নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩৪ পিএম, ১৫ অক্টোবর, ২০১৭
রাতের অন্ধকারে ৫ শিশুকে নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে রোহিঙ্গা আছিয়া খাতুন। ৫ শিশুর মাঝে ৩ জন তার নিজের বাকিরা এতিম। আছিয়ার সামনেই তার স্বামীসহ এই শিশুদের পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। নিজের জীবনের সঙ্গে এই মা-বাবাহীন শিশুদের জীবনকেও বাঁচানোর চেষ্টায় তাঁদের সঙ্গে নিয়েই পালিয়ে এসেছে আছিয়া। আছিয়ার মত লাখো বিধবা নারী আর এতিম শিশু এখন রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে দেখা যাচ্ছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সে দেশের সেনাবাহিনীর হাতে নির্মমভাবে নির্যাতিত নিপীড়িত হয়ে, স্বামীহারা বিধবা, মা-বাবা হারা শিশু, সন্তান হারা মা-বাবা এবং স্বজন হারা রোহিঙ্গাদের কান্না আর আহাজারীতে উখিয়া-টেকনাফ এলাকার বাতাস ক্রমে ভারী হয়ে উঠেছে। দিন যতই গড়াচ্ছে তা প্রকট হচ্ছে।
টেকনাফ সীমান্ত এলাকায় যেয়ে প্রতিদিনই অপরপ্রান্তে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি ফারুক (৮), আর আব্দুল্লাহ (৫)। তারা দুই ভাই। তাদের বাবা নুরুল আলম কৃষি কাজ করতেন। আর মা ফরিদা ছিলে গৃহিনী, তবে মাঝে মধ্যে কৃষিকাজে স্বামীকে সহায়তা করতেন তিনি। আবদুল্লাহ জানায়, তাদের বাবা-মা দু’জনকেই তাদের সামনে কেটে ফেলেছে মিয়ানমার বাহিনী। এ ঘটনা দেখে তাঁরা দৌঁড়ে পাশের ঝোপ জঙ্গলে গিয়ে আশ্রয় নেন অন্যদের সঙ্গে। পরে সেনাবাহিনী চলে গেলে অন্যদের সঙ্গেই পালিয়ে আসে বাংলাদেশে। এরপর প্রতিদিনই তারা দুই ভাই সীমান্ত এলাকায় যায়। যেদিক থেকে তারা এসেছে সেই পথের দিকে তাকিয়ে থাকে। তাদের চোখের সামনেই বাবা-মাকে হত্যা করা হয়েছিল, তবুও তাঁরা ভাবে যদি ওই পথ ধরে তাদের বাবা-মা চলে আসে তাদের কাছে!
টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনের একটি দলের সঙ্গে বাংলাদেশে ঢুকেছেন আসমা। মিয়ানমারে সেনা সদস্যরা তাঁর স্বামী ও বড় ভাইকে হত্যা করে এবং তাঁর ওপর পাশবিক নির্যাতন করে। ১০-১২ জন সৈন্য মিলে তাঁকে নিপীড়ন করে। এরপর যখন মেরে ফেলার প্রস্তুতি নিলে, বাচ্চাদের দেখিয়ে ওদের পা ধরে প্রাণ ভিক্ষা চান আসমা। পরে ছাড়া পেয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন তিনি।
প্রবেশের সময় সঙ্গে ১২ বছর বয়সী ছোট ভাই আর আমার দুই সন্তান ছিল, কিন্তু অসুস্থ হয়ে পথেই মারা গেছে তার ৪ বছর বয়সী বড় ছেলে। এক সন্তান আর ভাইকে নিয়ে বহু কষ্টে বাংলাদেশে পৌঁছেছে আসমা। পাহাড়ি পথে হাঁটতে হাঁটতে পা ফুলে গেছে। এদেশে এসে সাহায্য পেলেও, এরপর কি করবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়া ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকার বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পের প্রায় প্রতি তিনজন নারীর দুজনই বিধবা, মিয়ানমার সেনা তাঁদের স্বামীকে মেরে ফেলেছে। তাদের সন্তানরা এতিম হয়েছে। এসব নারীর কারও বয়সই ৩০ এর বেশি নয়। তাদের প্রত্যেকেরই একাধিক সন্তান রয়েছে। এই পিতৃহীন শিশুদের এখন তারা কীভাবে খাওয়াবেন-পরাবেন, মানুষ করবেন? প্রাণ বাচিয়ে পালিয়ে আসলেও, এই বিষয়ে তাদেরকে কেই বা কতটুকু সাহায্য করতে পারবে?
বাংলা ইনসাইডার/আরএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিমানবন্দর বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী জাতীয় সংসদ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
অতিরিক্ত গরমে মাথা ঘোরানো, দুশ্চিন্তা, স্ট্রোক, মুখের ভেতর শুকিয়ে যাওয়া, অ্যাজমা, মাংসপেশিতে খিঁচুনি, চামড়ায় ফুসকুড়ি, কিডনি অকার্যকর হওয়ার মতো অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের গরমে বয়স্ক, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী, শ্রমজীবী মানুষেরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তাই তাপপ্রবাহ থেকে সুরক্ষার জন্য কী কী করতে হবে, তা জানিয়ে প্রথমবারের মতো জাতীয় গাইডলাইন বা নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে সরকার।