স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আন্তঃসীমান্ত কাগজবিহীন ব্যবসা-বাণিজ্যে (Cross-Border Paperless Trade)পরিকল্পনার কার্যকর বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
বুধবার (৫ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এডিবি এবং এসকাপ এর যৌথ আয়োজনে ‘National Validation Workshop on the Update of the Readiness Assessment for Cross-Border Paperless Trade: Bangladesh’- শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মো. মাহবুবুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. জিয়ানবো নিম (Mr. Jiangbo Ning) এবং এসকেপের এর অর্থনীতি বিষয়ক অফিসার মিজ সু হেয়ুন (Ms Soo Hyun Kim) অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
কর্মশালায় বক্তারা জানান, বাংলাদেশ বরাবরই ডিজিটাল বাণিজ্যসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডিজিটাল বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সফলভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছে। কিন্তু ডিজিটাল বাণিজ্য বিচ্ছিন্নভাবে হচ্ছে।
তারা আরও জানান, এটা অত্যন্ত খুশির খবর যে ডিজিটাল ব্যবসা-বাণিজ্যকে একক প্ল্যাটফর্মে আনার এবং সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি ডিজিটাল ট্রেড সেল প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি একটি ডিজিটাল ট্রেড গাইডলাইনও তৈরি করেছে। ডিজিটাল ব্যবসা-বাণিজ্যে যা সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও দেশের সার্বিক অবস্থান মূল্যায়ন করার মাধ্যমে এই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য রোড ম্যাপ প্রস্তুত করা প্রয়োজন। এছাড়া এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এই চুক্তির সফল বাস্তবায়নের ফলে আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যকে একদিকে যেমন সহজতর করবে অন্যদিকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে সেমিনারে বক্তারা মতামত তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী ইশতেহার ২০০৯ এ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা করা হয়েছিল। যা এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। বর্তমান সরকার দেশকে এখন স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এই ধারণাটি বাস্তবায়নের জন্য নতুন নিয়ম, প্রবিধান ও আইন সংস্কার ও প্রবর্তন করছে। কাগজবিহীন আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশ একধাপ এগিয়ে নিবে বলে জানান তিনি।
সিনিয়র সচিব আরও বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই অর্থনৈতিক অর্জনের সাফল্য প্রমাণ করেছে। এলডিসি থেকে একটি উন্নয়নশীল দেশে রুপান্তরিত হয়েছে। করোনা মহামারীর আগ মুহূর্তে দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার ৮.১৫ তে পৌঁছে ছিল যা বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলো। করোনা মহামারীর সংকট শেষ হতে না ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে পৃথিবীব্যাপী অর্থনৈতিক টালমাটালের মধ্যেও বাংলাদেশ অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে।
দিনব্যাপী কর্মশালায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও ৩৬ টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ৬৫ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
আন্তঃসীমান্ত পণ্য স্থানান্তরে বাণিজ্য লেনদেনের খরচ কমানো এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মূল্য সুশৃঙ্খলে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ২০১২ সালে ইকোনোমিক এন্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া এন্ড এশিয়া প্যাসিফিক (এসকাপ) ক্রস বর্ডার ট্রেডের জন্য একটি গবেষণা করে। পরবর্তীতে ক্রস বর্ডার পেপারলেস বাণিজ্যের সুবিধার্থে একটি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দীর্ঘ সফল আলোচনার পর ১৯ মে ২০১৬ সালে এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরে বাণিজ্যের সুবিধার্থে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি (CPTA) গৃহীত হয়। বাণিজ্য ও উন্নয়নের জন্য ডিজিটাল বাণিজ্য সহজীকরণ ব্যবস্থার পদক্ষেপের বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশ ২০২০ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ চুক্তি অনুসমর্থন করে এবং ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে কার্যকর হয়।
কাগজবিহীন আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য পরিকল্পনা
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
রিজার্ভ চুরি বাংলাদেশ ব্যাংক নিউইয়র্ক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
অর্থনৈতিক সংকট ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। বাজারে তীব্র ডলার সংকট। সবকিছু মিলিয়ে ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথমবারের মত বড় ধরনের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার। অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠাটাই এখন সরকারের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়নের কিছু কম। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন বা আকুর মার্চ-এপ্রিল মাসে দায় মেটানোর পর মোট রিজার্ভ কমে ২ হাজার ৩৭৭ কোটি ডলার বা ২৩ দশমিক ৭৭ বিলিয়নে নেমে এসেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর হিসাব পদ্ধতিতে বিপিএম-৬ অনুযায়ী বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন এক হাজার ৮৩২ কোটি ডলার বা ১৮.৩২ বিলিয়ন। প্রকৃত বা ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৩ বিলিয়ন ডলারের কিছু কম। আকুর বিল পরিশোধ করা হয়েছে ১৬৩ কোটি ডলার। এর ফলে রিজার্ভ কমে যায়।
আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দেওয়া নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ১১ কোটি মার্কিন ডলার। এ লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আইএমএফ ১ হাজার ৪৭৫ কোটি ডলারে নামিয়েছে। যদিও এখন তা ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের কম। প্রতি মাসে দেশের আমদানি দায় মেটাতে এখন প্রায় ৫০০ কোটি ডলার প্রয়োজন হচ্ছে। আর এই অবস্থায় অর্থনৈতিক সংকট ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠেছে।
এপ্রিলে মুদ্রাস্ফীতি আরও বেড়েছে এবং তা ১০ শতাংশ ছুঁইছুঁই। এর মধ্যে খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশ অতিক্রম করছে। এই অবস্থা উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। এছাড়া বাজারে ডলারের দাম এ লাফে ৭ টাকা বাড়ানোর ফলে এখন ডলার সংকট দেখা দিয়েছে। ডলারের জন্য হাহাকার ব্যাংকগুলো এলসি খুলতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে আমদানির ক্ষেত্রে। এই রকম অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করতে গিয়ে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে সরকারকে এক ধরনের কৃচ্ছতা সাধন এবং সংকোচন নীতি অনুসরণ করতে হচ্ছে। তবে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য তারা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেছেন যে ডলারের মূল্য ৭ টাকা বৃদ্ধির ফলে এখন প্রবাসী আয় বাড়বে। এই মাসে প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে তারা আশা করছেন। তাছাড়া রপ্তানি আয় বৃদ্ধির ব্যাপারেও তারা আশাবাদী।
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, প্রধানমন্ত্রী নিজে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়টি বিবেচনা করছেন এবং সেই কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক বৃদ্ধির একটি বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে। যে সমস্ত দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বেশি বাণিজ্য রয়েছে, যেমন- ভারত, চীন; সেগুলোতে ডলারের পরিবর্তে সে দেশীয় মুদ্রায় বাণিজ্য করার বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা চালানো হচ্ছে। আভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধির জন্য সরকার নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করছে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, ২০২৬ সাল নাগাদ বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে অর্থনৈতিক সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। তবে সরকার মনে করছে অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রস্তুতি চলছে, ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং এ ধরনের ব্যবস্থাগুলোর সুফল আগামী অর্থবছরে পাওয়া যাবে।
ডলার বাংলাদেশ ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার বাংলাদেশ আইএমএফ রিজার্ভ
মন্তব্য করুন
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কোমল পানীয় বা কার্বোনেটেড বেভারেজের বিক্রি থেকে প্রাপ্ত আয়ের ওপর কর (টার্নওভার ট্যাক্স) ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এই হার চলতি অর্থবছরের বাজেটেও প্রস্তাব করেছিল সংস্থাটি। পরে কোম্পানিগুলোর দাবিতে এনবিআর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। এর আগে এই করহার ছিল শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বিষয়টির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কার্বোনেটেড বেভারেজের ওপর ৫ শতাংশ করহার করার পরিকল্পনা নিচ্ছে এনবিআর। যদিও চলতি অর্থবছরেও এই প্রস্তাব ছিল আয়কর বিভাগের। পরে ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। তবে আগামী অর্থবছরে এই করহার ৫ শতাংশ করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রী সবুজ সংকেতও দিয়েছেন। অর্থাৎ রোববার এনবিআরের সঙ্গে বৈঠকে এই করহারের বিষয়ে সায় দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তবে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বাজেটের সব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর বাংলাদেশের পানীয় শিল্পের প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে। কোমল পানীয়ের খাত থেকে বর্তমানে জাতীয় কোষাগারে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা আসে। প্রস্তাবিত টার্নওভার কর বেড়ে যাওয়ার সরাসরি ফলাফল হিসেবে এটি ব্যাপকভাবে কমে যাবে।
মন্তব্য করুন
অর্থনৈতিক সংকট ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। বাজারে তীব্র ডলার সংকট। সবকিছু মিলিয়ে ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথমবারের মত বড় ধরনের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার। অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠাটাই এখন সরকারের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কোমল পানীয় বা কার্বোনেটেড বেভারেজের বিক্রি থেকে প্রাপ্ত আয়ের ওপর কর (টার্নওভার ট্যাক্স) ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এই হার চলতি অর্থবছরের বাজেটেও প্রস্তাব করেছিল সংস্থাটি। পরে কোম্পানিগুলোর দাবিতে এনবিআর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। এর আগে এই করহার ছিল শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ।