ইনসাইড ইকোনমি

কাগজবিহীন আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন দরকার

প্রকাশ: ০৪:৪১ পিএম, ০৫ এপ্রিল, ২০২৩


Thumbnail কাগজবিহীন আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন দরকার

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আন্তঃসীমান্ত কাগজবিহীন ব্যবসা-বাণিজ্যে (Cross-Border Paperless Trade)পরিকল্পনার কার্যকর বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

বুধবার (৫ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এডিবি এবং এসকাপ এর যৌথ আয়োজনে ‘National Validation Workshop on the Update of the Readiness Assessment for Cross-Border Paperless Trade: Bangladesh’- শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মো. মাহবুবুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।

বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. জিয়ানবো নিম (Mr. Jiangbo Ning) এবং এসকেপের এর অর্থনীতি বিষয়ক অফিসার মিজ সু হেয়ুন (Ms Soo Hyun Kim) অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

কর্মশালায় বক্তারা জানান, বাংলাদেশ বরাবরই ডিজিটাল বাণিজ্যসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডিজিটাল বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সফলভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছে। কিন্তু ডিজিটাল বাণিজ্য বিচ্ছিন্নভাবে হচ্ছে।

তারা আরও জানান, এটা অত্যন্ত খুশির খবর যে ডিজিটাল ব্যবসা-বাণিজ্যকে একক প্ল্যাটফর্মে আনার এবং সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি ডিজিটাল ট্রেড সেল প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি একটি ডিজিটাল ট্রেড গাইডলাইনও তৈরি করেছে। ডিজিটাল ব্যবসা-বাণিজ্যে যা সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও দেশের সার্বিক অবস্থান মূল্যায়ন করার মাধ্যমে এই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য রোড ম্যাপ প্রস্তুত করা প্রয়োজন। এছাড়া এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এই চুক্তির সফল বাস্তবায়নের ফলে আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যকে একদিকে যেমন সহজতর করবে অন্যদিকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে সেমিনারে বক্তারা মতামত তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী ইশতেহার ২০০৯ এ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা করা হয়েছিল। যা এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। বর্তমান সরকার দেশকে এখন স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এই ধারণাটি বাস্তবায়নের জন্য নতুন নিয়ম, প্রবিধান ও আইন সংস্কার ও প্রবর্তন করছে। কাগজবিহীন আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশ একধাপ এগিয়ে নিবে বলে জানান তিনি।

সিনিয়র সচিব আরও বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই অর্থনৈতিক অর্জনের সাফল্য প্রমাণ করেছে। এলডিসি থেকে একটি উন্নয়নশীল দেশে রুপান্তরিত হয়েছে। করোনা মহামারীর আগ মুহূর্তে দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার ৮.১৫ তে পৌঁছে ছিল যা বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলো। করোনা মহামারীর সংকট শেষ হতে না ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে পৃথিবীব্যাপী অর্থনৈতিক টালমাটালের মধ্যেও বাংলাদেশ অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে।

দিনব্যাপী কর্মশালায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও ৩৬ টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ৬৫ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।

আন্তঃসীমান্ত পণ্য স্থানান্তরে বাণিজ্য লেনদেনের খরচ কমানো এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মূল্য সুশৃঙ্খলে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ২০১২ সালে ইকোনোমিক এন্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া এন্ড এশিয়া প্যাসিফিক (এসকাপ) ক্রস বর্ডার ট্রেডের জন্য একটি গবেষণা করে। পরবর্তীতে ক্রস বর্ডার পেপারলেস বাণিজ্যের সুবিধার্থে একটি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দীর্ঘ সফল আলোচনার পর ১৯ মে ২০১৬ সালে এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরে বাণিজ্যের সুবিধার্থে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি (CPTA) গৃহীত হয়। বাণিজ্য ও উন্নয়নের জন্য ডিজিটাল বাণিজ্য সহজীকরণ ব্যবস্থার পদক্ষেপের বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশ ২০২০ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ চুক্তি অনুসমর্থন করে এবং ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে কার্যকর হয়।


কাগজবিহীন   আন্তঃসীমান্ত   বাণিজ্য   পরিকল্পনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

রফতানির তথ্য সঠিক, নাকি ফোলানো-ফাঁপানো

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) বিশ্ববাজারে ২ হাজার ৭৫৪ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছেন বাংলাদেশের রফতানিকারকরা। পণ্য রফতানি বাবদ জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে অর্থপ্রাপ্তি হয়েছে ১ হাজার ৮৯৬ কোটি ডলার। এ হিসাবে ঘোষিত রফতানি ও অর্থপ্রাপ্তির পার্থক্য প্রায় ৮৫৮ কোটি ডলার বা ৩১ শতাংশের কিছু বেশি।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরিসংখ্যান থেকে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এ তথ্য জানিয়েছে। তবে রফতানিকারকরা বলছেন, সরকারি সংস্থাগুলোর তথ্য সংকলন ব্যবস্থার ত্রুটিতে ফোলানো-ফাঁপানো রফতানি পরিসংখ্যান প্রকাশ হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকসংশ্লিষ্টদের কাছে রফতানিকারকের দেওয়া প্রকৃত তথ্য থাকলেও ব্যালান্স অব পেমেন্ট (বিওপি) হিসাব করতে গিয়ে তারা বিবেচনায় নিচ্ছেন ইপিবি প্রকাশিত তথ্য। এতে রফতানি ও এর বিপরীতে অর্থপ্রাপ্তির তথ্যে বড় ধরনের পার্থক্য দেখা দিচ্ছে। 

রফতানিকারকদের দাবি, হিসাব সংকলন ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে অর্থ পাচারের সন্দেহ ও অভিযোগের শিকার হচ্ছেন তারা। এছাড়া এ ত্রুটি জাতীয় আর্থিক হিসাবের তথ্য নিয়েও বিভ্রান্তি তৈরি করছে। 

দেশের ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টে গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) বড় অংকের ঘাটতি দেখা গেছে। এ ঘাটতি চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) আরো স্ফীত হয়েছে। এতে বড় ভূমিকা রাখছে ট্রেড ক্রেডিটের নিট ঘাটতি। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত রফতানির বড় অংকের অর্থ অপ্রত্যাবাসিত থেকে যাওয়ার কারণেই ট্রেড ক্রেডিটের ঘাটতি বাড়ছে, যা প্রকারান্তরে আর্থিক হিসাবের ঘাটতিকেও বাড়িয়ে তুলছে। জুলাই-মার্চ সময়ে নিট ট্রেড ঘাটতির পরিমাণ ১২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। 

রফতানির অর্থ অপ্রত্যাবাসিত থেকে যাওয়া প্রসঙ্গে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ইপিবি বলছে, তারা এনবিআর তথা কাস্টমস থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরিসংখ্যান তৈরি করছে। কিন্তু অর্থবছরের প্রথম সাত মাস (জুলাই-জানুয়ারি) শেষে দেখা গেল, এ দুই সংস্থার তথ্যে ৭ বিলিয়ন ডলারের পার্থক্য। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ইএক্সপির (রফতানির ঘোষণা) তথ্য আছে, সেটাকে বিবেচনায় না নিয়ে ইপিবির তথ্যকে ভিত্তি ধরলে রফতানির তথ্যে বড় পার্থক্য থেকে যাচ্ছে।

পোশাক রফতানিকারকদের ভাষ্য হলো নানা কারণে অর্থ প্রত্যাবাসন না হতে পারে। যেমন কোনো কোনো ক্ষেত্রে শর্তই হলো অর্থ পরিশোধ হবে ছয় মাস পর। কোনো অর্থ যদি নির্ধারিত সময়ে না আসে, সেক্ষেত্রে নির্ধারিত সময় শেষে রফতানিকারক বাংলাদেশ ব্যাংকের ড্যাশ বোর্ডে রেড মার্কড হয়ে যাবেন। পরদিন থেকে কোনো ব্যাংকই ওই রফতানিকারকের কার্যক্রমে হাত দেবে না। 

এ পরিস্থিতিতে কেউ যদি অর্থ প্রত্যাবাসন না করে থাকে, তাহলে সেই রফতানিকারকের কার্যক্রম চলমান রয়েছে কীভাবে বলে প্রশ্ন তুলছেন তারা। 

বিজিএমইএ সভাপতি এসএম মান্নান কচি বলেন, বিভিন্ন সময়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ প্রকাশিত রফতানি তথ্যের বিরোধিতা করেছে। কিন্তু এখন আগের মতোই তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে। যে কোনো কথা বলতে গেলে সঠিক তথ্য-উপাত্ত নিয়েই কথা বলা উচিত। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি। যে তথ্য দেয়া হয় সেটা যে একতরফা তথ্য, সেটা বিভিন্ন সময়ে প্রমাণিত হয়েছে। 

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, রফতানি তথ্যের পার্থক্যের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যৌক্তিক কারণ রয়েছে। প্রকৃত রফতানি তথ্য নিশ্চিতে বাণিজ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয় কাজ করছে। তারা যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত চিত্র তুলে আনলেই পার্থক্যের যথার্থ কারণ বেরিয়ে আসবে।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

নতুন করে রিজার্ভ চুরির সংবাদ, যা জানাল বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রকাশ: ১০:২৮ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার চুরি করে নিয়েছে ভারতীয় হ্যাকাররা। দেশটির এক সংবাদপত্রে প্রকাশিত এ খবরটি সত্য নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মঙ্গলবার (১৪ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্রের দপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, নিউইয়র্ক ফেডের সঙ্গে লেনদেনে নিশ্চয়তার ক্ষেত্রে বর্তমানে তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নীতি চালু রয়েছে। এর ফলে যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, তা ভুয়া (ফেক)।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান, আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, রিজার্ভ চুরির কোনো ঘটনা ঘটেনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার চুরি করে নিয়েছে ভারতীয় হ্যাকাররা। মঙ্গলবার দেশটির এক সংবাদপত্রে এমন একটি খবর প্রকাশিত হয়। এতে সারাদেশে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। বিষয়টির সত্যতা জানতে অনেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে প্রতিবেদনটির সত্যতা নাকচ করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৬ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়ে যায়। ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ মতিঝিল থানায় মামলাটি দায়ের করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জুবায়ের বিন হুদা। ১৬ মার্চ মামলাটি তদন্ত করে সিআইডিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত। মামলাটিতে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫)-এর ৪ ধারাসহ তথ্য ও প্রযুক্তি আইন, ২০০৬-এর ৫৪ ও ৩৭৯ ধারায় করা মামলায় সরাসরি কাউকে আসামি করা হয়নি। ২০১৬ সালের রিজার্ভ চুরির ঘটনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে বর্তমানে মামলা চলছে।

ওই সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করে অপরাধীরা। চুরি হওয়া অর্থের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় চলে যাওয়া দুই কোটি ডলার উদ্ধার করা হয়েছে। চুরি যাওয়া অর্থের মধ্যে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৩ কোটি ৪৬ লাখ ডলার উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার এখনো ফেরত পাওয়া যায়নি।

রিজার্ভ চুরি   বাংলাদেশ ব্যাংক   নিউইয়র্ক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

দুর্বল ব্যাংকের ঋণ প্রদান বন্ধ করতে হবে: সাদিক আহমেদ

প্রকাশ: ০৯:৪৩ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমাতে দুর্বল ও সমস্যাযুক্ত ব্যাংকগুলোর ঋণ প্রদান বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ। 

মঙ্গলবার (১৪ মে) রাজধানীর গুলশানে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) আয়োজিত ‘সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও এর চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সাদিক আহমেদ। 

তিনি বলেন, খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশের নিচে কমিয়ে আনার আগপর্যন্ত দুর্বল ব্যাংকগুলোকে নতুন ঋণ দেওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে। এটিই খেলাপি ঋণ কমানোর সবচেয়ে প্রত্যক্ষ ও টেকসই উপায়।

সাদিক আহমেদ বলেন, এ সময় পর্যন্ত ১৬টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বিতরণ করা মোট ঋণের ১০ শতাংশের ওপরে ছিল। এর মধ্যে ৯টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ছিল ২০ শতাংশের বেশি। এই সমস্যাযুক্ত ব্যাংকগুলোর বেশির ভাগই ব্যাংকিং পরিচালনা রীতি (ব্যাসেল ৩ নিয়মের আওতায় মূলধন পর্যাপ্ততার শর্ত) পূরণ করেনি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যে দীর্ঘমেয়াদি অগ্রগতি হচ্ছিল, তা গত চার বছরে একাধিক বাহ্যিক ধাক্কায় হুমকির মুখে পড়েছে। অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে, তবে এর ফলাফল এখন পর্যন্ত আশানুরূপ নয়। বর্তমানে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট ও জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিম্নমুখী রয়েছে। বিনিয়োগ ও রপ্তানি বৃদ্ধির হারও কম।

বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে উদ্বেগগুলোর মধ্যে চলতি হিসাবে ঘাটতিকে প্রথম স্থানে রাখেন সাদিক আহমেদ। তিনি বলেন, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে আমদানি ব্যয় বাড়ায় বড় ধরনের বাণিজ্য ও চলতি হিসাবের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সরকার আমদানি কমিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করেনি। ফলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে রিজার্ভ কমেছে। মাত্র ১১ মাসে ৪৪ শতাংশ বা ২১ বিলিয়নের বেশি রিজার্ভ কমেছে। এটা বড় ধরনের চাপ।

সাদিক আহমেদের মতে, বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় দ্বিতীয় উদ্বেগ হচ্ছে রিজার্ভ কমে যাওয়া ও টাকার অবমূল্যায়ন। তিনি বলেন, আমদানি নিয়ন্ত্রণ ও শুল্ক বৃদ্ধির পরও সরকার রিজার্ভের ক্ষতি রোধ করতে পারেনি। সরকার দীর্ঘদিন যাবৎ বিনিময় হার এক জায়গায় বেঁধে রেখেছিল। এখন টাকার অবমূল্যায়ন করে বিনিময় হার সমন্বয়ের উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে বর্তমান মূল্যস্ফীতির জন্য টাকার অবমূল্যায়নকে নয়, বরং বিনিময় হার ধরে রাখাকে দোষ দিতে হবে।

পিআরআই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে দেশে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ২০২৩ সালের আগস্টে বৃদ্ধি পেয়ে ৯ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছায়। এরপর থেকে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের আশপাশে থাকছে। এ ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে কর-জিডিপি হার বাড়ছে না। এসব বিষয়ে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। তবে আশ্চর্যজনকভাবে কোনো উদ্যোগই কাজ করেনি।

দুর্বল ব্যাংক   ঋণ খেলাপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

অর্থনৈতিক সংকট কাটবে কীভাবে?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

অর্থনৈতিক সংকট ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। বাজারে তীব্র ডলার সংকট। সবকিছু মিলিয়ে ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথমবারের মত বড় ধরনের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার। অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠাটাই এখন সরকারের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়নের কিছু কম। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন বা আকুর মার্চ-এপ্রিল মাসে দায় মেটানোর পর মোট রিজার্ভ কমে ২ হাজার ৩৭৭ কোটি ডলার বা ২৩ দশমিক ৭৭ বিলিয়নে নেমে এসেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর হিসাব পদ্ধতিতে বিপিএম-৬ অনুযায়ী বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন এক হাজার ৮৩২ কোটি ডলার বা ১৮.৩২ বিলিয়ন। প্রকৃত বা ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৩ বিলিয়ন ডলারের কিছু কম। আকুর বিল পরিশোধ করা হয়েছে ১৬৩ কোটি ডলার। এর ফলে রিজার্ভ কমে যায়।

আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দেওয়া নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ১১ কোটি মার্কিন ডলার। এ লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আইএমএফ ১ হাজার ৪৭৫ কোটি ডলারে নামিয়েছে। যদিও এখন তা ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের কম। প্রতি মাসে দেশের আমদানি দায় মেটাতে এখন প্রায় ৫০০ কোটি ডলার প্রয়োজন হচ্ছে। আর এই অবস্থায় অর্থনৈতিক সংকট ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠেছে।

এপ্রিলে মুদ্রাস্ফীতি আরও বেড়েছে এবং তা ১০ শতাংশ ছুঁইছুঁই। এর মধ্যে খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশ অতিক্রম করছে। এই অবস্থা উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। এছাড়া বাজারে ডলারের দাম এ লাফে ৭ টাকা বাড়ানোর ফলে এখন ডলার সংকট দেখা দিয়েছে। ডলারের জন্য হাহাকার ব্যাংকগুলো এলসি খুলতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে আমদানির ক্ষেত্রে। এই রকম অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করতে গিয়ে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে সরকারকে এক ধরনের কৃচ্ছতা সাধন এবং সংকোচন নীতি অনুসরণ করতে হচ্ছে। তবে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য তারা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেছেন যে ডলারের মূল্য ৭ টাকা বৃদ্ধির ফলে এখন প্রবাসী আয় বাড়বে। এই মাসে প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে তারা আশা করছেন। তাছাড়া রপ্তানি আয় বৃদ্ধির ব্যাপারেও তারা আশাবাদী।

সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, প্রধানমন্ত্রী নিজে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়টি বিবেচনা করছেন এবং সেই কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক বৃদ্ধির একটি বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে। যে সমস্ত দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বেশি বাণিজ্য রয়েছে, যেমন- ভারত, চীন; সেগুলোতে ডলারের পরিবর্তে সে দেশীয় মুদ্রায় বাণিজ্য করার বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা চালানো হচ্ছে। আভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধির জন্য সরকার নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করছে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, ২০২৬ সাল নাগাদ বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে অর্থনৈতিক সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। তবে সরকার মনে করছে অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রস্তুতি চলছে, ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং এ ধরনের ব্যবস্থাগুলোর সুফল আগামী অর্থবছরে পাওয়া যাবে।


ডলার   বাংলাদেশ ব্যাংক   অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার বাংলাদেশ   আইএমএফ   রিজার্ভ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

২০২৪-২৫ অর্থবছরে কোমল পানীয়র করভার বাড়ার সম্ভবনা

প্রকাশ: ১১:১৭ এএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কোমল পানীয় বা কার্বোনেটেড বেভারেজের বিক্রি থেকে প্রাপ্ত আয়ের ওপর কর (টার্নওভার ট্যাক্স) ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। 

এই হার চলতি অর্থবছরের বাজেটেও প্রস্তাব করেছিল সংস্থাটি। পরে কোম্পানিগুলোর দাবিতে এনবিআর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। এর আগে এই করহার ছিল শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ। 

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বিষয়টির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কার্বোনেটেড বেভারেজের ওপর ৫ শতাংশ করহার করার পরিকল্পনা নিচ্ছে এনবিআর। যদিও চলতি অর্থবছরেও এই প্রস্তাব ছিল আয়কর বিভাগের। পরে ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। তবে আগামী অর্থবছরে এই করহার ৫ শতাংশ করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রী সবুজ সংকেতও দিয়েছেন। অর্থাৎ রোববার এনবিআরের সঙ্গে বৈঠকে এই করহারের বিষয়ে সায় দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তবে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বাজেটের সব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।

উল্লেখ্য, প্রতি বছর বাংলাদেশের পানীয় শিল্পের প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে। কোমল পানীয়ের খাত থেকে বর্তমানে জাতীয় কোষাগারে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা আসে। প্রস্তাবিত টার্নওভার কর বেড়ে যাওয়ার সরাসরি ফলাফল হিসেবে এটি ব্যাপকভাবে কমে যাবে। 


কোমল পানীয়   করভার  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন