ইনসাইড গ্রাউন্ড

একদিন আমরাও বিশ্বকাপ জিতবো

প্রকাশ: ০৯:০৬ এএম, ২৫ জুন, ২০২৩


Thumbnail

সাল ১৯৮৩, ২৫শে জুন সকালবেলা, রুদ্ধশ্বাস ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে সকলের চোখ খবরের কাগজে। অনেক হিসেব কষে দেখা যায় ফাইনালে উঠা ভারতের কোন সম্ভাবনা নেই বিশ্ব জয় করার কারণ তাদের প্রতিপক্ষ তখনকার সময়কার সবচেয়ে প্রতিভাবান এবং দূর্ধষ দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দৈহিক গঠন,অভিজ্ঞতা, সমর্থন সব দিক থেকেই ভারতের থেকে এগিয়ে ক্যারিবিয়রা।

অন্যদিকে ভারতীয় অধিনায়ক কপিল দেব সেমিফাইনাল জেতার আগপর্যন্ত কল্পনা করেননি তারা ফাইনাল খেলবেন, আর ফাইনালের সবুজ পিচ দেখে টসের সময় তিনি নাকি ভেবেছিলেন ট্রফিটা সরাসরি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দিয়ে দিলেই পারে, উইকেটে যে ঘাস রাখা হয়েছে সেটা তো ক্যারিবিয়ান প্রাণঘাতী পেসারদের সুবিধা দিতেই! এমনকি জয়ী দলের উৎযাপনের জন্য দেয়া শ্যাম্পেইনের বোতল গুলোও রাখা হয়েছে ক্যারিবিয়ান ড্রেসিংরুমের ফ্রিজে। আইসিসি তো ধরেই রেখেছে কারা চ্যাম্পিয়ন হবে।

দোষটা আইসিসিকে দেয়াও যায়না, আগের দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে ভারত কি দাঁড়াতে পারবে নাকি!

সবাইকে চমকে দিয়ে অলৌকিকভাবে দুই বারের চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে এশিয়ানদের প্রথম বিশ্বকাপের স্বাদ দেন পি আর মান সিং এর শিষ্যরা। যদিও  বিশ্বকাপ শুরুর ৭২ দিন আগে ক্যারিবিয়ান সফরে যেয়ে একটি ওয়ানডে জিতেছে ভারত, এমনকি '৮৩ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের দেখাতেও সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ভারত হারায় ৩৪ রানে।তবুও এসব পরিসংখ্যান নিয়ে কেউই চিন্তিত ছিলোনা, ভারতের জয় মানে ফ্লুক বা "অঘটন"।

১৯৮৩ এর বিশ্বকাপের আগে এশিয়ার বাকি তিন দেশের ক্রিকেটের অবস্থা ছিল নাজেহাল।

সবচেয়ে ভালো পরিসংখ্যান ছিলো পাকিস্তানের, '৮৩ বিশ্বকাপের আগপর্যন্ত ৪৫ ওয়ানডে ম্যাচ খেলে জয় পেয়েছিলো ১৮ ম্যাচে।

অন্যদিকে ভারতের অবস্থা ছিলো আরো শোচনীয়, ওয়ানডে ক্রিকেট শুরুর পর নয় বছরে ৪০ ম্যাচ খেলে জিতেছিলো মাত্র ১৭ ম্যাচ, যার বেশিরভাগ আবার সুবিধাজনক স্টিকি, স্লো উইকেটে। পাকিস্তানের কাছে তবু ভালো বোলিং আক্রমণ ছিলো কিন্তু ভারতের কাছে স্লো-ব্যাটিং জিনিয়াস সুনীল গাভাস্কারের মতো কয়েকজন টেস্ট ব্যাটসম্যান ছিলো।

আসলে এখানে লুকানোর কিছু নেই, ভারত প্রথম দিকে ওয়ানডে ক্রিকেট কি জিনিস সেটাই বুঝতে পারেনি। প্রথম বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পুরো ৬০ ওভার ব্যাট করে গাভাস্কার ৩৬* রান করে সেটাই যেন বুঝিয়েছিলেন।

ভারতের নির্বাচকেরা কখনোই ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্য আলাদাভাবে দল বানায়নি প্রথম দুই বিশ্বকাপে। বরং টেস্ট ক্রিকেট দিয়েই সামনে অগ্রসর হবার পরিকল্পনা ছিলো ভারতের। ভারত তাদের তখন পর্যন্ত খেলা ৪০ ওয়ানডে ম্যাচের ভেতর মাত্র ৬ ম্যাচ খেলেছিলো ঘরের মাটিতে যার প্রথমটা আবার ১৯৮১ সালে।

ওয়ানডে ক্রিকেট কি, কিভাবে খেলবে, খেলে লাভ কি এশিয়ার দলগুলোর সেটা বুঝতে বেশ সময় লেগে যায়। এমনকি দর্শক চাহিদাও কম ছিলো। সেসময় ৩-৪ দিনের ম্যাচেই দর্শক হতো।

ইতিহাস বলে, ভারত '৮৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলবে তারপক্ষে বাজির দর ছিলো ৬৬-১।

অন্যদিকে ক্যারি প্যাকারের ওয়ার্ল্ড সিরিজ ক্রিকেটে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড ইত্যাদি দেশের ক্রিকেটারদের এবং দর্শকদের লিমিটেড ওভার ক্রিকেটের সাথে খুব ভালোভাবে অভ্যস্ত করে ফেলেছে। রঙিন পোশাক, ফ্ল্যাডলাইট, সরাসরি চ্যানেল নাইনে সম্প্রচার ইত্যাদি চলছে একদিকে অন্যদিকে ১৯৮২ সালে সবেমাত্র ভারতে রঙিন টেলিভিশন আসলো এবং দূরদর্শন টেলিভিশনে সরাসরি দেখানো শুরু করলো বিশ্বকাপের ম্যাচ।

লর্ডসে সেই ঐতিহাসিক ফাইনাল ম্যাচের পরিসংখ্যানটা দেখা যাক,

২৫ জুন লর্ডসের ফাইনালে একই আসরে ৩য় বারের মত মুখোমুখি হয় ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তারকা খচিত ক্যারিবিয়ানদের বোলিং লাইন আপের সামনে দাঁড়াতে পারেনি ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। প্রথমে ব্যাটিংয়ে সুযোগ পেয়ে ফাইনালে শুরুতেই গাভাসকরকে হারায় ভারত। মাত্র ২ রান আউট হয়েছিলেন লিটল মাস্টার। অপর ওপেনার কৃষ্ণামাচারি শ্রীকান্ত ৫৭ বলে ৩৮ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন। মহিন্দর অমরনাথ তিন নম্বরে নেমে ২৬ রানের দামি ইনিংস খেলেছিলেন। সন্দীপ পাতিল ২৭, কপিল দেব ১৫ ও মদন লালের সংগ্রহ ছিল মাত্র ১৭ রান।


অ্যান্ডি রবার্টস-মাইকেল হোল্ডিং-ম্যালকম মার্শালদের সামনে মাত্র ১৮৩ রানে ভারত গুটিয়ে গেলে, টানা ৩য় বারের মত বিশ্ব শিরোপা হাতে তোলার অপেক্ষায় থাকে ক্যারিবিয়রা।

১৮৩ রান ডিফেন্ড করতে নামার আগে কপিল দেব নাকি বলেছিলেন-

" if this is not a winning total it's definitely a fighting total." (এটা যদিও জেতার মত রান নয়, তবে মাঠে যুদ্ধ করার মত যথেষ্ট রসদ”)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ মোট ৫২ ওভার ব্যাট করেছিলো, এবং এক বলের জন্যেও কপিল দেব স্লিপ থেকে ফিল্ডার সরাননি। শর্ট কাভার আর ডিপ মিডউইকেট অঞ্চল দিয়ে শট খেলাতে চেয়েছেন।

কপিলের ভাষায়, "আমি আর কি করতে পারি তখন, আক্রমণ করা ছাড়া জয়ের আর উপায় ছিলোনা"

এরপর যা হয় তা হয়তো খোদ ভারতীয় ক্রিকেটাররাও কল্পনা করেননি। গর্ডন গ্রিনিজ, ডেসমন্ড হেইন্স, ভিভ রিচার্ডস, ক্লাইভ লয়েডের নিয়ে সাজানো ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইনে ধস নামান, মহিন্দর অমরনাথ ও মদন লাল। ভারতের হয়ে মদন লাল ও মহিন্দর অমরনাথ ৩টি করে উইকেট পেয়েছিলেন। বলবিন্দর সাধু ২টি ও কপিল দব-রজার বিনি একটি করে উইকেট নেন। মাত্র ১৪০ রানে ক্যারিবিয়দের অল আউট করে দিয়ে, ভারত রচনা নতুন ইতিহাস। প্রথমবারের বিশ্বকাপ হাতে তোলে এশিয়ার দেশ ভারত।

লর্ডসে ফাইনাল জয়ের পর কপিল দেব দৌড় দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ড্রেসিংরুমে চলে যান, ফ্রিজ থেকে শ্যাম্পেইনের বোতলগুলো বগলদাবা করে বের হতে হতে ক্লাইভ লয়েডকে বলেছিলেন "এগুলো নিয়ে গেলাম, তোমাদের তো আর লাগছেনা"

সেই বিশ্বকাপ জয় প্রত্যেকটা ভারতবাসীর কাছে রূপকথার গল্প হয়ে আছে। বলতে গেলে ১৯৮৩ বিশ্বকাপ ফাইনাল একপ্রকার ছিল ডেভিড বনাম গোলিয়াথের লড়াইয়ের মতো।

এরপরের গল্পটা মধুর,

ভারতে রাতারাতি ক্রিকেট হয়ে যায় বিনোয়গের সবচেয়ে বড় স্থান, স্পন্সরশীপ পেতে থাকে ক্রিকেট বোর্ড। ভারতের খেলা টিভিতে দেখানোর জন্য লাইন দেয় বিভিন্ন চ্যানেল।

এশিয়ার এই ক্রিকেট ক্রেজকে কাজে লাগাতে দারুণ এক পরিকল্পনা করেন তৎকালীন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি এন. কে. পি. সালভে। ১৯৮৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা এবং পাকিস্তানকে নিয়ে গড়ে তোলেন "এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল", ১৯৮৪ সাল থেকে শুরু হয় "এশিয়া কাপ"।

বিভিন্ন টুর্নামেন্ট আয়োজন করার মাধ্যমে ধীরে ধীরে এশিয়া পরিণত হয় ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বাজারে।হতে পারে ভারতের '৮৩ বিশ্বকাপ জয় ক্রিকেট ইতিহাসের বিগেস্ট আপসেট।কিন্তু এই জয় এশিয়ার প্রতিটা মানুষকে, প্রতিটা ক্রিকেট ফ্যানকে এই বিশ্বাসটা এনে দিয়েছিলো যে "একদিন আমরাও বিশ্বকাপ জিতবো"



মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

ম্যানসিটির টানা চার শিরোপা, অনন্য ইতিহাস সৃষ্টি

প্রকাশ: ০১:২৫ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

শুরু থেকে ছন্দে, তবুও মাঝে এসে ব্যাকফুটে। তারপর আবারও ঘুরে দাঁড়িয়ে শেষমেশ চ্যাম্পিয়ন। সবমিলিয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের এবারের মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটির জার্নি টা বেশ কিছুটা সিনেমার গল্পের মতোই ছিল।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে কোনো দলই টানা চারবার শিরোপা জিততে পারেনি। তবে সেই অসাধ্য কাজটিই করে দেখালে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা।

রোববার লিগের শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট হ্যামকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। এর মধ্য দিয়ে ইংলিশ লিগের একমাত্র দল হিসেবে টানা চারটি লিগ শিরোপা জয়ের কীর্তি গড়েছে সিটিজেনরা।

আর্সেনাল, লিভারপুল ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অবশ্য টানা তিনটি প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জয়ের কীর্তি আছে। সবমিলিয়ে এটি সিটির দশম লিগ শিরোপা।

এদিন ম্যাচের দুই মিনিটের মাথায় এগিয়ে যায় সিটি। বের্নার্দো সিলভার অ্যাসিস্টে গোল করেন ফিল ফোডেন। এবার ফোডেন গোল করেন জেরেমি ডোকুর পাস থেকে।

প্রথমার্ধের শেষ দিকে অবশ্য গোলের ব্যবধান কমায় আর্সেনাল। মোহাম্মদ কুদুসের গোলে ২-১ ব্যবধান নিয়ে বিরতিতে যায় তারা। তবে ম্যাচের ৫৯তম মিনিটে সিলভার বাড়ানো বলে ডি বক্সের ভেতর শট নিয়ে বল জালে পাঠিয়ে ব্যবধান আরো বাড়ান রদ্রি। শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলেই জেতে সিটি।


ম্যানচেস্টার সিটি   আর্সেনাল   প্রিমিয়ার লিগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

বিধ্বংসী ব্যাটিং নাকি ট্রিকি বোলিং, বিশ্বকাপে ক্যারিবীয়দের হাতিয়ার কোনটি?

প্রকাশ: ০৯:০০ এএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

হাতেগোনা আর মাত্র কয়েকদিন। এরপরই মাঠে গড়াতে যাচ্ছে বিশ্ব ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণের লড়াই। যেখানে চার-ছক্কার জোর যার বেশি, মাঠের লড়াইয়ে দাপটটাও তাদেরই বেশি। আর এজন্যই অংশগ্রহণকারী প্রায় প্রতিটি দলই নিজেদের সেরা সৈন্যদের নিয়েই সাজিয়েছে দল।

আগামী ২ জুন থেকে শুরু হতে যাওয়া আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপের নবম আসরে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যৌথভাবে আয়োজক দেশ দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইডিন্জও। আর এই দুই দেশের ৯ ভেন্যুতে চলবে বৈশ্বিক ক্রিকেটের এই মেগা ইভেন্ট।

অন্যান্যবার কুড়ি ওভারের এই বিশ্বযজ্ঞে ১০টি দল অংশগ্রহণ করলেও এবারের আসরে অংশ নিচ্ছে ২০ দল। যেখানে সেরা আট দল বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছিল আগেই। এর সঙ্গে অটোমেটিক চয়েজে বিশ্বকাপের টিকিট পায় সেরা র‌্যাংকিংয়ে অবস্থান করা দুদল এবং আয়োজকরা। বাকি ৮ দলকে বিশ্বকাপের টিকিট পেতে আঞ্চলিক পর্যায়ে লড়াই করতে হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় আফ্রিকা, ইউরোপা, এশিয়া থেকে দুটি করে দল সুযোগ পেয়েছে। সেইসঙ্গে আমেরিকা এবং ইস্ট-এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল থেকে একটি করে দল বিশ্বকাপে খেলবে।

আর দল বেশি হওয়ায় এবারের সমীকরণটাও কিছুটা ভিন্ন। নতুন আদলের এবারের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে ভাগ করা হবে চার গ্রুপে। যার মধ্যে প্রতিটি গ্রুপে থাকবে ৫টি করে দল।

রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে প্রতি গ্রুপের প্রতিটি দল একে অপরের মোকাবিলা করবে। সেখান থেকে প্রতি গ্রুপের সেরা দুটি দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে সুপার এইট। সেখান থেকে সেমিফাইনাল এবং ফাইনালসহ টুর্নামেন্টে মাঠে গড়াবে মোট ৫৫টি ম্যাচ। বৈশ্বিক এই আসরকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই স্কোয়াড ঘোষণা করেছে ১৯টি দল। ব্যাতিক্রম শুধুমাত্র পাকিস্তান। তবে জানা গেছে, তারাও শীঘ্রই দল ঘোষণা করবে।

তবে এবার প্রতিটি টি-২০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী ২০টি দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজরে থাকছে ক্যারিবীয়রা। কারণ ঘরের মাঠে এবার তাদের শক্তির পরীক্ষা। শুধু তাই নয়, ক্যারিবীয়দের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স যেন আরও নজর কেড়েছে ক্রিকেট বোদ্ধাদের। আর তাইতো বিশ্লেষকদের মতে, এবারের সেমিফাইনাল খেলবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

সাবেক কিংবদন্তী মাইকেল ভন, ব্রায়েন লারা, মোহাম্মদ হাফিজদের মতে- ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবার বিশ্বকাপে ভালো ফলাফল করতে পারে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, প্রথমত নিজেদের ঘরের মাঠ ও দ্বিতীয়ত তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স। সবমিলিয়ে যেন দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা এবার মুখিয়ে রয়েছে মাঠের লড়াইয়ের জন্য।

তবে ক্যারিবীয়দের এবার টি-২০ বিশ্বকাপে ভালো করার বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে-

১. আইপিএলের অভিজ্ঞতা

ভারতে চলছে তাদের ঘরোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আইপিএলের ১৭তম আসর। যেখানে অংশ নিয়েছেন টি-২০ বিশ্বকাপ দলে থাকা বেশিরভাগ ক্যারিবীয়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম- আন্দ্রে রাসেল, সিমরন হেটমায়ার, নিকোলাস পুরান। আইপিএলে এবার যে রানবন্যা নিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে চলছে তুমুল সমালোচনা সেই রানবন্যার অন্যতম কারিগর হলেন এই ক্যারিবীয়রা। ১৬০ এর উপরে স্ট্রাইক রেটসহ চার-ছক্কার যে মারকুটে ব্যাটিং স্টাইল, তা পুরোটাই প্রায় ক্যারিবীয়দের দখলে।

২. বিধ্বংসী ব্যাটিং

ওয়েস্ট ইন্ডিজ বরাবরই টি-২০তে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের জন্য সেরাদের কাতারে শীর্ষে ছিল। ক্রিস গেইল থেকে শুরু করে কাইরন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল থেকে ডয়েন ব্রাভো- প্রতিটা খেলোয়াড়ই যেন এক একসময় নিজেদের দানবীয় রূপে ধরা দিয়েছেন বিভিন্ন সময়। আর এবার তো নিজেদের ঘরের মাটিতেই খেলা। যার জন্য ক্যারিবীয়দের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের দ্বারা যেকোন সেরা বোলারও নড়বড়ে অবস্থায় থাকেন।

ক্যারিবীয়দের ব্যাটিং লাইন-আপে রয়েছেন অভিজ্ঞ শাই হোপ, নিকোলাস পুরান, ব্রেন্ডন কিং, সিমরন হেটমায়ার ও জনসন চার্লসের মতো বিধ্বংসী ব্যাটাররা।

৩. ট্রিকি বোলিং

ক্যারিবীয় বোলারদের একটি বিশেষ গুণ হচ্ছে তারা এক একজন ভিন্ন রকমের এন্টারটেইনিং পার্সোনালিটি মেইনটেইন করে চলে। শুধু তাই নয়, নিজেদের পার্সোনালিটির পাশাপাশি বল হাতেও নানারকম কারিশমা দেখাতে পারেন তারা। ধরুন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোন বোলার ওভারের প্রথম তিনটি বল ১৪০-১৪৫ কি.মি. গতিতে করল। আর পর পর তিনটি বল এমন গতির দেখে ব্যাটাররা সাধারণত ধরেই নিবে পরের বলটিও এমন গতিতেই হবে। কিন্তু চতুর্থ বলটি হুট করে বোলার ৯০-৯৫ অথবা ১০০-১১০ কি.মি. গতিতে করলেন। এমন ট্রিকসের ফাঁদে পড়ে যেকোন নামীদামী ব্যাটারই নিজেদের উইকেট বিলিয়ে দিতে পারেন। আর এই ট্রিকি বোলিংও ওয়েস্ট ইন্ডিজের একটি বড় হাতিয়ার।

৪. অলরাউন্ডারদের দাপট

এবারের বিশ্বকাপে উইন্ডিজ অলরাউন্ডারদের পাল্লা বেশ ভারি। অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েলের সঙ্গে ব্যাট-বল হাতে ছড়ি ঘোরাতে পারেন জেসন হোল্ডার, আন্দ্রে রাসেলরা। একাদশে সুযোগ পাওয়ার বিবেচনা কিছুটা পিছিয়ে থাকবেন শেরফান রাদারফোর্ড। তবে বোলিংয়ে দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি কার্যকরী ব্যাটিং করতে পারেন রোমারিও শেফার্ড।

৫. ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস

ক্যারিবীয়দের বোলিং ইউনিটে সবচেয়ে বড় চমক হচ্ছে শামার জোসেফ। অস্ট্রেলিয়ার গ্যাবায় বল হাতে ঝড় তুলে নিজের অভিষেকের মাসেই প্লেয়ার অব দ্য মান্থ পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি। বল হাতে সুইং আর গতির যে কম্বিনেশন তিনি তৈরি করেন তাতে যেকোন বিশ্বমানের ব্যাটারও নড়বড়ে অবস্থায় চলে যাবে।

সেই সাথে এবার শামার জোসেফের সঙ্গে বল হাতে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের মনে কাঁপন ধরাতে প্রস্তুত আলজেরি জোসেফও। এছাড়া ঘূর্ণি দেখানোর অপেক্ষায় রয়েছেন রস্টন চেজ, গুদাকেশ মোতি ও আকিল হোসেনরা।

উল্লেখ্য, আগামী ২ জুন থেকে শুরু হবে টি-২০ বিশ্বকাপ। আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে কানাডাকে চ্যালেঞ্জ জানাবে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া দিনের অন্য ম্যাচে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা পাপুয়া নিউ গিনির মুখোমুখি হবে আরেক স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই হিসেবে আর ১৩ দিন পর নামতে হবে তাদের। তারই ধারাবাহিকতায় ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বিশ্বকাপের সহ-আয়োজকরা।

আসন্ন বিশ্বকাপ দলে আছেন আলোচিত পেসার শামার জোসেফ। অভিজ্ঞদের মধ্যে আছেন সিমরন হেটমায়ার, জেসন হোল্ডার এবং আন্দ্রে রাসেলও বিশ্বকাপ দলে আছেন। তবে নেই আইপিএলে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা সুনিল নারিন ও ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট মাতিয়ে বেড়ানো কাইল মেয়ার্স। বিশ্বকাপে ‘সি’ গ্রুপে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে আছে আফগানিস্তান, নিউজিল্যান্ড, পাপুয়া নিউগিনি এবং উগান্ডা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপ স্কোয়াড:

রভম্যান পাওয়েল (অধিনায়ক), আলজেরি জোসেফ, জনসন চার্লস, রস্টন চেজ, সিমরন হেটমায়ার, জেসন হোল্ডার, শাই হোপ, আকিল হোসেন, শামার জোসেফ, ব্রেন্ডন কিং, গুদাকেশ মোতি, নিকোলাস পুরান, আন্দ্রে রাসেল, শেরফান রাদারফোর্ড, রোমারিও শেফার্ড।


বিশ্বকাপ   চ্যাম্পিয়ন   ওয়েস্ট ইডিন্জ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

২০২৩-২৪ মৌসুমের সেরা খেলোয়াড় ফোডেন

প্রকাশ: ০৭:৩২ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ২০২৩-২৪ মৌসুমের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটির ফিল ফোডেন। রোববার মৌসুমের শেষ দিনে ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষে জিতলেই প্রথম দল হিসেবে টানা চতুর্থবার প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন হবে ম্যানসিটি। এই যাত্রায় দুর্দান্ত পারফর্ম করে দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছেন ফোডেন।

২০২৩-২৪ আসরে সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ফোডেনের নাম শনিবার (১৮ মে) ঘোষণা করেছে প্রিমিয়ার লিগ। সেরা হওয়ার পথে ফোডেন পেছনে ফেলেছেন ম্যানচেস্টার সিটি সতীর্থ আর্লিং হাল্যান্ড, নিউক্যাসলের আলেক্সান্দার ইসাক, আর্সেনালের মার্টিন ওডেগার্ড ও ডেকলান রাইস, চেলসির কোল পালমার, লিভারপুলের ভার্জিল ফন ডাইক ও অ্যাস্টন ভিলার ওলি ওয়াটকিন্সকে।

চলতি মৌসুমে পেপ গার্দিওলার আস্থাতেই ছিলেন ফোডেন। আস্থার প্রতিদানও দিয়েছেন। ৩৪ ম্যাচে সিটির জার্সিতে নেমে ২৫ গোলে সরাসরি অবদান রেখেছেন। নিজে গোল করেছেন ১৭টি, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ৮টি। মনোমুগ্ধকর পারফরম্যান্সে চলতি মাসে দ্বিতীয়বার সেরার স্বীকৃতি পেলেন ফোডেন। মাসের শুরুতে ইংল্যান্ডের ফুটবল লেখক সমিতির বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার।

প্রিমিয়ার লিগের মৌসুম সেরার স্বীকৃতি পেয়ে গর্বিত ফোডেন। তিনি বলেন, এই পুরস্কার আমার কাছে এমন এক অর্জন, যা নিয়ে আমি খুবই গর্বিত। প্রিমিয়ার লিগ বিশ্বের সেরা লিগ হিসেবে সমাদৃত। অনেক দুর্দান্ত খেলোয়াড়ের সঙ্গে মনোনীত হতে পেরে আমি আনন্দিত। সব মিলিয়ে এই মৌসুমে আমি যেভাবে খেলেছি, তাতে খুব খুশি এবং এটা ভেবে খুব আনন্দিত যে মৌসুমজুড়ে গোল করা ও গোলে সহায়তায় অবদান রাখতে পেরেছি। আমি সিটির সব স্টাফ, কোচ এবং বিশেষ করে আমার সতীর্থদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কারণ, তাদের ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। যারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন, তাদেরও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

প্রিমিয়ার লিগের মৌসুম সেরার পুরস্কার এনিয়ে টানা পঞ্চমবার জিতলো সিটির খেলোয়াড়রা। ফোডেনের আগে একবার করে রুবেন দিয়াস ও আর্লিং হাল্যান্ড এবং ডি ব্রুইনে জিতেছেন দুইবার।


ফিল ফোডেন   ম্যানচেস্টার সিটি   ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

শিরোপার লড়াইয়ের মীমাংসায় মাঠে নামছে ম্যানসিটি ও আর্সেনাল

প্রকাশ: ০৬:২৭ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রিমিয়ার লিগ শেষ মুহূর্তে এসে জমে উঠলেও শিরোপার সমীকরণ এখনও মেলাতে পারেনি ম্যানচেস্টার সিটি ও আর্সেনাল। একে অপরকে রীতিমতো টেক্কা দিয়েই চলেছে এই দুই ক্লাব। যদিও গানারদের চেয়ে দুই পয়েন্ট এগিয়েই আছে সিটিজেনরা।

তবে আজ রাতেই এই লড়াইয়ের মীমাংসা হয়ে যাবে। শিরোপার লড়াইয়ে রাতে আলাদা আলাদা ম্যাচে মাঠে নামবে আর্সেনাল ও ম্যানচেস্টার সিটি। আজ (রোববার) রাত ৯টায় ওয়েস্ট হামের বিপক্ষে মাঠে নামবে ম্যানচেস্টার সিটি। আর অন্য ম্যাচে এভারটনকে চ্যালেঞ্জ জানাবে আর্সেনাল।

লিগে এখন ৩৭ ম্যাচে ৮৮ পয়েন্ট নিয়ে সবার শীর্ষে ম্যানসিটি। সমানসংখ্যক ম্যাচে ৮৬ পয়েন্ট আর্সেনালের। ৭৯ পয়েন্টের অধিকারী লিভারপুল শিরোপার দৌড় থেকে ছিটকে গেছে আগেই।

প্রায় দুই দশক পর লিগ শিরোপার স্বাদ নিতে এভারটনের বিপক্ষে আর্সেনালের জিততেই হবে, পাশাপাশি ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষে হারতে হবে ম্যানচেস্টার সিটিকে। সে তুলনায় ম্যানসিটির সমীকরণটা সহজ, ৩৮তম ম্যাচে জিতলেই আর কিছুর হিসাব মেলাতে হবে না গার্দিওলার শিষ্যদের।

এদিকে চ্যাম্পিয়ন যেই হোক, কত টাকা পাবে তারা? রানার্সআপদের জন্যই বা বরাদ্দ কত? মার্কার এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, চ্যাম্পিয়নরা পাবে ৫৭ মিলিয়ন ইউরো, টাকার হিসাবে যা প্রায় ৭২৩ কোটি।

অপরদিকে আর্সেনাল যদি হোঁচট খায়, তবে তারা পাবে ৫২ মিলিয়ন ইউরো। লিভারপুল এরই মধ্যে তৃতীয় স্থান নিশ্চিত করে ফেলেছে। তারা পাবে ৫০ মিলিয়ন ইউরো। চতুর্থ স্থানে থাকা অ্যাস্টন ভিলা পাবে ৪৭ মিলিয়ন ইউরো।


ম্যানচেস্টার সিটি   আর্সেনাল   প্রিমিয়ার লিগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

ফিরল মেসি, জিতল মায়ামি

প্রকাশ: ০৫:২১ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

গত ম্যাচে চোটের কারণে দলের সাথে ছিলেন না লিও মেসি। যার জন্য হেরেছিল তার দল। তবে পরের ম্যাচে যেমনি তিনি দলে ফিরলেন তেমনই জিতল ফ্লোরিডার ক্লাবটি। যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারের ১৪ তম ম্যাচডে তে ডিসি ইউনাইটেডের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছে মেসির দল।

রোববার (১৯ মে) সকাল সাড়ে ৮টায় (বাংলাদেশ সময়) নিজেদের মাঠ চেজ স্টেডিয়ামে ডিসি ইউনাইটেডকে আতিথ্য দেয় মায়ামি। ইস্টার্ন কনফারেন্স স্লটের এই ম্যাচ জিতে টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে মেসি-সুয়ারেজরা।

ম্যাচের শুরু থেকেই দলগতভাবে ইন্টার মায়ামি দাপট দেখালেও জালে বল পাঠাতে পারছিলেন না কেউই। একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল ম্যাচটা হয়তো গোলশূন্য ড্রয়েই শেষ হবে। তবে নির্ধারিত সময়ের শেষে যোগ করা অতিরিক্ত সময়ের চতুর্থ মিনিটে গোল করে চমক দেখান কাম্পানা। মাঝমাঠ থেকে বুসকেতসের বাড়ানো বলকে দুর্দান্ত ভলিতে জালে জড়ান ইকুয়েডরিয়ান এ ফরোয়ার্ড।

উল্লেখ্য, লিগে ১৫ ম্যাচে ৯ জয় ৪ ড্র ও ২ হারে মায়ামির পয়েন্ট ৩১। এক ম্যাচ কম খেলা সিনসিনাটির পয়েন্ট ৩০। মায়ামির পরবর্তী ম্যাচ আগামী রোববার (২৬ মে) বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায়। সেই ম্যাচে ভ্যাঙ্কুভারের বিপক্ষে মাঠে নামবে মেসিরা।


লিওনেল মেসি   আর্জেন্টিনা   ইন্টার মায়ামি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন