দুই মেয়াদ পর দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালনা পর্ষদের একাংশের নির্বাচন ঘিরে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ ও সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ নামের দুই প্যানেলের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা জমে উঠেছে। প্রার্থীরা ভোট চাইতে সাধারণ সদস্যদের কাছে যাচ্ছেন। বিভিন্ন ধরনের প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন। উভয় প্যানেলের নির্বাচনী সমাবেশেও সাধারণ ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছেন। তাতে নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে- এমনটাই বলছেন প্রার্থীরা।
এদিকে প্রচার-প্রচারণার মধ্যে ভোটারদের উপঢৌকন বা উপহার দেওয়া নিয়েও বেশ বিতর্ক হচ্ছে। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ভোটার টানতে উভয় প্যানেলের প্রার্থীরা বিভিন্ন ধরনের উপহার দিচ্ছেন। সেই তালিকায় ফ্রাইপ্যান, হটপট, মাইক্রোওয়েব ওভেন, চা-পাতা, চাল-ডাল-তেল ইত্যাদি পণ্য রয়েছে। এমনকি নির্বাচনী সমাবেশে র্যাফল ড্রর নামে এলইডি টেলিভিশনসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রী উপহার দেওয়া হচ্ছে ভোটারদের।
এফবিসিসিআইয়ের ২০২৩-২৫ মেয়াদে অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের ২৩ পরিচালক পদে ভোট হবে আগামী সোমবার। ঢাকার আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সেদিন সকাল নয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। ভোট দেবেন ১ হাজার ৯৯০ জন ব্যবসায়ী। আর এই পদের বিপরীতে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ ও সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ ২৩ জন করে ৪৬ জন প্রার্থী দিয়েছে। এর বাইরে আছেন তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের পরিচালক পদে চেম্বার গ্রুপের ২৩ পদের জন্য শুধু ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের প্রার্থী থাকায় ভোটের প্রয়োজন পড়ছে না। আর চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে ৩৪ জন মনোনীত পরিচালক পদের বিপরীতে প্রার্থী আছেন ৩২ জন। দুটি পদ ফাঁকা রয়েছে। সব মিলিয়ে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক পদ ৮০টি।
জানতে চাইলে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান এ মতিন চৌধুরী গতকাল বলেন, ‘প্রার্থীরা ভোটারদের উপহার দিচ্ছেন- এমন কথা আমরা শুনেছি। এরপর আমরা দুই দফা প্রার্থীদের সতর্ক করে নোটিশ জারি করেছি।
তথ্যপ্রমাণসহ কেউ অভিযোগ না করায় আমরা কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারিনি। আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ অভিযোগ করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
ভোটে সন্তোষ, টাকা-উপহার বিতর্ক
এফবিসিসিআইয়ের নেতৃত্ব নির্বাচনে সর্বশেষ ভোট হয় ২০১৭ সালে, তা-ও আংশিক। পরিচালক পদে চেম্বার অংশে ভোট ছাড়াই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হন। পণ্যভিত্তিক সংগঠন বা অ্যাসোসিয়েশন অংশে ভোট হয়েছিল। সেবার সভাপতি হন শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। পরের দুই মেয়াদে নির্বাচন ছাড়াই সভাপতি হন যথাক্রমে শেখ ফজলে ফাহিম ও মো. জসিম উদ্দিন।
দুই মেয়াদ পর ভোট হওয়ার সাধারণ সদস্যদের অনেকেই সন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁরা বলছেন, ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন হওয়াটা ইতিবাচক। কারণ, ভোটে জয় পেতে প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যান। বিভিন্ন ভালো কাজের প্রতিশ্রুতি দেন। কাজের জবাবদিহির সুযোগও তৈরি হয়।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফ্রুটস, ভেজিটেবল অ্যান্ড অ্যালায়েড প্রোডাক্টস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনসুর বলেন, ভোটারদের মধ্যেও উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে, অনেক দিন পর প্রতিযোগিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে।
অবশ্য প্রার্থীদের উপহার দেওয়া নিয়ে অনেক সাধারণ সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তাঁদের মধ্যে একজন বাংলাদেশ নন পেকার ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ বাবুল আক্তার বলেন, প্রার্থীদের কেউ কেউ ১০ হাজার টাকারও উপহার দিচ্ছেন। এতে ভোটার হিসেবে আমার লজ্জা হচ্ছে। অযোগ্য প্রার্থীদের অনেকে উপহার দিয়ে ভোটারদের নজরে আসতে চান।
এদিকে নির্বাচন ঘিরে পুরান ঢাকার ওয়ারী, মতিঝিল, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যানার ফেস্টুন লাগিয়েছেন কয়েকজন প্রার্থী। ঢাকার কয়েকটি এলাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামে উভয় প্যানেল নির্বাচনী সভা করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচার চলছে। ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে অর্থাৎ শনিবার সকালে নির্বাচনী প্রচার শেষ হচ্ছে।
দীর্ঘদিন ধরেই এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি কে হবেন সেটি সরকারের উচ্চ মহল থেকে চূড়ান্ত করা হয়। এবার সভাপতি পদে চট্টগ্রাম চেম্বারের বর্তমান সভাপতি মাহবুবুল আলম সবুজ সংকেত পেয়েছেন। গত ২০ জুন তাঁকে এফবিসিসিআইয়ের পরবর্তী সভাপতি হিসেবে সমর্থন দিয়েছেন ফেডারেশনের সাবেক সভাপতিসহ বিভিন্ন চেম্বার ও পণ্যভিত্তিক বাণিজ্য সংগঠনের নেতারা। ফলে মাহবুবুল আলমের সভাপতি হওয়া মোটামুটি নিশ্চিত। আর ভোটের আগেই মনোনীত ও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ৫৫ পরিচালক হয়েছেন। তাঁরা মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বাধীন প্যানেলের পক্ষের।
ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের প্যানেল লিডার মাহবুবুল আলম গতকাল রাতে বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণা বেশ জমে উঠেছে। আমরা শতভাগ পদে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’ প্রার্থীদের উপহার দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘উপহার দেওয়ার অভিযোগ পাচ্ছি। তবে এই উপহার সংস্কৃতি ভালো না। উপহার দিয়ে ভোটারদের অমযার্দা করা হয়।’
অন্যদিকে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের আহ্বায়ক মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা সাধারণ সদস্যদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য নির্বাচন করছি। আমাদের হারানোর কিছু নেই। তবে যেখানেই নির্বাচনী সভা করেছি, সেখানে সাধারণ ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছেন। ফলে আমরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’
উপহার দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, কেউ কেউ উপহার দিয়েছেন। তবে বড় ধরনের অনিয়ম হয়নি।
জমজমাট এফবিসিসিআইয় নির্বাচন প্রচারণা উপহার বিতর্ক
মন্তব্য করুন
ব্যাংক একীভূত বাংলাদেশ ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংক
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন বাজুস স্বর্ণ
মন্তব্য করুন
ব্যাংক একীভূত ন্যাশনাল ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক ইউসিবি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যানুযায়ী, চলতি মাসের প্রথম ২৬ দিনে দেশে এসেছে ১৬৮ কোটি ৯ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ৬ কোটি ৪৬ লাখ ডলার দেশে এসেছে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, এপ্রিল মাসের প্রথম ২৬ দিনে দেশে এসেছে ১৬৮ কোটি ৯ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর মার্চ মাসের প্রথম ২৬ দিনে এসেছিল ১৬২ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। সেই হিসাব অনুযায়ী, চলতি মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এপ্রিলের প্রথম ২৬ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৬ কোটি ১ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এ ছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৪২ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৩ লাখ ৬০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, এপ্রিলের ২০ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ৩৯ কোটি ৯৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার। ১৩ থেকে ১৯ এপ্রিল দেশে এসেছে ৪০ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। এছাড়া ৬ থেকে ১২ এপ্রিলের মধ্যে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৪২ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার। আর ১ থেকে ৫ এপ্রিল দেশে এসেছে ৪৫ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
রেমিট্যান্স ডলার বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্তব্য করুন
ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সবল ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূতকরণ প্রক্রিয়ার শুরুতেই বড় ধাক্কার আশঙ্কা করা হচ্ছে। একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় যে পাঁচটি ব্যাংকের নাম কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে এর মধ্যে দুটি ব্যাংক আপত্তি জানিয়েছে। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংকের একীভূত হওয়া সিদ্ধান্ত হলেও একীভূত হতে নারাজ ন্যাশনাল ব্যাংক। এর পরিবর্তে খেলাপি ঋণ ও সাধারণ ঋণ আদায় জোরদারসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে নিজেদের অবস্থার উন্নতি করতে চায় ব্যাংকটি। গতকাল শনিবার ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।