নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২৯ পিএম, ২১ নভেম্বর, ২০১৭
মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় হঠাৎ পরিবর্তনে কয়েকটি পরিবারের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে দেশের বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো ।সবশেষ সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তনের মাধ্যমে চট্টগ্রামের একটি ব্যবসায়ী পরিবার এখন সাতটি ব্যাংকের মালিকানা নিজেদের কবজায় নিয়েছে।এরই মধ্যে কী জাদুর বলে এই ব্যবসায়ী পরিবারকে এতগুলো ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ দেয়া হয়েছে এটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যাংকিং খাতের নতুন এ প্রবণতা পুরো খাতে আস্থার সংকট তৈরি করছে্। এই অসুস্থ বিষয়টি পুরো ব্যাংকিং খাতে বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।সেই সাথে নিয়ম না মেনে তড়িঘড়ি করে এসআইবিলের পরিচালনা পর্ষদকে অনুমোদন দেওয়ায় তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকারও সমালোচনা করেছেন। তবে কেউ কেউ কি কারণে ব্যাংকগুলো অধিগ্রহণ করা হয়েছে, সে বিষয়টি মালিকপক্ষকে বিবৃতির মাধ্যমে পরিস্কার করারও পরামর্শ দিয়েছেন। এদিকে এ প্রবণতা ঠেকাতে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করেন ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা । বাংলাদেশ ব্যাংককে যথাযথ ও সাহসী ভূমিকা পালনের আহ্বন জানান তাঁরা । একই সঙ্গে, দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন ও জবাবদিহিতা বাড়াতে এই খাতকে রাজনৈতিক চাপ ও প্রভাবমুক্ত রাখার পরামর্শ দেন তাঁরা।
২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক এবং সব শেষ এসআইবিএল ব্যাংকের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় হঠাৎ পরিবর্তন আসে। তিনটি ব্যাংকেই শেয়ার কিনে মালিকানা নিয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক বড় শিল্প গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। এ ছাড়া ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, আল-আরাফাহ্ ইসলামী, ইউনিয়ন, এনআরবি গ্লোবালেরও মালিকানা রয়েছে গ্রুপটির। ব্যাংক খাতের শীর্ষ নির্বাহীদের আশঙ্কা, ব্যাংকের পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনার বিপজ্জনক এই প্রবণতা দ্রুত প্রতিরোধ করা না হলে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বড় ধস নামবে।বিপদ বাড়বে অর্থনীতিতেও। তারা বলছেন, একমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের শক্তিশালী ভূমিকাই এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারে। এটিকে সুশাসনের পথে বাধা বলেও মনে করছেন এ খাতের বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকে পারিবারিক নিয়ন্ত্রণ বেড়ে গেলে অভ্যন্তরীণ সুশাসন ব্যাহত হতে পারে।
এমনিতেই অভ্যন্তরীণভাবে ব্যাংকিং সেক্টরে সুশাসনের যথেষ্ট অভাব রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতে আন্তর্জাতিক মানের নীতিমালা এবং আইন থাকলেও, সেগুলো সঠিকভাবে পালন এবং বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। এর ফলে নানারকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, সাতটি ব্যাংক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে এ বিষয়টিকে আমরা খুব সুনজরে দেখছি না। কারণ কোনো কারণে যদি ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে খারাপ সময় আসে তাহলে তার অধীনে থাকা ব্যাংক তো বটেই, প্রভাব পড়বে পুরো ব্যাংকিং খাতে। ইব্রাহিম খালেদ বলেন, যাঁরা এভাবে ব্যাংক অধিগ্রহণ করছেন, তাঁরা ইসলামী ব্যাংকগুলোর প্রতি বেশি আগ্রহী। ইসলামী ব্যাংক অধিগ্রহণের সময় তো একটা কারণ ছিল। আমরা সবাই জানি ওই ব্যাংকটি জামায়াতে ইসলা্মের দখলে ছিল, জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগও ছিল্। তবে বাকিগুলো তারা কি কারণে নিয়েছে সে বিষয়ে সবাই একটা অন্ধকারে রয়েছে। বিষয়গুলো পরিষ্কার করা তাঁদেরই দায়িত্ব। তিনি বলেন, সবচেয়ে ভালো হয় এস আলম গ্রুপের পক্ষ থেকে যদি এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দেয়া হয় তাহলে। সেই সাথে বাংলাদেশ ব্যাংককে এই ব্যাংকগুলোকে নিবিড় পর্যবক্ষেণে রাখার পরামর্শও দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসআইবিএলের এক সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মনে করেন, প্রয়োজনে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আসতেই পারে। তবে বর্তমানে যে ভাবে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি হচ্ছে তাতে এই খাত সংশ্লিষ্টরা তো আতঙ্কে আছেনই, প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে সাধারণ মানুষের মনেও।এতে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি।
ব্যাংক খাত বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, প্রতিযোগিতামূলক আইনের প্রয়োগ হলে এই অবস্থা হতো না। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ব্যাংক থাকায় ব্যবসায়ী গ্রুপগুলো বিভিন্ন ব্যাংকের মালিকানা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা বলছেন, বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে এক ব্যাংকের মালিক ও পরিচালকেরা অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে একটা চক্র গড়ে তুলেছেন। এর ফলে ব্যাংকের ঋণ একটি গোষ্ঠীর কাছে কুক্ষিগত হয়ে পড়ছে।
অধিগ্রহণ করা ব্যাংকের অবস্থা: চলতি বছরের শুরুতে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ এস আলম গ্রুপের হাতে যাওয়ার পর ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। কমে গেছে আয় ও আমানতের প্রবৃদ্ধি। বেড়েছে ঋণ দেওয়াসহ খেলাপি ঋণের পরিমাণ। গত ডিসেম্বরে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল দুই হাজার ২৪৩ কোটি টাকা। জুনে তা বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে আমানত এসেছে দুই হাজার ২৯৮ কোটি টাকা। অথচ গত বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল তিন হাজার ৩১০ কোটি টাকা। আমানতপ্রবাহ কমলেও এই ছয় মাসে গেল চার বছরের চেয়ে ব্যাংকটির ঋণ বিতরণ বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকটি পাঁচ হাজার ৩১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করে। ২০১৬ সালের এ সময়ে যার পরিমাণ ছিল তিন হাজার ৫২১ কোটি টাকা। এদিকে আগের বছরের চেয়ে চলতি বছরের ৯ মাসে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি আয় কমেছে ৬০ পয়সা । আর তৃতীয় প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি আয় কমেছে ৮ পয়সা। এছাড়া, ইসলামী ব্যাংক ছেড়ে যাচ্ছেন বিদেশি শেয়ারধারীরাও। ১৯৮৩ সালে এই ব্যাংক প্রতিষ্ঠার সময় বিদেশিরা ৭০ শতাংশ পুঁজি জোগান দিয়েছিলেন। বর্তমানে তাঁদের শেয়ার ৩২ শতাংশে নেমেছে। ২০১৬ সালে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব আবদুল মান্নানের শেয়ার কিনে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় এস আলম গ্রুপ। তাতেও ব্যাংকটির উন্নতি হয়নি। জুন পর্যন্ত ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫৯৭ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ৩৪ শতাংশ।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
এক লাফে ডলারের দাম ৭ টাকা উন্নীত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যার ফলে দীর্ঘদিন ১১০ টাকায় থাকা ডলারের অফিসিয়াল দাম একদিনে ১১৭ টাকা হয়েছে।
জানা গেছে, বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্তের কারণে এই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বুধবার (৮ মে) একটি সার্কুলার জারি করে এ দাম ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সার্কুলারে বলা হয়, এখন থেকে ক্রলিং পেগ নামের নতুন পদ্ধতিতে ডলার কেনা-বেচা হবে। এ পদ্ধতিতে ডলারের রেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ডলারের দাম ছিল ১১০ টাকা। যা ছিল অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার বাংলাদেশ (এবিবি) এবং বাফেদা নির্ধারিত ডলার রেট।
ডলারের দাম বাংলাদেশ ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে স্বর্ণের দাম প্রতি ভরিতে বেড়েছে সাড়ে চার হাজার টাকা। বুধবার (৮ মে) থেকে ২২ ক্যারেটের ভরিপ্রতি বিক্রি হবে এক লাখ ১৫ হাজার ৪৫০ টাকা।
মঙ্গলবার (৭ মে) বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি-বাজুস এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে তাল মিলিয়ে এই সমন্বয় করা হয়েছে। দাম সমন্বয়ের ঘোষণা দেয়া হয়েছে ২১,১৮ ক্যারেট ও সনাতনী স্বর্ণের ক্ষেত্রেও।
নতুন দাম অনুযায়ী- প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৫০ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১০ হাজার ২০১ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৪ হাজার ৪৫৫ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৮ হাজার ৯০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে ৬ ও ৫ মে দু'দফায় স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে। ৬ মে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৩৫ টাকা এবং ৫ মে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়ানো হয়। এখন আবার দাম বাড়ানোর ফলে তিন দফায় ভরিতে স্বর্ণের দাম বাড়লো ৬ হাজার ২৮৭ টাকা।
মন্তব্য করুন
সোনার দাম বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি বাজুস
মন্তব্য করুন
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি) এর সঙ্গে একীভূত হতে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংককে (রাকাব) নির্দেশনা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে সেই নির্দেশনা মানতে নারাজ রাকাব। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের অনিচ্ছার কথা জানিয়ে অর্থ মন্ত্রনালয়ের দ্বারস্থ হয়েছে ব্যাংকটি।
ব্যাংকের সবশেষ পর্ষদ সভায় বলা হয়, উত্তরাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাংকটির রয়েছে প্রত্যক্ষ অবদান। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক। তাই একীভূতকরণের বিষয়েও ভাবতে হবে। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় কেবল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনাই যথেষ্ট নয়, লাগবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের লিখিত নির্দেশনা। পরে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠায় রাকাব।
একীভূত করা নিয়ে অনেক দিন ধরে আলোচনা হলেও গত ৩১ জানুয়ারি ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সঙ্গে এক বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংক দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূত করার পরামর্শ দেয়। এরপর গত ১৪ মার্চ এক্সিম ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ একে অপরের সঙ্গে একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
পরে গেল ৩ এপ্রিল সরকারি খাতের রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংককে (রাকাব) বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংককে (বিডিবিএল) সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়। তারপর ৮ এপ্রিল সিটি ব্যাংকের সঙ্গে সমস্যাগ্রস্ত বেসিক ব্যাংককে এবং ৯ এপ্রিল বেসরকারি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক বা ইউসিবির সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক
মন্তব্য করুন
মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে স্বর্ণের দাম প্রতি ভরিতে বেড়েছে সাড়ে চার হাজার টাকা। বুধবার (৮ মে) থেকে ২২ ক্যারেটের ভরিপ্রতি বিক্রি হবে এক লাখ ১৫ হাজার ৪৫০ টাকা। মঙ্গলবার (৭ মে) বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি-বাজুস এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে তাল মিলিয়ে এই সমন্বয় করা হয়েছে। দাম সমন্বয়ের ঘোষণা দেয়া হয়েছে ২১,১৮ ক্যারেট ও সনাতনী স্বর্ণের ক্ষেত্রেও।