নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে নানান আলোচনা-সমালোচনা এবং বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। তা দূর করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে তোলা অভিযোগের ২৭টি প্রশ্ন এবং এর যৌক্তিক উত্তর অনুসন্ধান করা হয়েছে।
‘প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষাক্রম প্রণনয়ের উদ্দেশ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার সকল ধারাকে বিবেচনা করে প্রথমবারের মতো জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই রূপরেখা প্রণয়ন এবং তার ভিত্তিতে বিস্তারিত শিক্ষাক্রম, শিখন শেখানো সামগ্রী এবং মূল্যায়ন প্রক্রিয়া প্রণয়নের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নতুন পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে যা এর আগে কখনোই অনুসরণ করা হয়নি।’
‘বাংলাদেশের
সম্ভাবনার দিক হল এদেশের
বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠী, যার
জনমিতিক সুফল পেতে হলে
অনতিবিলম্বে আধুনিক ও যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা
প্রণয়ন করা প্রয়োজন ছিল।
Brookings Report (2016) on Skills for a Changing World এ দেখা
যায় ১০২টি
দেশের মধ্যে ৭৬ টি দেশের
শিক্ষাক্রমে সুনির্দিষ্টভাবে দক্ষতাভিত্তিক যোগ্যতাকে নির্ধারণ করা হয়েছে এবং
৫১টি দেশের শিক্ষাক্রম সম্পূর্ণ রূপে রুপান্তরমূলক দক্ষতাভিত্তিক
করা হয়েছে। OECD (২০১৮) ভুক্ত দেশগুলোও এই পরিবর্তিত সময়ের
চাহিদা অনুযায়ী একটা সাধারণ শিক্ষাক্রম
রূপরেখা তৈরি করেছে, বেশ
কিছু উন্নয়নশীল দেশও যার অংশীদার।
এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর দিকে তাকালেও দেখা
যায়, ভুটান, ভারত, নেপাল, শ্রীলংকাসহ অন্যান্য দেশও তাদের শিক্ষাব্যবস্থার
সংস্কারের কাজ শুরু করেছে।
বাংলাদেশও একইভাবে শিক্ষাব্যাবস্থায় একটি সার্বিক পরিবর্তনের
তাগিদ অনুভব করছিল যা একই সাথে
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জাতীয় শিক্ষার লক্ষ্য, শিখন-শেখানো প্রক্রিয়া,
মূল্যায়ন, শিখন পরিবেশ, শিখন
উপকরণ, শিক্ষা ব্যাবস্থাপনা এবং শিক্ষার্থী, শিক্ষক,
অভিভাবক, এলাকার জনগণসহ সকল উপাদানের মাঝে
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে একই পরিবর্তনের ধারায়
নিয়ে আসবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ সেই দীর্ঘ
তাগিদ, পরিকল্পনা, গবেষণা ও অভিজ্ঞতার ফসল।
কাজেই নিঃসন্দেহে এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের
একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। কিন্তু নতুন শিক্ষাক্রম ও
পাঠ্যপুস্তক নিয়ে মিথ্যাচারে হচ্ছে।
গত জানুয়ারিতে এরা সাম্প্রদায়িক উস্কানি
দেয়ার লক্ষে বই নিয়ে মিথ্যাচার
করেছিলো। এরা চায় না
শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে শিখতে, চিšতা করতে
শিখুক, অনুসন্ধিৎসু হোক, মুক্তবুদ্ধি ও
মুক্তচিন্তার চর্চা করুক। ওরা চায় মগজ
ধোলাইয়ের শিক্ষাই চালু থাকুক। তাই
নিচের অপপ্রচারগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকুন।’
নিম্নে প্রশ্নগুলো
এবং এর উত্তর তুলে ধরা হলো-
প্রশ্ন
১: ‘হঠাৎ করে কোনো
গবেষণা ছাড়াই বিদেশি শিক্ষাক্রম অনুসারে আমাদের দেশে নতুন শিক্ষাক্রম
চালু করা হয়েছে; এটি
প্রণয়নের পূর্বে নীতিনির্ধারকেরা আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করেননি’- এই অভিযোগ কতটা
সত্যি?
উত্তর:
নতুন শিক্ষাক্রম হঠাৎ করে চালু
হয়েছে এই ধারণাটি সঠিক
নয়। শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন একটি
ধারাবাহিক নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে করা হয়।
এবারের শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আনার পূর্বে ২০১৭
সাল থেকে শরু করে
২০১৯ সাল পর্যন্ত ৬টি
সরেজমিন গবেষণা পরিচালনা করা হয়। উক্ত
গবেষণাগুলোতে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট, শিক্ষার্থীদের চাহিদা, পুরাতন শিক্ষাক্রমের কার্যকারিতা যাচাই, অন্যান্য প্রায় ১০২টি দেশের শিক্ষাক্রম পর্যালোচনা, চতুর্থ শিল্পবিপ-বের সাথে অভিযোজনের
উপায় ইত্যাদি বিবেচনা করা হয়েছে। গবেষণায়
প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে বিভিন্নসভা ও কর্মশালার মাধ্যমে
প্রায় ১৫০ এর অধিক
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ/ব্যক্তিবর্গের মতামত এবং সাধারণ, মাদ্রাসা
ও কারিগরি শিক্ষাধারার মাঠ পর্যায়ের শিক্ষক,
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ ৮০০
এর অধিক অংশীজনের সুপারিশ
অনুযায়ী ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম
রূপরেখা ২০২১’ এর খসড়া প্রণয়ন
করা হয়। দেশের ৫টি
স্বনামধন্য দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এনসিটিবি’র
ওয়েব সাইটে উক্ত খসড়ার উপর
মতামত সংগ্রহের জন্য জনসাধারণের জন্য
উম্মুক্ত করা হয় এবং
তাদের মতামত পর্যালোচনার ভিত্তিতে খসড়া পরিমার্জন করা
হয়। জাতীয় সংসদের শিক্ষাবিষয়ক সংসদীয় কমিটির সম্মানীত সদস্যদের নিকট খসড়া শিক্ষাক্রম
রূপরেখা উপস্থাপন করে তাদের মতামত
গ্রহণ করা হয়। অতঃপর
খসড়া শিক্ষাক্রম রূপরেখাটি দেশের শিক্ষাক্রম উন্নয়নের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর
গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনার জন্য তাঁর নিকট উপস্থাপন
করা হয়। সেই আলোকে
‘জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১’ চূড়ান্ত করা হয়। এরপর
শিক্ষা বিষয়ক সকল মন্ত্রণালয়
ও বিভাগসমূহের জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির যৌথ সভায় এই
রূপরেখা অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে
শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ এর আলোকেই
জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২২ উন্নয়ন ও
অনুমোদন করা হয়। এই
শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিখন সামগ্রী (পাঠ্যপুস্তক,
শিক্ষক সহায়িকা ও অন্যান্য উপকরণ)
প্রস্তুত করা হয়। জাতীয়
শিক্ষাক্রম ২০২২ দেশের বিভিন্ন
ক্যাটাগরির (যেমন সাধারণ, মাদ্রাসা
ও কারিগরি) ৬২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক বছর
ধরে পাইলটিং করা হয়। পাইলটিং
এ প্রাপ্ত সুপারিশ অনুযায়ী পরিমার্জন করে সারাদেশে ২০২৩
সাল থেকে প্রথম, ষষ্ঠ
ও সপ্তম শ্রেণিতে প্রবর্তন করা হয়। প্রাক-প্রথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি
পর্যন্ত ধাপে ধাপে এই
শিক্ষাক্রম প্রবর্তন করা হবে।
সুতরাং,
হঠাৎ করেই নতুন শিক্ষাক্রমটি
প্রবর্তন করে হয়েছে অভিযোগটি
সঠিক নয়।
প্রশ্ন
২: ঘন ঘন শিক্ষাক্রম
বদলানোর কী দরকার?
উত্তর:
সময়ের সাথে শিক্ষাক্রম পরিবর্তন
একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। দীর্ঘ সময় শিক্ষাক্রম যদি
পরিবর্তন না হয়, তবে
সেটিই একটি অস্বাভাবিক বিষয়।
কারণ, শিক্ষাক্রম যুগের চাহিদা মেটাতে না পারলে শিক্ষার্থীরাও
পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে
পারবে না। উন্নত দেশসমূহে
প্রতি ৫ বছর পর
শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করা হয়। আমাদের
দেশে এবারের শিক্ষাক্রমটি পরিবর্তন প্রায় ১০ বছর পর
করা হলো, যা যথেষ্ট
বিলম্ব হয়েছে।
প্রশ্ন
৩: শিল্পবিল্পবের এই যুগে অন্যান্য
দেশ শিক্ষার্থীদের যখন রোবট বানানো
শেখাচ্ছে, সেখানে নতুন শিক্ষাক্রমে কাগজ
কাটাকাটি, গৃহস্থালির কাজ, রান্নাবান্না ইত্যাদি
কাজ শিখিয়ে বাবুর্চি আর মিস্ত্রি বানানো
হচ্ছে কেন? এসব গৃহস্থালির
কাজ মানুষ স্বভাবজাতভাবে পরিবারেই শিখতে পারে, ঘরের কাজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে
নিয়ে যাওয়ার কী প্রয়োজন ছিল?
উত্তর:
নতুন শিক্ষাক্রমে তৃতীয় শ্রেণি থেকেই গণিত, বিজ্ঞান ও ডিজিটাল প্রযুক্তি
বিষয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিজের মতো করে কোডিং,
প্রোগ্রামিং এবং রোবট বানানোর
কাজ শেখানো হচ্ছে। জীবন ও জীবিকা
বিষয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ পেশায় শিক্ষার্থীদের মৌলিক দক্ষতা অর্জন করার সুযোগ রাখা
হয়েছে। পৃথিবীর
সকল দেশেই ব্যক্তিগত পরিচর্যা, গৃহস্থালির কাজ, রান্নাবান্না ইত্যাদি
সকল শিক্ষার্থীকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শেখানো হয়। রান্নার মাধ্যমে
গণিতের অনুপাত ও পরিমাপ, বিজ্ঞানের
রাসায়নিক বিক্রিয়া, স্বাস্থ্য-সুরক্ষার পুষ্টির ধারণা এবং দলগত আয়োজনের মধ্য
দিয়ে সহযোগিতা, দায়িত্ববোধ ও দায়িত্ব বন্টনের
দক্ষতাগুলো অর্জিত হয়। আমাদের দেশেও
“গার্হস্থ্য বিজ্ঞান” বিষয়টিতে রান্না প্রচলিত ছিল, যা দৃষ্টিভঙ্গিজনিত কারণে শুধুমাত্র
মেয়েরাই ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে নির্বাচন
করত, কিন্তু সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য এই বিষয়গুলো
প্রতিটিই অপরিহার্য, এগুলো হলো জীবন দক্ষতা।
সুতরাং নতুন করে এগুলো
আনা হয়নি, বরং অনেক বাছাই
করে জীবনধারণের জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়
কাজগুলোকে ছেলে-মেয়ে নির্বিশষে
সকল শিক্ষার্থীর জন্য বাধ্যতামুলক করা
হয়েছে।
প্রশ্ন
৪: নতুন শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীদের
ডিভাইসমুখী করে তুলছে বলে
অভিভাবকগণ মনে করছেন, বিষয়টি
সত্যি কিনা?
উত্তর:
বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীদের ডিভাইস নির্ভরতা বেড়েছে কোভিডের সময়ে, যা নতুন শিক্ষাক্রম
বাস্তবায়নের পূর্বের একটি বাস্তবতা। এর
আরেকটি দিক হলো যুগের
চাহিদা, প্রযুক্তির প্রসার ও ব্যবহার আজ
অপরিহার্য যা কোনোভাবেই অস্বীকার
করার উপায় নেই। এর
যেমন ইতিবাচক দিক আছে, আবার
নেতিবাচক দিকও আছে। নতুন
শিক্ষাক্রমে শিখন-শেখানো কার্যক্রম
ও মূল্যায়ন পদ্ধতি অভিজ্ঞতানির্ভর হওয়ায় শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি চারপাশের
পরিবেশের সাথে মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে
শিখবে, ফলে এটি ডিভাইস
নির্ভরতা কমাবে। বরং ‘ডিজিটাল প্রযুক্তি’
বিষয়টির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ডিভাইস ও ইন্টারনেট ব্যবহারে
নৈতিক বিষয় ও ঝুঁকিসমূহ
জেনে ডিজিটাল সাক্ষরতা অর্জন করার মাধ্যমে দায়িত্বশীল
আচরণ করতে পারবে।
উল্লেখ্য
যে ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহকে
বাধ্যতামূলক করা হয় নাই।
বিভিন্ন মাধ্যম যেমন, পাঠ্যপুস্তক, অন্যান্য পুস্তক, পত্রপত্রিকা, শিক্ষক, অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট অন্য
ব্যক্তির নিকট থেকে তথ্য
সংগ্রহের জন্য নির্দেশনা দেয়া
আছে। শিক্ষার্থী এগুলোর এক বা একাধিক
উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ
করতে পারবে।
প্রশ্ন
৫: ব্যাপক পরিবর্তন আনা এই শিক্ষাক্রম
বাস্তবায়নের জন্য যোগ্য শিক্ষক
ও অবকাঠামো আছে কিনা?
উত্তর:
নতুন এই শিক্ষাক্রম অনেক
নমনীয়, তাই বিদ্যমান অবকাঠামোতে
এর বাস্তবায়ন অসম্ভব নয়। বাস্তবায়নের জন্য
পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছার আগেই
সারা দেশের প্রায় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং
মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের অনলাইন এবং সরাসরি প্রশিক্ষণ
দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি ভিডিও
টিউটোরিয়াল এবং বিদ্যালয়ে অবস্থানকালীন
চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য অনলাইন মেন্টরিং
গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে,
যা বাংলাদেশে প্রথম। দ্বিতীয় পর্যায়েও সারাদেশে সকল শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ
কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শিক্ষকদের আরও প্রশিক্ষণ দিয়ে
যোগ্য করে তোলার ব্যাপক
পরিকল্পনা রয়েছে। হাতেকলমে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার মধ্য দিয়ে শিক্ষক
ও শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিভঙ্গি ও চর্চায় পরিবর্তন
আসবে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের কার্যক্রম গত একদশক ধরে
ব্যাপকহারে চলছে। বিষয় ও শিক্ষার্থী
অনুপাতে শিক্ষক নিয়োগ, ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ ইত্যাদির জন্য প্রয়োজনীয় সকল
ধরনের প্রস্তুতি চলছে।
প্রশ্ন
৬: পরীক্ষা পদ্ধতি তুলে দেওয়ার ফলে
উপরের শ্রেণিতে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষাসমূহে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরীক্ষাভীতি তৈরি হবে, এই
অভিযোগ সত্যি কিনা?
উত্তর:
পরীক্ষা তুলে দেয়া হয়নি,
বরং প্রতিদিন শিক্ষার্থী যা শিখছে, তার
মূল্যায়ন হচ্ছে। ফলে তার মধ্যে
পরীক্ষা ভীতি দূর হয়ে
মূল্যায়নও যে শিখনের সহায়ক
ভূমিকা পালন করতে পারে,
সেই ধারণা তৈরি হচ্ছে। নতুন
শিক্ষাক্রমের আলোকে উচ্চশিক্ষায় ভর্তি প্রক্রিয়া পরিবর্তনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। সেখানে
শিক্ষার্থীর মুখস্থ নির্ভর পরীক্ষার পরিবর্তে শিক্ষার্থীর প্রবণতা, ভাষাদক্ষতা, পূর্বের পারদর্শীতার রেকর্ড প্রভৃতির ভিত্তিতে ভর্তি নেয়া হবে। ফলে
২০২৭ সালের পর নতুন শিক্ষাক্রমের
মাধ্যমে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা নতুন পদ্ধতিতেই উচ্চ
শিক্ষার জন্য ভর্তি কার্যক্রমে
অংশগ্রহণ করবে।
প্রশ্ন
৭: শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়নের নামে বিভিন্ন মডেল,
উপস্থাপন, প্রজেক্ট ও অ্যাসাইনমেন্টের সংযোজন
করা হয়েছে, যা অভিভাবকদের দ্বারা
প্রভাবিত হতে পারে। তাছাড়া
শিক্ষার্থীরা সহজেই কোনো সৃজনশীলতা ছাড়াই
গুগল কিংবা নিজেদের তৈরি করা গ্রুপ
থেকে অনুকরণ বা কপি করে
সম্পন্ন করতে পারছে, ফলে
নতুন কারিকুলাম শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতার বিকাশে আদৌ কোনো সহায়ক
ভূমিকা পালন করতে পারছে
কিনা?
উত্তর:
অভিভাবক সচেতন না হলে তার
সন্তানের ক্ষতি হবে- এই বিষয়টি
অভিভাবকদের ভালোভাবে বুঝতে হবে । এখানে
পাশ ফেলের বিষয় নেই বরং
যোগ্যতা অর্জনের ব্যাপার রয়েছে। অভিভাবকদের বুঝতে হবে যে শিক্ষার্থী
যে কাজগুলো নিজে তৈরি করার
কথা, যেমন মডেল, উপস্থাপন
দক্ষতা, প্রজেক্ট, অ্যাসাইনমেন্ট ইত্যাদি, সেকাজগুলো যদি অভিভাবকগণ তাদের
সন্তানদের জন্য সম্পন্ন করে
দেয়, তাহলে তার সন্তান উক্ত
যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হবে এবং আগামী
পৃথিবীতে টিকে থাকার লড়াইয়ে
পিছিয়ে পড়বে। শিক্ষকদেরও শিক্ষক সহায়িকার নির্দেশনা অনুসারে কপি করা অ্যাসাইনমেন্ট,
প্রতিবেদন বা যেকোনো কাজ
গ্রহণ না করার নির্দেশনা
মেনে চলতে হবে। কিছু
সময় পার করলে অভিভাবকগণ
যখন এই শিক্ষাক্রমের ভালো
দিকগুলো অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন,
তখন শিক্ষার্থীদের শিখন নিশ্চিত করতে
তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে শুরু
করবেন। পাশাপাশি মনিটরিং ব্যবস্থাও জোরদার করা হচ্ছে। একইসাথে,
শিখন অভিজ্ঞতাগুলো শিক্ষার্থীর নিজস্ব পরিবেশ ও পরিস্থিতির সাথে
মিল রেখে ডিজাইন করা
হচ্ছে যাতে করে অনলাইন
কন্টেন্ট নির্মাতাদের সারাদেশের জন্য একই ধরনের
সমাধান বের করার সুযোগ
না থাকে। শিক্ষার্থীরা তাদের উপর অর্পিত কাজগুলো
নিজেরা উদ্যোগী হয়ে সম্পন্ন করবে
তাই এই কাজগুলো তাদের
সৃজনশীলতা বিকাশে ব্যাপক সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
প্রশ্ন
৮: নতুন শিক্ষাক্রমে কোনো
পড়াশুনা নেই, পরীক্ষা নেই,
শিক্ষার্থীরা কিছু শিখছে না’-
অভিভাকদের এই উপলব্ধি সত্যি
কিনা?
উত্তর:
আগে না বুঝেই শিক্ষার্থীরা
মুখস্থ করে লিখে প্রকাশ
করতো, এটাই ছিল পড়াশুনার
ধারণা। শিক্ষার্থীরা যেহেতু এখন শ্রেণিকক্ষে সক্রিয়
হয়ে বুঝে পড়বে, ফলে
তা অনেক বেশি মনে
থাকবে এবং জীবনে প্রয়োগ
করতে পারবে। দলগত কাজ করে
আবার তা নিজেরাই উপস্থাপন
করবে। শুধু জ্ঞান নয়,
দৃষ্টিভঙ্গি, মূল্যবোধ ও দক্ষতাও অর্জন
করবে। আর মূল্যায়ন হবে
প্রতিটি কাজের। এছাড়া, ষাণ্মাসিক মূল্যায়ন এবং বার্ষিক মূল্যায়নও
হবে। কাজেই মূল্যায়ন বা পরীক্ষা ঠিকই
থাকছে, কিন্তু পরীক্ষার ভীতি থাকছে না।
মূল্যায়নের মাধ্যমে উত্তীর্ণ হওয়া এবং না
হওয়ার বিষয়টিও আছে; শুধু তাই
নয়, পারদর্শিতার ৭টি স্কেলে তাদের
রিপোর্ট কার্ডও দেওয়ার ব্যবস্থা আছে।
প্রশ্ন
৯: নতুন শিক্ষাক্রমে বিজ্ঞানের
বিষয়ব¯তুকমিয়ে দেওয়া হয়েছে, ৪০০ নম্বর থেকে
কমিয়ে ১০০ নম্বর করা
হয়েছে- এটি সত্য কিনা?
উত্তর:
নতুন শিক্ষাক্রমে কোনো বিষয়ের জন্য
নির্দিষ্ট নম্বর বরাদ্দ নেই। এখানে রয়েছে
পারদর্শিতার পর্যায়। কাজেই এই বক্তব্যের কোনো
ভিত্তি নেই। নতুন শিক্ষাক্রমে
ষষ্ঠ থেকে দশম পর্যন্ত
সকল শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিষয়ের জন্য অপেক্ষাকৃত বেশি
সময় রাখা হয়েছে। নতুন
শিক্ষাক্রমে একটি বিষয়ের সাথে
আরেকটি বিষয়ের আন্তঃসম্পর্ক বিদ্যমান। একারণে স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ডিজিটাল প্রযুক্তি ও গণিত বিষয়ে
বিজ্ঞান শিক্ষার অনেক বিষয়বস্তু সমন্বয়
করা হয়েছে। ফলে সার্বিক দিক
দিয়ে আগের চেয়ে বিজ্ঞানের
গুরুত্ব বেড়েছে, বিষয়বস্তুর পরিধিও বেড়েছে। বিজ্ঞান পাঠ যুক্তিনির্ভর যা
যৌক্তিক চিন্তাভাবনার দুয়ার খুলে দেয়। আর
যেহেতু এবারে অভিজ্ঞতানির্ভর শিখনকে উৎসাহিত করা হয়েছে, তাই
সব বিষয়ে শিক্ষার্থীরা সে সব বিষয়ে
একজন যৌক্তিক ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ
হয়ে উঠবে। মাধ্যমিক পর্যায়ে আগে প্রায় ২০%
শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিষয়ে পড়তো, এখন সকল শিক্ষার্থী
বিজ্ঞান পড়ার মাধ্যমে বিজ্ঞানমনস্ক,
অনুসন্ধিৎসু, নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে সমস্যা সমাধানে
দক্ষতা অর্জন করবে। ফলে বিজ্ঞান শিক্ষার
প্রসার ঘটবে।
প্রশ্ন
১০: ব্যাবহারিক কাজের জন্য প্রচুর উপকরণ
প্রয়োজন হওয়ায়, নতুন শিক্ষাক্রমে অভিভাবকদের
শিক্ষা ব্যয় অনেক বেড়ে
যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে কিনা?
উত্তর:
ব্যাবহারিক কাজের জন্য দামি উপকরণ,
চাকচিক্য বা সৌর্ন্দয এখানে
বিবেচ্য বিষয় নয়। বরং
স্থানীয়, সহজলভ্য ও পুনঃব্যবহারযোগ্য কাগজ
ও উপকরণ ব্যবহারের নির্দেশনা বার বার দেওয়া
হয়েছে। অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন নিয়মিত কার্যক্রমনির্ভর
হওয়ায় নোট বই কিংবা
কোচিংয়ের খরচ কমে যাবে।
এসব কাজের ক্ষেত্রে যে ধরনের উপকরণ
প্রয়োজন হচ্ছে, তার অধিকাংশই বিনামূল্যের
অথবা স্বল্পমূল্যের। এছাড়াও উপকরণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে পুনঃব্যবহারকে (রিসাইকেল) উৎসাহিত করা হয়েছে। যেমন-
রঙ্গিন পোস্টারের পরিবর্তে বাড়িতে থাকা পুরোনো ক্যালেন্ডারের
পাতা, সাধারণ কাগজ জোড়া দিয়ে
বানানো শিট ব্যবহারের কথা
বলা হয়েছে। তাছাড়া, অনেক উপকরণ বিনামূল্যে
প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকেই পাওয়া সম্ভব। তাই অভিভাবকদের খরচ
বেড়ে গেছে –এই অভিযোগটি মোটেও
সঠিক নয়।
প্রশ্ন
১১: গ্রামের স্কুল উপকরণ পাবে না বা
দরিদ্র জনগোষ্ঠির উপকরণ কেনার সামর্থ্য নেই ফলে বৈষম্য
বাড়ছে, এটা কতখানি যৌক্তিক?
উত্তর:
তৃণমূল পর্যায়ে সহজলভ্যতা নিশ্চিত করেই উপকরণ, শিখন-শেখানো পদ্ধতি ইত্যাদি নির্বাচন করা হয়েছে এবং
প্রতি ক্ষেত্রেই বিকল্প উপায় রাখা হয়েছে,
ফলে বৈষম্য তো নয়ই বরং
গ্রামের বিদ্যালয়গুলো ভালো করছে। তাছাড়া
কোচিং, গাইড বইয়ের ব্যয়
লাগছে না বলে বৈষম্য
কমছে এবং গ্রামের শিক্ষার্থীরা
ভালো করছে।
প্রশ্ন
১২: ক্লাসে শিক্ষককে কিছুই পড়াতে হয় না, বাড়িতে
দলগত কাজ দিয়ে দেওয়া
হচ্ছে এবং বিদ্যালয়/শিক্ষকগণ
বাসা থেকে রান্না করা
খাবার নিয়ে আসতে বলছেন,
এই বিষয়গুলো কেন উঠে আসছে?
উত্তর:
অভিজ্ঞতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শিখবে এবং শিক্ষক তাদেরকে
প্রয়োজনীয় তত্ত্ব, তথ্য এবং ক্লু
দিয়ে কাজগুলো এগিয়ে নিতে সহায়তা করবেন-
এভাবেই পাঠ্যবইগুলো প্রণয়ন করা হয়েছে ।
শিক্ষকদের কাজগুলো পরিচালনার সুবিধার্থে শিক্ষক সহায়িকা প্রণয়ন করে সকল বিষয়ের
শিক্ষকদের হাতে পৌঁছানো হয়েছে।
সেখানে সকল দলগত কাজ
বিদ্যালয়ে করার নির্দেশনা দেওয়া
আছে। বাড়িতে কোনো দলগত কাজ
দেওয়ার কথা নয়। বাড়ি
থেকে রান্না করা কোনো খাবার
আনার নির্দেশনা কোথাও নেই। জীবন দক্ষতার
অংশ হিসেবে শুধুমাত্র একটি অভিজ্ঞতায় নির্দিষ্ট
একটি ক্লাসে রান্নার কাজ আছে, যা
শিক্ষার্থীরা অন্য একটি যোগ্যতা
‘সঞ্চয় করতে পারা’ এর
মাধ্যমে সঞ্চিত টাকা থেকেই সামগ্রী
কিনে নিজেরা রান্না করবে । সুতরাং
বাড়ি থেকে রান্না করে
খাবার নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত
শিক্ষাক্রমের নয়, বরং কতিপয়
শিক্ষকের ভুল নির্দেশনা।
প্রশ্ন
১৩: শিক্ষার্থীদের ব্যাকরণ পড়ানো হয় না, লেখালেখির
সুযোগ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ফলে বানান, ব্যাকরণ
ইত্যাদি শিখছে না- এই ধরণের
অভিযোগের সত্যতা কতটুকু?
উত্তর:
যেকোনো সময়ের চেয়ে শিক্ষার্থীদের এখন
বেশি লিখতে হচ্ছে, কারণ প্রতিটি বিষয়ের
প্রতিটি অভিজ্ঞতায় তাদের বিভিন্নভাবে প্রায়োগিক লেখার সুযোগ রাখা হয়েছে। তাই
শিক্ষার্থীকে কোনো পাঠ্যপুস্তক বা
নোট গাইড থেকে নয়,
বরং নিজে থেকেই নিজের
ভাষায় লেখতে হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীকে এখন
স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজের প্রয়োজনে বানান ও ব্যাকরণ শিখতে
হচ্ছে। মূল টেক্সটের সাথে
সাথে ব্যাকরণের অংশটুকূও পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখা হয়েছে। ব্যাকরণকে
প্রয়োগমুখী করার ফলে শিক্ষার্থীদের
জন্য ব্যাকরণ শেখাও সহজ হয়েছে।
প্রশ্ন
১৪: শিক্ষাক্রম চালুর পূর্বে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে কিনা ? তাদের প্রশিক্ষণ মানসম্মত বা পর্যাপ্ত হয়েছে
কিনা?
উত্তর:
নতুন এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের
পূর্বেই শিক্ষকগণকে অনলাইন এবং মূখোমুখী প্রশিক্ষণ
প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি
শিখন-শেখানো প্রক্রিয়া সংক্রান্ত ভিডিও টিউটোরিয়াল, বিষয়ভিত্তিক অনলাইন টিউটোরিয়াল, লিখিত নির্দেশনা, শিক্ষক সহায়িকা, মূল্যায়ন সংক্রান্ত অনলাইন টিউটোরিয়াল, বছরব্যাপী বিষয়ভিত্তিক অনলাইন মেন্টরিং গ্রুপ পরিচালনার মাধ্যমে সকল শিক্ষককে বছরব্যাপী
ব্যপক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে,
যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম। তদুপরি
এই প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া অব্যাহতভাবে চলছে।
প্রশ্ন
১৫: এতো বেশি সংখ্যক
শিক্ষার্থীর ক্লাসে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী
পাঠপরিচালনা করা সম্ভব কিনা?
উত্তর:
ব্যানবেইজের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের
বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক শিক্ষার্থীর অনুপাত ৪০ এর কাছাকাছি।
কাজেই অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীর
সমস্যাটি খুব বেশি নয়।
শহরের কিছু তথাকথিত নামী-দামী প্রতিষ্ঠানে শ্রেণিকক্ষের
ধারণ ক্ষমতার বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী
রয়েছে, যা কাম্য নয়।
এটি নতুন শিক্ষাক্রমের কোনো
সমস্যা নয়, বরং বিশ্বের
যেকোনো শিক্ষাক্রমের জন্য এটি একটি
সমস্যা। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
যাতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অনুপাত
১:৫৫ এর বেশি
না হয়, সেজন্য নির্দেশনা
দেয়া হয়েছে এবং তা মনিটরিং
করা হচ্ছে।
প্রশ্ন
১৬: শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না
এবং অভিভাবকের পক্ষে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া বুঝতে সমস্যা হচ্ছে, শিক্ষকের মূল্যায়নসংক্রান্ত কাজ বেড়ে গেছে-
এসব অভিযোগ সঠিক কিনা?
উত্তর:
পূর্বে শিক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষার (পেপার-পেন্সিল) মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হতো। সেই
মূল্যায়ন বছরে দুই বার
করা হতো এবং সেই
দুইবারের লিখিত ফলাফলের ভিত্তিতে চূড়ান্ত মূল্যায়ন নম্বর বা গ্রেডের মাধ্যমে
প্রকাশ করা হতো। কিন্তু
বর্তমানে শিক্ষার্থীর প্রতিনিয়ত মূল্যায়ন করা হচ্ছে। সেই
মূল্যায়নে শিক্ষক ছাড়াও সহপাঠী ও অভিভাবক অংশ
নিচ্ছেন। প্রতিনিয়ত এই মূল্যায়ন শিক্ষার্থীর
অগোচরে সংঘটিত হয়ে চলেছে। ফলে
শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন বা পরীক্ষাভীতি যেমন
কমছে, তেমনি অযাচিত প্রতিযোগিতাও কমে আসছে। শিক্ষার্থীকে
নম্বর বা গ্রেড দেওয়ার
পরিবর্তে সে কতটুকু পারদর্শিতা
অর্জন করেছে, তার বিবরণ দেওয়া
হচ্ছে। এটি থেকে শিক্ষার্থী
এবং অভিভাবক তার অবস্থান বা
পর্যায় বুঝতে পারবেন। এর পাশাপাশি শিক্ষার্থীর
অবস্থান বা পর্যায় বিবেচনা
করে শিক্ষক তাঁর শিক্ষার্থীর পরবর্তী
উন্নয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছেন। তাই
আপাতভাবে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সরাসরি
দৃষ্টিগোচর না হলেও মূল্যায়ন
প্রক্রিয়া যথাযথভাবেই চলমান রয়েছে। মূল্যায়ন প্রক্রিয়াটি সহজ ও সাবলীল
করার জন্য মূল্যায়ন অ্যাপ
‘নৈপুণ্য’ চালু করা হয়েছে।
‘নৈপুণ্য’তে প্রতিষ্ঠানগুলোর নিবন্ধন
ও অন্যান্য কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রতি শিক্ষার্থীর সারাবছরের মূল্যায়ন রেকর্ড ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে সনদ
তৈরি হবে এই অ্যাপের
মাধ্যমে। ফলে শিক্ষকের কাজের
পরিমাণ অনেক কমে আসবে
এবং ধীরে ধীরে সবাই
প্রক্রিয়াটি বুঝতে সক্ষম হবেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে
একইসাথে শিক্ষক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা
মূল্যায়নের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
প্রশ্ন
১৭: বিদেশি কারিকুলাম জোড়াতালি দিয়ে বানানো হয়েছে-
অভিযোগটি সত্য কিনা?
উত্তর:
ব্রিটিশ কলোনিয়াল শিক্ষা ব্যবস্থা শুরুর পূর্বে এই জনপদের শিক্ষা
মডেল ছিল এলাকাভিত্তিক, যা
টোল, মক্তব, পাঠশালা নামে পরিচিত। এই
মডেল সৃজনশীল গণিতবিদ ও বিজ্ঞানী তৈরি
থেকে শুরু করে সমস্যা
সমাধানকারী সৃজনশীল মানুষ ও উদ্যোক্তা তৈরি
করেছিল, যার ফলে বাংলা
হয়েছিল পৃথিবীতে সমৃদ্ধ। এই শিক্ষাক্রম অতীত
বাংলার শিক্ষা মডেলের সেই সবল দিকগুলোর
সাথে ভবিষ্যৎ পৃথিবীর সাথে খাপ খাওয়ানোর
বিষয়বস্তুগুলোর মিশ্রণ ঘটিয়ে একটি দেশীয় সময়োপোযোগী
শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করেছে, যা এই দেশের
ঐতিহ্য ও স্বপ্নকে একই
সাথে ধারন করেছে। সুতরাং
এই শিক্ষাক্রম অন্য কোনো দেশের
শিক্ষাক্রমকে অনুকরণ করে প্রণয়ন করা
হয় নাই। এটা আমাদের
বাংলাদেশের নিজস্ব শিক্ষাক্রম।
প্রশ্ন
১৮: দুর্বল শিক্ষার্থীদের উন্নয়নের জন্য কোনো ব্যবস্থা
নতুন শিক্ষাক্রমে রাখা হয়েছে কিনা?
উত্তর:
এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীদের দূর্বল ভাবে না, কারণ
একদল মানুষের মধ্যে সবাই শিখনের একই
পর্যায়ে থাকে না। এটাই
স্বাভাবিক। কাজেই শিক্ষার্থীদের সকলকে কাছাকাছি পর্যায়ে আনার উপায় হলো
তাদেরকে সহপাঠি-শিখনের মাধ্যমে সহযোগিতামূলক শিখন পরিবেশে শেখার
সুযোগ করে দেয়া। কাজেই
এই শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীরা অবিরাম একে অপরকে সহযোগিতার
মাধ্যমে তাদের শিখন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার
মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যাবে। একইভাবে শিখনকালীন মূল্যায়ন পরিচালনা করার কারণে শিক্ষকও
সহজেই কোন শিক্ষার্থীর কী
ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন তা চিহ্নিত করে
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।
প্রশ্ন
১৯: বিজ্ঞান শিক্ষার এপারেটাস নাই- এক্ষেত্রে বিজ্ঞান
শিক্ষায় প্রভাব পড়ছে কিনা?
উত্তর:
এই কারিকুলাম বিজ্ঞান শিক্ষাকে ল্যাবরেটরির মধ্যে কেন্দ্রিভূত না রেখে বরং
বিজ্ঞানের বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানকে বাস্তব ক্ষেত্রে ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহী করে তুলছে। উদাহরণস্বরপ
বলা যায়, প্রতিটি বাড়ির
রান্নাঘর যে একটি ল্যাবরেটরি
হতে পারে এবং চারপাশের
প্রাকৃতিক ও সামাজিক সকল
উপাদান যে বিজ্ঞানের শিখন
উপকরণ হতে পারে, সেই
ধারণা চর্চার সুযোগ দেয়া হয়েছে। বিজ্ঞান
শিক্ষার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের অনুসন্ধিৎসু
করে তোলা। ফলে প্রকৃতি ও
পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের অভিজ্ঞতা সরাসরি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা হাতে
কলমে বিজ্ঞান শিখতে পারবে। তাই স্কুল পর্যায়ে
বিজ্ঞান শিক্ষায় এপারেটাসের চাইতে বেশি জরুরি শিক্ষার্থীদের
বিজ্ঞানমনস্ক, অনুসন্ধিৎসু ও নতুন জ্ঞান
আহরণে আগ্রহী করে তোলা।
প্রশ্ন
২০: ডিজিটাল ডিভাইসের কারণে গ্রামের শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কিনা?
উত্তর:
এই শিক্ষাক্রমে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের পর্যাপ্ততার ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে তিনটি ভাগে ভাগ করে
শিখন কার্যক্রম পরিচালনার কৌশল নির্ধারণ করা
হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠানে সকল
ডিজিটাল ডিভাইস এবং সংযোগ রয়েছে
সেগুলোকে হাইটেক, যেখানে ডিভাইস ও সংযোগ সীমিত
রয়েছে সেগুলো লো-টেক এবং
যেখানে কোনো সুবিধা নেই
সেগুলোকে নো-টেক প্রতিষ্ঠান
হিসেবে চিহ্নিত করে শিখন অভিজ্ঞতা
সাজানো হয়েছে। ফলে কোনো প্রতিষ্ঠানে
ডিজিটাল ডিভাইস ও সংযোগ না
থাকলেও সেগুলোর ধারণা ও ব্যবহার সম্পর্কে
সিমুলেশনের মাধ্যমে জেনে শিখন যোগ্যতা
অর্জন করবে। এর ফলে শহর
বা গ্রামে ডিভাইস অপ্রাপ্তির কারণে শিখন কোনো ভাবেই
বাধাগ্রস্থ হবে না।
প্রশ্ন
২১: ইংরেজি মাধ্যমের পড়ালেখা অনেক বেশি, নতুন
শিক্ষাক্রমে কোনো পড়ালেখাই নাই-
এই অভিযোগটি সত্যি কিনা?
উত্তর:
বিশ্বব্যাপী ইংরেজী মাধ্যমে যে শিক্ষাক্রম চলমান
রয়েছে (যেমন ক্যামব্রিজ, নর্থ
অ্যামেরিকান, অস্ট্রেলিয়ান ইত্যাদি) তা তাদের নিজেদের
দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য পরিচালিত শিক্ষাক্রম
থেকে ভিন্ন। নিজেদের দেশের শিক্ষাক্রম অনেক বেশি শিক্ষার্থী
নির্ভর, অভিজ্ঞতাভিত্তিক এবং সৃজনশীল চর্চার
মাধ্যমে ভবিষ্যৎ নাগরিক তৈরির উপাদানে ভরপুর, যার ফলে এই
দেশগুলো শিক্ষা প্রসার, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ
সৃষ্টির মাধ্যমে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশও এই বিদেশী শিক্ষাক্রম
দ্বারা পরিচালিত ভোক্তা তৈরির পরিবর্তে সৃজনশীল নাগরিক তৈরি নিশ্চিত করার
জন্যই নতুন শিক্ষাক্রম প্রবর্তন
করেছে। কাজেই ইংরেজি মাধ্যমে পরিচালিত শিক্ষাক্রমে বেশি পড়ালেখা থাকলেই
যে তা সৃজনশীল মানুষ
তৈরি করবে, তা সঠিক নয়।
প্রশ্ন
২২: গণিত বইয়ে পর্যাপ্ত
অনুশীলনের সুযোগ নেই- এটি কতখানি
সত্য?
উত্তর:
গণিত বইটির সকল অভিজ্ঞতাই অনুশীলন
নির্ভর, এর উপস্থাপন একটু
ভিন্নভাবে করা হয়েছে। গণিতের
বাস্তব প্রয়োগকে বিবেচনায় রেখে ব্যাখ্যামূলকভাবে এটি
সাজানো হয়েছে। অভিজ্ঞতা চলাকালে বিভিন্ন কার্যক্রমের (একক কাজ, জোড়ায়
কাজ, দলগত কাজ) মধ্য
দিয়ে গণিতের তত্ত্ব ও সূত্র প্রয়োগ
করে বিভিন্ন ধরনের গাণিতিক সমস্যা সমাধানের সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে
পুরাতন বইয়ের মতো অনুশীলনীতে প্রচুর
গাণিতিক সমস্যা রাখা হয়নি। বরং
গাণিতিক সমস্যা সমাধানে বিশেষ দক্ষতা অর্জনের জন্য গণিতে তাত্ত্বিক
ও প্রায়োগিক দিককে গুরুত্ব দিয়ে অনেক বিশ্লেষণাত্মক
উদাহরণ ও কাজ সংযুক্ত
করা হয়েছে; যা শিক্ষার্থীদের গণিত
ভীতি কমাতে সাহায্য করবে এবং একইসাথে
নিজে নিজে বুঝে তত্ত্ব
ও সূত্র সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা অর্জন করতে সহায়তা করবে।
ফলে গণিত মুখস্থ নয়,
শিক্ষার্থী সত্যিকার অর্থে বুঝে গাণিতিক সমস্যা
নিজেরাই তৈরি করতে এবং
তার প্রয়োগ করে সমস্যা সমাধান
করতে অভ্যস্থ হয়ে উঠবে।
প্রশ্ন
২৩: এই শিক্ষাক্রম মেধাবী
শিক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত নয়,
এটি তাদের মেধা বিকাশে সহায়ক
নয়- অভিভাবকদের এই অভিযোগ সঠিক
কিনা?
উত্তর:
মেধার বিকাশ ঘটে সমস্যা সমাধানের
উপায় বের করে এবং
চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার বিভিন্ন কৌশল উদ্ভাবন করে।
নতুন শিক্ষাক্রমে প্রতিটি বিষয়ে শিক্ষার্থীরা সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে শিখছে। তাই প্রতিনিয়ত সৃজনশীলতার
চর্চার মাধ্যমে তাদের মেধার সর্বোচ্চ বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে এই
সৃজনশীল শিক্ষার্থীরাই ভবিষ্যতে কবি, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী,
উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করবে। পূর্বের শিক্ষাক্রম যেহেতু অনেক বেশি মুখস্থনির্ভর
ছিল, তাই শিক্ষার্থীরা শুধু
চাকুরী প্রত্যাশী হয়ে তৈরি হয়েছে।
যারা ব্যাতিক্রম তারা নিজ উদ্যোগে
সৃজনশীল বা উদ্যোক্তা হয়েছে।
প্রশ্ন
২৪: নিয়োগ পরীক্ষার জন্য গ্রেড না
থাকায় নির্বাচন কীভাবে করবে?
উত্তর:
বিশ্বব্যাপী চাকুরীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সনদের পরিবর্তে প্রার্থীরা কী পারে, তার
উপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আমাদের
দেশে যেসব ছেলেমেয়েরা ফ্রিল্যান্সিং
বা আউটসোর্সের কাজ করছে, তারা
কেউ সনদ দেখিয়ে কাজ
পায় নাই, বরং তাদের
পারদর্শিতা দেখিয়েই কাজ পেয়েছে। বিদেশি
বহুজাতিক কোম্পানিগুলো (যেমন, গুগল, অ্যাপল ইত্যাদি) সনদ দেখে চাকুরী
দেয় না, বরং পারদর্শিতা
দেখে জনবল নিয়োগ দিয়ে
থাকে। বাংলাদেশেও চাকুরীর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আসা শুরু হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানগুলো এখন সনদ দেখার
পরিবর্তে পারদর্শিতাকে বেশি মূল্যায়ন করছে
(যেমন, নগদ চাকুরীতে নিয়োগে
পারদর্শিতা দেখার ঘোষণা দিয়েছে)। সরকারি চাকুরীর
বিধিমালাতেও এই পরিবর্তন খুব
শীঘ্রই আসতে যাচ্ছে। তদুপরি,
নতুন কারিকুলামের মূল্যায়নে যে সনদ প্রদান
করা হচ্ছে তাতে সাত মাত্রার
একটি পারদর্শিতার সূচক নির্দেশক একটি
স্কেল রয়েছে যা শিক্ষার্থীর পারদর্শিতার
বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা দিবে।
প্রশ্ন
২৫: বিদেশে পড়াশোনা করতে গেলে সার্টিফিকেটের
সমমান কীভাবে নিশ্চিত হবে?
উত্তর:
বিদেশে পড়ালেখা করতে গেলে সবসময়
নিজ দেশের পড়ালেখার সমমান সার্টিফিকেট প্রদর্শন করতে হয়। এটি
পূর্বেও ছিল, এখনো আছে।
যখন বাংলাদেশে প্রথম/দ্বিতীয়/তৃতীয় শ্রেণিতে ফলাফল দেয়া হতো বা
জিপিএ ভিত্তিক ফলাফল দেয়া হতো, তখনও
বিদেশে পড়তে গেলে সমমান
নির্ধারণ করতে হতো। একইভাবে
বাংলাদেশের কোনো শিক্ষার্থী বিদেশ
থেকে পড়াশুনা করে আসলেও তাকে
অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশে ফিরে এসে সমমান
সার্টিফিকেট নিতে হয়। তাই
এটি নতুন শিক্ষাক্রম থেকে
উদ্ভুত নতুন কোনো সমস্যা
নয়। এটি একটি স্বাভাবিক
ও চলমান প্রক্রিয়া। কাজেই নতুন শিক্ষাক্রম অনুসারে
শিক্ষার্থীরা যে সনদ পাবে,
তাতে বিদেশে পড়াশোনা করতে তাদের কোনো
সমস্যা হবে না।
প্রশ্ন
২৬: ব্রিটেনের কারিকুলামে নবম শ্রেণিতে বিষয়
বাছাইয়ের সুযোগ আছে, কিন্তু বাংলা
মাধ্যমে তা রাখা হয়নি
কেন? বিজ্ঞান শিক্ষাকে খাটো করতেই কী
বিভাগ বিভাজন তুলে দেয়া হয়েছে?
উত্তর:
প্রচলিত ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাক্রম এবং ইংল্যান্ডের জাতীয়
শিক্ষাক্রম এক নয়। এবং,
ইংল্যান্ডসহ পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশের শিক্ষাক্রমেই
নবম (ক্ষেত্রবিশেষে দশম) শ্রেণি পর্যšত বিষয় নির্বাচনের
সুযোগ থাকে না। দশম
বা একাদশ শ্রেণিতে গিয়ে সাধারণত বিষয়
নির্বাচনের স্বাধীনতা দেয়া হয়।
প্রশ্ন
২৭: ধর্ম শিক্ষায় লিখিত
পরীক্ষা রাখা হয়নি একথা
কী সত্যি?
উত্তর:
ধর্ম শিক্ষাসহ সকল বিষয়ের জন্য
একই পদ্ধতিতে মূল্যায়নের ব্যবস্থা রয়েছে যেখানে
লিখিত মূল্যায়নও অন্তর্ভূক্ত আছে।
মন্তব্য করুন
আগামী ২৫ মে থেকে নটর ডেম কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু হবে। চলবে ৩০ মে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এ বছর আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০০ টাকা। সম্প্রতি কলেজের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক ভর্তির বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত কয়েক বছরের মতো এবারও নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করবে মিশনারি প্রতিষ্ঠানটি। এ বছর বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় মোট ৩ হাজার ২৯০ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হবে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে বাংলা মাধ্যমে ১ হাজার ৮১০টি এবং ইংরেজি মাধ্যমে ৩১০টি আসন রয়েছে। এছাড়া মানবিক বিভাগে ৪১০টি এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৭৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবেন।
আগ্রহী শিক্ষার্থীরা কলেজের নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারবে। আবেদনের পর প্রবেশপত্রের প্রিন্ট আউট কপি সংগ্রহ করতে হবে। এ সময় অফেরতযোগ্য ৪০০ টাকা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে হবে।
আবেদনের যোগ্যতা
বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের জিপিএ-৫ থাকতে হবে। অবশ্যই এসএসসিতে উচ্চতর গণিত বিষয় থাকতে হবে। বাংলা ও ইংরেজি উভয় মাধ্যমের ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য। এছাড়া মানবিক বিভাগের জন্য জিপিএ-৩.০০ এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের জন্য জিপিএ-৪.০০ থাকতে হবে।
এছাড়াও বিভাগ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কোনো শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে আবেদন করতে চাইলে তার এসএসসিতে কমপক্ষে জিপিএ-৪.৫০ পেতে হবে। আর ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে মানবিক বিভাগে যেতে হলে জিপিএ-৩.৫০ থাকতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষা ও চূড়ান্ত মনোনয়ন
আবেদনকারী সব প্রার্থীকে ভর্তির লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। লিখিত পরীক্ষার তারিখ ও সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রবেশপত্রে পাওয়া যাবে। এসএসসিতে প্রাপ্ত জিপিএ ও কলেজে লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুসারে চূড়ান্তভাবে ভর্তির জন্য মনোনীত করা হবে।
চূড়ান্তভাবে ভর্তির জন্য মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা ও ভর্তির তারিখ এবং সময় কলেজের ওয়েবসাইট, নোটিশ বোর্ড এবং ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হবে। ভুল বা অসত্য তথ্য দিয়ে ভর্তি হলে ভর্তি বাতিল বলে গণ্য হবে এবং টাকা ফেরত দেওয়া হবে না। এদিকে, ভর্তির ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও মিশনারি পরিচালিত প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলের শিক্ষার্থীদের বিশেষ বিবেচনায় আনা হবে।
ভর্তি পরীক্ষার বিষয়সমূহ
এসএসসির সংক্ষিপ্ত সিলেবাস অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। যারা বিজ্ঞান শাখা থেকে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ভর্তির আবেদন করবে, তাদের বিজ্ঞান শাখার প্রশ্নে এবং যারা ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে মানবিক শাখায় ভর্তির আবেদন করেবে, তাদের ব্যবসায় শিক্ষা শাখার প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে হবে।
বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষার বিষয় বাংলা, ইংরেজি, উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান। মানবিক বিভাগে পরীক্ষার বিষয় বাংলা, ইংরেজি, আইসিটি ও সাধারণ জ্ঞান। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পরীক্ষার বিষয় বাংলা, ইংরেজি, হিসাববিজ্ঞান, আইসিটি ও সাধারণ জ্ঞান। পরীক্ষাসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্রে পাওয়া যাবে।
নটর ডেম কলেজ একাদশ ভর্তি আবেদন
মন্তব্য করুন
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নীতিমালা অনুযায়ী, অনলাইনে ভর্তির আবেদন শুরু হবে ২৬ মে। তিন ধাপে আবেদন চলবে আগামী ১১ জুন পর্যন্ত। আর ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই থেকে।
বুধবার (১৬ মে) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইটে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির এ নীতিমালা প্রকাশ করা হয়।
শিডিউল অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ভর্তির জন্য নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৩ জুন। শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চয়ন করতে হবে ২৯ জুনের মধ্যে। দ্বিতীয় ধাপে ভর্তি আবেদন শুরু হবে ৩০ জুন থেকে। যা চলবে ২ জুলাই পর্যন্ত।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, দ্বিতীয় ধাপে আবেদনকৃত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ হবে ৪ জুলাই। একই দিন পছন্দক্রম অনুযায়ী প্রথম দফায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের ফলও প্রকাশ করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে ভর্তির জন্য নির্বাচিত শিক্ষার্থী ভর্তি নিশ্চয়ন শুরু হবে ৫ জুলাই থেকে। যা চলবে ৮ জুলাই পর্যন্ত।
একাদশ শ্রেণির ভর্তি সংক্রান্ত শিডিউলে বলা হয়েছে, একাদশ শ্রেণিতে তৃতীয় ধাপে ভর্তি আবেদন শুরু হবে ৯ জুলাই থেকে। চলবে ১০ জুলাই পর্যন্ত। দ্বিতীয় ধাপের মাইগ্রেশন এবং তৃতীয় ধাপের ফল ১২ জুলাই প্রকাশিত হবে। তৃতীয় ধাপের ভর্তি নিশ্চয়ন করতে হবে ১৩ থেকে ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে।
সকল ধাপে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তি শুরু হবে ১৫ জুলাই থেকে। ভর্তি কার্যক্রম চলবে ১০ দিন। অর্থাৎ ২৫ জুলাই একাদশ শ্রেণির ভর্তি শেষ হবে। আর একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে ৩০ জুলাই থেকে।
মন্তব্য করুন
ডরোথি জিন টিলম্যান যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর বাসিন্দা। মাত্র ১৭ বছর বয়সে অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি শেষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। শুধু যে নিজে পড়াশোনা করেছেন তাই নয়, এ সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করেছেন নিজের ইনস্টিটিউটও। অল্প বয়সে এত বড় একাডেমিক সাফল্যের পেছনের গল্প শুনিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন মায়ের উৎসাহ ও সহযোগিতাই তাঁকে এত দূর পৌঁছে দিয়েছে।
সবচেয়ে চমকপ্রদ যে তথ্যটি ডরোথি জিন দিয়েছেন তা হলো, মা তাঁকে ১০ বছর পর্যন্ত বাসায় রেখে পড়াশোনা করিয়েছেন, যা তাঁকে তাঁর নিজের গতিতে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দিয়েছে। এর ফলে সাধারণ স্কুলের থেকেও দ্রুত বিভিন্ন শিক্ষা স্তর পার হতে পেরেছেন। এরপর মাত্র ১০ বছর বয়সে তিনি কলেজে ভর্তি হয়ে অ্যাসোসিয়েট ডিগ্রি অর্জন করেন। ১২ বছর বয়সে ব্যাচেলর ডিগ্রি এবং ১৪ বছর বয়সে এমএসসি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
ডরোথি তাঁর পড়াশোনায় অত্যন্ত মনোযোগী ছিলেন এবং উচ্চ স্তরের পাঠ্যক্রম ও গবেষণার কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলেন। তাঁর নিজের চেষ্টা ও পরিশ্রমের পাশাপাশি তাঁর মা ও পরিবারের সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
ডরোথির মা জিমালিটা টিলম্যান বলেন, ‘যখন অনেক ছোট, তখনই তিনি খেয়াল করেন ডরোথি গণিতে অনেক ভালো। আমাদের চাইল্ড কেয়ার প্রোভাইডার মিস মেরি প্রথম বিষয়টি খেয়াল করেন যে ডরোথির যখন তিন-চার বছর বয়স, তখন থেকেই সে দুই অঙ্কবিশিষ্ট সংখ্যা নিয়ে কাজ করতে পারে। আমরা তার লেখাপড়ার প্রতি ভালোবাসা দেখে সত্যিই আশ্চর্যান্বিত হয়ে যাই।’
জানা যায়, ২০১৬ সালে ডরোথি ১০ বছর বয়সে কলেজ অব লেককাউন্টি থেকে অ্যাসোসিয়েট ডিগ্রি নিয়ে ফেলে। ১২ বছর বয়সে আলবেনিস এক্সেলসিয়র কলেজ থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন। কিন্তু সেখানেই থেমে থাকেননি তিনি। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্ট ও গণিত–সম্পর্কিত স্টেম (STEAM) বিষয়গুলোতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন ডরোথি। ফলে তিনি ১৪ বছর বয়সে মাস্টার অব সায়েন্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। সিদ্ধান্ত নেন অন্য বাচ্চাদের তাঁর মতোই একই ক্যারিয়ার বেছে নিতে সহায়তা করার। ফলশ্রুতিতে প্রতিষ্ঠা করেন ডরোথি জিনিয়াস স্টেম লিডারশিপ ইনস্টিটিউট।
পড়াশোনা, গবেষণা ও নিজের ইনস্টিটিউটের কাজ সামলে ১৭ বছর বয়সে এখন তিনি ড. ডরোথি জিন টিলম্যান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে তাঁর অনুভূতি জানাতে গিয়ে লেখেন, ‘আমি খুশি যে আচরণগত স্বাস্থ্যশিক্ষার ওপর ডক্টরেট সম্পন্ন করতে পেরেছি। অনেক মানুষকে আমার ধন্যবাদ জানানোর আছে আমাকে সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য। কিন্তু এ মুহূর্তে শুধু আমার ১ নম্বর চ্যাম্পিয়ন আমার মাকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’
মন্তব্য করুন
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নিয়ে কয়েক বছর ধরেই শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের
এমন উৎকণ্ঠায় প্রশ্ন উঠেছে—এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার চেয়েও কি কঠিন ‘নামি’ কলেজে ভর্তি
হওয়া?
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড, প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও শিক্ষকরা বলছেন, ভর্তিচ্ছু
শিক্ষার্থীর চেয়ে কলেজে আসন সংখ্যা বেশি। তবে সব প্রতিষ্ঠান মানসম্পন্ন নয়। হাতে গোনা
কিছু কলেজ সবার পছন্দের শীর্ষে। সবাই পছন্দের কলেজে ভর্তির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে।
এতে শেষ পর্যন্ত কলেজ পেতেও বেগ পেতে হয় তাদের। জিপিএ-৫ পেয়েও অনেকে কাঙ্ক্ষিত কলেজ
পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। পরে অনেকে অন্য কলেজ কিংবা পলিটেকনিকেও ভর্তি হতে বাধ্য হন।
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর দ্বিগুণ আসন
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ১১টি বোর্ডে মোট পাস করেছেন ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩
জন শিক্ষার্থী। অথচ দেশের সরকারি-বেসরকারি কলেজ, মাদরাসা, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও কারিগরি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোট আসন প্রায় ৩৪ লাখ। সেই হিসাবে সব শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও ফাঁকা
থাকবে অর্ধেকের বেশি আসন।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক (অতিরিক্ত
দায়িত্বে) অধ্যাপক মোহাম্মদ আবুল মনছুর ভূঁঞা জানান, সারাদেশে ৯ হাজার ২০০টির মতো কলেজ
ও মাদরাসায় একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ রয়েছে। মোট আসন সংখ্যা ২২ লাখেরও
কিছু বেশি।
তিনি বলেন, ‘এটা তো গেলো কলেজ-মাদরাসার হিসাব। সরকারি-বেসরকারি
পলিটেকনিকে অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। সেখানেও তো প্রায় আড়াই লাখ আসন রয়েছে। ভোকেশনাল
যেটাকে আমরা বলি, সেখানেও এইচএসসিতে (ভোকেশনাল) পড়ার সুযোগ রয়েছে ৯ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর।
সবমিলিয়ে প্রায় ৩৪ লাখ আসন রয়েছে।’
যে কারণে প্রত্যাশিত কলেজ পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা
গত তিন বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ঘোষিত তিন ধাপে ভর্তি শেষ করতে চাইলেও তা সম্ভব
হচ্ছে না। অনেক সময় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরাও তিন ধাপে ভর্তির আবেদন শেষে কোনো কলেজ
বরাদ্দ পান না।
কারণ হিসেবে ভর্তি কার্যক্রমে যুক্ত শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তারা বলছেন,
আবেদনের সময় শিক্ষার্থীরা ১০টি কলেজ পছন্দক্রম দেওয়ার সুযোগ পায়। তারা বারবার পছন্দের
কলেজগুলো পছন্দের তালিকায় রাখে। ওই কলেজগুলোতে তাদের নম্বর অনুযায়ী আসন মেলে না। এতে
একেবারে শেষ ধাপ পর্যন্ত কিছু শিক্ষার্থী ভালো ফল করেও কলেজ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়।
আমরা সব শিক্ষার্থীকে ভর্তি করাতে চাই। শিক্ষার্থীরা পছন্দের কলেজ
না পেয়ে বারবার একই কলেজ পছন্দের তালিকায় রাখে। এতে তারা নির্ধারিত তিন ধাপে কলেজ বঞ্চিত
হয়। তবে অনেক সময় বিশেষ ধাপে আমরা তাদের ভর্তি করিয়ে নিই।- ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান
অধ্যাপক তপন কুমার সরকার
ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘আমরা সব
শিক্ষার্থীকে ভর্তি করাতে চাই। শিক্ষার্থীরা পছন্দের কলেজ না পেয়ে বারবার একই কলেজ
পছন্দের তালিকায় রাখে। এতে তারা নির্ধারিত তিন ধাপে কলেজ বঞ্চিত হয়। তবে অনেক সময় বিশেষ
ধাপে আমরা তাদের ভর্তি করিয়ে নিই। কাউকে বঞ্চিত করি না।’
‘নামি’ কলেজে ভর্তির লড়াই
এসএসসি পরীক্ষায় এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। অধিকাংশের লক্ষ্য
দেশসেরা কলেজগুলোতে ভর্তি হওয়া। গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসিতে অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েও
অনেকে বাড়তি প্রত্যাশা নিয়ে ঢাকায় ছুটে আসে। এতে রাজধানীর ‘নামি’ কলেজ হিসেবে পরিচিত
প্রতিষ্ঠানগুলোতে তীব্র লড়াই চলে। শেষ পর্যন্ত জিপিএ-৫ পাওয়া অনেক শিক্ষার্থীও পছন্দের
কলেজ না পেয়ে হতাশ হন।
গত বছর তিন ধাপে ভর্তির আবেদন করেও কলেজ পাননি সাড়ে ১২ হাজার শিক্ষার্থী।
তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ছিলেন ৬৬২ জন। তাদেরই একজন পটুয়াখালীর সায়েম
আহমেদ। এবার এসএসসির ফল প্রকাশের পর সায়েম একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে
তিনি লিখেছেন, ‘সবাই সাবধান! জিপিএ-৫ পাওয়ার চেয়েও কিন্তু কলেজে চান্স পাওয়া কষ্ট।
একটু ভুল করলেই বড় খেসারত দিতে হবে। গত বছর আমাকে ভুলের খেরাসত দিতে হয়েছিল। সবাই চেষ্টা
করবা, প্রথম দুই ধাপেই যেন কলেজ পেয়ে যাও।’
কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইকবাল। ফেসবুকে তিনি
স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন, তার ছেলে এবার এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। ঢাকার কোন কলেজে
ভর্তি করলে ভালো হবে, তা শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছেন। তার পোস্টে বিভিন্নজন
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন।
মোহাম্মদ ইকবালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ছেলেটা খোকসায়
একটা বেসরকারি স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। সায়েন্সের ছাত্র। একটা বিষয় ছাড়া
সব বিষয়ে এ+ পেয়েছে। একটুর জন্য গোল্ডেন এ+ হয়নি। আমি চাই, ও ঢাকার ভালো কলেজে পড়ুক।
যত কষ্টই হোক ছেলেকে ভালো কলেজে ভর্তি করাবো।’
কুষ্টিয়ায়ও তো ভালো কলেজ রয়েছে, তাহলে ঢাকায় কেন—এমন প্রশ্নে ইকবালের
সাফ জবাব, ‘ঢাকা হলো রাজধানী। ওখানকার কলেজ কুষ্টিয়ার চেয়ে ভালো হবে। বাড়িতে থাকলে
ছেলে গ্রামের বাজে পরিবেশে নষ্ট হয়ে যাবে। তাই ঢাকায় রেখে পড়াবো সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমম্বয় কমিটির সদস্যদের তথ্যমতে, সারাদেশে ১১
হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ থাকলেও সবার আগ্রহের কেন্দ্রে
হাতে গোনা কিছু কলেজ। এর মধ্যে ঢাকার কলেজগুলোতে আগ্রহ বেশি। ঢাকার ভালো কলেজ বলে পরিচিত
প্রতিষ্ঠানগুলোতে সর্বসাকুল্যে ৩২ থেকে ৩৩ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ রয়েছে। আর
ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ‘নামি কলেজে’ সবমিলিয়ে আসন ১ লাখ ২০ হাজারের মতো। ফলে ভালো কলেজ
বলে পরিচিত প্রতিষ্ঠানগুলোতেই ভর্তির জন্য তীব্র প্রতিযোগিতা হবে।
ছাত্রীদের পছন্দের কলেজগুলোর মধ্যে অন্যতম ভিকারুননিসা নূন স্কুল
অ্যান্ড কলেজ। এ কলেজে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী একাদশে ভর্তির সুযোগ পান। ভিকারুননিসা
নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের আসন সীমিত। যারা আমাদের
স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেছে, তাদের আমরা ভর্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেই। এরপর বাইরের
শিক্ষার্থী নেই। দেখা যায়, আবেদনকারী সবাই জিপিএ-৫ পাওয়া। তখন নম্বরের ওপর ভিত্তি করে
শিক্ষার্থী নেওয়া হয়। এটা কেন্দ্রীয়ভাবে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কমিটি করে।’
শিক্ষার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকা আরেকটি কলেজ হলো—রাজউক উত্তরা
মডেল কলেজ। এখানে একাদশ শ্রেণিতে আসন প্রায় ১ হাজার ১০০টি। কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার
জেনারেল এ এস এম বাহাউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘যারা আবেদন করেন, সবাই মেধাবী। আমাদের
আসন সীমিত। সেজন্য সবাইকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না। আমি মনে করি, সব কলেজে শিক্ষার
মান নিশ্চিত করতে পারলে এ প্রতিযোগিতা কমে যাবে।’
কেন ভালো কলেজের সংকট?
অনুমোদিত কলেজের সংখ্যা ৯ হাজারের বেশি। অথচ ভালো বিবেচিত হওয়া কলেজের সংখ্যা সারাদেশে
মাত্র ৮০০-৯০০টি। বাকি আট হাজারের বেশি কলেজ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে পছন্দের
বা ‘ভালো কলেজ’ বলে বিবেচিত হচ্ছে না।
শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেক কলেজ তদবির করে সরকারের কাছ থেকে
অনুমোদন নিয়েছে। অথচ সেখানে শিক্ষক নেই, পড়ালেখার ভালো পরিবেশ নেই। এ কারণে সেসব কলেজে
শিক্ষার্থীরা পড়ার আগ্রহ দেখান না।
কলেজগুলোর সংকট নিরসনে শিক্ষা প্রশাসনের নজর কতটুকু? জানতে চাইলে
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ‘অধিদপ্তরের
পক্ষ থেকে নিয়মিত কলেজগুলোর খোঁজ-খবর নেওয়া হয়। পড়াশোনার মান ভালো না থাকায় অনেক স্কুল-কলেজের
এমপিও বাতিলের নজিরও আছে। যেসব কলেজ এখন পিছিয়ে, সেগুলোতে শিক্ষার মান ভালো করার জন্য
আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমম্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক
শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘বোর্ডের পক্ষ থেকে নিয়মিত
ইনস্পেকশন (পরিদর্শন) হয়। আমরা কোনো প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার মান নিম্নমুখী হলে এবং শিক্ষক
সংকট থাকলে তা প্রতিবেদন আকারে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাই। বোর্ডের এখতিয়ারের মধ্যে যেটুকু
আছে, সেটাও আমরা করি।’
তিন ধাপে ভর্তি আবেদন, সর্বোচ্চ ফি ৮৫০০ টাকা
প্রতি বছর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এবারও নীতিমালার
খসড়া করা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে বৈঠক করে তা চূড়ান্ত করা হবে। খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী—এবারও
একাদশ শ্রেণিতে তিন ধাপে ভর্তি আবেদন নেওয়া হবে। আগামী ২৯ মে থেকে আবেদন শুরু হয়ে চলবে
১১ জুন পর্যন্ত। পাশাপাশি গত বছরের মতো এবারও সর্বোচ্চ ভর্তি ফি সাড়ে ৮ হাজার টাকাই
থাকছে।
অন্যদিকে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট আসনের ৯৩ শতাংশ মেধা কোটা হিসেবে
বিবেচিত হবে। এসব শূন্য আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বাকি ৭ শতাংশের মধ্যে ৫ শতাংশ
বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য এবং দুই শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীন দপ্তর/সংস্থায়
কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। তবে কোটার আসন ফাঁকা
থাকলে তাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে।
মিশনারি চার কলেজে ভর্তি পরীক্ষা
একাদশ শ্রেণিতে ২০১৫ সাল থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি করানো হচ্ছে। তবে খ্রিস্টান মিশনারি
পরিচালিত কলেজগুলো বিশেষ সুবিধা পাওয়ায় তারা লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে একাদশ শ্রেণিতে
ভর্তি করে আসছে। কলেজগুলো হলো—নটর ডেম, হলিক্রস কলেজ, সেন্ট জোসেফ ও সেন্ট গ্রেগরিজ
স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
নটর ডেম কলেজের অধ্যক্ষ হেমন্ত পিউস রোজারিও বলেন, আমরা ভর্তি পরীক্ষা
নেই। লিখিত ও একই দিনে মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে মেধা যাচাই করা হয়। ফলাফলে যারা ভালো করে
তাদের আমরা ভর্তি করি। আদালতের অনুমতি নিয়েই আমরা এ প্রক্রিয়ায় ভর্তি কার্যক্রম চালিয়ে
আসছি। এবারও একই পদ্ধতিতে ভর্তি করানো হবে।’
জিপিএ-৫ এসএসসি শিক্ষা বোর্ড ভর্তি
মন্তব্য করুন
চলতি
বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার
ফল রোববার (১২ মে) প্রকাশিত
হয়েছে। এতে উত্তীর্ণ হয়েছেন
১৬ লাখ ৭২ হাজার
১৫৩ শিক্ষার্থী। তাদের সামনে এখন ভালো কলেজের
ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন। এদিকে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ফলের ভিত্তিতে অনলাইনে
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নেওয়া হবে। সেই ভর্তি
কার্যক্রম শুরু হতে পারে
২৬ মে।
ভর্তি তারিখ, ফিসহ আনুষ্ঠানিক নানা বিষয় চূড়ান্ত করতে আজ সোমবার (১৩ মে) বৈঠকে বসছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্টরা। এবারও ভর্তির জন্য কোনো পরীক্ষা হবে না। কেবল অনলাইনে আবেদন নেওয়া হবে এবং নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এবার বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আসছে না। তবে ফল প্রকাশের প্রক্রিয়ায় কিছু পরিবর্তন আসতে পারে।
এবার হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে মিশনারি পরিচালিত নটরডেম, হলিক্রস ও সেন্ট জোসেফ কলেজ লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করবে।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা অনলাইনে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে (www.xiclassadmission.gov.bd) একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করতে পারবে। অনলাইন ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ম্যানুয়ালি ভর্তির আবেদন নেওয়া হবে না। একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবে তার মধ্য থেকে তার মেধা, কোটা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি কলেজে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।
তবে যেসব শিক্ষার্থী বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হিসেবে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, তারা বোর্ডে ম্যানুয়ালি ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। প্রবাসীদের সন্তান ও বিকেএসপি থেকে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বোর্ডে ম্যানুয়ালি আবেদন করতে পারবে। এক্ষেত্রে বোর্ড প্রমাণপত্র যাচাই-বাছাই করে শিক্ষার্থীকে ভর্তির ব্যবস্থা নেবে।
অনলাইনে আবেদন
অনলাইনে
আবেদনের জন্য নির্ধারিত ওয়েবসাইটে
একাদশ শ্রেণির ভর্তির আবেদন করা যাবে। অনলাইন
ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ম্যানুয়ালি
ভর্তির আবেদন নেওয়া হবে না। আবেদন
ফি দিয়ে সর্বনিম্ন পাঁচটি
এবং সর্বোচ্চ দশটি কলেজে পছন্দ
দিতে হবে। একজন শিক্ষার্থী
যতগুলো কলেজে আবেদন করবে এর মধ্য
থেকে তার মেধা, কোটা
ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি কলেজে তার
অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।
নির্বাচিত শিক্ষার্থীকে ৩৩৫ টাকা দিয়ে প্রাথমিকভাবে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। আগে প্রাথমিক নিশ্চায়ন ফি ছিল মোট ৩২৮ টাকা। রেজিস্ট্রেশন ফি ৭ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা থেকে ১৪২ টাকা করায় মোট ফি বেড়েছে।
যারা ম্যানুয়ালি আবেদন করবে
পুরো ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইনে হলেও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট বোর্ডে ম্যানুয়ালি ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। প্রবাসীদের সন্তান অথবা বিকেএসপি থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী অথবা খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিভাগীয় অথবা জাতীয় পর্যায়ে অসামান্য অবদানের জন্য পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বোর্ডে ম্যানুয়ালি আবেদন করতে পারবে। এক্ষেত্রে বোর্ড উপযুক্ত প্রমাণপত্র যাচাই-বাছাই করে শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যবস্থা করে দেবে।
গ্রুপ
নির্বাচন যেভাবে
বিজ্ঞান গ্রুপ থেকে এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারবেন। মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপ থেকে উত্তীর্ণরা এ দুই গ্রুপের যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারবেন। দাখিল উত্তীর্ণ বিজ্ঞান গ্রুপের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের যেকোনো একটি ও সাধারণ গ্রুপ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের যেকোনো একটি নির্বাচন করতে পারবেন। ভর্তির জন্য কোনো পরীক্ষা হবে না, শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে।
ভর্তিতে
৭ শতাংশ কোটা বহাল থাকছে
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট শূন্য আসনের ৯৩ শতাংশ মেধা কোটা হিসেবে বিবেচিত হবে। এসব শূন্য আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বাকি ৭ শতাংশের মধ্যে ৫ শতাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য এবং ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীন দপ্তর/সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারী সন্তানদের জন্য রাখা হয়েছে। এসব আসনে শিক্ষার্থী না থাকলে তা মেধা কোটায় বিবেচিত হবে। কোটার ক্ষেত্রে আবেদনকারী সংখ্যা বেশি হলে মেধার ভিত্তিতে তালিকা করতে হবে।
মন্তব্য করুন
ডরোথি জিন টিলম্যান যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর বাসিন্দা। মাত্র ১৭ বছর বয়সে অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি শেষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। শুধু যে নিজে পড়াশোনা করেছেন তাই নয়, এ সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করেছেন নিজের ইনস্টিটিউটও। অল্প বয়সে এত বড় একাডেমিক সাফল্যের পেছনের গল্প শুনিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন মায়ের উৎসাহ ও সহযোগিতাই তাঁকে এত দূর পৌঁছে দিয়েছে।
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নিয়ে কয়েক বছর ধরেই শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের এমন উৎকণ্ঠায় প্রশ্ন উঠেছে—এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ার চেয়েও কি কঠিন ‘নামি’ কলেজে ভর্তি হওয়া? আন্তঃশিক্ষা বোর্ড, প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও শিক্ষকরা বলছেন, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর চেয়ে কলেজে আসন সংখ্যা বেশি। তবে সব প্রতিষ্ঠান মানসম্পন্ন নয়। হাতে গোনা কিছু কলেজ সবার পছন্দের শীর্ষে। সবাই পছন্দের কলেজে ভর্তির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। এতে শেষ পর্যন্ত কলেজ পেতেও বেগ পেতে হয় তাদের। জিপিএ-৫ পেয়েও অনেকে কাঙ্ক্ষিত কলেজ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। পরে অনেকে অন্য কলেজ কিংবা পলিটেকনিকেও ভর্তি হতে বাধ্য হন।