নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১২ অগাস্ট, ২০২০
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদকে আজ দুর্নীতি দমন কমিশন তলব করেছিল। করোনাকালে স্বাস্থ্যখাতের একাধিক দুর্নীতির বিষয়ে পরপর দুইদিন তাঁকে দুদকে হাজির হতে হচ্ছে। আজ ছিল প্রথম দিন। আজ দুদকে হাজির হয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক নিজেকে সৎ বলে দাবি করেছেন এবং বলেছেন যে, তিনি কোন অন্যায় বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না এবং যদি কোন অন্যায় বা দুর্নীতি হয়ে থাকে, সেটা তদন্তের জন্যে যদি কোন সহযোগিতার দরকার হয় তাহলে সব ধরণের সহযোগিতা করতে তিনি প্রস্তুত রয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালকের এই বক্তব্যে অনেকের চক্ষু চড়ক গাছ। কারণ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে তিনি যে সময়টাতে দায়িত্ব পালন করেন সে সময়টাতে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ছিল দুর্নীতির আখড়া। এই সীমাহীন দুর্নীতির চিত্র গণমাধ্যমে যেমন প্রকাশিত হয়েছে, তেমনি দুদকের কাছেও আছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে এই সমস্ত দুর্নীতির দায় তিনি এড়াতে পারেন না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে যেকোন অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার দায়দায়িত্ব তাঁর উপরে বর্তায়। তাই নিজেকে সৎ দাবি করলেও তাঁর সময়কালকে বলা হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সবচেয়ে দুর্নীতির সময়। আর তাঁর সময়ে প্রধান প্রধান যে দুর্নীতিগুলো হয়েছিল, তাঁর কয়েকটি উদাহরণ এখানে উপস্থাপিত করা হলো-
মিঠু কেলেঙ্কারি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুর্নীতির কথা বললে সবার আগে আসে মিঠুর নাম। ২৩ টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মিঠু ইচ্ছেমতো ব্যবসা করেছেন এবং এই সমস্ত ব্যবসায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাই তাঁকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক বকেয়া বিলের নামে তাঁকে বছরে বছরে কোটি কোটি টাকা দিয়েছেন, যেগুলোকে বলা হয় ‘ভূতুড়ে বিল’। মিঠুর সহযোগী আবজাল একজন নিম্নস্তরের কর্মচারী হয়েও যে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন তার দায় আবুল কালাম আজাদ কিভাবে এড়াবেন?
কেনাকাটায় দুর্নীতি
বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর দুদকের পক্ষ থেকে একটি সুপারিশমালা দেওয়া হয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে। সেই সুপারিশমালায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যেসমস্ত কেনাকাটা হয় তাঁর বিষয় তথ্য উপস্থাপিত হয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর দুদকের ঐ সুপারিশ আমলে নেয়নি। অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কেনাকাটা মানেই ছিল দুর্নীতি। যেকোন ধরণের বইপত্র থেকে শুরু করে যেকোন মেশিন কেনাকাটায় বেসুমার দুর্নীতি হয়েছে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়ে যত মামলা করেছে অন্য কোন মন্ত্রণালয় নিয়ে এত মামলা করেনি।
সফটওয়্যার বাণিজ্য
অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক থাকাবস্থায় সবথেকে বড় দুর্নীতি হয়েছে সফটওয়্যার কেনাকাটায়। এমনকি এমআইএস থেকে যে সমস্ত সফটওয়্যার কেনা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নথিপত্রে দেখা যায় সে সমস্ত সফটওয়্যারগুলো ছিল ওপেন সোর্স থেকে প্রাপ্ত। যেগুলোর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এবং অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ এক সময় এমআইএস-এর লাইন ডিরেক্টর ছিলেন। এই সফটওয়্যার কেনাকাটাতেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক দায় এড়াতে পারেন না।
করোনা কেলেঙ্কারি
করোনার সময়ে একাধিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই কেলেঙ্কারির মধ্যে ছিল মাস্ক-পিপিই কেলেঙ্কারি, জেকেজি কেলেঙ্কারি এবং সর্বশেষ রিজেন্ট হাসপাতালের কেলেঙ্কারি। এই সবগুলো কেলেঙ্কারির দায়দায়িত্ব অবশ্যই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নিতে হবে। তিনি যদি সৎ হয়ে থাকেন তাহলে এই ধরণের দুর্নীতি কিভাবে হবে? তাহলে কি তিনি অযোগ্য ছিলেন? সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, রিজেন্ট হাসপাতালের ভূয়া রিপোর্টের ব্যাপারে যখন নিপসম থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, তখনো তিনি তাঁর প্রতিকার করেন নি কেন? এমনকি জেকেজি’কে কেন তিনি করোনা নমুনা সংগ্রহের দায়িত্ব দিয়েছিলেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর তাকেই দিতে হবে।
সিএমএসডি’র পরিচালকের চিঠি
সিএমএসডি’র পরিচালকের চিঠি স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির একটি অমূল্য দলিল বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। এই চিঠির মধ্যে স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির একটি রূপচিত্র আঁকা হয়েছে এবং সেখানে মহাপরিচালকের ভূমিকা এবং সংশ্লিষ্টতার কথাও লেখা আছে। এই চিঠির বক্তব্যের সত্যতা আবুল কালাম আজাদ কিভাবে অস্বীকার করবেন?
অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদকে যখন দুদক জিজ্ঞাসাবাদ করছে তখন নিশ্চয়ই স্বাধীন এবং নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করবে এবং এইসব প্রশ্ন, যেগুলো জনমনে আছে সেগুলোর উত্তরও খোঁজার চেষ্টা করবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে বজ্রপাতে হতদরিদ্র কৃষি শ্রমিক পরিবারের শেষ সম্বল দুটি গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার উওর শ্রীপুর ইউনিয়নের নতুন হাটি গ্রামে
এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার তরং নতুন হাটি গ্রামের মৃত নুর জামালের ছেলে হতদরিদ্র কৃষি শ্রমিক আসাদ খান সোমবার (৬ মে) সকালে বাড়ির সামনে থাকা পালই হাওরের কান্দায় ঘাঁস খাওয়ার জন্য দুটি গরু বেধে রেখে আসেন। এরপর কাল বৈশাখী ঝড়ের সাথে বজ্রপাত পড়লে গরু দুটি হাওরের কান্দায় মারা যায়।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষি শ্রমিক আসাদ খান বলেন, ‘আমি বোরো মৌসুমে কৃষি শ্রমিক হিসাবে কাজ করি, বর্ষায় ফেরী নৌকা চালিয়ে ৫ জনের সংসারের ভরণ পোষণ চালাই। শ্রমের টাকায় গত দুই বছর আগে ৮০ হাজার টাকায় গরু দুটি কিনে লালন পালন করি। ইচ্ছে ছিল আগামী কোবারবানীর হাটে কমপক্ষে দেড় লাখ টাকায় গরু দুটি বিক্রি করে সংসারের কিছুটা স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনব কিন্তু আমার শেষ সম্বল দুটি গরু বজ্রপাতে মারা গেল।’
উপজেলার উওর শ্রীপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দেলেয়ার হোসেন তালুকদার জানান, ‘সরকারি কিংবা কোন এনজিও সংস্থা থেকে আর্থিক সহায়তা অথবা দুটি গরু কিনে দিয়ে সহায়তা করলে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষি শ্রমিক আসাদের পরিবার আবারো আশার আলো দেখবে।’
মঙ্গলবার (৭ মে) সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, ‘বজ্রপাতে দুটি গরু মারা গেছে জেনেছি, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষি শ্রমিককে সরকারি ভাবে সহায়তার সুযোগ থাকলে অবশ্যই সহায়তা করা হবে।’
মন্তব্য করুন
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী সরকারি চাকরি জনপ্রশাসন মন্ত্রী চাকরির বয়সসীমা
মন্তব্য করুন
দেশের ব্যাংকিং খাতে সবচেয়ে লোকসানে পড়া ব্যাংক হচ্ছে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড (এনবিএল)। আর এই ব্যাংক একটা লম্বা সময় ধরে আলোচনায় রয়েছে নানা ইস্যু নিয়ে। তবে এবার নতুন এক ঘটনায় ফের খবরের শিরোনাম হয়েছে এই ব্যাংক।
ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড (এনবিএল) গতকাল সোমবার একটি সংবাদ সম্মেলন করেছে। সেখানে নতুন বোর্ড বলেছে যে, তারা শেয়ারহোল্ডারদের মাধ্যমে এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এরপর সাংবাদিকদের হাতে নাস্তার প্যাকেট তুলে দেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। সেই প্যাকেটটি নেওয়ার পর দেখা যায়, এর ভেতরে 'পাঁচ হাজার টাকা' লেখা খাম।
জানা গেছে, এনবিএলের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানও। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ন্যাশনাল ব্যাংক আপনাদের ব্যাংক। পাশাপাশি সাংবাদিকরা যেন এই ব্যাংক নিয়ে ইতিবাচক লেখেন এমন আশার কথাও জানান। এরপরই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে মিটিং আছে বলে সেখান থেকে বেরিয়ে যান। এরপরই সংবাদ সম্মেলন শেষ করে দেওয়া হয়।
সেখান থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের হাতে নাস্তার প্যাকেট তুলে দেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। সেই প্যাকেট খুলতেই দেখা যায়, এর ভেতরে 'পাঁচ হাজার টাকা' লেখা খাম। তা দেখে কয়েকজন সাংবাদিক প্যাকেট না নিয়েই ব্যাংক থেকে বেরিয়ে যান।
এনবিএলের সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়া এক সাংবাদিক গণমাধ্যমকে বলেন, সংবাদ প্রচারের জন্য সাংবাদিকদের টাকা দেওয়া একটি ব্যাংকের জন্য খুবই বিব্রতকর।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে তিন হাজার ২৮৫ কোটি টাকা লোকসানের পর ২০২৩ সালে এক হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা লোকসানের মুখে পড়ে এনবিএল। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, এনবিএলের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা। এটি ব্যাংকটির মোট বিতরণ করা ঋণের ২৮ দশমিক ৯২ শতাংশ।
ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড এনবিএল
মন্তব্য করুন
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে আল আমিন (২০) নামে এক কয়লা শ্রমিক আটক হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ মে) বেলা ১১টার দিকে ২৮-বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বিজিবি’র সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাট সীমান্তের ওপার থেকে তাকে বিএসএফ আটক করে নিয়ে যায়।
আটক আল আমিন উপজেলার পুরানখালাস গ্রামের মৃত শহীদ মিয়ার ছেলে। গত কয়েক বছর ধরে উপজেলার সীমান্তগ্রাম লাকমায় সে বসবাস করে আসছে।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২৮-বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বিজিবি’র সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাট সীমান্তের ১১৯৮ মেইন পিলারের ওয়ান-এস সাব পিলার অতিক্রম করে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে ভারতের অভ্যন্তরে পাহাড়ে থাকা কোয়ারি থেকে চোরাচালানের কয়লার বস্তা আনতে যায় আল আমিন। এরপর ভারতের বিএসএফ বড়ছড়া কোম্পানী হেডকোয়ার্টারের একটি টহল দল আল আমিনকে আটক করে বিএসএফ কোম্পানী হেডকোয়ার্টারে নিয়ে যায়।
মঙ্গলবার বিকেলে ২৮-বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বিজিবি’র সুনামগঞ্জের টেকেরঘাট কোম্পানী হেডকোয়ার্টারের বিজিবির কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার কামাল হোসেনের নিকট বিএসএফের হাতে কয়লা শ্রমিক আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,বিএসএফের হাতে কোন শ্রমিক আটক হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই।
মন্তব্য করুন
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবারের মন্ত্রিসভায় অন্যতম বড় চমক ছিলেন। ৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের ভূমিধ্বস বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হয় এবং এই নতুন মন্ত্রিসভায় উপ মন্ত্রী থেকে পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব পান মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তার শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্তিটা ছিল একটা বড় ধরনের চমক। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে নানা রকম প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। অনেকেই মনে করেছিলেন যে, প্রধানমন্ত্রীর এটি একটি ইতিবাচক দিক। তরুণদেরকে সামনে নিয়ে আসার জন্য তিনি যে সচেষ্ট সেই বার্তাটি তিনি মহিবুল হাসান চৌধুরীকে পূর্ণমন্ত্রী এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়ে প্রমাণ করেছেন।