নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:০৬ পিএম, ২৮ অক্টোবর, ২০২১
আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা জানিয়েছে সরকার। সেই অনুযায়ী বেশ জোরেই এগিয়ে চলেছে পদ্মা সেতুর কার্যক্রম। পদ্মা সেতুতে এখন শুরু হয়েছে ভায়াডাক্টে (ডাঙার অংশ) পিচঢালাই এর কাজ। ৩০ অক্টোবরের মধ্যে মূল সেতুতে পিচঢালাই শুরু হবে।
গতকাল বুধবার (২৭ অক্টোবর) ভায়াডাক্টে এই পিচঢালাই্য়ের কার্যক্রম শুরু হয়। আগামী এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া আছে। তবে এর আগেই পিচঢালাই শেষ হবে বলে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।
পদ্মা সেতুর স্টিলের কাঠামোর (স্পেন) ওপর কংক্রিটের স্ল্যাব বসিয়ে যানবাহন চলার প্রাথমিক পথ তৈরি করা হয়। এখন এর ওপর ১০০ মিলিমিটার পুরো পিচঢালাই হবে। এরপরই সেতুর উপরিভাগের কাজ শেষ হয়ে যাবে। তখন আলোকসজ্জা, সাইড ওয়ালসহ কিছু কাজ বাকি থাকবে।
সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পের মোট অগ্রগতি ৮৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ। মূল সেতুর কাজ এগিয়েছে ৯৪ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে, নদীশাসনের কাজের অগ্রগতি ৮৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, মূল সেতুর কাজ আগামী জুনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। নদীশাসনের কাজ কিছু বাকি থাকতে পারে। তবে এর জন্য যানবাহন চলাচলে সেতু চালু করতে কোনো বাধা নেই।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, পিচঢালাইয়ের কাজে দুটি পর্ব আছে। প্রথম পর্বে কংক্রিটের পথের ওপর চার মিলিমিটারের পানিনিরোধক স্তর বসানো হচ্ছে, যা ওয়াটারপ্রুফ মেমব্রেন নামে পরিচিত। এটি অনেকটা প্লাস্টিকের আচ্ছাদনের মতো। ইংল্যান্ড ও ইতালি থেকে এই আচ্ছাদন এসেছে। তারপর পাথর, সিমেন্ট ও বিটুমিন দিয়ে কয়েক স্তরের পিচঢালাই হবে। সব মিলিয়ে পুরু হবে প্রায় ১০০ মিলিমিটার।
প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, পানিনিরোধক আচ্ছাদনও একবারে বসানো হচ্ছে না। চার স্তরে এই আচ্ছাদন দেওয়া হবে। শেষ স্তরের আচ্ছাদন দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই চূড়ান্ত পিচঢালাই করতে হবে। সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ৭ নভেম্বর থেকে পিচঢালাইয়ের কাজ শুরুর কথা ছিল। কিন্তু তা এগিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সেতু বিভাগ সূত্র বলছে, গত ১৩ জুলাই বঙ্গোপসাগরের সন্দ্বীপ চ্যানেলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের মালামালবাহী একটি জাহাজ ডুবে যায়। এর মধ্যে প্রায় ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন লোহার মালামাল ছিল। মালামালের মূল্য ১৮ কোটি টাকার মতো। শুরুতে ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে মালামাল উদ্ধারে চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু সফল হওয়া যায়নি। এ কারণে পদ্মা সেতুর রেলপথের পাশে হাঁটার পথ তৈরি ও গ্যাস পাইপলাইন বসানোর কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। এটাকে দুশ্চিন্তার কারণ মনে করছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, করোনা মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী মালবাহী জাহাজ পরিবহন কমে গেছে। নতুন করে এসব মালামাল আনতে অনেক সময় লেগে যেতে পারে। প্রয়োজনে কার্গো বিমানে মালামাল আনার বিষয়েও আলোচনা চলছে।
গত বছরের ১০ ডিসেম্বর সর্বশেষ স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর পুরোটা দৃশ্যমান হয়। এর ফলে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরাকে যুক্ত করেছে পদ্মা সেতু।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
যশোর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুর
মন্তব্য করুন
ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্কিন দূতাবাস
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে যে, আগামী মে মাসে তার বাংলাদেশ সফর করার কথা। এরপরও আরও কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বের বাংলাদেশ সফরের কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাঁক বলে মনে করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা বাস্তবতায় বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য মুখী হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে পরিবর্তিত বিশ্বে এবং যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বাংলাদেশকে নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম কারণ হলো- বাকিতে তেল-জ্বালানি পাওয়া। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের ফলে জ্বালানি তেলের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কোথাও এক বছরের বাকিতে, কোথাও তারও বেশি সময় বাকিতে জ্বালানি তেল আহরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিবাচক সমঝোতা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
কাতারের সঙ্গেও এমন একটি সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে৷
দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্য বাংলাদেশের অভিবাসীদের জন্য একটি বড় বাজার। বিশেষ করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এই সব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক বাঙালি বসবাস করে। যুদ্ধের ফলে এই সমস্ত দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। অনেক শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। আর এটি মাথায় রেখেই বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিচ্ছে, যেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা এই শ্রমিক ছাঁটাই এর আওতায় না পড়ে।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক সংকট সেই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় অদূর ভবিষ্যতে নগদ সহায়তা দরকার হতে পারে, দ্রুত ঋণ দরকার হতে পারে। আর সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশের সংকট নিরসনের একটা বড় ভরসাস্থল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর এই সমস্ত বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যমুখী। বাংলাদেশের ঋণের হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। অর্থনীতি ক্রমশ ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। এখানে থেকে উত্তরণের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন একটি দূরদর্শী কূটনৈতিক চিন্তা বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ আগামী কয়েক বছর বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ দেনা মেটাতে হবে। এই কারণেই বাংলাদেশ কখনও যেন সংকটে না পরে সেজন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশের দৃষ্টি দিয়ে দেখে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্সওয়েল মার্টিন। তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ভিত্তিতে পরিচালিত। এই সম্পর্ক ভারত, চীন, রাশিয়া বা তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পরিচালিত নয়।
বাংলাদেশ কি কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে? সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রশ্নটি কূটনৈতিকপাড়ায় ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা পাওয়া যায়। পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। দুই দিনের সফরে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কাতার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করারও আশ্বাস দিয়েছেন। সামনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসছেন।