নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৮ পিএম, ১০ অগাস্ট, ২০২০
রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারক সাহেদকে অর্থ পাচারের মামলায় আরো ৭ দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। এর আগে অস্ত্র মামলায় তাঁকে সাতক্ষীরায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেখানে তিনি কারাগারে কয়েকদিন যাপন করেন, এখন তাঁকে আবার রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে। র্যাব রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারক সাহেদের বিষয়ে তদন্ত করছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে দুই শতাধিক অভিযোগ এসেছে বিভিন্ন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে যে, সাহেদের ব্যাপারে যে অভিযোগগুলো তার সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে। প্রতারণার মাধ্যমে শত-শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই সাহেদ এবং তাঁর প্রতারণার জাল সর্বত্র বিস্তৃত ছিল। শুধুমাত্র ভূয়া রিপোর্ট দিয়েই সাহেদ কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার টাকার উৎসের সন্ধান পায়নি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। র্যাবের একটি সূত্র বলছে যে, সে কি পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছে এবং কোথায় পাচার করেছে এই বিষয়টি তদন্তের জন্যে তাঁরা সিআইডি’র সহায়তা নেবেন এবং সিআইডি’র মাধ্যমে তাঁরা অর্থের অনুসন্ধান করবে। তাঁর অর্থগুলো কোথায় আছে এবং কিভাবে সে খরচ করেছে সে ব্যাপারে কোন কূলকিনারা পাচ্ছে না আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। অথচ তথ্য-উপাত্ত বলছে যে, সাহেদ প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় শতকোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে। প্রশ্ন উঠেছে যে, এই আত্মসাতের টাকা তাহলে গেল কোথায়? এই ব্যাপারে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এখন পর্যন্ত অনুসন্ধান করছে এবং এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কোন তথ্য দিতে পারছে না। কিন্তু সাহেদের কার্যক্রম যদি পর্যালোচনা বা বিশ্লেষণ করা যায় তাহলে ধারণা করা যায় যে, সাহেদ প্রতারণার এই টাকা হয়তো ৩ ভাবে সরিয়ে ফেলতে পারে।
প্রথম ধারণা, বেনামে বিনিয়োগ করেছে সাহেদ। সাহেদ অত্যন্ত ধূর্ত এবং প্রতারক। কাজেই সে জানতো যে, আজ বা কাল হোক তাঁকে আইনের আওতায় আসতেই হবে। বিশেষ করে ২০১৬ সালে যখন প্রতারণার অভিযোগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁকে তালিকাভুক্ত প্রতারক ঘোষণা করে তখন থেকেই সে জানতো যে একদিন না একদিন তাঁকে ধরা পড়তেই হবে। এরপর থেকেই তিনি সতর্ক ছিল এবং নিজের নামে বা নিজের একাউন্টে তেমন কোন টাকা রাখেনি। বরং বিভিন্ন স্থানে টাকা গুলো বিনিয়োগ করেছে বেনামে। কাজেই এটা খুঁজে বের করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
দ্বিতীয় যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তা হলো, সাহেদ হয়তো টাকাগুলো বেনামে বিদেশে পাচার করেছে। কারণ জানা গেছে যে, সাহেদ বাংলাদেশ থেকে ভারতে এবং ভারত থেকে সিঙ্গাপুরে পালাতে চেয়েছিল। সিঙ্গাপুরে কেন পালাতে চেয়েছিল সেই উত্তর খোঁজা হলে সাহেদের টাকার উৎসের একটি যোগসূত্র পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন অনেকে। কারণ সাহেদ হয়তো তাঁর মোটা অঙ্কের টাকা চোরাই পথে বা হুন্ডির মাধ্যমে সিঙ্গাপুর বা অন্য কোথাও পাচার করেছে।
তৃতীয়ত ধারণা হচ্ছে, সাহেদের অনেক গডফাদার ছিল, যারা সাহেদকে এই অবস্থানে নিয়ে আসতে সহায়তা করেছে। এই সমস্ত গডফাদাররা সাহেদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতো এবং সাহেদকে অপকর্মগুলো করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতো। এমনও হতে পারে যে, সাহেদ তাঁদের হয়ে অর্থগুলো উপার্জন করেছে। তাঁরা নিজেদের অংশ পেয়েছে এবং সাহেদ নিজের অংশ হয়তো অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছে। আর এইজন্যেই হয়তো তাঁর কাছে তেমন বেশি টাকা পাওয়া যাচ্ছে না।
আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা বলছে, যেহেতু তাঁরা সাহেদকে ধরেছে এবং সাহেদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত প্রতারণা- অর্থ জালিয়াতির অভিযোগগুলো আসছে সেগুলো প্রমাণিত। যেমন করোনা পরীক্ষার নামে তিনি কোটি-কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছে- যা প্রমাণিত, বিভিন্ন মানুষকে সে ভুয়া চেক দিয়েছে- তাও প্রমাণিত। এই অর্থগুলো কোথাও না কোথাও অবশ্যই আছে। কারণ সাহেদ কোথাও ঠিকভাবে টাকা দিতো না। এমনকি রিজেন্ট হাসপাতাল যে বাড়িতে ছিল, সেই বাড়ির ভাড়াও দিতো না। কাজেই সাহেদের টাকার খোঁজ পাওয়াটাই এখন তদন্তের একটি বড় উপজীব্য বিষয়। কারণ সাহেদের টাকা কোথায় আছে, এটা খোঁজ পেলে তাঁর অপরাধের সঙ্গে কারা কতটুকু সংযুক্ত তাও বেরিয়ে আসবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।