ইনসাইড ইকোনমি

সরকারি ব্যাংকের নতুন কর্মীদের জন্য নতুন নিয়মে পেনশন

প্রকাশ: ০৯:০৫ এএম, ২১ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ), ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশসহ (আইসিবি) ব্যাংক, বিমা ও পুঁজিবাজার খাতের কোনো নতুন চাকরিজীবীই আর বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী পেনশন পাবেন না। সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংকসহ সব রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক, কৃষি, কর্মসংস্থান ব্যাংকসহ সব সরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম খাটবে।

এমনকি পদ্মা অয়েল, যমুনা অয়েলসহ সরকারের হাতে ৫০ শতাংশের বেশি শেয়ারের মালিকানা রয়েছে, তেমন কোম্পানিগুলোতে নতুন যোগ দেওয়া কর্মীদের ক্ষেত্রেও বিদ্যমান পেনশনব্যবস্থা থাকছে না। পেনশন নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ১৩ মার্চ জারি করা নতুন প্রজ্ঞাপন বিশ্লেষণ করে তা জানা গেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আগামী ১ জুলাইয়ের পর এসব প্রতিষ্ঠানে যাঁরা নতুন চাকরিতে যোগ দেবেন, তাদের ‘প্রত্যয়’ নামক একটি পেনশন কর্মসূচির আওতায় আসতে হবে।

বর্তমানে প্রগতি, প্রবাস,সুরক্ষা ও সমতা নামে সরকারের চারটি পেনশন কর্মসূচি রয়েছে। গত বছরের ১৭ আগস্ট চালু হওয়া এসব কর্মসূচিতে দেশি ও প্রবাসী বাংলাদেশি মিলিয়ে ১৪ মার্চ পর্যন্ত গ্রাহক হয়েছেন ২৬ হাজার ৮৫১ জন।

তবে বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের অবসরভোগী চাকরিজীবীরা যেভাবে পেনশন পাচ্ছেন, সেভাবেই পাবেন। ১০ বছর চাকরি আছে, এমন প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা নতুন ব্যবস্থার আওতায় আসতে পারেন অথবা বিদ্যমান ব্যবস্থায়ও থেকে যেতে পারেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব স্বশাসিত বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও পেনশন পেতে গেলে বাধ্যতামূলকভাবে আসতে হবে প্রত্যয় পেনশন কর্মসূচির আওতায়। বর্তমানে প্রগতি, প্রবাস,সুরক্ষা ও সমতা নামে সরকারের চারটি পেনশন কর্মসূচি রয়েছে।

গত বছরের ১৭ আগস্ট চালু হওয়া এসব কর্মসূচিতে দেশি ও প্রবাসী বাংলাদেশি মিলিয়ে ১৪ মার্চ পর্যন্ত গ্রাহক হয়েছেন ২৬ হাজার ৮৫১ জন।

গতকাল বুধবার (২০ মার্চ) অর্থ বিভাগ প্রত্যয় কর্মসূচির রূপরেখা ঘোষণা করেছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে অর্থ বিভাগ যুক্তি দিয়ে বলেছে, কর্মচারীদের অবসরোত্তর-জীবনের আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা দিতে বিদ্যমান ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে সরকার প্রত্যয় চালু করেছে। আগামী জুলাইয়ের পর স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থার চাকরিতে যারা যোগদান করবেন, তাদের বাধ্যতামূলকভাবে প্রত্যয় কর্মসূচিতে যুক্ত করা হবে। এতে বিদ্যমান কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে না।

সানেম এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান জানান, পেনশন বাবদ বাজেটে সরকারকে ভালো একটা অঙ্ক বরাদ্দ রাখতে হয়। নতুন যারা চাকরিতে আসবেন, তাদের বয়স ৬০ বছর না হওয়া পর্যন্ত সরকারকে পেনশন বাবদ কোনো অর্থ ব্যয় করতে হবে না। ফলে সরকারের ওপর চাপ কমবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রেও প্রত্যয় কর্মসূচি প্রযোজ্য হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক আইনের মাধ্যমে গড়ে ওঠা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ না করে প্রজ্ঞাপনে স্পষ্টভাবেই সব বলা আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেন, প্রজ্ঞাপনটি এখন বিশ্লেষণ করবেন তাঁরা, প্রত্যয় তাঁদের নতুন কর্মীদের জন্য প্রযোজ্য হবে কি না।

তবে অর্থ বিভাগ বলেছে, বিদ্যমান ব্যবস্থায় খুব কমসংখ্যক স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা ও তাদের অধীন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানেই পেনশন কর্মসূচি চালু আছে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আনুতোষিকের আওতাভুক্ত এবং তাদের জন্য প্রদেয় ভবিষ্য তহবিল (সিপিএফ) ব্যবস্থা প্রযোজ্য। এ ব্যবস্থায় কর্মচারীরা চাকরি শেষে অবসর-সুবিধা হিসেবে এককালীন আনুতোষিক পেলেও মাসিক পেনশন পান না। ফলে অবসরোত্তর জীবনে প্রায় ক্ষেত্রেই তারা আর্থিক অনিশ্চয়তার মুখে পড়েন।

গতকাল বুধবার (২০ মার্চ) অর্থ বিভাগ প্রত্যয় কর্মসূচির রূপরেখা ঘোষণা করেছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে অর্থ বিভাগ যুক্তি দিয়ে বলেছে, কর্মচারীদের অবসরোত্তর-জীবনের আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা দিতে বিদ্যমান ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে সরকার প্রত্যয় চালু করেছে।

প্রজ্ঞাপনে দেওয়া হয়েছে প্রত্যয় বাধ্যতামূলক করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার সংজ্ঞা।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান অর্থ হচ্ছে ৫০ শতাংশের বেশি সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত কোনো ব্যবসায়-উদ্যোগ, কোম্পানি, ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান অথবা শিল্প-বাণিজ্য সম্পর্কিত বা অনুরূপ কোনো প্রতিষ্ঠান। আর স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বোঝানো হয়েছে সেগুলোকে, যেগুলো কোনো আইনের মাধ্যমে গড়ে ওঠা। এর মধ্যে রয়েছে কোনো কর্তৃপক্ষ, করপোরেশন, কমিশন, সংস্থা, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ইনস্টিটিউশন, কাউন্সিল, একাডেমি, ট্রাস্ট, বোর্ড, ফাউন্ডেশন ইত্যাদি।

প্রজ্ঞাপন জারির ফলে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে হতাশা ও অসন্তুষ্টির সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।

সম্প্রতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া ও মহাসচিব অধ্যাপক মো. আখতারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, একই বেতনকাঠামোর আওতাধীন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ভিন্ন নীতি সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর দুরভিসন্ধি রয়েছে কি না, সেটাও ভেবে দেখা দরকার। ফেডারেশন এ প্রজ্ঞাপনের প্রত্যাহার চায়।

তবে অর্থ বিভাগ বলেছে, বিদ্যমান সিপিএফ ব্যবস্থায় কর্মচারী মূল বেতনের ১০ শতাংশ এবং প্রতিষ্ঠান মূল বেতনের ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ দেয়। প্রত্যয় কর্মসূচিতে প্রতিষ্ঠান দেবে মূল বেতনের সমান অর্থাৎ ১০ শতাংশ। বিদ্যমান সিপিএফ ব্যবস্থা থেকে তা ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি। প্রত্যয় কর্মসূচিতে একজন কর্মচারীর নিজ বেতন থেকে মাসিক ২ হাজার ৫০০ টাকা এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান একই পরিমাণ টাকা ৩০ বছর চাঁদা দিলে অবসরের পর অর্থাৎ ৬০ বছর বয়স থেকে ওই কর্মচারী মাসিক ৬২ হাজার ৩৩০ টাকা হারে পেনশন পাবেন।

প্রত্যয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য কর্মচারীদের মূল বেতনের ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা—এ দুয়ের মধ্যে যেটা কম তা তাদের বেতন থেকে কাটা হবে এবং সমপরিমাণ অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা দেবে। এরপর উভয় অর্থ জমা হবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের কাছে।

আইসিবির চেয়ারম্যান সুবর্ণ বড়ুয়া বলেন, ‘প্রজ্ঞাপনের বৈশিষ্ট্য বলছে, এটি আইসিবির নতুন কর্মীদের ওপর বর্তাবে। চূড়ান্ত বিচারে তা কতটা ভালো হবে, তা মূল্যায়ন করার সময় এখনই আসেনি’।

এদিকে অর্থ বিভাগ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ৩০ বছর ধরে মাসিক ২ হাজার ৫০০ টাকা হারে চাঁদা দিলে একজন কর্মচারীর নিজ বেতন থেকে চাঁদা জমা হবে ৯ লাখ টাকা, আর সংশ্লিষ্ট সংস্থা জমা করবে আরও ৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর মোট চাঁদা হবে ১৮ লাখ টাকা। তিনি যদি ৭৫ বছর বয়সে মারা যান, তাহলে ১৫ বছরে পেনশন পাবেন ১ কোটি ১২ লাখ ১৯ হাজার ৪০০ টাকা, যা সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর নিজ জমার ১২ দশমিক ৪৭ গুণ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পেনশনের সুবিধা আজীবন মিলবে বলে এ অঙ্ক আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে। এ ছাড়া বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্য মুনাফার হার বৃদ্ধি পেলে মাসিক পেনশনের পরিমাণও বাড়বে। শুধু তাই নয়, জমা হওয়া চাঁদার ওপর বিনিয়োগ রেয়াত পাওয়া যাবে। পেনশনের অর্থ আয়করমুক্ত। পেনশন কর্মসূচি রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টিযুক্ত হওয়ায় শতভাগ ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারি কর্মচারীদের পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা বাবদ ৩২ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে, যার উল্লেখযোগ্য অংশ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেছনে ব্যয় হয়।

সার্বিক বিষয়ে গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, ‘পেনশন বাবদ বাজেটে সরকারকে ভালো একটা অঙ্ক বরাদ্দ রাখতে হয়। নতুন যাঁরা চাকরিতে আসবেন, তাঁদের বয়স ৬০ বছর না হওয়া পর্যন্ত সরকারকে পেনশন বাবদ কোনো অর্থ ব্যয় করতে হবে না। ফলে সরকারের ওপর চাপ কমবে। এটাই সরকারের বড় স্বস্তি। তবে যাঁরা এখন পেনশন পান না, তাঁদের জন্য পদক্ষেপটি ইতিবাচক হয়েছে। তবে যেহেতু বৈষম্য তৈরির বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, পেনশন কর্তৃপক্ষ অংশীজনদের নিয়ে একটি বহুপক্ষীয় বৈঠকের আয়োজন করতে পারে এবং ওই বৈঠকে উঠে আসা পরামর্শ বা সুপারিশ সরকার আমলে নিতে পারে’।


সরকারি ব্যাংক   কর্মী   পেনশন   সরকারি কর্মকর্তা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের চাপ বাজেটে

প্রকাশ: ০১:০১ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

বর্তমানে দেশের অর্থনীতিতে সাড়ে ১১ লাখ কোটি টাকার বিদেশি ঋণের চাপ রয়েছে। নির্দিষ্ট সময় শেষে এই ঋণের সুদসহ পরিশোধের বিধান রয়েছে। এই ঋণের একটা অংশ প্রতি মাসে সরকার এখন সুদ-আসলে পরিশোধও করছে। তবে বিদেশি ঋণে নির্দিষ্ট সময়ের বাধ্যবাধকতা থাকায় দিন যত পার হচ্ছে, এ ঋণ পরিশোধে সরকারের চাপও তত বাড়ছে।

চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) গত ৯ মাসেই বিদেশি ঋণের সুদ-আসল মিলিয়ে মোট ২৮ হাজার ২৮১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। এর মধ্যে আসল ১৬ হাজার ৬৭৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। বাকি ১১ হাজার ৬০১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা সুদ বাবদ দিতে হয়েছে।

যদিও চলতি অর্থবছরের বাজেটে বিদেশি ঋণের আসল ২৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা এবং সুদ পরিশোধ বাবদ ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা মিলিয়ে মোট ৩৭ হাজার ৭৬ কোটি টাকা পরিশোধের লক্ষ্য নির্ধারণ করে সরকার। এর অর্থ হচ্ছে, বাজেটে বৈদেশিক ঋণের দায় খাতে রাখা বরাদ্দের অর্থ দিয়ে চলতি অর্থবছরের বাকি ব্যয় সংকুলান হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রমতে, এ কারণে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে সরকার ১৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকায় উন্নীত করেছে। চলতি অর্থবছরের প্রাথমিক বাজেটে বিদেশি ঋণের জন্য ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। অর্থাৎ সংশোধিত বাজেটে সেটি ৩ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সাধারণত বাংলাদেশের মতো কল্যাণমূলক উন্নয়নশীল দেশে সব সরকারেরই জনপ্রতিশ্রুতি থাকে। এ কারণে উন্নয়নের চাহিদাও বেশি হয়। বিশেষ করে এই বাস্তবতায় এ ধরনের দেশগুলোয় রাজনৈতিক সরকারের বড় বৈশিষ্ট্য হলো, কম আয়ে বেশি উন্নয়নের চেষ্টা। ফলে সরকার বিভিন্ন সময় উন্নয়ন চাহিদা পূরণে বাড়তি ব্যয়ের সঙ্গে আয়ের তাল মেলাতে প্রতি বছর যে বাজেট তৈরি করছে, তার ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ খাতের বাইরে বৈদেশিক বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ করে থাকে। দেশে সরকারের কাঁধে এখন যে ঋণের বোঝা, এটি তারই পুঞ্জীভূত আকার। যার ঋণ এখন প্রতি মাসেই সুদ-আসলে শোধ দিতে হচ্ছে। তবে বিদেশি ঋণে সুদ তুলনামূলক কম, পরিশোধের গ্রেস পিরিয়ডও বেশি। এ কারণে সরকার বিদেশি ঋণেই ঝুঁকছে।

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে বিদেশি ঋণ পরিশোধে ব্যয় করেছিল ১৬ হাজার ৯৬৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে আসল ছিল ১২ হাজার ২০২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আর সুদ পরিশোধ করতে হয়েছিল ৪ হাজার ৭৬৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরের যেখানে ৪ হাজার ৭৬৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা সুদ দিতে হয়েছিল, সেখানে চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত সুদ পরিশোধ করতে হয়েছে তার প্রায় আড়াই গুণ।

সংশোধিত বাজেটে বিদেশি ঋণের দায় খাতে এই অতিরিক্ত বরাদ্দের কারণ জানতে চাইলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, বিদেশি ঋণের প্রায় ৪৫ শতাংশই নেওয়া এসডিআর (স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস) মুদ্রায়, যা পরিশোধ করতে হয় সাধারণত মার্কিন ডলার কিংবা যুক্তরাজ্যের পাউন্ড স্টার্লিংয়ে; কিন্তু সম্প্রতি বৈশ্বিক অস্থিরতার কারণে এখন এই এসডিআর মুদ্রার সঙ্গে ডলার ও পাউন্ডের বিনিময় হার, ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় হারের তারতম্য এবং ইউরোবর ও সোফর হার অনেক বেড়ে গেছে। ফলে বৈদেশিক ঋণ ও ঋণের ওপর সুদ পরিশোধের পরিমাণও আগের তুলনায় বেড়েছে।

অর্থাৎ ডলার ও পাউন্ডের তুলনায় টাকার অবমূল্যায়নের কারণে একই পরিমাণ বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে আগের তুলনায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে। এই বাড়তি ব্যয়ই এখন বাজেট ব্যবস্থাপনায় সরকারের বড় চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা ছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেশে বেশ কিছু মেগা প্রকল্পের বাস্তবায়ন হয়েছে, কিছু বাস্তবায়নাধীনও রয়েছে। যেগুলোর গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়ায় এখন তার অর্থায়নকৃত ঋণের কিস্তি পরিশোধ এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। এতে করেও নতুন-পুরোনো মিলে সরকারের কাঁধে বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধের চাপও আগের তুলনায় বেড়েছে। এই বাস্তবতায়ও বাজেট সংশোধনীতে এ খাতের সুদ পরিশোধের অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।

এদিকে এই বৈদেশিক উৎসের ঋণ সরকারের নিজস্ব আয় থেকে পরিশোধ করার কথা। কিন্তু দেশীয় বাস্তবতায় সরকারের আয় কম। আবার আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রও কম। একমাত্র ভরসা হলো রাজস্ব খাত। সেখান থেকেও নানা কারণে কাঙ্ক্ষিত আয় আসছে না। যে কারণে সরকার নিজের আয় থেকে আংশিক পরিশোধ করে বাকিটা ঋণ নিয়েই ঋণের দায় শোধের চেষ্টা করছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বেসরকারি আর্থিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সমস্যা হচ্ছে, সরকার অভ্যন্তরীণ উৎসের আয় বাড়াতে পারছে না। আবার যে আয় করছে, তার বড় একটা অংশ ভর্তুকিতেই খরচ করে ফেলছে। আবার রাজস্ব আয় বাড়ানোর যে সংস্কার কাজ তারও গতি বাড়াতে পারছে না। এ বাস্তবতায় যে বিদেশি ঋণ আসছে, তা প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজে কিছুটা ধীরগতির কারণে হয়তো সেটি বিদেশি ঋণের সুদাসল পরিশোধ করে থাকতে পারে।

তবে এতে করে বিদেশি ঋণের আকার যেমন বাড়বে, তেমনি সুদ পরিশোধ খাতেও বড় আকারের ব্যয় করতে হবে। এর থেকে বেরিয়ে সরকারের উচিত বাজেটে বিভিন্ন খাতে যে রাজস্ব ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে, তা উঠিয়ে সরকারের রাজকোষ সমৃদ্ধ করা। এতে অন্তত প্রতি বছর যে মোটা অঙ্কের সুদ ডলারে পরিশোধ হচ্ছে, সেটি সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।


বৈদেশিক ঋণ   বাজেট   অর্থবছর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

অর্থনীতিতে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দেশের অর্থনীতি ক্রমশ নাজুক ঋণনির্ভর এবং সঙ্কটজনক অবস্থায় যাচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সরকার বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বটে তবে এখন পর্যন্ত কোনও আশার আলো দেখা যায়নি। অর্থনৈতিক মোকাবিলা করাই এখন সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় রকম চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

সরকারের পক্ষ থেকেও অর্থনৈতিক সংকটের কথা অস্বীকার করা হচ্ছে না। বরং অর্থনীতিতে ৭টি বিপদ সংকেতকে সরকারের পক্ষ থেকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর এই বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলেও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। আগামী বাজেটে তার প্রতিফলন দেখা যাবে বলেও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

অর্থনীতির যে সাতটি বিপদ সংকেত সুস্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা হলো-

.ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম: ব্যাংকিং খাতে একটি বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হচ্ছে। জন আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে ব্যাংকিং খাতে। বিশেষ করে ব্যাংক একীভূত করার কৌশলটি নিয়ে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন উঠেছে। ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে সেটি নিয়ে কথা উঠছে এবং খেলাপিদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। ব্যাংকিং খাতের এই নাজুক পরিস্থিতি অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের বিপদের কারণ হতে পারে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

.ঋণ নির্ভরতা বাড়ছে: বাংলাদেশের ঋণ নির্ভরতা বাড়ছে‌। সুদ এবং ঋণের দায় মেটানোর জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। যার ফলে সামনের দিনগুলোতে বৈদেশিক রিজার্ভের ওপর বড় ধরনের চাপ বাড়বে। এখনই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে নীচে নেমে গেছে এবং রিজার্ভ বাড়ানোর কোনও উদ্যোগই এখন পর্যন্ত সফল হচ্ছে না। সামনের দিনগুলোতে ঋণ এবং সুদ মেটাতে সরকারকে হিমশিম খেতে হবে বলেও কোনও কোনও অর্থনীতিবিদ মনে করছেন। অর্থনীতিতে এই বিদেশি ঋণ পরিশোধ এখন সরকারের জন্য একটি বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও অর্থনীতিবিদরা মনে করেন। সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে যে, সামনের দিনগুলোতে ঋণের দায় মেটানোটা সরকারের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ।

. মুদ্রাস্ফীতি: মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে। গত ১ বছরের গড় মুদ্রা ১০ এর কাছাকাছি। এর ফলে, জিনিসপত্রের দাম সীমাহীন ভাবে বাড়ছে। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে এবং এর ফলে জন অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে।

. প্রবাসী আয় কমে যাওয়া: প্রবাসী আয় যে ভাবে বাড়ার কথা ছিল সেভাবে প্রবাসী আয়ে বাড়ছে না। প্রবাসী আয় কমে যাওয়াটা সরকারের জন্য একটা বড় ধরনের অস্বস্তির কারণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

. অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের হতাশাজনক চিত্র: অর্থনৈতিক সঙ্কট মেটানোর জন্য অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বাড়ানোর উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। আর এই অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রেও তেমন কোনও আশাজনক বাস্তবতা দেখা যাচ্ছে না। অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এখন পর্যন্ত সফল হতে পারেনি বলেই অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন।

. দুর্নীতি: একদিকে যেমন অর্থনৈতিক সংকট বেড়ে চলেছে অন্যদিকে, দুর্নীতিও কমছে না। ফলে কোন কিছুতেই অর্থনৈতিক সংকট কমিয়ে আনার মত কোন বাস্তব পরিস্থিতি থাকছে না বলেই মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।

. বিদ্যুৎ এবং রপ্তানি আয়ের উপর আঘাত: বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি সংকট দেখা দিলে রপ্তানি আয়ের উপরেও একধরনের সমস্যা তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, আমদানি নির্ভর জ্বালানি খাত সামনের দিনগুলোতে অর্থনীতিতে, এবং রপ্তানি আয়ের উপর বড় ধরনের প্রভাব পরবে বলেই মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। সব কিছু মিলিয়ে এই বিপদগুলোকে কাটিয়ে ওঠায় সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ।


অর্থনীতি   মুদ্রাস্ফীতি   প্রবাসী আয়   দুর্নীতি   বাংলাদেশ ব্যাংক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

তারল্য সংকটে ব্যাংক, এক দিনে ধার ২৩ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশ: ০৯:৩৩ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ব্যাংকগুলোর পিছু ছাড়ছে না তারল্য সংকট। দৈনন্দিন কার্যক্রম মেটাতেও এখন ধার করতে হচ্ছে। গেল বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক দিনে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ধার করেছে ২৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে বিশেষ তারল্য সহায়তার আওতায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করেছে ২০ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা।

কলমানি মার্কেট ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে বিভিন্ন স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ধার করেছে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এক ব্যাংক আরেক ব্যাংক থেকে ধার করেছে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি।

সূত্র জানায়, ঈদের আগে ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকের বাড়তি চাহিদা ছিল টাকা তোলার। এ কারণে ওই সময়ে তারল্য সংকট বেড়েছিল। ঈদের পর গ্রাহকদের চাপ কমে গেছে। তারপরও ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট রয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংক একীভূত করার ঘোষণা দেওয়ায় দুর্বল ব্যাংক থেকে গ্রাহকরা নগদ টাকা তুলে নিচ্ছেন। এমনকি দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয়ী প্রকল্পে জমা রাখা অর্থও তুলে নিচ্ছেন। এতে করে কিছু দুর্বল ব্যাংকে তারল্য সংকট বেড়েছে। ওইসব ব্যাংক এখন ধারের প্রবণতা বাড়িয়ে দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) কলমানি মার্কেট থেকে কিছু দুর্বল ব্যাংক ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ধার করেছে। এতে সর্বোচ্চ সুদ ছিল সাড়ে ৯ শতাংশ। সর্বনিম্ন সুদ ছিল ৮ শতাংশ। এ সুদহার কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানাভাবে মৌখিক নির্দেশনা দিয়ে একটি সীমার মধ্যে রেখে দিয়েছে। এছাড়া স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ধার করেছে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। এতে সুদহার ছিল ১০ থেকে প্রায় ১২ শতাংশ।

এর আগে, ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এক দিনে সর্বোচ্চ ২৬ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত ধার করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, ব্যাংকগুলো আমদানি ব্যয় মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ডলার কেনায় মোটা অঙ্কের অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আটকে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন ট্রেজারি বিল ও বন্ডেও বিনিয়োগ করেছে। ট্রেজারি বিল পুনরায় কিনে নেওয়ার চুক্তি বা রেপোর আওতায় ওইসব অর্থ ব্যাংকগুলোকে স্বল্পমেয়াদে ধার দিচ্ছে।

এদিকে, ব্যাংকগুলোতে এখনো আমানত বাড়ার চেয়ে ঋণ বাড়ছে বেশি হারে। ঋণ হিসাবে বিতরণ করা অর্থ আদায় হচ্ছেও কম। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট বেড়েছে।

এছাড়া বাজারে নিত্যপণ্যের দাম মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় মানুষের সঞ্চয় করার মতো সক্ষমতা কমে গেছে। এমনকি আগের সঞ্চয় ভেঙে জীবিকা নির্বাহ করছে।

এতে করেও ব্যাংকে সঞ্চয় প্রবণতা বাড়ছে না। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকগুলোতে নানা সংকটের কারণে গ্রাহকদের মধ্যে নানা ধরনের বিভ্রান্তিও তৈরি হয়েছে।


তারল্য সংকট   ব্যাংক   বাংলাদেশ ব্যাংক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

একদিন পরই আবারও কমলো স্বর্ণের দাম

প্রকাশ: ০৫:১৩ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দাম কমানোর একদিন পরই আবারও ভরিতে ২ হাজার ১০০ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। বৃহস্প‌তিবার (২৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৫০ মি‌নিট থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৯ হাজার টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৫ হাজার ২০৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
 
এর আগে গত ২৩ এপ্রিল দুই দিনের ব্যবধানে ভরিতে ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা  নির্ধারণ করেছিল বাজুস। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১০ হাজার ৯৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৫ হাজার ১৪৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৬ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা সেদিন বিকেল ৪টা থেকে কার্যকর হয়েছিল।
 
আর গত ২১ এপ্রিল একদিনের ব্যবধানে ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৭০৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৮ হাজার ৬৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা সেদিন বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট থেকে কার্যকর হয়েছিল।
 
এছাড়া গত ২০ এপ্রিল সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণ ৮৪০ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস। আর ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ১৯৬ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা সেদিন বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট থেকে কার্যকর হয়েছিল।
 
উল্লেখ্য, চলতি বছরের প্রথম চার মাসেই দেশের বাজারে ১২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৭ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ৫ বার। এর মধ্যে এপ্রিলেই দাম সমন্বয় হয়েছে ৭ বার। আর ২০২৩ সালে দাম সমন্বয় করা হয়েছিল ২৯ বার।


স্বর্ণ   বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি   বাজুস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিয়ম কড়াকড়ি

প্রকাশ: ০৫:০৫ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

গত এক মাস ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকে সংবাদকর্মীদের প্রবেশে বাধা দিয়ে আসছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে সাংবাদিকদের মাঝে অসন্তোষ জন্ম নেয়।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অবস্থান নেন।

তবে বিষয়টি সমাধানের জন্য সকাল ১১টার দিকে অর্থনীতি-বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈঠকে শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এখন থেকে সাংবাদিকরা ব্যাংকের নির্দিষ্ট অনুমতিপত্র (প্রবেশ পাস) নিয়ে শুধু মুখপাত্রের কাছে যেতে পারবেন।

তিনি বলেন, যদি কোনো কর্মকর্তা সাংবাদিকদের পাস দেন, সেক্ষেত্রে তারা শুধু সেই কর্মকর্তার কাছে যেতে পারবেন। তবে আগের মতো তারা অবাধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো বিভাগে প্রবেশ করতে পারবেন না।

বাংলাদেশ ব্যাংক   সাংবাদিক  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন