নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৪৯ এএম, ০৯ মে, ২০২১
বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার প্রয়োজন নেই। বেগম জিয়ার পক্ষ থেকে তার ভাই শামীম ইস্কান্দার গত ৫ মে যে আবেদনটি করেছিলেন সে আবেদনটি সরকার গ্রহণ করেনি।
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আইন মন্ত্রণালয় এবং সরকারের নীতিনির্ধারকরা সবকিছু বিবেচনা করে বেগম খালেদা জিয়ার আপাতত উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাত্রার প্রয়োজন নেই বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। আর এটি কিছুক্ষণের মধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে জানিয়ে দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, বেগম খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার গত তিন দিনের অবস্থা অনেক ভালো। তিনি বাসায় যাওয়ার মতো অবস্থায় আছেন। তার করোনা পরীক্ষার ফলাফলও নেগেটিভ এসেছে।
হাসপাতাল সূত্র বলছে, তার অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল এখন ৯৯ এবং এটি স্বাভাবিক। তাছাড়া এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্যানেলের কেউই তার বিদেশে চিকিৎসার ব্যাপারে পক্ষপাতী নয়। শুধুমাত্র বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির নেতৃবৃন্দ ছাড়া কেউই খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার পক্ষে অভিমত দিচ্ছে না। সরকারকে এভারকেয়ার হাসপাতাল জানিয়েছে, খালেদা জিয়া ভালো আছেন। এই অবস্থায় তার বিদেশে যাওয়ার দরকার নেই।
এর আগে সরকার সর্বোচ্চ উদারতা দেখিয়ে গত বছরের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করেছেন এবং তিন বার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়িয়েছেন। এখন খালেদা জিয়া উন্মুক্ত জীবনযাপন করছেন এবং দেশের যেকোনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারছেন। শুধু তাই নয় খালেদা জিয়া যখন জেলে ছিলেন তখনও তার জন্য একজন গৃহকর্মী দেয়া হয়েছিলো আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আইন মন্ত্রণালয় খালেদা জিয়ার আবেদনটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে এর অসম্পন্ন এবং ত্রুটিগুলোকে চিহ্নিত করে এ ব্যাপারে নেতিবাচক মতামত দিয়েছেন। খালেদা জিয়ার পক্ষে তার ভাই শামীম ইস্কান্দার যে আবেদন করেছিলেন সেখানে খালেদা জিয়া কোন দেশে যাবেন সেটি উল্লেখ করেননি, কতদিন থাকবেন সেটি উল্লেখ করেননি এবং চিকিৎসকদের মতামতও সন্নিবেশ করা হয়নি। এরপর সরকারের পক্ষে এভারকেয়ার হাসপাতালে যোগাযোগ করা হয়েছিলো। সেই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতেই বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই বলে সরকার মনে করছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।