নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:০১ পিএম, ২৫ জুলাই, ২০২১
সারাদেশে ২৩ তারিখ থেকে চলছে কঠোর সর্বাত্মক লকডাউন। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর ভাষায়, এই লকডাউন নিয়ে কোনো গুজব চলবে না। তারচেয়েও বড় কথা, আগের যেসব লকডাউন চলেছিল, সেগুলোর চেয়েও এই লকডাউন অত্যন্ত কঠোরভাবে পরিচালিত হবে।
প্রথমদিকে আমরা কী দেখলাম? লকডাউন কয়েকদিনের জন্য উঠিয়ে দেয়া হলে ফেরিঘাট, লঞ্চ, বাস টার্মিনাল, রেল ইত্যাদি যোগাযোগ হাবগুলোর দ্বারা মানুষকে বাড়ি চলে যাবার একটি সুযোগ করে দেয়া হলো। মানুষও কই মাছের ঝাঁকের মতো বাড়ির পানে ছুটতে শুরু করলো। ঈদ গেলো ২১ তারিখ। ঠিক এর দুইদিন পরই, অর্থাৎ ২৩ তারিখ থেকেই কঠোর লকডাউন শুরু। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর ভাষায়, লকডাউনের প্রথম দুইদিন যেন ভূত দেখেছে মানুষ গোটা শহরজুড়ে। চার চাকার যানবাহন তো দূরের কথা, দুই চাকার যানবাহনের দেখাও মিলেছে হাতেগোণা দুই-একটি। আর রিকশার টুংটাং বেলের শব্দে মানুষের মনে একটু স্বস্তি নেমে আসলেও তাদের ভাড়া চাইবার বহর দেখে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য হয়েছে অনেকের। সেটি অবশ্য অন্য হিসেব। এমন বিধিনিষেধের মধ্যে মানুষ বিপাকে পড়ে গেলে রিকশাওয়ালাদের এমন রাজার আসনে বসে যাওয়া আজকের কোনো ঘটনা নয়।
এবার আসা যাক, এই লকডাউন নিয়ে আসলে আমরা কী দেখতে পেলাম? প্রথম দুইদিন উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে সরকারের বেঁধে দেয়া লকডাউন মানুষ বেছে নিয়েছে? আদতে এমন কিছুই আসলে হয়নি। ঈদের পরের দুইদিন রাস্তাঘাট ফাঁকা ছিল, কারণ মানুষ ঈদ করতে যত দ্রুত সম্ভব গ্রামের দিকে ছুটেছে। ফলে যানবাহনগুলোর স্থানে দেখা গিয়েছে অরাজকতা এবং যে যেভাবে পেরেছে যাবার কারণে, সংক্রমণের সম্ভাবনা আরও অনেকাংশেই বৃদ্ধি পেয়েছে।
গতকাল ছুটি শেষ হবার পর দেখা গিয়েছে লকডাউনের মিথ্যে বৈরি ভাঙতে শুরু করেছে। মানুষকে পেটের তাগিদে ঘরে ফিরতে হবে, চাকরি বাঁচাতে হবে। আধপেটা খেলে হলেও মানুষ এখন চায় কর্মস্থলে যেন নিজের চাকরিটা বজায় থাকে। পরিবারের মুখে তো তাদেরকে ভাত তুলে দিতে হবে। তাই গতকাল যেমন করেই হোক বৃষ্টি মাথায় করে হলেও তাদেরকে ঢাকার দিকে আসতে দেখা গিয়েছে। তবে এখানেও তাদেরকে যে কোনো রকমের সমস্যা পোহাতে হয়নি, তা একেবারেই নয়। প্রবেশ করার পয়েন্টে এসে দেখাতে হয়েছে নগরে ফেরার কারণ। কেউ যদি সঠিক কারণ দর্শাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদেরকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এমনকি সুস্পষ্ট কারণ ছাড়া নগরে কোনো মোটরবাইকও ঢুকতে দেয়া হয়নি। এমতাবস্থায়, রিকশা ছাড়া মানুষের চলাচলের আর কোনো গত্যন্তর থাকে না। সেখানেও দেখা গিয়েছে নানা সমস্যা। সদরঘাট থেকে রিকশাভাড়া ১৫০০ টাকা চাওয়া হয়েছে, এমন খবরও আমরা দেখতে পেয়েছি।
সত্য কথা বলতে, বাংলাদেশে এমন কঠোর লকডাউন আসলে আদৌ সম্ভব কিনা, সেদিকে এবার বোধহয় দৃষ্টি দেয়া উচিত সরকারের ওপরের মহলের। তারচেয়েও বড় কথা, আমাদের এখন লকডাউনেরও বিকল্প উপায় খুঁজতে হবে।
এমন নয় যে কোনোকিছুই খোলা নেই। খোলা আছে, কিন্তু তা দৃশ্যমান চক্ষুর কিছুটা আড়ালেই রয়ে গিয়েছে। কর্মস্থলে যাবার জন্য মানুষের সবচেয়ে বেশি দরকার যানবাহন। অন্তত বাস পেলেও মানুষ খুশি। কিন্তু এখন কোনো কিছুই রাস্তায় দেখা যাচ্ছে না। সবেধন নীলমণি রিকশা ছাড়া যাতায়াতের আর কোনো উপায় নেই। সেখানেও চাওয়া হচ্ছে ব্যাপক ভাড়া, যা সাধারণ সকলের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়।
একটি চলচ্চিত্রের দৃশ্যে দেখেছিলাম, মানুষের যখন পেটে টান পড়ে, তখন সে আর কোনো বাঁধা মানতে চায় না। আমাদের দেশের লকডাউনেরও হয়েছে যেন ঠিক একই অবস্থা। মানুষ পেটে পাথর বেঁধে আছে, আর ঠিক এমন সময়েই একের পর এক লকডাউনে তাদের অবস্থা জর্জরিত। কর্মস্থলে না গেলে বেতন আসবে না, বেতন না এলে ঘরে চাল আসবে না, ঘরে চাল না এলে পরিবারের মুখে ভাত তুলে দেয়া যাবে না। এসব হিসেব কষতে কষতে কখন যে মানুষের মৃত্যুভয় চলে যায়, তা এই করোনাকালে একদম বোঝা যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে খবর যেমন আসছে যে লকডাউন স্তিমিত হয়ে যাচ্ছে, আবার একইসাথে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে শোনা যাচ্ছে স্বজন হারাবার আহাজারি।
শেকলভাঙার দীপ্ত শপথ এই দেশের মানুষের এটা কিন্তু প্রথম নয়। এর আগেও অনেক বার, অনেক ইস্যুতে হয়েছে। কিন্তু জীবন ও জীবিকার সাথে যখন মানুষের টিকে থাকা জড়িত, তখন সেখানে অন্যকিছু বলে মনকে মানানো মুশকিল। বইয়ের ভাষায় বলতেই হচ্ছে, মানুষ এখন অতিকায় হস্তী হয়ে একদিন বাঁচতে চায় না, বরং তেলাপোকার মতো বেঁচে থাকার মাঝেই সার্থকতা খুঁজে মন মানাতে চায়।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বাসিন্দা ইতালি প্রবাসী বাচ্চু শেখ অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে মারা যান ৩ বছর আগে। সেই মামলার রহস্যের জট খুলেছে ৩ বছর পর। আসামী আমির হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই-এর এসআই ফিরোজ আহমেদ জানান, বিগত ২০২১ সালের ৯ মার্চ ইতালি প্রবাসী বাচ্চু শেখ হানিফ এন্টারপ্রাইজের একটি বাসে করে তার গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার তপারকান্দি গ্রামে আসছিলেন। পথিমধ্যে অজ্ঞান পার্টির সদস্য আমির হোসেন ও তার দলবল কায়দা করে ভিকটিমের সাথে ভাব জমিয়ে তাকে বিস্কুটের সাথে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে খ্ইায়ে দেয় এবং তার কাছে থাকা মালামাল নিয়ে যায়। এতে সে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে বাসের হেলপার তার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে ছাগলছিড়া এলাকায় তাকে বুঝে দিয়ে বরিশালের দিকে বাস চলে যায়।
পরে
মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় বাচ্চু শেখকে প্রথমে মাদারীপুরের রাজৈর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মৃত বাচ্চু শেখের স্ত্রী মুকসুদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে গোপালগঞ্জ পিবিআই মূল অভিযুক্ত আমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে এবং সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে গোপালগঞ্জের পিবিআই-এর পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন
নওগাঁয় ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে খরিপ মৌসুমে উফশী আউশ, পাট ও গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।
এসময় নওগাঁ সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা শওকত মেহেদী সেতু’র সভাপতিত্বে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। এসময় নওগাঁ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল হক কমল ও সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম এবং পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ সহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রণোদনার অংশ হিসেবে মোট ৭ হাজার ১৫০ জন কৃষকের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে প্রতি বিঘা ফসলের জন্য উফশী আউশ ৬ হাজার ৬৭০ জনকে ৫ কেজি বীজ, ডিএপি ১০ কেজি ও এমওপি ১০ কেজি। এছাড়া ২৩০ জনের প্রত্যেককে এক কেজি করে পাট বীজ এবং গ্রীষ্মকালিন ২৫০ জন কৃষককে পেয়াঁজ চাষে এক কেজি বীজ, ডিএপি ২০ কেজি এবং এমওপি ২০ কেজি দেয়া হয়।
মন্তব্য করুন
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জানা গেছে, ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গতকাল রবিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরের পর দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে একাধিক বার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশের গাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটে।
পুলিশের গাড়িতে হামলার ঘটনায় বিজয়ী চেয়ারম্যান ওমর হোসাইন ভুলু ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আকতার হোসেন বোরহান চৌধুরী সহ ১১ জনের নাম উল্লেখ ও আরো ৪/৫শ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে পুলিশবাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেছে।
এঘটনায় বিজয়ী ও পরাজিত দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফ উদ্দিন আনোয়ার।গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (২৮ এপ্রিল) রাতে সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের আঁধার মানিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার পর আবারও দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫ রাউন্ড রাবার বুলেট, ৪ রাউন্ড গ্যাস সেল ও ২ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিজয়ী ও ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এবং জেলা কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি ওমর ইবনে হোসাইন ভুলু এবং পরাজিত প্রার্থী তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আকতার হোসেন বোরহান চৌধুরীকে আটক করেছে।
ইউপি নির্বাচন সংষর্ঘ চেয়ারম্যান প্রার্থী গ্রেপ্তার
মন্তব্য করুন
আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম ফেনী-১
মন্তব্য করুন