নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৪৬ পিএম, ০৮ মে, ২০২১
এখনো উদঘাটন হলো না সেই গাড়ার রহস্য। মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহানের চরা (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-৭১১০) বিলাশবহুল সেই গাড়ির মালিকের সন্ধানও মেলেনি এখনো। কোরিয়ান ব্যক্তির ওই গাড়িটি কে বা কারা ক্রয় করেছিলেন? তারপরে বিআরটিএ-তে রেজিস্ট্রেশন (নাম পরিবর্তন) ছাড়াই কারা সেই গাড়ি ব্যবহার করছেন তাও বের হয়নি।
একাধিক তদন্তকারী সংস্থা খতিয়ে দেখছে মুনিয়ার বোন নুসরাতের ব্যবহার করা সেই গাড়ির আসল মালিক কে? মুনিয়ার আত্মহত্যার সঙ্গে ওই গাড়ির মালিকের সম্পৃক্ততা এবং নুসরাতের সঙ্গে তার সম্পর্ক কি? তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুরো বিষয়টি অন্ধকারাচ্ছন্ন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নুসরাতকে যৌথ সেলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে গাড়িসহ সকল প্রশ্নের উত্তর মিলবে বলে একাধিক মহল মনে করছেন। এছাড়া মুনিয়ার বোন নুসরাত এবং তার স্বামীর ব্যাংকের হিসাব-নিকাশ খতিয়ে দেখা দরকার। কেননা সেই গাড়িটির মতোই তাদের সকল কার্যক্রম রহস্যময়।
উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল মোসারাত জাহান মুনিয়ার আত্মহত্যার ঘটনায় একটি বিলাশবহুল গাড়িকে ঘিরে তৈরি হয় রহস্য। মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান ওই দিন ঘটনাস্থলে আসেন একটি দামী গাড়িতে। সেই রাতে এই গাড়ির অস্বাভাবিক আনাগোনা ভাবিয়ে তোলে কর্মকর্তাদের। হঠাৎ কিভাবে এই দামী গাড়ি পেলেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান। পরে ওই দিন থেকেই ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-৭১১০ নম্বরের ওই বিলাশবহুল গাড়িটির মালিককে খোঁজা হচ্ছে।
বিআরটিএ সূত্র জানিয়েছে, ১৭ জানুয়ারি ২০০৬ সালে এই গাড়িটি কোরিয়ান মালিকানাধীন বায়িং হাউজ গিলকো ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড- এর নামে রেজিস্ট্রেশন করা হয়। কোম্পানীর মালিকের নাম এইচ কে কিম। ঠিকানা দেওয়া ছিল বাসা নম্বর ১৩, রোড নম্বর ২৮, বনানী ঢাকা। কিন্ত এই কোম্পানীর কার্যক্রম ২০০৯ সালে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে তাদের এই গাড়ি কে ব্যবহার করছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিআরটিএ জানিয়েছে, ৩৫০০ সিসি’র হুন্দাই কোম্পানীর এই জীপ গাড়ির ট্যাক্সও বকেয়া রয়েছে। কাগজপত্র আপডেট তথা নাম পরিবর্তন করতে বিআরটিএ তে আসেননি কেউ।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।