নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৮ পিএম, ২১ জুলাই, ২০২১
এমনিই ঈদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটা দুঃখ ভারাক্রান্ত সময় নিয়ে সামনে আসে। ঈদেই তার প্রিয়জন হারানোর স্মৃতি বিশেষ করে তার পিতা, মাতা, ভাই, ভাবিদের শোক তাকে কাতর করে তোলে। এই জন্যই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আড়ম্বরপূর্ণ ঈদ উদযাপন করেন না। শুধু ঈদ কেন তার জীবনই অনাড়ম্বর। তিনি সারাক্ষণ কাজ করেন মানুষের জন্য এবং কাজের মধ্যে থেকেই তিনি ৭৫ এর ১৫ আগস্টের দুঃখ বেদনাগুলো ভুলে থাকতে চান। কিন্তু এবারের ঈদুল আযহা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য আরও ব্যাতিক্রম। দুই বছর আগে করোনামুক্ত সময় যখন ঈদ হতো তখন প্রধানমন্ত্রী ঈদের দিনও ব্যস্ত সময় কাটাতেন। সকালে তার কাছে আসতো বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনীতিকরা। তাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা শেষ করতে না করতেই গণভবনের দরজা উন্মুক্ত করে দেয়া হতো সর্বস্তরের মানুষের জন্য। সর্বস্তরের মানুষের শুভেচ্ছা বিনিময় শেষ করে তিনি তার নিকট আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে সময় কাটাতেন। এভাবেই ব্যস্ততা ভুলে জনগণের মাঝে থেকেই ঈদ উদযাপন করতেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কিন্তু গত দু`বছরে ঈদ হচ্ছে অন্যরকম। করোনার প্রকোপের কারণে ঈদে প্রধানমন্ত্রীর যে শুভেচ্ছা বিনিময় কর্মসূচি তা হচ্ছে না। আর এ কারণেই প্রধানমন্ত্রীর ঈদ কাটছে এক রকম ঘরবন্দি এবং একাকিত্বে ভরা। এবারের ঈদুল আজহা প্রধানমন্ত্রীর জন্য আরও বেশি একাকিত্বকে এনে দিয়েছে। কারণ প্রায় প্রতি ঈদই দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা ছুটে আসেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটু সময় কাটান। দুজন মিলে ১৫ আগস্টে দুঃসহ স্মৃতিকে ভাগাভাগি করে নেন। কিন্তু এবার প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা দেশে নেই। তিনি লন্ডনে অবস্থান করছেন। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। করোনার জন্য তিনি দেশে আসেননি। প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল দেশে ছিলেন। কিছুদিন আগে তিনি আবার চলে গেছেন কানাডায়। ফলে প্রধানমন্ত্রীর এবারের ঈদ উৎসব বড্ড একাকীত্বে এবং একদিকে তিনি পারছেন না দলের নেতাকর্মী এবং সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে কথা বলতে, তাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে অন্যদিকে তার একান্ত আপনজনরাও তার থেকে দূরে। তবে প্রধানমন্ত্রীর এবার ঈদ উদযাপন হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশের ডিজিটাল পদ্ধতিতে।
প্রধানমন্ত্রী ঈদের দিন তারা পুত্র, কন্যা, নাতি-নাতনীদের সাথে কথা বলেছেন। ভিডিও কনফারেন্সে তিনি তার বোনের সঙ্গেও কথা বলেছেন। আর এই ডিজিটাল পদ্ধতিতেই সকলের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে সকলের সঙ্গে সময় কাটিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঈদ উদযাপন করেছেন। তবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সবচেয়ে বড় শক্তি হলো জনগণ। এই সব ঈদগুলোতে তিনি সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আবেগ অনুভূতি প্রকাশ করে এবং মানুষের সংস্পর্শে থাকলেই শেখ হাসিনা সবচেয়ে ভালো থাকেন এবং এই মানুষের সংস্পর্শে থাকার জন্যই হয়তো তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের জন্য কাজ করতে পারছেন। দুঃখ-বেদনা সবকিছু চাপা রেখে শুধু মানুষের জন্যই তিনি তার জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। আর এবার করোনা এমন এক পরিস্থিতিতে নিয়ে গেছে যে জনগণ থেকেই প্রধানমন্ত্রীর এক ধরনের দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। আর তাই এবারে ঈদটা শেখ হাসিনার জন্য একটু অন্যরকম ঈদ, একটু একাকিত্বের ঈদ।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।