মন্তব্য করুন
এখনো হাঁটি হাঁটি পা পা করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পথ চলছে বাংলাদেশ। তবে শুরুটা কিন্তু ছিলো বেশ আশা জাগানিয়া। ২০০৭ সালে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে প্রথম বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে চমক দেখিয়েছিলো বাংলাদেশ। তবে শুরুর সে স্বপ্ন সময়ের সাথে সাথে ম্লান হয়েছে। এই ফরম্যাটে দলের কঙ্কালসার বেরিয়ে আসতে খুব বেশি সময় লাগেনি। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার ক্রিকেটের নবীনতম দল আফগানিস্তানের উন্নতিও সে তুলনায় চোখে পড়ার মতো। তবে চলতি বছর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দিন বদলের আগমনী বার্তা দিচ্ছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটির আগে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডকে ৩-০ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারিয়েছে বাংলাদেশ। গত বছর নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জেতার পর প্রথম সিরিজ খেলতে নেমেই হারের তেতো স্বাদ পেয়েছে জশ বাটলারের দল।
যা টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে বাংলাদেশের সেরা অর্জন। ঘরের মাঠে উইকেট ও কন্ডিশনের সুবিধা নিয়ে অস্ট্রেলিয়া-নিউ জিল্যান্ডের মতো দলকেও টি-টোয়েন্টিতে সিরিজ হারিয়েছে বাংলাদেশ। তবে ইংলিশদের বিপক্ষে সেই সিরিজে তেমন কিছু দেখা যায়নি। স্পোর্টিং উইকেটে খেলে দাপুটে পারফরম্যান্স দেখিয়েই জয় তুলে নিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল।
এই সংস্করণে বাংলাদেশের বড় দুর্ভাবনার জায়গা ছিলো উদ্বোধনী জুটি। তামিম ইকবালের অবসরের পর এই দুশ্চিন্তা আরো বেড়েছে। কোন থিতু উদ্বোধনী জুটি এখনো পায়নি বাংলাদেশ। ২০২২ সালে ২১টি টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। সেখান ৯ জন ওপেনারকে নানা সময়ে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলানো হয়েছে। কিন্তু আসেনি কাঙ্খিত সাফল্য। ৯ জন ওপেনারের মধ্যে ৩ জন ছাড়া কেউই একশো রানের কোটা পার করতে পারেন নি। ৮ ম্যাচ খেলে ২৪৮ রান নিয়ে সবার উপরে ছিলেন লিটন দাস। সমান সংখ্যক ম্যাচ থেকে ২৩৬ রান করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মেক শিফট ওপেনারের দ্বায়িত্ব দিয়ে উপরে পাঠানো মেহেদী মিরাজ ৫ ম্যাচে করেছেন ১১১ রান। বাকিদের কেউই পঞ্চাশ রানও তুলতে পারেন নি।
এই তিনজন ছাড়া উদ্বোধনী জুটিতে সুযোগ পাওয়াদের তালিকায় থাকা মুনিম শাহরিয়ার ৫ ম্যাচে করেছেন ৩৪ রান। তার থেকে এক ম্যাচ কম খেলে সমান সংখ্যক রান তুলেছেন এনামুল হক বিজয়। দীর্ঘ বিরতির পর দলে ফিরে সৌম্য সরকার করেন ৪ ম্যাচ ৩৩ রান, সাব্বির রহমান ৪ ম্যাচ ৩১, নাঈম শেখ ৩ ম্যাচ ২১ ও এক ম্যাচ খেলা পারভেজ হাসান ইমনের ব্যাট থেকে এসেছিলো মাত্র ২ রান। সব মিলিয়ে ৯ জন ওপেনারের মধ্যে লিটন-শান্ত-মিরাজ ছাড়া সবার গড় ১০ এর নিচে। এই তিনজনের সাথে শুধুমাত্র সৌম্য সরকারের স্ট্রাইক রেট ছিলো একশোর বেশি।
গত বছর ১০টি ভিন্ন ভিন্ন ওপেনিং জুটি দেখা গেছে বাংলাদেশ দলে। যার মধ্যে পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটি ছিলো একটি, ভারতের বিপক্ষে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদের কাছে থেকে এসেছিলো মাত্র ৪টি ফিফটি। সমান দুটি করে অর্ধশতক রানের ইনিংস এসেছিলো লিটন ও শান্তর ব্যাট থেকে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩টি ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১টি ম্যাচ। এর মধ্যে দুটি ম্যাচে পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস দেখা গেছে উদ্বোধনী জুটিতে। দুটি ফিফটি এসেছে ওপেনারদের কাছ থেকে। গত বছর পুরো সময়ে যে সংগ্রাম ছিলো চোখে পড়ার মতো, চলতি বছর যেন শুরু হয়েছে মুদ্রার বিপরীত দিক থেকে। আর তাতেই নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে টাইগার শিবিরে।
যেখানে গত বছর টি-টোয়েন্টিতে রানের অভাবে ধুঁকতে হয়েছে ওপেনারদের। সেখানে এবার ৪ ম্যাচেই মানসিকতার বদল দেখিয়েছেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার। ৪ ম্যাচ থেকে ১৪১ রান এসেছে লিটনের ব্যাট থেকে। স্ট্রাইক রেট ১৪২ ও গড় ৩৫। দীর্ঘ ৮ বছর পর জাতীয় দলে ফিরেছেন রনি। গতকাল আইরিশদের বিপক্ষে খেলেছেন ৩৮ বলে ৬৭ রানের ঝড়ো ইনিংস। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খুব বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও টি-টোয়েন্টির ইনটেন্ট দেখিয়েছেন স্পষ্টভাবেই। ৪ ম্যাচে ১৩৭ স্ট্রাইক রেট ও ৩০ গড়ে ১২১ রান করেছেন রনি তালুকদার।
ইংল্যান্ডকে হারানোর পর এই সংস্করণে দিন বদলের আগমনী বার্তা দিয়েছিলো বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেও সে ধারা অব্যাহত ছিলো। মাত্র ৪টি ইনিংসেই লিটন-রনির উদ্বোধনী জুটি নজর কেড়েছে সকলের। যে ওপেনিং পজিশন নিয়ে এত সংগ্রাম, এত পরীক্ষা-নীরিক্ষার পরও ফল পায়নি দল, সেখানেই তারা দেখাচ্ছেন নতুন দিগন্তের আলো। তাতে আরো একবার আশায় বুক বেঁধেছে দল থেকে বোর্ডসহ ভক্ত-সমর্থকরা সকলেই। সবার মুখে ঘুরে ফিরছে একটাই প্রশ্ন- ওপেনিংয়ের দুর্ভাবনা কি কাটবে বাংলাদেশের?
বাংলাদেশ লিটন দাস রনি তালুকদার টি-টোয়েন্টি
মন্তব্য করুন
নাগলসমান টমাস টুখেল বায়ার্ন মিউনিখ
মন্তব্য করুন
কাতার বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের পর গতকাল মাঠে নামে বেলজিয়াম। উয়েফা চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাই পর্বের প্রথম ম্যাচে সুইডেনকে ৩-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে দেয় বেলজিয়াম। তবে ম্যাচ শেষে সে আনন্দ খানিকটা বিবর্ণ হয়ে ওঠে গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার ইনজুরিতে পড়ায়। সুইডিশদের বিপক্ষে ম্যাচটিতে উরুর চোটে পড়েন কোর্তোয়া। তাতে বেশ কয়েকটি ম্যাচের জন্য মাঠের বাইরে চলে গেলেন এই গোলরক্ষক।
ম্যাচে কোনো গোল হজম না করে উল্টো প্রতিপক্ষের জালে ৩টি গোল দিয়ে ইউরোপ সেরার টুর্নামেন্টের বাছাইপর্বের যাত্রা শুরু করে বেলজিয়াম। তবে দেশটির ফুটবল ফেডারেশনের এক ঘোষণায় বেলজিয়ামের এই জয়োল্লাস বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেডারেশন জানায়, উরুতে চোট পেয়েছেন কোর্তোয়া। ফলে জার্মানির বিপক্ষে বাছাইপর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাকে পাচ্ছে না বেলজিয়াম। বিশ্রামের জন্য এরই মধ্যে রিয়াল মাদ্রিদে ফিরে গেছেন কোর্তোয়া।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম এএস জানিয়েছে, আগামীকাল কোর্তোয়ার উরুর পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হবে। স্ক্যান রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বোঝা যাবে, পুরোপুরি সুস্থ হতে কত দিন সময় লাগতে পারে। এই চোটের কারণে রোববার লা লিগায় ভায়াদোলিদের বিপক্ষে মাঠে নামতে পারবেন না তিনি। শঙ্কা রয়েছে এল ক্লাসিকোয় খেলা নিয়েও। আগামী ৫ এপ্রিল কোপা দেল রে'র সেমিফাইনালের ফিরতি লেগে মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ। ইনজুরি থেকে সেরে না উঠলে সে ম্যাচেও মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে রিয়াল মাদ্রিদের এই গোলকিপারকে।
চলতি বছর কাতালানদের বিপক্ষে ৩টি এল ক্লাসিকোর সবগুলোতেই হারের স্বাদ পেয়েছে গ্যালাকটিকোরা। জানুয়ারিতে রিয়ালকে হারিয়ে স্প্যানিশ সুপার কাপের শিরোপা ঘরে তোলে বার্সা। এরপর কোপা দেল রে'র সেমিফাইনালেও হারের তেতো স্বাদ সঙ্গী হয় মাদ্রিদের দলটির। সবশেষ লা লিগার ম্যাচেও বার্সার কাছে হেরে শিরোপা দৌড় থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। আসন্ন ক্লাসিকোতে তাই কোর্তোয়াকে না পেলে কপালের ভাজ বাড়বে লস ব্লাঙ্কোসদের।
চলতি মৌসুমের মাঝামাঝি থেকেই চোটের সাথে যুদ্ধ করছেন কোর্তোয়া। এই মৌসুমে হ্যামস্ট্রিং ও নিতম্বে চোটের কারণে সব মিলিয়ে আটটি ম্যাচে খেলতে পারেননি এই মাদ্রিদ গোলরক্ষক। তার পরিবর্তে খেলানো হয়েছে আন্দ্রি লুনিনকে। এল ক্লাসিকোতে তাকে না পেলে রিয়ালের গোলবারের নিজে দেখা যেতে পারে ইউক্রেনের এই গোলরক্ষককে।
বেলজিয়াম রিয়াল মাদ্রিদ থিবো কোর্তোয়া ইনজুরি
মন্তব্য করুন
অনেকদিন ধরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন না জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। একদিনের ক্রিকেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর না নিলেও সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ২০২০ সালের মার্চ মাসে। এখন ক্রিকেটের চেয়ে তাঁর বেশি সময় কাটে রাজনীতির মাঠে। বয়স হয়ে গেছে ৩৯ বছর। এই বয়সেও মাঠে নেমে চমক দেখাতে পারেন তিনি। সেটার প্রমাণ দিয়েছেন সবশেষ বিপিএলে। এবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটেও সে চমক দেখালেন মাশরাফি।
এবারের প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে খেলছেন মাশরাফি। বয়সের কারণে বলে আগের মতো গতি নেই নেই। লম্বা রানআপেও এখন আর বোলিং করেন না। তবে লাইন ও লেংথ ধরে রেখেছেন ঠিকই। আজ বল হাতে মোহামেডানকে দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছেন মাশরাফি। ৮ দশমিক ৪ ওভার বল করে ১৭ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। যার মধ্যে ৩টি আবার মেডেন।
শুধু বল হাতে নয়, ফিল্ডিংয়েও নজর কেড়েছেন সাবেক এই অধিনায়ক। স্লিপে নিয়েছেন দুটি ক্যাচ। তাতে মোহামেডানের বিপক্ষে সাফল্য পেয়েছে তার দলও। মাশরাফির এই আধিপত্যে ২২.৪ ওভারে মাত্র ৮০ রানে অলআউট হয়ে গেছে মোহামেডান। এই ৫ উইকেটে একটি মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন মাশরাফি। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে পেয়ে গেছেন ৪৫০ উইকেটের দেখা।
এই ম্যাচ খেলতে নামার আগে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তাঁর উইকেট ছিল ৪৪৭টি। এখন ৪৫২। আজকের ৫ উইকেটসহ এবারের প্রিমিয়ার লিগে ৪ ম্যাচে ১১টি উইকেট পেয়েছেন মাশরাফি। ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সহজ জয় তুলে নিয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। কোনো উইকেট না হারিয়ে ৮.২ ওভারে মোহামেডানের রান টপকে যায় রূপগঞ্জ।
মাশরাফি বিন মর্তুজা রূপগঞ্জ মোহামেডান ডিপিএল
মন্তব্য করুন
বৃষ্টিতে দেড় ঘন্টারও বেশি সময় খেলা বন্ধ থাকার পর শুরু হয় বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বৃষ্টিত খেলা বন্ধ হওয়ার আগে বাংলাদেশ করে ৫ উইকেটে ২০৭ রান। বেশ কিছুক্ষণ হালকা বৃষ্টিতে খেলা চালিয়ে গেলেও, বেগ বাড়লে খেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন দুই অন ফিল্ড আম্পায়ার। এরপর আর মাঠে নামা হয়নি বাংলাদেশের। আর আইরিশদের সামনে বৃষ্টি আইনে পরিবর্তিত লক্ষ্য দাড়ায় ৮ ওভারে ১০৪ রানের। ওভারপ্রতি প্রয়োজন দাড়ায় ১৩ রানের। টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত জয়ের দেখা পায়নি আয়ারল্যান্ড। ২২ রানের ব্যবধানে হেরে যায় আইরিশরা। এতে ৩ ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ঝড়ো শুরু আইরিশদের। পরিবর্তিত প্লেয়িং কন্ডিশনে প্রথম ২ ওভার পাওয়ারপ্লে। নাসুম আহমেদের করা প্রথম ওভার থেকে ১৮ রান তুলে নেন দুই ওপেনার পল স্টার্লিং ও রস অ্যাডায়ার। স্টার্লিংয়ের ৩টি বাউন্ডারির পর শেষ বলে আরো একটি বাউন্ডারি আসে অ্যাডায়ারের ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় ওভারেও সে ধারা অব্যাহত থাকে। মুস্তাফিজুর রহমানের করা ওভারটি থেকে ১৪ রান তুলে নেয় সফরকারিরা।
তবে তৃতীয় ওভারে সে চাপ সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন হাসান মাহমুদ। টানা তিনটি ডট দেয়ার পর চতুর্থ বলে স্টাম্প উপড়ে দেন রস অ্যাডায়ারের। শেষ দুই বল থেকে ৫ রান দেন এই তরুণ পেসার। পরের ওভারের প্রথম বলেই লরকান টাকারকে বোল্ড করেন তাসকিন আহমেদ। দুই বল পর অধিনায়ক পল স্টারলিংকেও একই ফাঁদে ফেলেন তিনি। পঞ্চম বলে জর্জ ডকরেলের উইকেট তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন তাসকিন। এক ওভারে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে দলকে ম্যাচে ফেরান এই পেসার।
৫ম ওভারে হাসান ১৬ রান দিলেও পরের দুটি ওভারে সাকিব ও মুস্তাফিজের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে জয়ের সুবাস পেতে থাকে বাংলাদেশ। শেষ ওভারে আইরিশদের দরকার ছিলো ৩২ রানের। প্রথম বলে মিরাজের দুর্দান্ত এক ক্যাচে হ্যারি টেক্টরকে ফেরান তাসকিন। সে ওভার থেকে ৯ রান নিলে ২২ রানে জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। ২ ওভারে ১৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন এই পেসার। যা তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং।
এর আগে, ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ব্যাট হাতে ছড়ি ঘুরিয়েছে বাংলাদেশ। টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছে আইরিশ অধিনায়ক পল স্টারলিং। সাগরিকার উইকেট বিবেচনায় আগে বোলিং এর সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানান স্টারলিং। তবে অধিনায়কের সিদ্ধান্তের যথার্থতা দেখাতে পারেন নি আইরিশ বোলাররা।
দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদারের ব্যাটে ভর কর দুর্দান্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। হ্যারি টেক্টরের প্রথম ওভারে থেকে তুলে নেন ১১ রান। পরের ওভারে আরো মারমুখি হয়ে উঠেন দুই ব্যাটসম্যান। মার্ক অ্যাডায়ারের সে ওভার থেকে আসে ১৪ রান।
রনি কিছুটা দেখেশুনে খেললেও শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন লিটন। চতুর্থ ওভারে বল করতে এসে ১৬ রান দেন ক্রেইগ ইয়ং। তবে পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে তান্ডব চালান রনি। নির্ধারিত ৬ ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাড়ায় ৮১ রান। যা পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর। এর আগে ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৬ রান ছিলো সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
পরের ওভারেও রান তোলার গতি ধরে রাখে বাংলাদেশ। লেগ স্পিনার বেন হোয়াইটের ওভার থেকে ১০ রান তুলে নেন লিটন-রনি। তবে সপ্তম ওভারের প্রথম বলে বাজে শট খেলার খেসারত দেন লিটন। ক্যারিগ ইয়ং এর বল উড়িয়ে খেলতে গিয়ে ব্যাটে-বলে ঠিকমতো মেলাতে পারেন নি। ব্যক্তিগত ৪৭ রানের সময় মিড অফে সহজ ক্যাচ দেন পল স্টারলিং এর হাতে। ৯১ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
লিটন বিদায়ে ক্রিজে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত। শুরুতেই হাত খুলে খেলার চেষ্টা করেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেন নি। ১১তম ওভারে অফ স্টাম্পের বাইরে টানা দুটি ওয়াইডের পর লাইন ও লেংথ বদলে ফেলেন হ্যারি টেক্টর। পরের ডেলিভারিটি খেলতে ক্রিজ ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এসে পরাস্ত হন শান্ত। স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে ১৪ রান করে ফেরেন সাজঘরে। ১১৮ রানে বাংলাদেশ হারাল দ্বিতীয় উইকেট।
তবে একপ্রান্ত থেকে তান্ডব চালাতে থাকেন রনি তালুকদার। মাত্র ২৪ বল থেকে ক্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি ফিফটি। যা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে তৃতীয় দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি। আরেক প্রান্তে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে থাকেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি। তবে দ্রুত গতিতে রান তুলতে গিয়ে উইকেট দিয়ে আসেন রনি তালুকদার। ১৪তম ওভারের শেষ বলে গ্রাহাম হিউমের ফুল লেংথের বলটির লাইন বুঝতে পারেন নি রনি। বল সরাসরি আঘাত হানে স্টাম্পে। ১৫৪ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন হয় বাংলাদেশের। ৩৮ বলে ৭ চার ও ৩ ছয়ে ৬৭ রান আসে রনির ব্যাট থেকে।
তৌহিদ হৃদয়কে নিয়ে ভালই এগোচ্ছিলেন শামীম হোসেন। বড় শট খেলতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েছিলেন কার্টিস ক্যাম্ফারের হাতে। তবে শরীরের ভার রাখতে না পেরে শেষ মুহুর্তে ক্যাম্ফার বল ছেড়ে দিলে জীবন পান শামীম। তবে সেটি কাজে লাগাতে পারেন নি এই বাঁ-হাতি। দলীয় ১৭২ রানে মার্ক অ্যাডায়ারের বলে দুর্বল শট খেলে এক্সট্রা কাভারে ধরা পড়েন পল স্টার্লিং এর হাতে। করেন ২০ বলে ৩০ রান।
ক্রিজে এসেই অ্যাডায়ারকে স্ট্রেইটে চার মেরে রানের খাতা খোলেন সাকিব আল হাসান। দ্রুত গতিতে রান তুলতে থাকেন তিনি। তাতে বড় সংগ্রহের দিকে এগোতে থাকে বাংলাদেশ। ১৯তম ওভারের চতুর্থ বলে ক্রেইগ ইয়ংকে ছয় মেরে দলীয় ২০০ রান পূর্ণ করেন তৌহিদ হৃদয়। তবে এরপরের বলেই ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে। বাংলাদেশের ইনিংসের ৪ বল বাকি থাকতে বৃষ্টির কারণে বন্ধ হয়ে যায় খেলা।
টি-টোয়েন্টিতে এটি বাংলাদেশের চতুর্থ দুইশো ছড়ানো স্কোর। হাতছানি ছিলো টি-টোয়েন্টিতে আগের সর্বোচ্চ কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করা ৫ উইকেটে ২১৫ রান টপকে যাওয়ার। বে-রসিক বৃষ্টি বাঁধ না সাঁধলে তা হতেও পারতো।
বাংলাদেশ আয়ারল্যান্ড টি-টোয়েন্টি চট্টগ্রাম
মন্তব্য করুন
এখনো হাঁটি হাঁটি পা পা করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পথ চলছে বাংলাদেশ। তবে শুরুটা কিন্তু ছিলো বেশ আশা জাগানিয়া। ২০০৭ সালে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে প্রথম বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে চমক দেখিয়েছিলো বাংলাদেশ। তবে শুরুর সে স্বপ্ন সময়ের সাথে সাথে ম্লান হয়েছে। এই ফরম্যাটে দলের কঙ্কালসার বেরিয়ে আসতে খুব বেশি সময় লাগেনি। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার ক্রিকেটের নবীনতম দল আফগানিস্তানের উন্নতিও সে তুলনায় চোখে পড়ার মতো। তবে চলতি বছর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দিন বদলের আগমনী বার্তা দিচ্ছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
কাতার বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের পর গতকাল মাঠে নামে বেলজিয়াম। উয়েফা চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাই পর্বের প্রথম ম্যাচে সুইডেনকে ৩-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে দেয় বেলজিয়াম। তবে ম্যাচ শেষে সে আনন্দ খানিকটা বিবর্ণ হয়ে ওঠে গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার ইনজুরিতে পড়ায়। সুইডিশদের বিপক্ষে ম্যাচটিতে উরুর চোটে পড়েন কোর্তোয়া। তাতে বেশ কয়েকটি ম্যাচের জন্য মাঠের বাইরে চলে গেলেন এই গোলরক্ষক।
অনেকদিন ধরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন না জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। একদিনের ক্রিকেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর না নিলেও সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ২০২০ সালের মার্চ মাসে। এখন ক্রিকেটের চেয়ে তাঁর বেশি সময় কাটে রাজনীতির মাঠে। বয়স হয়ে গেছে ৩৯ বছর। এই বয়সেও মাঠে নেমে চমক দেখাতে পারেন তিনি। সেটার প্রমাণ দিয়েছেন সবশেষ বিপিএলে। এবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটেও সে চমক দেখালেন মাশরাফি।
বৃষ্টিতে দেড় ঘন্টারও বেশি সময় খেলা বন্ধ থাকার পর শুরু হয় বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বৃষ্টিত খেলা বন্ধ হওয়ার আগে বাংলাদেশ করে ৫ উইকেটে ২০৭ রান। বেশ কিছুক্ষণ হালকা বৃষ্টিতে খেলা চালিয়ে গেলেও, বেগ বাড়লে খেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন দুই অন ফিল্ড আম্পায়ার। এরপর আর মাঠে নামা হয়নি বাংলাদেশের। আর আইরিশদের সামনে বৃষ্টি আইনে পরিবর্তিত লক্ষ্য দাড়ায় ৮ ওভারে ১০৪ রানের। ওভারপ্রতি প্রয়োজন দাড়ায় ১৩ রানের। টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত জয়ের দেখা পায়নি আয়ারল্যান্ড। ২২ রানের ব্যবধানে হেরে যায় আইরিশরা। এতে ৩ ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ।