নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৩৯ পিএম, ২৩ নভেম্বর, ২০২১
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ৩০ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল। সেই সঙ্গে আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এই বৈঠক শেষে অধ্যক্ষ শাহেনা আক্তার ৩০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকান্ডে যুক্ত থাকায় আট শিক্ষার্থীকে দুই বছরের জন্য, দুইজনকে দেড় বছরের জন্য এবং বাকি ২০ জনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এই সময়ে তারা কোনো ধরনের শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে না বলে জানান অধ্যক্ষ।
তিনি বলেন, ২৭ নভেম্বর কলেজ খোলার দিনই ছাত্রীনিবাস খুলে দেওয়া হবে। তবে ছাত্রাবাস দুটি খোলা হবে সিট বরাদ্দের পর। ছাত্রাবাসে আসন বরাদ্দ পেতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের ইতোপূর্বে আবেদন করতে বলা হলেও তারা করেনি। এবার আবেদন করলে যাচাই করে হোস্টেল কমিটি আসন বরাদ্দ দেবে, তারপর দুই ছাত্রাবাস খুলবে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল ছাত্রলীগের পক্ষ দুটি গত তিন বছরে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে। তবে এবারই প্রথম কারো বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হল।
গত ২৯ অক্টোবর রাতে ও ৩০ অক্টোবর সকালে মেডিকেল ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিবদমান দুটি পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এরপর কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য করুন
৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের চূড়ান্ত তারিখ জানিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।
পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) আনন্দ কুমার বিশ্বাস স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে।
পরীক্ষা হল, আসন ব্যবস্থা এবং সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনাসমূহ যথাসময়ে কমিশনের ওয়েবসাইটে এবং টেলিটকের বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
এর আগে, চলতি বছরের ১৯ মে অনুষ্ঠিত হয় ৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। এতে ৩ লাখ ৪৬ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে অংশ নেন ২ লাখ ৬৮ হাজার ১১৯ জন। পরীক্ষা দেননি ৭৮ হাজার ৮০৩ জন। পরে চলতি বছরের ৬ জুন ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এতে উত্তীর্ণ হয় ১২ হাজার ৭৮৯ জন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পর সবচেয়ে কম সময়ে এ ফল প্রকাশ করে পিএসসি।
৪৫তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা ২৭ নভেম্বর
মন্তব্য করুন
একাদশ
শ্রেণিতে ভর্তিতে তৃতীয় বা শেষ ধাপে
অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে আজ।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল
৮টা থেকে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে
প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা আবেদন
করতে পারছেন। শেষ ধাপে আবেদন
চলবে বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত
১১টা পর্যন্ত। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ১৫০ টাকা ফি
পরিশোধের পর এ আবেদন
করা যাবে।
এ ধাপের ফল প্রকাশ করা
হবে ২৩ সেপ্টেম্বর। ২৪
ও ২৫ সেপ্টেম্বর তৃতীয়
ধাপের নির্বাচন নিশ্চায়নের সুযোগ দেওয়া হবে। এরপর আন্তঃশিক্ষা
বোর্ড সমন্বয় কমিটি যদি সময়সীমা না
বাড়ায়, তাহলে আর কারও আবেদন
এবং কলেজে ভর্তির সুযোগ থাকবে না।
জানা
গেছে, একাদশ শ্রেণিতে চূড়ান্ত ভর্তি শুরু হবে আগামী
২৬ সেপ্টেম্বর, যা চলবে ৫
অক্টোবর পর্যন্ত। চলতি বছর বিভিন্ন
কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির ফি নির্ধারণ করে
দিয়েছে সরকার। ভর্তির সর্বোচ্চ ফি ৮ হাজার
৫০০ টাকা। ভর্তি শেষে একাদশ শ্রেণিতে
ক্লাস শুরু হবে ৮
অক্টোবর। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সূত্র জানায়, দ্বিতীয় ধাপে আবেদন করেও
কলেজ পাননি ২২ হাজারের বেশি
শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে রয়েছেন জিপিএ-৫ পাওয়া ২
হাজার ২৯১ জন শিক্ষার্থীও।
দ্বিতীয় ধাপে ২ লাখ
৯৪ হাজারের কিছু বেশি শিক্ষার্থী
আবেদন করেন। তাদের মধ্যে কলেজ পেয়েছেন ২
লাখ ৭২ হাজার ৮৭০
জন।
এ ধাপেও কলেজ না পাওয়া
শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তি হতে তাদের পুনরায়
তৃতীয় বা শেষ ধাপে
আবেদন করতে হবে। আর
প্রথম ধাপে কলেজ পাওয়াদের
মধ্যে ২৩ হাজার শিক্ষার্থী
মাইগ্রেশনে নতুন কলেজ পেয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ
মিলিয়ে এ পর্যন্ত একাদশ
শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়ায় রয়েছেন ১২ লাখ ৫১
হাজার ৯২৮ জন শিক্ষার্থী।
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা
উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর হিসাবে এখনো সাড়ে ৩
লাখের বেশি শিক্ষার্থী একাদশে
ভর্তি প্রক্রিয়ার বাইরে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত,
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায়
পাস করেন প্রায় সাড়ে
১৬ লাখ শিক্ষার্থী। তার
মধ্যে কারিগরি বোর্ডের শিক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখের কিছু
বেশি। বাকি সাড়ে ১৫
লাখ শিক্ষার্থীকে অনলাইন আবেদনের মাধ্যমে একাদশে ভর্তি হওয়ার কথা। ভর্তির প্রথম
ধাপে আবেদন করেন ১৩ লাখ
৭ হাজার শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে কলেজ পান ১২
লাখ ৬১ হাজার। আর
ভর্তি হবেন বলে নিশ্চিত
(নিশ্চায়ন) করেন ১০ লাখ
২৬ হাজার শিক্ষার্থী।
এছাড়া
দ্বিতীয় ধাপে আবেদন করেন
২ লাখ ৯৪ হাজারের
মতো শিক্ষার্থী। কলেজ পেয়েছেন ২
লাখ ৭২ হাজার। প্রথম
ধাপে নিশ্চায়ন করা এবং দ্বিতীয়
ধাপে কলেজ পেয়ে প্রাথমিক
নির্বাচিত হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা
সাড়ে ১২ লাখের মতো।
বাকি সাড়ে ৩ লাখ
শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়াতে নেই।
মন্তব্য করুন
স্বৈরশাসক আইয়ুব খান ক্ষমতা দখলের মাত্র ২ মাস পর ১৯৫৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেন। শরীফ কমিশন নামে খ্যাত এসএম শরীফের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিশন ১৯৫৯ সালের ২৬ আগস্ট তাদের প্রতিবেদন পেশ করে। এতে শিক্ষা বিষয়ে যেসব প্রস্তাবনা ছিল তা প্রকারান্তরে শিক্ষা সংকোচনের পক্ষে গিয়েছিল। প্রস্তাবিত প্রতিবেদনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে ছাত্র বেতন বর্ধিত করার প্রস্তাব ছিল। ২৭ অধ্যায়ে বিভক্ত শরীফ কমিশনের ওই প্রতিবেদনে প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চতর স্তর পর্যন্ত সাধারণ, পেশামূলক শিক্ষা, শিক্ষক প্রসঙ্গ, শিক্ষার মাধ্যম, পাঠ্যপুস্তক, হরফ সমস্যা, প্রশাসন, অর্থবরাদ্দ, শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিষয়ে বিস্তারিত সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। আইয়ুব সরকার এই রিপোর্টের সুপারিশ গ্রহণ এবং তা ১৯৬২ সাল থেকে বাস্তবায়ন করতে শুরু করে।
শরীফ কমিশনের শিক্ষা সংকোচন নীতি কাঠামোতে শিক্ষাকে তিন স্তরে ভাগ করা হয়- প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চতর। ৫ বছরে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও ৩ বছরে উচ্চতর ডিগ্রি কোর্স এবং ২ বছরের স্নাতকোত্তর কোর্সের ব্যবস্থা থাকবে বলে প্রস্তাব করা হয়। উচ্চশিক্ষা ধনিকশ্রেণীর জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এজন্য পাস নম্বর ধরা হয় শতকরা ৫০, দ্বিতীয় বিভাগ শতকরা ৬০ এবং প্রথম বিভাগ শতকরা ৭০ নম্বর। এই কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বায়ত্তশাসনের পরিবর্তে পূর্ণ সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, ছাত্র-শিক্ষকদের কার্যকলাপের ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখার প্রস্তাব করে। শিক্ষকদের কঠোর পরিশ্রম করাতে ১৫ ঘণ্টা কাজের বিধান রাখা হয়েছিল। রিপোর্টের শেষ পর্যায়ে বর্ণমালা সংস্কারেরও প্রস্তাব ছিল।
শরীফ কমিশনের এই শিক্ষা নীতির বিরুদ্ধে সেই সময়ে প্রতিবাদ জানায় বাংলার ছাত্র সমাজ। ১৯৬২ সালের এই দিনে পাকিস্তানি শাসন, শোষণ ও শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে শহীদ হন ওয়াজিউল্লাহ, গোলাম মোস্তফা, বাবুলসহ নাম না-জানা অনেকেই। তাদের স্মরণে এই দিনকে শিক্ষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সংগ্রাম ও ঐতিহ্যের মহান শিক্ষা দিবস আজ ১৭ সেপ্টেম্বর। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বে তৎকালীন পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে সংঘটিত বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলনের ৬১ বছর পূর্তির দিন আজ।
এর সূচনা হয়েছিল অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা, গণমুখী শিক্ষা প্রসার, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ ও শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য-বঞ্চনা নিরসন তথা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে। এর প্রত্যক্ষ কারণ ছিল ১৯৬২ সালে শরীফ শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ। এর শিক্ষায় অর্থ সংস্থান–সম্পর্কিত প্রস্তাব ও মন্তব্য ছিল: ১. শিক্ষা সস্তায় পাওয়া সম্ভব নয়। ২. অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুল ও নামমাত্র বেতনের মাধ্যমিক স্কুল স্থাপনের জন্য সরকারের ওপর নির্ভর করাই জনসাধারণের রীতি। তাদের উপলব্ধি করতে হবে, অবৈতনিক শিক্ষার ধারণা বস্তুত অবাস্তব কল্পনামাত্র।
এ কমিশনের যে সুপারিশ বাষট্টির ছাত্র আন্দোলনকে তীব্রতর করে ও আশু কারণ হিসেবে দেখা দেয়, তা হলো—দুই বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রি কোর্সকে তিন বছর মেয়াদি করার সুপারিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে গ্রেপ্তার। প্রথমে আন্দোলন শুরু হয় ঢাকা কলেজ থেকে। তিন বছরের ডিগ্রি পাস কোর্সের বিপক্ষে ঢাকা কলেজের ছাত্ররা প্রথম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। ডিগ্রির প্রতিবন্ধী ছাত্র এম আই চৌধুরী এ আন্দোলনের সূচনা করেন। উচ্চমাধ্যমিকে ইংরেজিকে অতিরিক্ত বোঝা মনে করে এ স্তরের পরীক্ষার্থীরাও আন্দোলন শুরু করেন। বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন কলেজে এ আন্দোলন চলতে থাকে। স্নাতক শ্রেণির ছাত্রদের লাগাতার ধর্মঘট এবং উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির ছাত্রদের ইংরেজি ক্লাস বর্জনের মধ্যে এ আন্দোলন সীমাবদ্ধ ছিল। জুলাই ধরে এভাবেই আন্দোলন চলে। ‘ডিগ্রি স্টুডেন্টস ফোরাম’ নামে সংগঠন পরে ‘ইস্ট পাকিস্তান স্টুডেন্টস ফোরাম’ নামে সংগঠিত হয়ে আন্দোলন চালাতে থাকে।
বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস গ্রন্থের রচয়িতা ড. মোহাম্মদ হাননান লিখেছেন, ‘তবে আন্দোলনের গুণগত পরিবর্তন ঘটে ১০ আগস্ট (১৯৬২)। এদিন বিকেলে ঢাকা কলেজ ক্যানটিনে স্নাতক ও উচ্চমাধ্যমিক উভয় শ্রেণির ছাত্ররা এক সমাবেশে মিলিত হয়। এ সভার পূর্বপর্যন্ত ছাত্র সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কমিশনবিরোধী আন্দোলনের কোনো যোগসূত্র ছিল না। কেন্দ্রীয় নেতারা মনে করতেন, শুধু শিক্ষার দাবি নিয়ে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলা অসম্ভব। ১০ আগস্টের এ সভায় ১৫ আগস্ট সারা দেশে ছাত্রদের সাধারণ ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দেশব্যাপী ছাত্রসমাজের কাছে তা ব্যাপক সাড়া জাগায়। এরপর আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে ১০ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ের সামনে ছাত্রদের অবস্থান ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত হয়। পূর্ব পাকিস্তান সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে এক প্রেসনোটে ছাত্রদের অবস্থান ধর্মঘট থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানায়। অন্যথায় পরিস্থিতি মারাত্মক হবে বলে হুমকি প্রদান করে। এমতাবস্থায় ১০ সেপ্টেম্বর কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হলেও ছাত্ররা ১৭ সেপ্টেম্বর হরতালের ডাক দেয়। ব্যাপক প্রচারের সাথে চলতে থাকে পথসভা, খণ্ডমিছিল। ব্যবসায়ী সমিতি, কর্মচারী সমিতি, রিকশা ইউনিয়ন, শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। শরীফ শিক্ষা কমিশন রিপোর্টের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে ১৯৬২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর শহীদ হন নবকুমার স্কুলের ছাত্র বাবুল, বাসের কন্ডাক্টর গোলাম মোস্তফা ও গৃহকর্মী ওয়াজিউল্লা।’
শিক্ষাবিদরা মনে করেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে পাকিস্তান আমলের শিক্ষা নিয়ে ধারণার অনেক পরিবর্তন ঘটলেও কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট বাস্তবায়িত হয়নি। এ রিপোর্টের মূল নির্যাস অক্ষুণ্ন রেখে প্রণীত ২০১০ সালের শিক্ষানীতিরও কাঙ্ক্ষিত পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি। তবে কিছু পরিবর্তন লক্ষণীয়। যেমন প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনা মূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, প্রায় দুই যুগ আগে প্রণীত কারিকুলাম সংস্কার, শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে ক্লাস শুরু, পরীক্ষার ফল প্রকাশে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার, প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা চালু, অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষার অনুকূল সিদ্ধান্ত গ্রহণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষায় পশ্চাৎপদ অঞ্চলগুলোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ, ছাত্রী উপবৃত্তির পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ে দরিদ্র ছাত্রদের জন্য উপবৃত্তি চালু, জেন্ডারবৈষম্য হ্রাসের পদক্ষেপ গ্রহণ। তবে সৃজনশীল পদ্ধতি প্রবর্তন ও কোচিং–বাণিজ্য বন্ধের কথিত উদ্যোগ প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
৬২’র শিক্ষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০- প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদের মতে, সমসাময়িক সময়ে শিক্ষায় বিরাজিত মুখ্য চ্যালেঞ্জগুলো হলো: ১. স্বল্প বরাদ্দ, ২. শিক্ষকতায় মেধাবীদের আকর্ষণহীনতা, ৩. মেধার অপচয় ও পাচার, ৪. আশঙ্কাজনক হারে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস, ৫. শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে ফলপ্রসূ তদারকির অনুপস্থিতি, সমন্বয়হীনতা ও দুর্নীতি, ৬. অপর্যাপ্ত শিক্ষক প্রশিক্ষণ, ৭. পাঠদানে শিক্ষকদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের অদক্ষতা ও শিক্ষার্থীর শারীরিক শাস্তি, মানসিক নির্যাতন, ৮. শিক্ষকদের একাংশের নৈতিক অবক্ষয়, ৯. প্রায় এক যুগেও সমন্বিত শিক্ষা আইন চূড়ান্ত না হওয়া, ১০. শিক্ষাক্রম/পাঠ্যসূচির সঙ্গে কর্মসংস্থান/শ্রমবাজারের সংস্রবহীনতা, ১১. শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য পরিসংখ্যানে অসংগতি, ১২. শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক-প্রশাসনের মধ্যে কার্যকর সংযোগহীনতা, ১৩. শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় স্বজনপ্রীতি ও দলীয়করণের অভিযোগ।
মহান শিক্ষা দিবস ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন
মন্তব্য করুন
দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন সাধনের প্রত্যয়ে হাত মিলিয়েছে হেইলিবেরি ভালুকা ও বাংলাদেশ স্ট্র্যাটেজি সামিট। এ উপলক্ষে সম্প্রতি রাজধানীর রেডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে উভয়ের মধ্যে এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
হেইলিবেরি ভালুকা’র প্রতিষ্ঠাতা হেডমাস্টার সাইমন ও’গ্রেডি এবং ভ্যালর অফ বাংলাদেশ’এর নির্বাহী পরিচালক নাজমুস আহমেদ আলবাব নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
হেইলিবেরি বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক বোর্ডিং স্কুল, যেটি বাংলাদেশে হেইলিবেরি ভালুকা’র মাধ্যমে দেশীয় শিক্ষা অবকাঠামোতে নতুন মাত্রা যুক্ত করছে। শিক্ষার্থীদের জন্য হেইলিবেরি ভালুকায় নিশ্চিত করা হয়েছে শিক্ষার অনন্য পরিবেশ, যা প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্যের পাশপাশি তাদের মাঝে উদ্ভাবনী ও নেতৃত্বগুণের বিকাশ ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অন্যদিকে, বিভিন্ন কৌশলগত উদ্যোগের সাহায্যে দেশের অগ্রগতি ও প্রবৃদ্ধির সহযোগী হিসেবে কাজ করছে ভ্যালর অফ বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠান দু’টির সমঝোতা স্বাক্ষরের মাধ্যমে এক কার্যকরী অংশীদারিত্বের পথ তৈরি হয়েছে, যা আগামীতে শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নত শিক্ষা, সেরা উদ্ভাবনী ও অভাবনীয় সাফল্যের সম্ভাবনা বয়ে আনবে।
এই অংশীদারিত্বের ধারাবাহিকতায় নলেজ শেয়ারিং, প্রশিক্ষণ ও গবেষণার উন্নত সুযোগ ও কাঠামো তৈরি হতে যাচ্ছে। চুক্তির প্রধান উদ্দেশ্য সমূহের মধ্যে রয়েছে দক্ষতা বিনিময় (এক্সচেঞ্জ অব এক্সপার্টিজ)। শিক্ষা ও কৌশলগত দিক সহ অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে হেইলিবেরি ভালুকা ও বাংলাদেশ স্ট্র্যাটেজি সামিটের মধ্যে নিজস্ব দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার আন্তবিনিময়ের মাধ্যমে কার্যকরী রূপান্তর সাধন করবে। এই সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও উদ্ভাবনী পন্থার বিকাশ ঘটানোর পাশাপাশি প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম, ওয়ার্কশপ, সেমিনার এবং কনফারেন্স আয়োজিত হবে, যা পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে শিক্ষার্থীদের তাল মিলিয়ে চলতে আরো সক্ষম করে তুলবে।
শিক্ষার্থী ও চাকুরিজীবিদের জন্য যৌথভাবে শিক্ষামূলক প্রকল্প পরিচালনা করবে হেইলিবেরি ভালুকা ও বাংলাদেশ স্ট্র্যাটেজি সামিট। গবেষণা ক্ষেত্রে এমন যৌথ প্রয়াস শিক্ষা ও কৌশলগত খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন সাধনের মাধ্যমে দেশের সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
এ প্রসঙ্গে হেইলিবেরি ভালুকা’র প্রতিষ্ঠাতা হেডমাস্টার সাইমন ও’গ্রেডি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক শ্রেষ্ঠত্বের বিচারে বিশ্বের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে হেইলিবেরি ভালুকা দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ স্ট্র্যাটেজি সামিটের সাথে আমাদের অংশীদারিত্ব এর প্রমাণ। ক্রিস্টোফার নোল্যান কিংবা স্যাম বিলিংসের মত খ্যাতনামা শিল্পীরা হেইলিবেরি’র শিক্ষার্থী ছিলেন। আগামীতেও এমন মেধাবী ব্যক্তিত্ব ও উদ্ভাবনীর বিকাশ ঘটানোর লক্ষ্যে আমরা বাংলাদেশ স্ট্র্যাটেজি সামিটের সাথে হাত মিলিয়েছি।’
ভ্যালর অফ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক নাজমুস আহমেদ আলবাব বলেন, ‘বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বোর্ডিং স্কুল হেইলিবেরি ভালুকার সাথে একযোগে আমরা বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের কৌশল ও উদ্ভাবনীগত দক্ষতায় অনবদ্য করে গড়ে তুলতে চাই। দেশের শিক্ষা ও কৌশলগত দক্ষতার বিকাশে এটি এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা রয়েছে।’
আগামীতে দেশের নেতৃত্ব দানকারী তরুণদের সামনে সম্ভাবনার নতুন দরজা খুলে দিয়ে আরো বেশি সুযোগ ও অনুপ্রেরণা সঞ্চার করার ক্ষেত্রে হেইলিবেরি ভালুকা ও বাংলাদেশ স্ট্র্যাটেজি সামিটের এই অংশীদারিত্ব এক মাইলফলক হিসেবে দাঁড়াবে বলে আশা করা যায়।
হেইলিবেরি ভালুকা বাংলাদেশ স্ট্র্যাটেজি সামিট সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
মন্তব্য করুন
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে নিবন্ধন ও পাঠদান স্বীকৃতি ছাড়া কোনো বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না। ইতিমধ্যে এসব বিদ্যালয়কে আইনের আওতায় আনতে নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, দেশে প্রায় ৪৭ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। যার মধ্যে ৯০ শতাংশ বিদ্যালয় নিবন্ধন ও পাঠদান স্বীকৃতি ছাড়া পরিচালিত হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে নীতিমালা প্রকাশ করা হবে। নীতিমালা প্রকাশের তিন মাসের মধ্যে নিবন্ধন ও পাঠদান স্বীকৃতির আবেদন না করা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টম্বর) বেলা ১১টায় মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সচিব ফরিদ আহাম্মদ। এ সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ইতোমধ্যে একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। নীতিমালাটি আইন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন হয়ে এসেছে, আগামী সপ্তাহে তা জারি করা হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সংযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকেও এই নীতিমালার আওতায় আসতে হবে। আইন মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি স্বচ্ছ করা হয়েছে।
তবে, শুধু ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো এই নীতিমালার বাইরে থাকবে।
তিনি বলেন, জেলা পর্যায় থেকে এসব অনুমোদন পাওয়া যাবে। গ্রহণযোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে ৩০ দিনের মধ্যে অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি ও ৬০ দিনের মধ্যে নিবন্ধন দিতে হবে।
প্রতিটি বিদ্যালয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের বিনামূল্যের বই বাধ্যতামূলক পাঠ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হব জানিয়ে ফরিদ আহাম্মদ বলেন, এর বাইরে অন্য যে কোনো বই পড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিতে হবে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের বেতন নির্ধারণের জন্যও আবেদন করতে হবে। মন্ত্রণালয় তা যাচাই বাছাই করে অনুমোদন দেবে।
১ জানুয়ারি বন্ধ নিবন্ধনহীন বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
মন্তব্য করুন
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে তৃতীয় বা শেষ ধাপে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে আজ। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারছেন। শেষ ধাপে আবেদন চলবে বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা পর্যন্ত। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ১৫০ টাকা ফি পরিশোধের পর এ আবেদন করা যাবে।
১৯৬২ সালের এই দিনে পাকিস্তানি শাসন, শোষণ ও শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে শহীদ হন ওয়াজিউল্লাহ, গোলাম মোস্তফা, বাবুলসহ নাম না-জানা অনেকেই। তাদের স্মরণে এই দিনকে শিক্ষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সংগ্রাম ও ঐতিহ্যের মহান শিক্ষা দিবস আজ ১৭ সেপ্টেম্বর। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বে তৎকালীন পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে সংঘটিত বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলনের ৬১ বছর পূর্তির দিন আজ।