নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:২৮ পিএম, ০৪ অগাস্ট, ২০২১
নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলায় ২৫০ অসহায় ও দুস্থ পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী দিয়েছে কালের কণ্ঠ শুভসংঘ। এছাড়া সকলের মাঝে মাস্ক বিতরণ ও করোনা সুরক্ষায় সচেতনামূলক কর্মসূচি পালন করা হয়। আজ বুধবার উপজেলার কুজাইল বাজার মাঠে বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় এই খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে শুভসংঘের সদস্যরা।
খাদ্যসামগ্রী পেয়ে রহিম মিয়া নামের এক উপকারভোগী বলেন, আমি পঙ্গু। এই পাও নিয়ে কোনো কাম করা পাই না। কষ্টে কনোমতে দিন যায়। সরকার নাকি সাহায্য করে সেই সাহায্যও পাই না। ভাতার ট্যাকা দিয়া খরচ চালাই। তোমরা হামাঘরের জন্যে যা করলিন তা ভুলবার পারমু না। সবার ভালো হোক।
জিন্না খাতুন নামের এক উপকারভোগী বলেন, তোমাঘের বসুন্ধরা গ্রুপ মোকে সাহায্য দিল। এলা দিয়া মোর মেয়েক নিয়ে অনেক দিন খাবার পারমু। আমার খুব উপকার হইলো বা। দোয়া থুই, মোক আরো দিবার পারবি তোরা।
খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে উপস্থিত হয়ে নওগাঁ ৬ আসনের (আত্রাই রাণীনগর) সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ জানাই সারাদেশে খাদ্যসামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। আমাদের জেলায়ও তারা তিন হাজার পরিবারকে সহায়তা দিচ্ছে। এর জন্য আবারো ধন্যবাদ জানাই তাদের। আমরা চাই তাদের এই মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকুক। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে আপনারা সতর্ক থাকবেন। কেউ অযথা ঘর থেকে বের হবেন না। সবাই করোনার টিকা নিবেন। আত্মীয়-স্বজনের নিতে উৎসাহিত করবেন।
রাণীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ দুলু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্রী সুশান্ত কুমার মাহতো, কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি ফরিদুল করিম, শুভসংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শরীফ মাহ্দী আশরাফ জীবন, বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজ টুয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি বাবুল আখতার রানা, শুভসংঘ রাণীনগর শাখার সভাপতি এসএম সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, জাকারিয়া সরল, পিন্টু খন্দকার, এনামুল হক, সাজুল, এরশাদ, কুদ্দুস, শাহিনুর, মিজানুর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দু`পায়ের একটি নেই দোলে বেগমের। চলাফেরা করেন লাঠিতে ভর দিয়ে। স্বামী বেঁচে নেই। হয়নি কোনো ছেলে সন্তান। তাই এক মেয়েকেই নিয়েই অন্যের ভিটায় মাথার ঠাঁই গুঁজেছেন। সঙ্গে মেয়ের জামাইও থাকেন। রিকশা চালিয়ে সামান্য উপার্জন তার। কোনভাবে দুই বেলা খেয়ে বেঁচে আছেন। আজ চন্ডিপুর মাদরাসা মাঠে এসেছেন শুভসংঘের খাদ্যসামগ্রী নিতে। শুভসংঘের খাদ্যসামগ্রী পেয়ে বস্তা আঁকড়ে ধরে কেঁদে দিলেন দোলে বেগম। বলেন, কি কমু বা দুঃখের কথা। মেয়েত জামাই দিন আনে দিন খায় তা দিয়াই মোক কষ্টত চলে যায়। তোমাঘর খাবার পানু, দোয়া করি। আল্লা আরো দিবার তৌফিক থুক।
আব্দুল লতিফ বলেন, মুই আগে ডেকোরেটর দোকানত কাম করতাম। এলা করোনায় দোকান বন্ধ। কাম করবা পারি না৷ খাওয়া কষ্ট হয়। এলা চাল-ডাল দিয়া ১০ দিন খায়ে থাকপা পারুম৷ তোমাঘরক আল্লা সুস্থ থুক।
শুভসংঘের খাদ্যসামগ্রী পেয়ে আমেনা বেগম নামের এক উপকারভোগী বলেন, মোর স্বামী মারা গেছে। বেটা আর বেটার বউ ভিনো খায়। মোর এটা ১৪ বছরের বেটি আচে। ওর বিয়া দিচু নতুন। মানুষের বাইত কাম করে দিন চলে। নতুন বেটির বাইত অনেক কিচু দিবা হয় কিন্তু মুই নিজেই একন খাওয়া পাচোনা বেটিক কি দিমু? করোনা না হলে তাও মানসের বাইত কাম কিরে দিন চলত। একন তো খাওয়ার কষ্ট। তোমরা আজকা এলা না দিলে আজকাও না খায়ে থাকপা হলোহিনি। তোমরা যারা ত্রান দেচিন হামাঘরক আল্লা বেকের ভালো থুক।
আজ বুধবার নওগাঁ জেলার সদর উপজেলায় তাদের মতো ৫০০ অসহায় ও দুস্থ পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী দিয়েছে কালের কণ্ঠ শুভসংঘ। বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় সকলের মাঝে ১০ কেজি চাল, তিন কেজি ডাল ও তিন কেজি আটা দেওয়া হয়।
নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ৩০০ ও চন্ডিপুর বোর্ড মাদরাসা মাঠে ২০০ পরিবারকে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে শুভসংঘের সদস্যরা। এছাড়া সকলের মাঝে মাস্ক বিতরণ ও করোনা সুরক্ষায় সচেতনতামূলম কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে উপস্থিত হয়ে বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ জানিয়ে জেলা প্রশাসক মো. হারুণ-অর-রশীদ বলেন, দেশের ক্রান্তিলগ্নে বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় কালের কণ্ঠ শুভসংঘের এমন একটি উদ্যোগের জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের জেলার অসংখ্য অতিদরিদ্র মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিবে তাই তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ জানাই। করোনা মোকাবেলায় আগামী ৭ তারিখ থেকে আপনাদের মাঝে গণটিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে। আপনারা সবাই টিকা গ্রহণ করবেন। এছাড়া সবাই সঠিকভাবে মাস্ক পরে থাকবেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন।
চন্ডিপুর বোর্ড মাদরাসা মাঠে উপস্থিত হয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মির্জা ইমাম উদ্দিন বলেন, করোনার কারণে এখন খেটে খাওয়া মানুষের জন্য জীবিকা চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এই সময়ে বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্যসামগ্রী পেয়ে কিছুদিন নিশ্চিতে খেতে পারবে তারা। আমি বসুন্ধরা গ্রুপ এবং শুভসংঘের সবার মঙ্গল কামনা করি। আগামীতেও আপনাদের এই মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে সেই প্রত্যাশা করি।
খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে আরো উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিসার মো. লুৎফর রহমান, নওগাঁ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান, কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, চন্ডিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেদারুল ইসলাম মুকুল, কেডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহা. মামুন অর রশিদ, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাসমত আলী, বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজ টুয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি বাবুল আক্তার রানা, শুভসংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শরীফ মাহ্দী আশরাফ জীবন, নওগাঁ জেলার সভাপতি এড. বুলবুল আহমেদ, আতিক শাহরিয়ার, মুমিনুল ইসলাম, শাকিল হোসেন ও উত্তরা ইউনিভার্সিটির সাবেক সভাপতি আলমগীর হোসেন রনিসহ সেচ্ছাসেবী নিয়ন, নিশান, রূপক, সেতু, জয়, রায়হান, সাব্বির, মুন্না, সজল, রবিউল, রাজকুমার।
বগুড়া জেলার আত্রাই উপজেলয় ২৫০ অতিদরিদ্র পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে কালের কণ্ঠ শুভসংঘ। তাদের মাঝে ১০ কেজি চাল, তিন কেজি ডাল ও তিন কেজি আটা বিতরণ করা হয়েছে। আজ বুধবার উপজেলার কাশিয়াবাড়ী বাজার মাঠে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় এই খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। এছাড়া সকলের মাঝে মাস্ক বিতরণ ও করোনা সুরক্ষায় সচেতনামূলক পরামর্শ দেওয়া হয়।
হুইল চেয়ারে বসা মহি আক্তার। বয়স ষোলোর ঘরে। জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। কথা বলে মনের ভাবও প্রকাশ করতে পারে না। বাবা কৃষক। মহি ছোট বেলা থেকে বেড়ে ওঠেছে নানার কাছে। কাশিয়াবাড়ী বাজার মাঠে হুইল চেয়ারে করে নিয়ে এসেছেন নানা। কালের কণ্ঠ শুভসংঘের খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হয় তার কাছে। মহি কথা বলতে না পারলেও খাদ্য সহায়তা পেয়ে আনন্দিত হয়েছেন নানা। তিনি বলেন, ‘তোমাঘরক অনেক ধন্যবাদ হামাক ত্রাণ দেওয়ার জন্য। দোয়া করি দুধেভাতে থাকো। আল্লা ভালো করবে।’
মোসলেম মিয়া নামের এক ভ্যানচালক বলেন, ‘হামি ভ্যান চালাই। দিন আনি দিন খাই। কিন্তু লকডাউনের তঙ্কে ভ্যান চালাও বন্ধ। এখন ঘরত বসে আচি কিন্তু পেটতো আর কেচুই মানেনা। প্রতিদিন খাবা তো হবে। হামরা দিন আনে দিন খাওয়া মানুসেরা বিপদে পড়ে গেচি। তোমরা হামাঘরের বিপদের দিনত পাশে দাঁড়াইচিন। তোমাঘরের ভালো হক।’
খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে উপস্থিত হয়ে উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানবাক্স বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ ও কালের কণ্ঠ শুভসংঘ আমাদের উপজেলাসহ সারা দেশের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা সবাই দোয়া করি তাদের যেন আল্লাহ মঙ্গল করে। করোনা থেকে সুরক্ষিত রাখেন। বসুন্ধরা গ্রুপের মতো দেশের সকল বড় প্রতিষ্ঠান অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ালে লকডাউনে দেশের সকল অসহায় মানুষ ঘরে বসে খেতে পারতো। আমাদের করোনা মোকাবেলা করতে সহজ হত। তাই আমি সবাইকে বসুন্ধরা গ্রুপের মতো মানবিক সহায়তার জন্য আহ্বান জানাই।’
খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে আরো উপস্থিত ছিলেন- কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি ফরিদুল করিম, শুভসংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শরীফ মাহ্দী আশরাফ জীবন, আত্রাই উপজেলা শাখার সভাপতি মুজাহিদ খান, বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজ টোয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি বাবুল আখতার রানা, শুভসংঘ রাণীনগর শাখার সভাপতি এসএম সাইফুল ইসলামসহ সেচ্ছাসেবী আব্দুস সাত্তার, আব্দুল খালেদ, সাদ্দাম, মনোয়ার হোসেন, উজ্জ্বল হোসেন।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।