নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:২৫ এএম, ১৯ অক্টোবর, ২০২১
কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে ১৩ অক্টোবর পবিত্র কোরআন শরিফ অবমাননার অভিযোগ তুলে হামলা করে একদল মানুষ। এর জেরে কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপ, মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িতে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে। পুরো ঘটনাকে গভীর ষড়যন্ত্রমূলক বলে দেশে সাম্প্রদায়িক হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় ক্ষোভ ও উদ্বেগ জানিয়েছেন লেখক, অধ্যাপক, মানবাধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শীর্ষস্থানীয় ২৫ নাগরিক।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ও জনসমাজকে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
অবিলম্বে মন্দির, পূজামণ্ডপ ও হিন্দু বসতিতে হামলায় জড়িত এবং এর পেছনের হোতাদের চিহ্নিত, গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতেরও দাবি করেছেন বিশিষ্ট নাগরিকরা। পাশাপাশি তারা নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনের ব্যর্থতার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি সারোয়ার আলী, সাবেক বিএমএ সভাপতি রশিদ ই মাহবুব, নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, শিক্ষাবিদ আবুল মোমেন, অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ সেলিম জাহান, সিপিডির ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান, অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলাম, নিজেরা করির সভানেত্রী খুশী কবীর, সাবেক ইউজিসি অধাপক আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি আবুল বারকাত, অধ্যাপক এম এম আকাশ, অধ্যাপক মেঘনা গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক এ এন রাশেদা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহ-উপাচার্য তাজুল ইসলাম, অধ্যাপক সুশান্ত কুমার দাশ, অধ্যাপক বদিউর রহমান, অধ্যাপক কাবেরী গায়েন, বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মাহমুদ সেলিম, চিকিৎসক ও খেলাঘরের নেতা লেনিন চৌধুরী ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আইনজীবী হাসান তারিক চৌধুরী।
বিবৃতিতে বিশিষ্টজনরা বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সাথে লক্ষ করলাম যে দেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে পারল না। বিভিন্ন পূজামণ্ডপে হামলা, প্রতিমা ভাঙচুর, বাড়িঘরে হামলা করে এমন এক ভীতিকর ন্যক্কারজনক পরিবেশ তৈরি করা হলো, যা মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশে কারোর জন্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।’
বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেছেন, অতীতেও দেখা গেছে, নানা সময়ে ধর্মকে ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়িয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হামলা ও নৈরাজ্য সৃস্টি করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ফায়দা লোটা হয়েছে। সেসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দেওয়া হয়নি। এমনকি কোথাও কোথাও রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। এই বিচারহীনতা আবার অপরাধ সংঘটিত করতে মদদ জুগিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ধর্মকে অপব্যবহারের যেকোনো ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সজাগ থাকা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিদ্বেষী সব অপশক্তিকে প্রশ্রয় না দেওয়া, জঙ্গি ধর্মভিত্তিক শক্তির রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে নীতিনিষ্ঠভাবে সংগ্রাম পরিচালনা করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।