নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০৫ পিএম, ০১ মার্চ, ২০২১
ভূমি আপীল বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সরকারের সচিব উম্মুল হাছনা সফল কর্মজীবন শেষে সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন। তিনি বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের নিজস্ব সর্বোচ্চ দুটি ক্যাডার পদেই (ভূমি আপীল বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান) দায়িত্বপালন করেছেন।
সোমবার (১ মার্চ) ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এসময় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এমপি বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ অনুষ্ঠানে সভাপতি, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা কামাল ও ভূমি আপীল বোর্ডের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান মো: মোকাব্বির হোসেন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে ভূমি আপীল বোর্ডের বিদায়ী চেয়ারম্যান উম্মুল হাছনাকে অত্যন্ত দক্ষ ও মেধাবী সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তা হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, তিনি তাঁর দায়িত্ব অত্যন্ত সফলতার সাথে পালন করে দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে নবনিয়োগপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভূমি আপীল বোর্ডের কর্মকাণ্ড একই ধারাবাহিকতায় দক্ষতার সাথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
এসময় ভূমি আপীল বোর্ডের বিদায়ী চেয়ারম্যান উম্মুল হাছনা তাঁকে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি শ্রদ্ধার সাথে কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি ভূমিমন্ত্রী সহ ভূমি পরিবারের সবাইকে ধন্যবাদ জানান তাঁকে সহযোগিতা করার জন্য।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জানুয়ারি ২০২০ তারিখ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত উম্মুল হাছনা ভূমি আপীল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি সচিব পদে পদোন্নতি পান। এর পূর্বে, ভারপ্রাপ্ত সচিব হিসেবে তিনি কিছুদিন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কর্মজীবনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সহ মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন পদে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। উম্মুল হাছনা ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের প্রশাসন ক্যাডারের ১৯৮৫ ব্যাচের সদস্য হিসেবে চাকুরিতে যোগদান করেন।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১ তারিখ মো: মোকাব্বির হোসেন সচিব পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন এবং ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১ তারিখ তিনি ভূমি আপীল বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে যোগদান করেন। ভূমি আপীল বোর্ডে যোগদানের পূর্বে তিনি রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কর্মজীবনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সহ মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন পদে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। মো: মোকাব্বির হোসেন ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের প্রশাসন ক্যাডারের দশম ব্যাচের সদস্য হিসেবে চাকুরিতে যোগদান করেন।
ভূমি ব্যবস্থাপনা ও ভূমি রাজস্ব আদায়ের জন্য ১৭৭৬ সালে ঔপনিবেশিক আমলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক গঠিত “বোর্ড অব রেভিনিউ”স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে বিলুপ্ত করে এই বোর্ডের সকল দায়িত্ব তৎকালীন ভূমি প্রশাসন ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ ব্যবস্থাপনায় মাঠ পর্যায়ে ভূমি প্রশাসন পরিচালনা, আপীল নিষ্পত্তি ইত্যাদি অতিরিক্ত দায়িত্ব ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপর ন্যস্ত করা হলে তা নীতি নির্ধারণীর মূল দায়িত্বের জন্য অতিরিক্ত চাপের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে ভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় জটিলতা নিরসনকল্পে ১৯৮১ সালে “ভূমি প্রশাসন বোর্ড” সৃষ্টি করা হয়। পরবর্তীতে জাতীয় ভূমি সংস্কার কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৮৯ সালে ভূমি প্রশাসন বোর্ডকে ভেঙ্গে যথাক্রমে ভূমি আপীল বোর্ড ও ভূমি সংস্কার বোর্ড নামে দুটি বোর্ডের সৃষ্টি করা হয়।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ভূমি বিষয়ক সমুদয় আইনের অধীনে ভূমি আপীল বোর্ড আপীল/রিভিশন মামলা নিষ্পত্তি করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে - রাজস্ব সম্পর্কিত ভূমি সংক্রান্ত মামলা, নামজারি ও খারিজ মামলা, সায়রাত ও জলমহাল সংক্রান্ত মামলা, ভূমি রেকর্ড সম্পর্কিত মামলা, ভূমি উন্নয়ন কর সার্টিফিকেট মামলা, খাস জমি বন্দোবস্ত সংক্রান্ত মামলা, পি,ডি,আর এর আওতায় দায়েরকৃত রিভিশন বা আপীল মামলা, অর্পিত, পরিত্যক্ত ও বিনিময় সম্পত্তি বিষয়ক মামলা, ওয়াকফ/দেবোত্তর সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলা।
অধস্তন ভূমি আদালত সমূহের কার্যক্রম পরিদর্শন, অণুবীক্ষণ ও মূল্যায়ন করা এবং ভূমি সংক্রান্ত আইন, আদেশ ও বিধি সম্পর্কে সরকার কর্তৃক প্রেরিত বিষয়াদিতে পরামর্শ দান করাও ভূমি আপীল বোর্ডের অন্যতম কাজ।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।