নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৮ পিএম, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২০
করোনা সঙ্কটের শুরু থেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়ে নানারকম সমালোচনা ছিল । বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি ,সমন্বয়হীনতার বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছিল । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এক ভিডিও কনফারেন্সে পিপিই এবং এন ৯৫ মাস্ক যথাযথভাবে সরবরাহ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছিলেন । আর এ বাস্তবতায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয় । স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলামকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল অন্য মন্ত্রণালয়ে । স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন । সিএমএইচডি তে দেওয়া হয়েছিল নতুন পরিচালক ।সমস্ত পরিবর্তনের ফলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঘুরে দাঁড়ায় , গতি আসে মন্ত্রণালয়ের কাজকর্মে ।
কিন্তু এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় আবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অস্থিরতা শোনা যাচ্ছে এবং এই অস্থিরতা সৃষ্টির পেছনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রধান ব্যক্তি স্বয়ং মন্ত্রীর ভূমিকা রয়েছে বলে সরকার নীতিনির্ধারকের কাছে তথ্য এসেছে । আর এটি নিয়ে সরকারের মধ্যে নতুন অস্বস্তি তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ২০০৯ সালে মন্ত্রীসভায় পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। এর আগে তিনি মরহুম মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ছিলেন। সকলের প্রত্যাশা করেছিল যে, প্রতিমন্ত্রীর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে তিনি যোগ্যতার পরিচয় দিবেন এবং ভালো কাজ করবেন । কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের পরই ডেঙ্গু মোকাবেলার সময় তিনি বিতর্কিত হন এবং সমালোচনায় পড়েন ।
এরপর করোনা মোকাবেলার সময় তার একের পর এক কথাবার্তা এবং পদক্ষেপ সমালোচিত হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের খোলনলচে পাল্টে ফেলল , মন্ত্রীকে বহাল রেখে ছিলেন এবং প্রত্যাশা করেছিলেন যে নতুন টিমকে নিয়ে মন্ত্রী আগের চেয়ে ভালো কাজ করবেন । কিন্তু অভিযোগ উঠছে যে , স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেই মন্ত্রণালয়ে বিভক্তি সৃষ্টি করছেন এবং মন্ত্রণালয়ের কাজের গতিকে শ্লথ করার চেষ্টা করছেন ।
সরকারের একাধিক সংস্থা স্বাস্থ্যমন্ত্রী সম্পর্কে যে সমস্ত তথ্য দিয়েছে তাতে সরকারের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে এক ধরনের বিরক্তি তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে । সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে , বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী স্বাস্থ্যমন্ত্রী পেশাজীবী দুটি স্বাস্থ্য সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের চারজনের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছেন তাঁর বাসভবনে । ওই সংস্থার তথ্য অনুযায়ী ২৯ নভেম্বর রাতে বিএমএ সভাপতি মুস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক এতেসানুল হক চৌধুরী দুলাল , স্বাচিপের সভাপতি ইকবাল আর্সলান এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডাক্তার আব্দুল আজিজ স্বাস্থ্য মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক এবং নৈশভোজে মিলিত হন । এই বৈঠকে তারা স্বাস্থ্যসেবা সচিবকে সরিয়ে দেওয়ার উপায় উদ্ভাবন নিয়ে কথাবার্তা বলেন বলে জানা গেছে । একাধিক সংস্থা বলছে যে , স্বাস্থ্য মন্ত্রী স্বাস্থ্য সচিব কে নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না । আর এ কারণেই তিনি স্বাস্থ্য সচিবকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য পেশাজীবি সংগঠনগুলোকে ব্যবহার করতে চেয়েছেন । তিনি নিজেই কিছু কর্মকান্ড করে সেই কর্মকাণ্ডের দায়ে স্বাস্থ্যসেবা সচিবের উপর চাপিয়ে দিতে চেয়েছিলেন এমন অভিযোগও উঠেছে ।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, মন্ত্রণালয়ের ফাইল দ্রুত নিষ্পত্তি না করা , মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত না আসা সহ একাধিক কারণে এখন নতুন করে ভাবতে হচ্ছে সরকারকে । বিশেষ করে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এর সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যদি সমন্বিতভাবে কাজ করতে না পারে তাহলে পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা । আর এই কারণেই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নতুন করে প্রশ্নের মুখোমুখি পড়ছে । সরকারের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন , যে সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সত্তিকারের নেতা হিসেবে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আবির্ভূত হওয়ার কথা সেই সময় তিনি বিভিন্ন রকম বিভক্তিমূলক পদক্ষেপের পথে হাঁটছেন এরকম তথ্য আমাদের কাছে আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে ,প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের দুইজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তা এই বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং ভূমিকা কিভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এই সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন। আর এই ফলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সম্পর্কে সরকারের মধ্যে নতুন অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে নিয়ে অস্বস্তি নতুন নয় শুরু থেকেই তিনি বিভিন্ন রকম বিতর্কে মধ্যে জড়িয়ে পড়েছিলেন । এখন নতুন অস্বস্তির পর , বির্তকের পর কি হবে সেটাই দেখার বিষয়!
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।