ইনসাইড ইকোনমি

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের রফতানি কমছে কেন?

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১১ জুন, ২০২৩


Thumbnail

বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের যখন নানারকম টানাপোড়নের গুঞ্জন সেই মুহুর্তে নতুন একটি খবর সবাইকে উদ্বিগ্ন করেছে। নতুন খবরটি হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি কমে গেছে। মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস অফ টেক্সটাইল অন্ড অ্যাপারেল হালনাগাদ পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের প্রথম মাসে যুক্তরাষ্ট্র তৈরি পোশাক আমদানি ২২ শতাংশ কমিছে। আর এর ফলে শুধু যে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা নয়, চীনসহ আরও কয়েকটি দেশও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ঠিক এক বছর আগে এই সময়ে রপ্তানির ছিল ৩২৮ কোটি ডলারের পোশাক। সেই হিসেবে রপ্তানি কমেছে। জানুয়ারি-এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২৭০ কোটি ডলারের। অর্থাৎ রপ্তানি কমেছে প্রায় ১৮ শতাংশ। এই রপ্তানি কেন কমলো এ নিয়ে নানা রকম গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। 
গত কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নানারকম চাপ প্রয়োগ করছে। বিশেষ করে বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র‌্যাবের ওপর এবং তাদের কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। গত মানবাধিকার রিপোর্টে বাংলাদেশের মানবাধিকার, সুশাসন, গণতন্ত্র ইত্যাদি নয়ে নানা প্রশ্ন তোলা হয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রীতিমতো আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। তারা আগামী নির্বাচন যেকোনো মূল্যে অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ করতে চায় এমন বার্তা দিয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন ২৪ মে বাংলাদেশের নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছেন। এই নতুন ভিসা নীতিতে বলা হয়েছে অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনে বাধা দিলে, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ এবং মতপ্রকাশের অধিকারের বাধা দিলে যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদেরকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেবে না। শুধু তাদের নয়, তাদের পরিবারের সদস্যরাও এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। 

এই নীতিমালা ঘোষণা পর রাজনীতিতে এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ চলছে। এর মধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমার বার্তাটি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কোনো কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। সেই মন্দার কারণে সার্বিকভাবেই তাদের বিশ্ববাজার থেকে পোশাক রপ্তানি কমে গেছে এবং এই পোশাক রপ্তানি যে শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কমেছে তাই নয়। অন্যান্য দেশ যেমন চীন, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার ক্ষেত্রেও একই ভাবে এই রপ্তানি হ্রাস প্রযোজ্য। তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই রপ্তানি কমা বাংলাদেশের হারটি অনেক বেশি। আর এটির পেছনে অন্য কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে কেউ কেউ শঙ্কা প্রকাশ করছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন দেশ সফর শেষে ফিরে বলেছিলেন, যে সমস্ত দেশ বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিবে তাদের পণ্য আমরা কিনবো না। কিন্তু বাণিজ্য আমদানি-রপ্তানির হিসেবে দেখা যায় যে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। বিশেষ করে বাংলাদেশের পোশাকখাতের রপ্তানির একটি বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্রেই যায়। আর এ কারণেই পোশাক খাতের রপ্তানি কমে যাওয়া বাংলাদেশের জন্য এক অশনি সংকেত। অর্থনৈতিক মন্দার জন্যই হোক বা রাজনৈতিক কারণেই হোক পোশাক খাতের রপ্তানি দ্রুত বৃদ্ধি না করতে পারলে সামনে অর্থনৈতিক সংকট আরও বাড়তে পারে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। 

যুক্তরাষ্ট্র   বাংলাদেশি পণ্য   রফতানি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

নতুন করে রিজার্ভ চুরির সংবাদ, যা জানাল বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রকাশ: ১০:২৮ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার চুরি করে নিয়েছে ভারতীয় হ্যাকাররা। দেশটির এক সংবাদপত্রে প্রকাশিত এ খবরটি সত্য নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মঙ্গলবার (১৪ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্রের দপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, নিউইয়র্ক ফেডের সঙ্গে লেনদেনে নিশ্চয়তার ক্ষেত্রে বর্তমানে তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নীতি চালু রয়েছে। এর ফলে যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, তা ভুয়া (ফেক)।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান, আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, রিজার্ভ চুরির কোনো ঘটনা ঘটেনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার চুরি করে নিয়েছে ভারতীয় হ্যাকাররা। মঙ্গলবার দেশটির এক সংবাদপত্রে এমন একটি খবর প্রকাশিত হয়। এতে সারাদেশে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। বিষয়টির সত্যতা জানতে অনেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে প্রতিবেদনটির সত্যতা নাকচ করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৬ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়ে যায়। ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ মতিঝিল থানায় মামলাটি দায়ের করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জুবায়ের বিন হুদা। ১৬ মার্চ মামলাটি তদন্ত করে সিআইডিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত। মামলাটিতে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫)-এর ৪ ধারাসহ তথ্য ও প্রযুক্তি আইন, ২০০৬-এর ৫৪ ও ৩৭৯ ধারায় করা মামলায় সরাসরি কাউকে আসামি করা হয়নি। ২০১৬ সালের রিজার্ভ চুরির ঘটনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে বর্তমানে মামলা চলছে।

ওই সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করে অপরাধীরা। চুরি হওয়া অর্থের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় চলে যাওয়া দুই কোটি ডলার উদ্ধার করা হয়েছে। চুরি যাওয়া অর্থের মধ্যে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৩ কোটি ৪৬ লাখ ডলার উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার এখনো ফেরত পাওয়া যায়নি।

রিজার্ভ চুরি   বাংলাদেশ ব্যাংক   নিউইয়র্ক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

দুর্বল ব্যাংকের ঋণ প্রদান বন্ধ করতে হবে: সাদিক আহমেদ

প্রকাশ: ০৯:৪৩ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমাতে দুর্বল ও সমস্যাযুক্ত ব্যাংকগুলোর ঋণ প্রদান বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ। 

মঙ্গলবার (১৪ মে) রাজধানীর গুলশানে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) আয়োজিত ‘সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও এর চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সাদিক আহমেদ। 

তিনি বলেন, খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশের নিচে কমিয়ে আনার আগপর্যন্ত দুর্বল ব্যাংকগুলোকে নতুন ঋণ দেওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে। এটিই খেলাপি ঋণ কমানোর সবচেয়ে প্রত্যক্ষ ও টেকসই উপায়।

সাদিক আহমেদ বলেন, এ সময় পর্যন্ত ১৬টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বিতরণ করা মোট ঋণের ১০ শতাংশের ওপরে ছিল। এর মধ্যে ৯টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ছিল ২০ শতাংশের বেশি। এই সমস্যাযুক্ত ব্যাংকগুলোর বেশির ভাগই ব্যাংকিং পরিচালনা রীতি (ব্যাসেল ৩ নিয়মের আওতায় মূলধন পর্যাপ্ততার শর্ত) পূরণ করেনি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যে দীর্ঘমেয়াদি অগ্রগতি হচ্ছিল, তা গত চার বছরে একাধিক বাহ্যিক ধাক্কায় হুমকির মুখে পড়েছে। অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে, তবে এর ফলাফল এখন পর্যন্ত আশানুরূপ নয়। বর্তমানে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট ও জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিম্নমুখী রয়েছে। বিনিয়োগ ও রপ্তানি বৃদ্ধির হারও কম।

বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে উদ্বেগগুলোর মধ্যে চলতি হিসাবে ঘাটতিকে প্রথম স্থানে রাখেন সাদিক আহমেদ। তিনি বলেন, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে আমদানি ব্যয় বাড়ায় বড় ধরনের বাণিজ্য ও চলতি হিসাবের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সরকার আমদানি কমিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করেনি। ফলে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে রিজার্ভ কমেছে। মাত্র ১১ মাসে ৪৪ শতাংশ বা ২১ বিলিয়নের বেশি রিজার্ভ কমেছে। এটা বড় ধরনের চাপ।

সাদিক আহমেদের মতে, বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় দ্বিতীয় উদ্বেগ হচ্ছে রিজার্ভ কমে যাওয়া ও টাকার অবমূল্যায়ন। তিনি বলেন, আমদানি নিয়ন্ত্রণ ও শুল্ক বৃদ্ধির পরও সরকার রিজার্ভের ক্ষতি রোধ করতে পারেনি। সরকার দীর্ঘদিন যাবৎ বিনিময় হার এক জায়গায় বেঁধে রেখেছিল। এখন টাকার অবমূল্যায়ন করে বিনিময় হার সমন্বয়ের উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে বর্তমান মূল্যস্ফীতির জন্য টাকার অবমূল্যায়নকে নয়, বরং বিনিময় হার ধরে রাখাকে দোষ দিতে হবে।

পিআরআই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে দেশে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ২০২৩ সালের আগস্টে বৃদ্ধি পেয়ে ৯ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছায়। এরপর থেকে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের আশপাশে থাকছে। এ ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে কর-জিডিপি হার বাড়ছে না। এসব বিষয়ে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। তবে আশ্চর্যজনকভাবে কোনো উদ্যোগই কাজ করেনি।

দুর্বল ব্যাংক   ঋণ খেলাপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

অর্থনৈতিক সংকট কাটবে কীভাবে?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

অর্থনৈতিক সংকট ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। বাজারে তীব্র ডলার সংকট। সবকিছু মিলিয়ে ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথমবারের মত বড় ধরনের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার। অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠাটাই এখন সরকারের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ১৩ বিলিয়নের কিছু কম। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন বা আকুর মার্চ-এপ্রিল মাসে দায় মেটানোর পর মোট রিজার্ভ কমে ২ হাজার ৩৭৭ কোটি ডলার বা ২৩ দশমিক ৭৭ বিলিয়নে নেমে এসেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর হিসাব পদ্ধতিতে বিপিএম-৬ অনুযায়ী বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন এক হাজার ৮৩২ কোটি ডলার বা ১৮.৩২ বিলিয়ন। প্রকৃত বা ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৩ বিলিয়ন ডলারের কিছু কম। আকুর বিল পরিশোধ করা হয়েছে ১৬৩ কোটি ডলার। এর ফলে রিজার্ভ কমে যায়।

আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দেওয়া নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ১১ কোটি মার্কিন ডলার। এ লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আইএমএফ ১ হাজার ৪৭৫ কোটি ডলারে নামিয়েছে। যদিও এখন তা ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের কম। প্রতি মাসে দেশের আমদানি দায় মেটাতে এখন প্রায় ৫০০ কোটি ডলার প্রয়োজন হচ্ছে। আর এই অবস্থায় অর্থনৈতিক সংকট ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠেছে।

এপ্রিলে মুদ্রাস্ফীতি আরও বেড়েছে এবং তা ১০ শতাংশ ছুঁইছুঁই। এর মধ্যে খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশ অতিক্রম করছে। এই অবস্থা উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। এছাড়া বাজারে ডলারের দাম এ লাফে ৭ টাকা বাড়ানোর ফলে এখন ডলার সংকট দেখা দিয়েছে। ডলারের জন্য হাহাকার ব্যাংকগুলো এলসি খুলতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে আমদানির ক্ষেত্রে। এই রকম অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করতে গিয়ে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে সরকারকে এক ধরনের কৃচ্ছতা সাধন এবং সংকোচন নীতি অনুসরণ করতে হচ্ছে। তবে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য তারা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেছেন যে ডলারের মূল্য ৭ টাকা বৃদ্ধির ফলে এখন প্রবাসী আয় বাড়বে। এই মাসে প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে তারা আশা করছেন। তাছাড়া রপ্তানি আয় বৃদ্ধির ব্যাপারেও তারা আশাবাদী।

সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, প্রধানমন্ত্রী নিজে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়টি বিবেচনা করছেন এবং সেই কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক বৃদ্ধির একটি বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে। যে সমস্ত দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বেশি বাণিজ্য রয়েছে, যেমন- ভারত, চীন; সেগুলোতে ডলারের পরিবর্তে সে দেশীয় মুদ্রায় বাণিজ্য করার বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা চালানো হচ্ছে। আভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধির জন্য সরকার নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করছে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, ২০২৬ সাল নাগাদ বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে অর্থনৈতিক সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। তবে সরকার মনে করছে অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রস্তুতি চলছে, ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং এ ধরনের ব্যবস্থাগুলোর সুফল আগামী অর্থবছরে পাওয়া যাবে।


ডলার   বাংলাদেশ ব্যাংক   অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার বাংলাদেশ   আইএমএফ   রিজার্ভ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

২০২৪-২৫ অর্থবছরে কোমল পানীয়র করভার বাড়ার সম্ভবনা

প্রকাশ: ১১:১৭ এএম, ১৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কোমল পানীয় বা কার্বোনেটেড বেভারেজের বিক্রি থেকে প্রাপ্ত আয়ের ওপর কর (টার্নওভার ট্যাক্স) ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। 

এই হার চলতি অর্থবছরের বাজেটেও প্রস্তাব করেছিল সংস্থাটি। পরে কোম্পানিগুলোর দাবিতে এনবিআর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। এর আগে এই করহার ছিল শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ। 

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বিষয়টির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কার্বোনেটেড বেভারেজের ওপর ৫ শতাংশ করহার করার পরিকল্পনা নিচ্ছে এনবিআর। যদিও চলতি অর্থবছরেও এই প্রস্তাব ছিল আয়কর বিভাগের। পরে ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। তবে আগামী অর্থবছরে এই করহার ৫ শতাংশ করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রী সবুজ সংকেতও দিয়েছেন। অর্থাৎ রোববার এনবিআরের সঙ্গে বৈঠকে এই করহারের বিষয়ে সায় দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তবে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বাজেটের সব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।

উল্লেখ্য, প্রতি বছর বাংলাদেশের পানীয় শিল্পের প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে। কোমল পানীয়ের খাত থেকে বর্তমানে জাতীয় কোষাগারে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা আসে। প্রস্তাবিত টার্নওভার কর বেড়ে যাওয়ার সরাসরি ফলাফল হিসেবে এটি ব্যাপকভাবে কমে যাবে। 


কোমল পানীয়   করভার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

মূল্যস্ফীতি ফের ১০ শতাংশ ছাড়াল

প্রকাশ: ০৭:১৬ পিএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

এপ্রিলে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১০ শতাংশের ঘরে উঠেছে। মূল্যস্ফীতি বেড়ে এখন ১০ দশমিক ২২ শতাংশে। অর্থাৎ ৪ মাস পর খাদ্য মূল্যস্ফীতি আবার দশ শতাংশ ছাড়াল। আগের মাসে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

সোমবার (১৩ মে) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। যা এপ্রিলে ১০ দশমিক ২২ শতাংশে দাঁড়ায়। এর আগে গত বছরের নভেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। অন্যদিকে, খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি গত মার্চের তুলনায় এপ্রিলে সাত বেসিস পয়েন্ট কমে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ হয়েছে। মার্চে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ।

অন্যদিকে, গ্রামে শহরের চেয়ে মূল্যস্ফীতির হার বেশি। গত এপ্রিলে গ্রামে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। শহরে এই হার ৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ। পাশাপাশি গ্রামে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ১০ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং খাদ্য বহির্ভূত খাতে এই হার ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ।

মূল্যস্ফীতি   বিবিএস  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন