ডিগ্রী গ্রহণের সময় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। দেশমাতৃকার ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি উচ্চতর ডিগ্রী গ্রহণ না করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। একের পর এক নতুন ধরণের সৃষ্টিশীল কাজে নিজেকে আত্ননিয়োগ করেছেন। আর ডা. এবিএম আব্দুল্লাহও বাংলাদেশে মেডিসিন চিকিৎসায় জীবন্ত কিংবদন্তি। রোগীকে সুস্থ করার মতো মানবিক দায়িত্ব এবং গরীব মানুষকে চিকিৎসার জন্য তিনি জনপ্রিয় আলোচিত এবং প্রশংসিত। এখন তিনি প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রের এই দুই জীবন্ত কিংবদন্তির সাক্ষাৎ হলো আজ। তবে এই সাক্ষাতে প্রবীণতম ব্যক্তিটি রোগী এবং ডা. আব্দুল্লাহ চিকিৎসক। এই দুই মানুষের সাক্ষাৎ বাংলাদেশের হিংসার আবহে এক নতুন বাতাস তৈরী করলো।
গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাটা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে আজ দেখতে যান ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ। বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে দেখতে যাওয়ার কথা স্বীকার করে ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন যে, তিনি একজন প্রবীণ চিকিৎসক এবং আমার সঙ্গে তার সুসম্পর্ক রয়েছে। তিনি এমন অসুস্থ এজন্য আমার দায়িত্ববোধ থেকে দেখতে গিয়েছি। গণস্বাস্থ্যে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত ডা. জাফরুল্লাহ শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো তার ফুসফুসে সংক্রমণ রয়েছে।
ডা. এবিএম আব্দুল্লাহকে যখন জিজ্ঞেস করা হয় কেমন দেখলেন? তিনি বলেন, তার মনোবল অত্যন্ত শক্ত। কিন্তু তার দুটি কিডনী নষ্ট এবং তার ডায়ালাইসিস নিয়ে চলতে হয়। এখনো তার ফুসফুসে কিছুটা সংক্রমণ রয়েছে।
ডা. আব্দুল্লাহ বলেন যে, আমি কিছু পরীক্ষা করেছি। আর কিছু টেস্ট দিয়েছি। ডা. জাফরুল্লাহর চিকিৎসা যে টিম করছে তারা ভালো চিকিৎসা করছে। তাদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। এই টেস্টের রিপোর্টগুলো পাওয়ার পর আমি আবার দেখবো।
জাফরুল্লাহকে ডা. আব্দুল্লাহর দেখতে যাওয়ার মধ্যে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সুস্থ ধারা এখনো রয়েছে তা আরেকবার প্রমানিত হলো। কারণ প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক হওয়া সত্বেও পেশাগতভাবে সিনিয়র এবং শ্রদ্ধাভাজন ডা. জাফরুল্লাহকে তিনি দেখতে গেলেন। দুজনের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর।
ডা. জাফরুল্লাহও তাকে দেখতে যাওয়াতে বেশ খুশি হয়েছেন। তিনি বলেছেন, আব্দুল্লাহ অত্যন্ত উচু এবং আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসক। তার পরামর্শগুলো আমি শুনেছি। তিনি যে টেস্টগুলো করতে দিয়েছেন, তা আমাকে যারা পরীক্ষা করছেন তারা দেখছেন। চিকিৎসক হিসেবে শুধু নয়। মানুষ হিসেবেও ডা. আব্দুল্লাহ অত্যন্ত উদার এবং উচু মানের।
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জেলা প্রশাসক সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।