নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:১৭ এএম, ২০ অগাস্ট, ২০১৭
নির্বাচনী আইনানুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মধ্যস্ততা বা সমঝোতা করা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আওতার মধ্যে পড়ে না। তবে নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার সাংবিধানিক দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচনের পন্থা নিয়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার কথা বলা আছে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ এ। নির্বাচনকালীন কোনো সরকার থাকবে তা সংবিধানেই নির্ধারিত। ফলে সংবিধান অনুসরণ করে নির্বাচন আয়োজন করতে হয় ইসির।
গত বৃহস্পতিবার টেলিভিশন ও রেডিও সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছিলেন,‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মধ্যস্ততা করা ইসির কাজ নয়। ইসি সেটা করতেও চায় না। নির্বাচনের সময় কোন ধরনের সরকার থাকবে, তাও ইসির দেখার বিষয় নয়।’ এই বক্তব্যের পক্ষে-বিপক্ষে ইতিমধ্যে প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। সিইসি কি ঠিক বা বেঠিক কথা বলেছেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ফের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদার কাছে পূর্বের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মধ্যস্ততা করার কোন সুযোগ নেই। আইন আমাদের সেই সুযোগ দেইনি।
সিইসি আরও বলেন, ‘সংবিধান, আরপিও বা বিভিন্ন বিধিমালায়ও এ বিষয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই। তাহলে আমরা আগ বাড়িয়ে কেন দায়িত্ব নিতে যাব। তবে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করব। এই আলোচনা অব্যাহত থাকবে।’
সংবিধানের ১১৮ থেকে ১২৬ অনুচ্ছেদ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন গঠন থেকে দায়িত্ব-কর্তৃব্যের বিষয় উল্লেখ আছে। পাশাপাশি সংসদ নির্বাচন পরিচালনার মুল চাবিকাঠি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ,১৯৭২ (আরপিও)’তে নির্বাচন আয়োজনে বিষয় বিস্তারিত বলা আছে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে বিষয়ে সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি পদের এবং সংসদের নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণের তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ এবং অনুরূপ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের উপর ন্যস্ত থাকবে এবং নির্বাচন কমিশন এই সংবিধান ও আইনানুযায়ী রাষ্ট্রপতি, জাতীয় সংসদ নির্বাচন, সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতি ও সংসদ নির্বাচনের ভোটার তালিকা প্রস্তুত করবে।’ এই অনুচ্ছেদের উপ-অনুচ্ছেদ (২) বলা আছে, উপরি-উক্ত দফাসমূহ নির্ধারিত দায়িত্বসমূহের অতিরিক্ত যেরুপ দায়িত্ব এই সংবিধান বা অন্য কোনো আইনের দ্বারা নির্ধারিত হবে, নির্বাচন কমিশন সেইরুপ দায়িত্ব পালন করবে।
সংবিধানে যেভাবে জাতীয় নির্বাচন করার বিধান থাকবে, সেই ভাবে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে কমিশনকে। আর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের উপ-অনুচ্ছেদ ৩ এ বলা আছে সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, (ক) বলা হয়েছে, মেয়াদ-অবসানের কারণে সংসদ ভেঙ্গে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভেঙ্গে যাওয়ার পূর্ববর্তী নব্বই দিনের মধ্যে এবং (খ) মেয়াদ-অবসান ব্যতীত অন্য কোনো কারণে সংসদ ভেঙ্গে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভেঙ্গে যাওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে’। তবে শর্ত থাকে যে, ‘এই দফার (ক) উপ-দফা অনুযায়ী অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত ব্যক্তিগণ, উক্ত উপ-দফায় উল্লিখিত মেয়াদ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত, সংসদ সদস্যরুপে কার্যভার গ্রহণ করবেন না’। সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের উপ-অনুচ্ছেদ (৩) অনুাযায়ী ‘রাষ্ট্রপতি পূর্বে ভেঙ্গে না দিয়ে থাকলে প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে পাঁচ বছর অতিবাহিত হলে সংসদ ভেঙ্গে যাবে।’
সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি। আর সংসদের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় ২৯ জানুয়ারি। অর্থাৎ, স্বাভাবিকভাবে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির পূর্বের ৯০ দিনের মধ্যে আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে কমিশনকে। অর্থাৎ ২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর থেকে জাতীয় নির্বাচনের কাউন-ডাইন শুরু হবে।
নির্বাচন পরিচালনার জন্য ১৯৭২ সালের ২৬ ডিসেম্বর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) জারি হয়। এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার সংশোধন, পরিমার্জন হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৩ সালে সংশোধন করা হয় আরপিও। এই আরপিওকে নির্বাচন পরিচালনার দিকনির্দেশনা রয়েছে। আর আরপিও’র আলোকে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা-২০০৮ করা হয়। তবে এটি সংশোধন করে নির্বাচন সময়ের ব্যাখ্যা নির্ধারণ করেছে বিগত কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ কমিশন। ১৩ সালের ২৪ নভেম্বর সংশোধনী বিধিমালায় নির্বাচন পূর্ব সময় বলতে স্পস্ট করা হয়েছে, ‘জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন কিংবা কোনো শূণ্য আসনের নির্বাচনের ক্ষেত্রে কমিশন কর্তৃক নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার দিন থেকে নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত সময়কাল।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২’-এর ৪৪ ই অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী ফল ঘোষণার পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের পূর্বানুমতি ছাড়া বিভাগীয় কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার অথবা বিভাগ, জেলা বা মেট্রোপলিটন এলাকায় কর্মরত তাদের অধীন কর্মকর্তাদের নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে বদলি করা যাবে না। এ ছাড়া নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত সব কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থেকে কাজ করবেন। এ জন্য ‘নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১’ রয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য করতে নির্বাচন কমিশনকে আরপিওতে অগাদ ক্ষমতা দেয়া আছে।
পাশাপাশি সংবিধানের সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে বিপুল ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ নির্বাচন কমিশন। যেহেতু রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ নির্বাচন কমিশন, সেহেতু দলগুলোর নিয়ন্ত্রণের অধিকারীও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির। শর্ত অনুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলো কমিশনের নির্দেশনা মানতে বাধ্য। গণপ্রতিনিধি আদেশ ৯০-এ অনুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধনের সুযোগ রাখা হয়েছে। ২০০৮ সালের আরপিও সংশোধন করে এ বিধান চালু করা হয়। এ পর্যন্ত ৪২টি রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দিয়েছে কমিশন। এর মধ্যে আদালতে জামাতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল হয়ে গেছে। আর সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ হওয়ার কারণে ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল করে কমিশন। আরপিও’র ৯০ এফ ধারা অনুযায়ী, নির্বাচন সংক্রান্ত কোন বিষয়ে, বিশেষত, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সমস্যা ও পন্থা সম্পর্কে, কমিশনের সহিত পরামর্শের অধিকারী হবে।
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন পাওয়ার অযোগ্যতার বিষয়ে আরপিওতে বলা আছে, গঠনতন্ত্রের উদ্দেশ্যে সংবিধানের পরিপন্থী হলে, গঠনতন্ত্রে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, ভাষা ও লিঙ্গ ভেদে কোন বৈষম্য প্রতীয়মান হলে, নাম, পতাকা, চিহ্ন বা অন্য কোন কর্মকান্ড দ্বারা ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক ঐক্য বিনষ্ট হলে কিংবা দেশকে বিচ্ছিন্নতার দিকে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, গঠনতন্ত্রে দলটির একদলীয় বা অদলীয় বিদ্যমান থাকলে এবং গঠনতন্ত্রে ভৌগোলিক সীমার বাইরে কোন দপ্তর, শাখা বা কমিটি গঠন এবং পরিচালনার বিধান থাকলে নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে ইসি। পাশাপাশি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ হলে, আয়-ব্যয়ের হিসাব পরপর তিন বছর দিতে ব্যর্থ হলে এবং পরপর দুটি জাতীয় নির্বাচন বর্জন করলেও নিবন্ধন বাতিল হবে।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।