সদ্য সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে একটি এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (০৯ ডিসেম্বর) রাতে কানাডায় যাওয়ার জন্য গতকাল বুধবার তিনি সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সে টিকিট কেটেছেন বলে জানা গেছে।
অশালীন ও নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর বক্তব্য দিয়ে তিনি মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচিত হন। এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই প্রতিমন্ত্রী নিজ দফতর থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তার দপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় মুরাদ হাসানের যে লাল পাসপোর্ট (বিশেষ পাসপোর্ট) ছিল, সেটি পদত্যাগের দিন গত মঙ্গলবার তাঁর কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, আদালতের নির্দেশে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) অনলাইন প্ল্যাটফর্মসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুরাদ হাসানের অশ্লীল-কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের ৩৮৭টি লিংক চিহ্নিত করে সেগুলো অপসারণের কাজ শুরু করেছে।
বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই রাকিব আদালতে জানান, চিহ্নিত হওয়া লিংকগুলোর মধ্যে ফেসবুক ১৫টি ও ইউটিউব ২টি লিংক অপসারণ করেছে।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টর একটি বেঞ্চে এই নিয়ে শুনানিকালে আদালত জানায়, গুজব, আপত্তিকর অডিও-ভিডিও এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিটিআরসির একটি ‘ভিজিল্যান্স টিম’ (পর্যবেক্ষণ দল) থাকা উচিত, যাতে সংস্থাটি বিষয়গুলো নজরে রেখে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারে।
অশালীন, শিষ্টাচারবহির্ভূত ও নারীর প্রতি চরম অবমাননাকর বক্তব্য দিয়ে মন্ত্রিত্ব হারান মুরাদ হাসান। গতকাল মন্ত্রিত্ব হারানো মুরাদ হাসানের নিজ দফতরের নামফলক থেকেও তার নাম মুছে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে থাকা প্রতিমন্ত্রীর তালিকা থেকেও তাঁর নামটি বাদ দেওয়া হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও তাঁর নাম নেই।
গতকাল মুরাদ হাসানের বিষয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ আবেদনকারী হয়ে রিটটি করেন। পরে তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।
রিটে আবেদনের প্রার্থনায় দেখা যায়, জামালপুর-৪ আসনের সাংসদ মুরাদ হাসানের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বিচারিক অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং তাঁর আসন (জামালপুর-৪) শূন্য ঘোষণায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না—এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। তাঁর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও টেলিফোন সংলাপ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়েও রুল চাওয়া হয়েছে। রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় মুরাদ হাসানের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বিচারিক তদন্তে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।