নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৮ অক্টোবর, ২০২০
হঠাৎ করেই ঘুণ পোকার কথা মনে পড়ছে। আমাদের বাসায় থাকা কাঠের আসবাবে ঘুণ ধরে। বাইরে থেকে দেখতে পরিপাটি হলেও ভিতরটা ঘুণ পোকায় খেয়ে পরে একদিন হঠাৎ করেই কাঠের খাট, সোফা, চেয়ার, ইত্যাদি আচমকা ভেঙ্গে পড়ে বিব্রত করে, অনেক সময় মহা বিপথে ফেলে দেয়। ঘুণ পোকা এক ধরনের কাঠখেকো পতঙ্গ। লার্ভা দশায় এরা কাঠ গর্ত করে এবং তা খেয়ে বেঁচে থাকে। বোরন পাউডার পানিতে মিশিয়ে হাল্কা ঘনত্বের তরল তৈরি করে সিজনড করা শুকনা কাঠের আসবাবে ফিনিসিং দেওয়ার আগে বা ঘুণ ধরা শুরু হবার পরে তা ছিটিয়ে মানে স্প্রে করে দিলে এই ঘুণ পোকা দমন করা যায়। তবে বোরন পাউডারের তরল ছিটানোর আগে চোখ, নাক, মুখ ভাল করে ঢেকে নিতে হয় তা না হলে নিশ্চিত ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।
আমাদের দেশের বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে সমাজের সব ক্ষেত্রেই ঘুম পোকা লেগেছে। অর্থনীতি বাদে সব খাতেই ঘুণ পোকার দুর্দান্ত আক্রমণে ভিতরটা ঝর ঝরে অবস্থা। কাঠের আসবাবের মত বাইরে থেকে চকচকে পলিশ বা নকশা করা পেইন্ট দেখেই আমরা বিমোহিত হয়ে তা কিনে আনি ঘরে। কিছু দিন না যেতেই দেখি তা ঘুণে ধরেছে, মানে কাঠ হয় কাঁচা ছিল বা অপরিপক্ব ছিল কিংবা সাবধানতা হিসেবে বোরন পাউডারের তরল ছিটানো হয়নি অই আসবাবে ফিনিসিং দেওয়ার আগে।
সাধারণত অপরিপক্ব ও কাঁচা কাঠে ঘুণ ধরে বেশি তাড়াতাড়ি। পরিপক্ব কাঠেও ঘুণ ধরে যদি তা সিজনড করা না হয়। আমাদের দেশের বিভিন্ন পরিবার ও সমাজে মূল্যবোধের বোরন পাওডারের তরল ছিটানো হয় না বলে পরিবার ও সমাজের মূল্যবোধে চরম আকারে ঘুণ ধরেছে। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক মূল্যবোধ নেই বলে নেই সামাজিক মূল্যবোধে ঘুণ ধরেছে। তাই আমরা যেন তেন উপায়ে ইচ্ছা পূরণে বেপরোয়া। তাই সারা দেশে চলছে ধর্ষণ ও বলাৎকারের মহামারি। ভাবটা এমন যে, অপরাধ দমনে জন প্রতি একজন করে সৎ পুলিশ নিয়োগ দিতে হবে।
আমাদের এই ঘুণে ধরা সমাজের মানুষেরাই দায়িত্ব পাচ্ছেন বিভিন্ন সেবা ধর্মী বা পরিসেবা দান কারী প্রতিষ্ঠানে। প্রশাসনে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থায়, বিচার বিভাগে, সব খানেই। তাই তো হালের টক অফ দা কান্ট্রি স্বতন্ত্র সাংসদ নিক্সন চৌধুরীর অশ্রাব্য ভাসায় দেওয়া গালি কী তিনি স্বেচ্ছায় হয়ে দিয়েছেন, নাকি তাকে প্ররোচিত করা হয়েছে তা বিচারের বিষয় হলেও এসব খানেই ঘুণের উপস্থিতির প্রমাণ মেলে।
রাজনীতি নিয়ে একজন কলামিস্ট আক্ষেপ করে বলেছেন, ‘বাংলাদেশে প্রায় ১৭ কটি মানুষ হলেও দেশে আওয়ামী লীগারের সংখ্যা প্রায় ১৮ কট মনে হচ্ছে’। এর মানে এটা দাঁড়ায় যে, কাঁচা ছিল বা অপরিপক্ব রাজনৈতিক কর্মীরা ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের দখল নিয়েছেন আসবাবের মত পলিশ করা দৃষ্টিনন্দন রঙ দিয়ে, গুন দিয়ে নয়। তাই ভিতরে যে ঘুণ আছে তাতে কনই সন্দেহ নেই। তাও নানা অপকর্মে এমন কি ধর্ষণের মত ঘৃণ্য কাজেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের পাতি নেতা ও কর্মীদের নাম আসছে। অনেকেই বলছেন এরা অনুপ্রবেশ কারি ঘুণ পোকা, যারা সংগঠনের মান সম্মান শেষ করে দিচ্ছে।
অভিজ্ঞরা বলছেন, শেখ হাসিনার নির্দেশ উপেক্ষা করে অপরিপক্ব কাঠ বা কাঁচা কাঠ দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের দলীয় কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। বাধ্য হয়েই যদি এটা করা হয় তবে শেখ হাসিনার নির্দেশ মত কেন সে সব খানে ঘুণ ঠেকানর সাবধানতা হিসেবে সেখানে বোরন পাউডারের তরল ছিটানো হয়নি মানে ঘুণ পোকা ঢোকার পথ খলা রাখা হয়েছে। কারা করেছেন এটা, কী স্বার্থে, কী উদ্দেশ্যে! তারা কী বোঝেন যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন একটা ঘুণে ধরা আসবাবের মত অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। এখন কিছুটা সময় আছে ঘুণে ধরা আসবাবের ক্ষতি রুখে দিতে যেমন কাঠের আসবাবে বোরন পাওডারের তরল ছিটানো হয় তেমন পদক্ষেপ নিতে হবে। সমাজের ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও পেশাগত মূল্যবোধের আস্তর দিয়ে রক্ষা করতে হবে নিজেকে, দেশ ও দেশের অর্থনীতিকে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা কার্যনির্বাহী সংসদ গণভবন
মন্তব্য করুন
দুদক দুদক মহাপরিচালক শিরীন পারভীন
মন্তব্য করুন