নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ২২ অক্টোবর, ২০২০
আওয়ামী লীগের এবারের মন্ত্রীসভা অপেক্ষাকৃত তরুণ এবং নবীনদের দিয়ে তৈরি। কিন্তু এই মন্ত্রীসভায় আওয়ামী লীগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নেতারা আছেন। আছেন কয়েকজন সিনিয়র নেতা। অনেকেই মনে করছেন যে, দলের নবীন মন্ত্রীদের হয়তো অনেক কিছু শেখার বাকি আছে। তারা অনেক চাপ মোকাবেলা করতে পারেন না, চাপের মুখে তারা নার্ভাস হয়ে পড়েন। সেজন্যই তাদেরকে সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যারা বড় নেতা, যারা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন তারাও চাপে বেসামাল হয়ে পড়েছেন এবং সংকট সমাধানে কোন সাহসী, দৃঢ় এবং উদ্ভাবনী সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। শেষ পর্যন্ত ওই সমস্ত বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে এবং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ এর মাধ্যমেই সংকটের সমাধান হচ্ছে। ফলে মন্ত্রীসভার অবস্থা এমন একটা পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী ছাড়া আসলে কোন কিছুই হচ্ছেনা ।
কোন মন্ত্রনালয়ে নীতিনির্ধারণী তো দূরের কথা ছোটখাটো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রীর মুখোমুখি হতে হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করছেন মন্ত্রীরা। সাম্প্রতিক সময়ে আলু সংকটের কথাই ধরা হোক। আলু নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেটির দায়দায়িত্ব কৃষি মন্ত্রণালয় অস্মীকার করেননি। কৃষিমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন যে, আলুর দাম বাড়ানোর পরিণতি এরকম ভাবে হবে সেটা তিনি ভাবতেও পারেনি এবং এখন আলুর মূল্য নিয়ে যে অস্থিরতা চলছে সেই অস্থিরতাতেও নার্ভাস হয়ে পড়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। অথচ তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং আওয়ামী লীগের একজন পুরানো নেতা। শুধু তাই নয় তিনি দ্বিতীয়বারের মতো মন্ত্রীসভায় স্থান পেয়েছেন। এর আগে তিনি খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে সফল ছিলেন। কিন্তু আলু নিয়ে তিনি এখন বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন, এই বিপদ গ্রস্থ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এখন আলু সংকট নিরশনে অনেক কাজ চলছে।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সুত্রগুলো বলে যে, এই সংকট শুরু হওয়ার সাথে সাথেই প্রধানমন্ত্রী টিসিবিকে নির্দেশ দেন আলু বিক্রির জন্য। একই সঙ্গে তিনি সারা দেশের আলুর পরিস্থিতি যাচাই করা এবং সরবরাহ নিশ্চিত করাসহ কেউ যাতে মজুদ করতে না পারে এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেন।
অথচ আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র মন্ত্রী এরকম সংকটে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগবেন, এটা অনেকের কাছেই অবিশ্বস্য লেগেছে। শুধু কৃষিমন্ত্রীই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে এরকম সব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকেই সিদ্ধান্ত দিতে হচ্ছে এবং প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত ছাড়া কিছুই হচ্ছে না ।
যেমন ধরা যাক পেঁয়াজ সংকট নিয়েই। পিঁয়াজ সংকটের সূচনা হয় যখন ভারত পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে দেয়। অথচ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রথম থেকেই প্রাক্কোলণ করা উচিত ছিল যে, ভারত এরক ঘটনা ঘটাতে পারে। কারণ বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানী বন্ধ করার আগে ভারতে পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছিল। তাছাড়া গত বছর ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছিল । সেই অভিজ্ঞতা থেকেই প্রধানমন্ত্রী আগে থেকেই সতর্ক করেছিলেন এবং অন্যান্য উৎস থেকে যেন পেঁয়াজ আমদানি করা যায় সেটি নিশ্চিত করতে বলেছিলেন । আর প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ এর কারণেই এই পেঁয়াজ নিয়ে গত বছরের মতো এবার নৈরাজ্য তৈরি হয়নি। এই বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কিন্তু আশায় বসে থাকলে বাংলাদেশ হয়তো গত বছরের মতো আরেকটি পেঁয়াজ দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
আমরা যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেখি, সেখানেও ছোটখাটো বিষয় গুলো নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত দিতে পারে না এবং সেখানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হস্তক্ষেপ করতে হয় এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ম্যাজিকের মতো সমস্যার সমাধান হয়। সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পেশাজীবী প্রশাসনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এ দ্বন্দ্ব নিরসনের ব্যাপারেও প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট কিছু সুপারিশ করেছেন। আর এই সুপারিশগুলোর বাস্তবায়নের মাধ্যমে সংকট সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে । মন্ত্রী সভার মন্ত্রীরা মন্ত্রনালয়ের ছোটখাটো বিষয়গুলোকে সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। আর এই সিদ্ধান্তহীনতার কারণেই সরকারের মধ্যে অনকে ধরনের সমস্যা তৈরি হয়, জনগণের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হয়। সবকিছুর জন্য প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকার ফলে একদিকে যেমন সিদ্ধান্তহীনতা তৈরি হয় অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর ওপর চাপ বাড়ে। আর এর ফলে প্রধানমন্ত্রী অন্যন্য নীতিনির্ধারনিী বিষয়গুলোর দিকেও মন দিতে পারেন না। তাই মন্ত্রীদের স্ব স্ব মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমগুলোর দিকে আরো বেশি মনযোগ এবং যত্নবান হওয়া উচিত বলে নেতারা মনে করেন।
মন্তব্য করুন
হিট স্ট্রোক তীব্র তাপদাহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ শিল্পমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
প্রায় ১৩ বছর পর লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনে তিনটিতে চেয়ারম্যান পদে নতুন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। আর দক্ষিণ হামছাদী ও তেওয়ারীগঞ্জ এ দুইটি ইউনিয়নে এ পদে পুরাতনেই আস্থা রেখেছেন ভোটাররা। তবে পাঁচটি ইউনিয়নে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরকে পেয়ে উল্লাস প্রকাশ করছে পুরো নেট দুনিয়া।