নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ এএম, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
২৩৪ ফার্স্টক্লাস ম্যাচে ৯৫.১৪ গড়ে ২৮০৬৭ রান এবং ৫২ টেস্ট ম্যাচের ক্যারিয়ারে ৬৯৯৬ রান। গড় মাত্র (!!) ৯৯.৯৪। ব্রাডম্যান, ব্রাডম্যান, স্যার ডোনাল্ড ব্রাডম্যান- পৃথিবীর সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান; সর্বকালের সেরা ক্রীড়াবিদও সম্ভবত তিনিই হবেন।
২৭ আগষ্ট, ১৯০৮ সালে নিউ সাউথ ওয়েলসের বাউরালে জন্মানো এই ব্রাডম্যানের শৈশব কেটেছে বাড়ির পেছনের বারান্দায় একটা স্টাম্প দিয়ে ছোট্ট একটা গলফ বলকে ক্রমাগত পিটিয়ে গিয়ে। গলফ বল পেটানো সেই বালক যে একসময় হয়ে যাবেন ক্রিকেট ইতিহাসের ঈশ্বর- তা কে জানতো?
আজকের প্রতিবেদন ব্রাডম্যানকে নিয়ে। তবে ব্রাডম্যানের অতিমানবীয় ক্রিকেটীয় কোন বিষয় নিয়ে নয়। ক্রিকেট ইতিহাসের বাইরে গিয়ে ব্রাডম্যানের অজানা ১১ টি তথ্য নিয়ে।
১
১৯৩০ সালে ইংল্যান্ড সফরে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। সেই সফরে ৫টি টেস্টসহ আরও বেশ কিছু প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে ৬টি ডাবল সেঞ্চুরি, ১০টি সেঞ্চুরি এবং ১৫টি হাফ সেঞ্চুরি করেন ব্র্যাডম্যান। ঐ সফর শেষে ৯৮.৬৬ গড়ে তার রান সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৩,০০০!
২
ক্রিকেটার না হয়ে মিউজিশিয়ান হলেও খারাপ করতেন না ব্র্যাডম্যান। ১৯৩০ সালের অ্যাশেজ জিতে অস্ট্রেলিয়া ফেরার পরে ‘এভরিডে ইজ আ রেইনবো ডে ফর মি’ নামে একটি গান লেখেন জ্যাক লুমসডেইন নামে একজন গীতিকার, আর সেই গানের সুরকারের নাম ছিল ডন ব্র্যাডম্যান। এছাড়া পিয়ানোবাদক হিসেবেও ‘অ্যান ওল্ড ফ্যাশনড লকেট’ এবং ‘আওয়ার বাংলো অব ড্রিমস’ নামে তার দুটো গান আছে।
৩
সমগ্র অস্ট্রেলিয়াতে অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের যেসব অফিস আছে, তাদের সকলের পোস্ট বক্স নাম্বার ৯৯৯৪। এই নাম্বারটি চালু করেছিলেন ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের সেই সময়ের জেনারেল ম্যানেজার স্যার চার্লস মোজেস। ব্র্যাডম্যানের সাথে গভীর বন্ধুত্ব ছিল এই ভদ্রলোকের। বন্ধুর অতিমানবীয় ব্যাটিং গড় ৯৯.৯৪’ এর সম্মানে চমৎকার এই উদ্যোগটি গ্রহণ করেন তিনি।
৪
ব্যাটসম্যানদের জন্য এক আতঙ্কের নাম নার্ভাস নাইন্টি। গোটা ম্যাচ দুর্দান্ত খেলা ব্যাটসম্যানও কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যান নব্বইয়ের ঘরে এলে। তবে ব্র্যাডম্যানের এসব কিছুর বালাই ছিল না, নড়বড়ে নব্বইয়ের আতঙ্ক কখনোই কাবু করতে পারেনি তাকে। একবার অবশ্য ২৯৯ রানে থেমে যেতে হয়েছিল, সেটাও নিজের দোষে নয়। অপর প্রান্তের ব্যাটসম্যান আউট হয়ে গেলে থেমে যায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। তাই ২৯৯ রানেই অপরাজিত থাকতে হয় তাকে।
৫
ডিজনির একটা বিখ্যাত কার্টুন চরিত্র আছে, যার নাম ডোনাল্ড ডাক। পাঠক শুনলে হয়তো অবাক হবেন, ওয়াল্ট ডিজনি এই ডোনাল্ড ডাক চরিত্রটা সৃষ্টি করেছিলেন ব্র্যাডম্যান থেকে।
১৯৩২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করে অস্ট্রেলিয়া, সেই সফরের পরে আমেরিকা যায় তারা। মে থেকে আগস্ট এই চার মাসে প্রীতি ম্যাচ, প্রদর্শনী ম্যাচ মিলিয়ে ৫১টি ম্যাচ খেলে। এর মধ্যে ৫০ ম্যাচে স্যার ডন রান করেন ৩,৭৬৫। আর একটি ম্যাচে করেন শূন্য, মানে ডাক। ব্যাটসম্যান হিসেবে ডনের খ্যাতি তখন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে গেছে, তাই পত্রপত্রিকায় ব্যাপক লেখালেখি হয় বিষয়টি নিয়ে। সেগুলো চোখে পড়ে ওয়াল্ট ডিজনির, এবং এরপরেই তিনি সৃষ্টি করেন তার অমর কার্টুন চরিত্র ডোনাল্ড ডাক।
৬
অস্ট্রিয়ায় ক্রিকেটের তেমন একটা প্রচলন নেই। ইউরোপের এই দেশটি ক্রিকেটের জন্য একেবারেই পরিচিত নয়। তবে এই অস্ট্রিয়ার সাথেও জড়িয়ে আছে ব্র্যাডম্যানের নাম।
এই দেশে একটি এয়ারলাইন্স চালু ছিল, নাম লাউডা এয়ারলাইন্স। এই এয়ারলাইন্স কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সাবেক ফরমুলা ওয়ান রেসার নিকি লাউডা।
২০০২ সালে সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যে এই এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং বিমানের নামকরণ করা হয় ‘স্যার ডন ব্র্যাডম্যান’। বিমানটি ভিয়েনা থেকে সিডনি হয়ে মেলবোর্ন পর্যন্ত যাতায়াত শুরু করে।
গুণী মানুষদেরকে সম্মান জানানোর এই উদ্যোগ লাউডা এয়ারলাইন্সের এটাই প্রথম নয়। এর আগে বিখ্যাত চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসো, গায়ক এলভিস প্রিসলি এবং সাহিত্যিক আর্নেস্ট হেমিংওয়ে’র নামেও বিমান চালু করে তারা।
৭
১৯৪৮ সালের কথা। ভারতের কাঠিয়াওয়ার নামের জায়গার এক আঞ্চলিক দলের সাথে ক্রিকেট খেলছিল মহারাষ্ট্র দল। সেই খেলায় নিম্বলকর নামে এক ব্যাটসম্যান যখন ৪৪৩ রানে অপরাজিত, তখন দুই দল এবং আম্পায়ার মিলে ম্যাচটি আর না খেলার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা মনে করছিল স্যার ডনের রেকর্ড অতিক্রম করাটা উচিত হবে না।
এই ধরনের কাজ আরেকবার করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক মার্ক টেলর। এক টেস্টে ৩৩৪ রানে তিনি যখন অপরাজিত, তখন তিনি আর ব্যাট না করার সিদ্ধান্ত নেন। তারও মনে হয়েছিল, ‘স্যার’ কে অতিক্রম করাটা উচিত হবে না।
উল্লেখ্য, প্রথম শ্রেণী এবং টেস্ট ক্রিকেটে স্যার ডনের সর্বোচ্চ সংগ্রহ যথাক্রমে ৪৫২ এবং ৩৩৪।
৮
ব্র্যাডম্যানের সময়ে ওয়ানডে নামে কিছু ছিল না। টি-টোয়েন্টি তো দূরের কথা। তাই ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি খেললে তিনি কেমন করতেন তা এখন আর জানার কোনো উপায় নেই। তবে অনুমান তো করাই যায়, তাই না?
১৯৩১ সালের ২রা নভেম্বর। নিউ সাউথ ওয়েলসের টিমমেট ওয়েন্ডেল বিলের সাথে ব্ল্যাকহিথ নামে এক জায়গায় যান ব্র্যাডম্যান, উদ্দেশ্য নতুন বানানো পিচে একটা প্রদর্শনী ম্যাচ খেলা। তখন ওভার হতো ৮ বলে। সেই ম্যাচে মাত্র ১৮ মিনিট এবং ৩ ওভারে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি! মোট রান করেছিলেন ২৫৬! এই রান করতে তিনি বাউন্ডারি মারেন ২৯টি, ওভার বাউন্ডারি মারেন ১৪টি।
প্রথম ওভার করলেন বিল ব্ল্যাক। তার ওভারে ব্র্যাডম্যান নিলেন ৩৩ রান। ৮ বলে ব্র্যাডম্যান রান নিলেন এরকম:
৬, ৬, ৪, ২, ৪, ৪, ৬, ১!
দ্বিতীয় ওভার করলেন হরি বেকার নামে আরেকজন বোলার। এর ওভারে ব্র্যাডম্যান নিলেন ৪০ রান।
৬, ৪, ৪, ৬, ৬, ৪, ৬, ৪!
তৃতীয় ওভার করতে আবার আসলেন ব্ল্যাক। তার ওভারে রান এলো ২৯, এর মধ্যে ব্র্যাডম্যান নিলেন ২৭।
১, ৬, ৬, ১, ১, ৪, ৪, ৬!
বোঝাই যাচ্ছে, আজকের দিনে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটেও নেহাত খারাপ করতেন না ডন।
৯
১৯৩৪ সালের কথা। ইংল্যান্ডে এসে অ্যাশেজ খেলেছেন, করেছেন ৩০৪ আর ২৪৪ রানের মতো দুটো দুর্দান্ত স্কোর। বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এমন সময় পেটের প্রচণ্ড ব্যথায় জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন তিনি।
সাথে সাথে হাসপাতালে নেয়া হলো তাকে। নেয়ার পরে ডাক্তাররা জানালেন, এই ব্যথার কারণ অ্যাপেন্ডিসাইটিস। অপারেশন করা হলো, প্রচুর রক্তপাত হলো ডনের। হাসপাতালে তখন উদগ্রীব শুভাকাঙ্ক্ষী আর রক্তাদাতাদের ভিড়ে দাঁড়ানো দায়। এর মধ্যে বোলার বিল ও’রিলির কাছে ফোন এলো, ফোন করেছেন স্বয়ং ইংল্যান্ডের রাজা পঞ্চম জর্জ। ও’রিলিকে তিনি বললেন, ডনের খবর যেন নিয়মিতভাবে তাকে জানানো হয়।
এদিকে ডন আর বাঁচবেন না ভেবে তার জন্য শোকগাঁথা ছাপানোর তোড়জোড় শুরু করলো পত্রপত্রিকাগুলো। স্বামীর অসুস্থতার খবর শুনে ইংল্যান্ডে পা রাখলেন জেসি ব্র্যাডম্যান, বাতাসে তখন ব্র্যাডম্যান মারা যাওয়ার খবর ভাসছে। শেষ পর্যন্ত খবরটা সত্যি হয়নি, স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ক্রিকেটানুরাগীরা।
১০
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ করেননি ডন। তারপরেও যুদ্ধের ময়দানে উচ্চারিত হয়েছিল তার নাম!
১৯৪৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে যুদ্ধ। ইটালির মন্টে ক্যাসিনো আক্রমণের পরিকল্পনা করেছে মিত্রবাহিনী, শুধু একটি সংকেতের অপেক্ষা। সেটি হলো, ‘ব্র্যাডম্যান ব্যাটিং টুমরো।’ মানে, এই বার্তা এলেই আক্রমণ করবে মিত্রবাহিনী!
সমস্যা করলো আবহাওয়া। আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে সংকেত এলো ‘ব্র্যাডম্যান নট ব্যাটিং।’
প্রায় তিন সপ্তাহ পার হয়ে গেল। এই সময় মোর্স কোডের মাধ্যমে ভেসে এলো সেই বার্তা। অবশেষে ব্যাট করতে নামছেন ব্র্যাডম্যান!
যুদ্ধে কী হলো, তা ভিন্ন গল্প। তবে এ গল্প থেকে বোঝা যায়, ব্র্যাডম্যান ছিলেন এমনই একজন, যিনি না থেকেও ছিলেন যুদ্ধক্ষেত্রে।
১১
টানা ২৭ বছর কারাবন্দী ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা। কারাভোগের ২২তম বছরে, ১৯৮৬ সালে তার সাথে দেখা করতে যান তৎকালীন অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম ফ্রেজার। নানা কথা হয় তাদের মধ্যে, ফ্রেজারকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন ম্যান্ডেলা। তার মধ্যে একটা ছিল, "মি. ফ্রেজার, ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান কি এখনও জীবিত আছেন?"
এই ঘটনার ৭ বছর পরে আবার দেখা হয় তাদের। তখন আর বন্দী অবস্থায় ছিলেন না ম্যান্ডেলা। ফ্রেজার তাকে ব্র্যাডম্যানের সই করা একটা ব্যাট উপহার দেন।
সেখানে লেখা ছিল,
‘নেলসন ম্যান্ডেলার দুর্দান্ত অসমাপ্ত ইনিংসের স্বীকৃতিস্বরূপ।
- ডন ব্র্যাডম্যান’
বাংলা ইনসাইডার/এসএম
মন্তব্য করুন
একের পর এক আক্রমণ আর ডর্টমুন্ড রক্ষণে লাগাতার চাপ তৈরি করে ম্যাচের
বেশির ভাগ সময় নিয়ন্ত্রণে ছিল কিলিয়ান এমবাপ্পের দলই। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের
প্রথম লেগে ডর্টমুন্ডের মাঠে কাঙ্খিত গোলটাই পায়নি পিএসজি। শুধু গোলটাই পাওয়া হল না
পিএসজির।
বিপরীতে প্রথমার্ধে নিকলাস ফুলক্রুগের জাল খুঁজে পাওয়া আর ভাগ্যের
সহায়তা ও রক্ষণের দৃঢ়তায় সেই গোল ধরে রেখে ১-০ ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে ডর্টমুন্ড।
সিগনাল ইদুনা পার্কের ম্যাচটিতে প্রথমার্ধে তিনটি শট নিয়ে একটিও
লক্ষ্যে রাখতে পারেনি পিএসজি। এর দুটিই পোস্টের বাইরে মারেন উসমান দেম্বেলে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ
সমর্থকদের বলে বলীয়ান ডর্টমুন্ড পাঁচটি শট নিয়ে চারটিই লক্ষ্যে রাখে। এর মধ্যে ১৪ মিনিটে
মার্সেল স্যাবিটজারের শট আটকান জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা। ৪৪তম মিনিটেও স্যাবিটজারের
আক্রমণ রুখে দেন পিএসজি গোলকিপার।
ডর্টমুন্ড তাদের জয়ের গোলটি পায় ৩৬তম মিনিটে। নিজেদের অর্ধ থেকে
নিকো শ্লটারবেক লম্বা করে বল বাড়ালে দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নেন ফুলক্রুগ। এরপর বাঁ পায়ের
শটে বল জালে পাঠান এই জার্মান ফরোয়ার্ড।
বিরতির পর নতুন উদ্যমে শুরু করা পিএসজি গোল পেয়ে যেতে পারত ৫১ মিনিটেই।
তবে দুর্ভাগ্যবশত পরপর দুইবার বল লাগে পোস্টে। প্রথমে এমবাপ্পের শট লাগে দূরের পোস্টে,
ডর্টমুন্ড রক্ষণ বল বিপদমুক্ত করতে না পারার এক পর্যায়ে পেয়ে যান আশরাফ হাকিমি। তাঁর
শট লাগে আরেক পোস্টে।
৬০ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করার সুযোগ ছিল ফুলক্রুগের সামনে। জোদান
সানচোর বাড়ানো বল নিয়ে পুরো জাল সামনে পেলেও বল ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন তিনি। একই ভাবে
৮১ মিনিটে সুযোগ নষ্ট করেন পিএসজির দেম্বেলেও।
শেষ দিকে পিএসজি গোলের জন্য মরিয়া প্রচেষ্টা চালালেও ডর্টমুন্ড
রক্ষণে বাড়তি মনোযোগ দিয়ে সেটি রুখে দেয়। মাঠ ছাড়ে সেমিফাইনাল লড়াইয়ে এগিয়ে থেকেই।
প্যারিসে দ্বিতীয় লেগ আগামী মঙ্গলবার।
ডর্টমুন্ড ১: ০ পিএসজি
পিএসজি ডর্টমুন্ড চ্যাম্পিয়নস লিগ
মন্তব্য করুন
চলতি বছরের জুনেই মাঠে গড়াবে খেলা। বাকি শুধুমাত্র এক মাস। যার
জন্য ইতোমধ্যেই আয়োজক দেশগুলো শুরু করেছে প্রস্তুতি। ব্যস্ত সময় পার করছে অংশগ্রহণকারী
দেশগুলোরর ক্রিকেট বোর্ডগুলোও।
ক্রিকেটের এই বিশ্ব আসরকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই ভারত-ইংল্যান্ডসহ
কয়েকটি দেশ দল ঘোষণা করে ফেলেছে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি দেশ স্কোয়াড চূড়ান্ত করেছে। এখন
শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার বাকি।
আগামী ১ জুন থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে শুরু হতে
যাওয়া ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের মহাযজ্ঞে এবারের আসরে সেমিফাইনাল খেলবে কারা,
এ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন সাবেক ক্রিকেটাররা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ, পাকিস্তান
ও ভারতের সেমিফাইনাল পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ খুবই কম। যদিও নিজেদের সেরাটা দেওয়ার কথা
জানিয়েছেন দুই দলই।
এমনই এক বিশ্লেষণে যোগ দিয়েছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক এবং তারকা
ক্রিকেটার মাইকেল ভন। সাবেক এই ইংলিশ ব্যাটসম্যানের পছন্দের চার সেমিফাইনালিস্ট নিয়ে
অবশ্য চলছে নানা আলোচনা–সমালোচনাও। কারণ, এশিয়ার দুই ক্রিকেট পরাশক্তি ভারত ও পাকিস্তানকে
সম্ভাব্য সেমিফাইনালিস্ট মনে করছেন না ভন। তার পছন্দের তালিকাকে খুব ভালোভাবে নিতে
পারেননি এ দুই দেশের ক্রিকেট সমর্থকেরা।
ইংল্যান্ডের সাবেক এই অধিনায়ক মনে করেন, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া,
দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবারের বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলবে। নিউজিল্যান্ড,
ভারতের মতো শক্তিশালী দলকেও সেমি খেলার যোগ্য বলে বিবেচনা করেননি তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে চার সেমিফাইনালিস্টের নাম জানিয়ে ভন
লিখেছেন, ‘টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমার চার সেমিফাইনালিস্ট হলো...ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া,
দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।’
ভনের এই পোস্ট সামনে আসতেই সমালোচনায় মাতেন ভারত ও পাকিস্তানের
সর্থকেরা। এক ভারতীয় সমর্থক মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, ‘রোহিত শর্মার দল তোমাকে জবাব দেবে।
অপেক্ষায় থাক।’
আফজাল মেনন নামের আরেক ভারতীয় সমর্থক লিখেছেন, ‘কেন তোমার মনে
হচ্ছে আমরা সেমিতে যেতে পারব না? ভারতের দল কিন্তু দারুণ।’
রজত আগারওয়ালা নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘আমি নিশ্চিতভাবেই ভারতকে সেমিফাইনালে
দেখছি। তারা সম্ভবত ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার জায়গায় সেমিতে খেলবে।’
কামরান আলী নামে পাকিস্তান ক্রিকেটের এক ভক্ত লিখেছেন, ‘তোমার মাথায়
সমস্যা আছে। গত বিশ্বকাপে যে দল ফাইনালে (সর্বশেষ ২০২২ সালে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের
ফাইনালিস্ট ছিল পাকিস্তান) খেলেছে তাদেরকেই তালিকায় রাখনি।’
অনেকে এ সময় ওয়ানডে বিশ্বকাপ নিয়ে ভনের ভবিষ্যদ্বাণী ভুল হওয়ার
কথাও মনে করিয়ে দেন। ভনের পুরোনো টুইট শেয়ার করে একজন লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ ভন। ওয়ানডে
বিশ্বকাপে তুমি ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত ও পাকিস্তানের কথা বলেছিলে, যা ভুল
হয়েছিল। তার মানে এবার আমাদের ভালোই (ভারতের) সুযোগ আছে।’
ভনের আগে চার সেমিফাইনালিস্টের নাম বলেছিলেন যুবরাজ সিং। ভারতের
সাবেক ক্রিকেটারের মতে সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের সঙ্গে ভারত ও পাকিস্তানও
থাকবে।
আগামী ১ জুন থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে শুরু হবে বিশ্বকাপ
শিরোপার লড়াই। উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। টুর্নামেন্টের
ফাইনাল হবে ২৯ জুন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সেমিফাইনালিস্ট ক্রিকেট
মন্তব্য করুন
বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি সম্প্রতি তাদের হালনাগাদকৃত র্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছে। যেখানে টি-টোয়েন্টিতে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছেন ভারতের ডানহাতি ব্যাটার সূর্যকুমার যাদব। সেই সাথে নিউজিল্যান্ড সিরিজের পারফরম্যান্স দিয়ে সূর্যকুমারের সঙ্গে ব্যবধান কমিয়েছেন পাকিস্তানের বাবর আজমও।
বুধবার (১ মে) আইসিসির প্রকাশিত এই নতুন র্যাঙ্কিংয়ে টি-টোয়েন্টি ব্যাটারদের মধ্যে এক ধাপ এগিয়ে ৪ নম্বরে উঠে এসেছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। নিউজিল্যান্ড সিরিজের শেষ ম্যাচে ৬৯ রানের ইনিংস খেলে এগিয়েছেন তিনি। ১০ রেটিং পয়েন্ট বেড়ে তার রেটিং এখন ৭৬৩। শীর্ষে থাকা সূর্যকুমারের চেয়ে এখনও ৯৮ পয়েন্ট পিছিয়ে বাবর। সূর্যকুমারের রেটিং ৮৬১।
৮০২ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইংলিশ তারকা ফিল সল্ট। ৭৮৪ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে তিনে বাবরের ওপেনিং পার্টনার মোহাম্মদ রিজওয়ান। সেরা পাঁচের শেষ নামটা প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করামের। তার রেটিং পয়েন্ট ৭৫৫।
অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড সিরিজে দুর্দান্ত বোলিং করে র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করেছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। তিন ধাপ এগিয়ে এই বাঁহাতি ফাস্ট বোলার এখন ১৪ নম্বরে। লাহোরে সিরিজের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৯ রানে হারিয়ে ৫ ম্যাচের সিরিজ ২-২ ব্যবধানে ড্র করে পাকিস্তান। সে ম্যাচে ৩০ রানে ৪ উইকেট নেন আফ্রিদি।
বোলারদের র্যাঙ্কিংয়ে বড় লাফ দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের বেন সিয়ার্স। ২৯ ধাপ এগিয়ে ৬০ নম্বরে উঠে এসেছেন। পাকিস্তান সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেওয়া মাইকেল ব্রেসওয়েল ১৩ ধাপ এগিয়ে উঠে এসেছেন ৫৫ নম্বরে।
সাম্প্রতিক ফর্ম ভালো না গেলেও বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে একধাপ এগিয়েছেন লিটন দাস। ব্যাটারদের মধ্যে এখন তিনি ২৯ নম্বরে। দেশের ব্যাটারদের মধ্যে তিনিই সেরা অবস্থানে। ৩২ নম্বরে আছেন অধিনায়ক শান্ত। তবে একধাপ পিছিয়েছেন সাকিব। আছেন ৭০ নম্বরে। এক ধাপ পিছিয়ে আফিফ আছেন সাকিবের ঠিক ওপরে।
বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে একধাপ এগিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। আছেন ৩২ নম্বরে। দেশের বোলারদের মধ্যে সেরা অবস্থানে আছেন মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি আছেন ২৪ নম্বরে।
আইসিসি ক্রিকেট টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
মন্তব্য করুন
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) টানা দ্বিতীয়বার শিরোপা জিতেছে আবাহনী লিমিটেড। বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্রিকেট ক্লাবকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে দলটি।
লিগের প্রথম পর্বে ১১টির পাশাপাশি সুপার লিগ পর্বে ৩টিসহ চলতি ডিপিএলে টানা ১৪টি ম্যাচ জিতেছে আবাহনী। দারুণ পারফরম্যান্সের সুবাদে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই শিরোপা জয় নিশ্চিত করেছে তারা।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-২০ সিরিজের জন্য আবাহনীর প্রথম সারির ১০ জন খেলোয়াড় জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন। এতে শেখ জামালের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য একাদশ সাজাতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল আবাহনী।
এ অবস্থায় শেখ জামালের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য তিনজন খেলোয়াড়কে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে অনুরোধ করে আবাহনী। আফিফ হোসেন, তানজিম হাসান সাকিব এবং তানভির ইসলামকে শেখ জামালের বিপক্ষে খেলার অনুমতি দেয় ক্রিকেট বোর্ড।
অপরদিকে, অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ফেরায় শক্তি বাড়ে শেখ জামালের। এমন ম্যাচে আবাহনীর বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ২৬৭ রান করে শেখ জামাল। জিয়াউর রহমান সর্বোচ্চ ৮৫ রান করেন। ৫৬ বলে ৪৯ রান করেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরা সাকিব।
জবাবে তিন হাফ-সেঞ্চুরির উপর ভর করে ৪৯.৫ ওভারে ৬ উইকেটে ২৭৩ রান করে ম্যাচ জয়ের স্বাদ নেয় আবাহনী। দলের পক্ষে ৮টি চার ও ২টি ছক্কায় ৮৮ বলে ৮৩ রান করেন আফিফ হোসেন। এছাড়া বিজয় ৬৭ এবং সৈকত অপরাজিত ৫৩ রান করেন।
ডিপিএল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেট আবাহনী
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে জাতীয় ক্রিকেট দল এখন অবস্থান করছে চট্টগ্রামে। কারণ আর মাত্র একদিন পরেই সেখানে মাঠে গড়াবে এই দুই দলের পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এই সিরিজকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিসিবি।
সেই ধারাবাহিকতায় এবার মাঠের আম্পায়ারসহ ম্যাচ অফিসিয়ালদের তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যেখানে মাঠে অন-ফিল্ড আম্পায়ার, তৃতীয় আম্পায়ার এবং চতুর্থ আম্পায়ারসহ সবমিলিয়ে কাজ করবেন ৫ বাংলাদেশি। বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বিসিবি।
চট্টগ্রামে ৩ মে প্রথম ম্যাচে অন-ফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে থাকবেন মাসুদুর রহমান মুকুল এবং তানভীর আহমেদ। টিভি আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করবেন শরফুদ্দৌলা ইবনে সৈকত। এছাড়া চতুর্থ আম্পায়ার হিসেবে থাকবেন মোহাম্মদ মোর্শেদ আলী খান।
একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় ম্যাচে সৈকতের সঙ্গে থাকবেন মুকুল অন-ফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে। মোর্শেদ আলীকে দেখা যাবে তৃতীয় আম্পায়ার হিসেবে। এছাড়া চতুর্থ আম্পায়ার থাকবেন তানভীর আহমেদ। তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে অন-ফিল্ড আম্পায়ারিংয়ে মুকুলের পরিবর্তে থাকবেন মোর্শেদ আলী।
এছাড়া শেষ দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও অন-ফিল্ড আম্পায়ারিংয়ে থাকবেন সৈকত। সঙ্গী হিসেবে দেখা যাবে গাজী সোহেল ও তানভীর আহমেদকে। তৃতীয় আম্পায়ার হিসেবে চতুর্থ ম্যাচে থাকবেন তানভীর ও শেষ ম্যাচে সোহেল। দুই ম্যাচেই চতুর্থ আম্পায়ার থাকবেন মুকুল। প্রতিটি ম্যাচেই ম্যাচ রেফারির দায়িত্ব পালন করবেন শ্রীলঙ্কার রঞ্জন মদুগালে।
পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম তিনটি ম্যাচ হবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। বাকি দুটি হবে মিরপুর শের-ই-বাংলায়। আগামী ৩ মে শুরু হবে দুই দলের মাঠের লড়াই। চট্টগ্রামে বাকি দুই ম্যাচ হবে ৫ ও ৭ মে। মিরপুরে সিরিজের শেষ দুই টি-টোয়েন্টি হবে ১০ ও ১২ মে।
বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ে টি-২০ সিরিজ টি-২০ বিশ্বকাপ ক্রিকেট বিসিবি আম্পায়ার
মন্তব্য করুন
চলতি বছরের জুনেই মাঠে গড়াবে খেলা। বাকি শুধুমাত্র এক মাস। যার জন্য ইতোমধ্যেই আয়োজক দেশগুলো শুরু করেছে প্রস্তুতি। ব্যস্ত সময় পার করছে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোরর ক্রিকেট বোর্ডগুলোও। ক্রিকেটের এই বিশ্ব আসরকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই ভারত-ইংল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশ দল ঘোষণা করে ফেলেছে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি দেশ স্কোয়াড চূড়ান্ত করেছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার বাকি।