নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:১২ পিএম, ২০ জানুয়ারী, ২০১৯
আমাদের ব্যস্ত জীবনে নিজেকে নিয়ে ভাবার সময় খুব কম। এদিক সেদিক আপনাকে দৌড়াতে হয়, শরীরের দিকে একমদই যত্ন হয় না। অনিয়ম আর বেখেয়ালে শরীর ভেঙে পড়তে থাকে, বিভিন্ন ব্যথা, জড়তা শরীরে বাসা বাঁধে। খাওয়া-ঘুম সময়মতো এবং পর্যাপ্ত হয় না বলেই শারীরিক সমস্যা চলতেই থাকে। সমস্যা হলো, ভুগতে ভুগতে ভাবলেন আপনি তো পিছিয়ে পড়ছেন। তখনই মনে হলো আপনার চিকিৎসা দরকার। চিকিৎসকের কাছে যেতে হলে সময় দরকার, টাকাপয়সাও খরচ করতে হবে। আর চিকিৎসক যে ওষুধ দেবে তা তো আপনিও জানেন। ফলে কী করলেন, নিজেই ফার্মেসি থেকে কিনে ইচ্ছামতো পাতাভরে ওষুধ খেয়ে ফেললেন। হয়ত সুস্থবোধ হলো, ফলাফলটা কী হলো সেটা কি ভাবলেন?
এই যে না বুঝে শুনে ব্যথা হলে, জ্বর হলে, সর্দিকাশি বা উচ্চরক্তচাপে নিজে ওষুধ কিনে খাওয়ার অভ্যাস আমাদের অনেকেরই। যখন তখন যেকোনো ওষুধ খেয়ে বসলে রোগ না কমে বরং বেড়ে যেতে পারে। একজন চিকিৎসকই ভালো করে বলতে পারবেন যে কোন ওষুধের কী কাজ, সেটা কাকে কখন দেওয়া যাবে। নিজে ওষুধ খেলে এসব বিবেচনা করা সম্ভব নয়। তাই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কাও বেশি। ব্যথার ওষুধ না জেনে খেলে শরীরের অন্দরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। এই ওষুধই কখনো বিষ হয়ে ধরা দেবে, টের পাবেন না।
কী কী সমস্যা হতে পারে
আমরা ভাবি ভিটামিন ‘এ’ বা কৃমির ওষুধ নিজে থেকে খেলে বুঝি কিছু হয় না। কিন্তু এগুলোর মতো সাধারণ ওষুধ গর্ভের শিশুর মারাত্মক ক্ষতি করে। লিভারের রোগীর জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ হতে পারে মারাত্মক ক্ষতির কারণ।
মোটা হয় না বলে অনেকেরই অনেক কষ্ট থাকে। মোটা হওয়ার জন্য স্টেরয়েড ওষুধ ধান অনেকে। এর ফলে মারাত্মক কুশিং সিনড্রোমে (কর্টিসল হরমোনের নিয়ন্ত্রণহীন বৃদ্ধির ফলে উদ্ভূত সকল সমস্যা) আক্রান্ত হন। এটা বয়ে বেড়াতে হয়। আবার হুট করে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই ওষুধ বন্ধ করে দিলেও অনেক বিপদ হতে পারে।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় আন্দাজে দিনের পর দিন ওষুধ খেয়েই চলেছেন। কিন্তু সাধারণ গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ ওমিপ্রাজল না বুঝে এক বছরের বেশি খেলে অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এছাড়া এটি পাকস্থলীতেও সমস্যা করতে পারে। আলসার, ডায়রিয়ার মতো সমস্যা বেশি হয় আপনার অজান্তেই।
জ্বর-সর্দি আর গায়ে ব্যথায় প্যারাসিটামল সবাই ই খায়। প্যারাসিটামলের মূল নাম এসিটামিনোফ্যান, বড় কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই৷ কিন্তু যখন তখন বেশি করে খেলে এটি যকৃৎ অকার্যকর করে দিতে পারে। যাদের আগে থেকে যকৃতে সমস্যা আছে, মদ্যপান বেশি করেন, অন্যান্য ওষুধ খান- তাঁদের জন্য এই প্যারাসিটামল বিপর্যয় আনতে পারে। বিভিন্ন ব্যথার রোগীরা নিয়মিত ব্যথানাশক খান। এতে কিডনি বিকল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ব্যথানাশকে পাকস্থলীর আলসার হয়, রক্তক্ষরণও হতে পারে।
হাড় ক্ষয় কমাতে আর হাড় মজবুত করতে ক্যালসিয়াম খাওয়ার প্রবণতা আমাদের রয়েছে। বিশেষ করে মধ্যবয়স্ক ও বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে। কিন্তু ক্যালসিয়াম দীর্ঘদিন খাওয়ার ফলে হৃদরোগ-স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়তে পারে, কিডনিতে পাথরও হতে পারে।
আবার এমন অনেক ধরনের ওষুধ আছে যেগুলো না বুঝে খেলে রক্তচাপ বেড়ে যায়, স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ে। এছাড়াও এমন অনেক ওষুধ আছে যেগুলো না জেনে খেলে অ্যালার্জি হতে পারে।
মাথায় রাখুন কিছু বিষয়
১. বিশেষ অবস্থায় (যেমন গর্ভাবস্থায়, লিভার বা কিডনির রোগে) সাধারণ ওষুধ বা প্রেসক্রিপশন ছাড়া পাওয়া যায়, তাও চিকিৎসকের পরামর্শেই ব্যবহার করতে হবে। শুধু ফার্মাসিস্টের কাছ থেকে ওষুধ কেনা উচিৎ। কেনার সময়ে আগে মেয়াদ দেখে নিন।
২. চিকিৎসক ওষুধের যে নিয়ম বলে দেবেন (কতটুকু ওষুধ খেতে হবে, সেটা কতক্ষণ পরপর, কতদিন খেতে হবে, খাবার আগে না পরে খাবেন) তা মেনে ওষুধ খাবেন। ব্যবস্থাপত্র ছাড়াও সেটা অন্য কোথাও আপনার বোঝার সুবিধার্থে সহজ করে লিখে রাখুন। অন্যের সাহায্য নিতে পারেন। নিজে থেকে ওষুধের কোনো মাত্রাই পরিবর্তন করবেন না।
৩. অনেকে একবার চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে বার বার সেটা দেখিয়ে ফার্মেসি থেকে ওষুধ কেনেন। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, প্রথম ব্যবস্থাপত্রে যে ওষুধ যতদিন খেতে বলা হয়েছে, ততদিনই খাওয়া যাবে। আবার সেই একই অসুখ হলেও ঐ ওষুধ কাজ নাও করতে পারে।
৪. সামান্য রোগে উতলা হয়ে ব্যথা বা যন্ত্রণা কমাতে ওষুধ খেয়ে নেবেন না। আর রোগ সেরে গেছে ভেবে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া যাবে না। সুস্থ হয়ে গেলেও ওষুধের পুরো কোর্স সম্পন্ন করতে হবে। কোনো সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৫. একই সঙ্গে অ্যালোপ্যাথিক বা অন্যান্য পদ্ধতির চিকিৎসা চললে তা চিকিৎসককে অবশ্যই জানাবেন। আর যে ওষুধ যেভাবে সংরক্ষণ করতে বলা হবে, সেভাবেই করবেন। ফ্রিজে বা নির্দিষ্ট তাপমাত্রা উল্লেখ করে দিলে সেভাবেই রাখবেন।
৬. ফার্মেসিতে অনেক সময় প্রেসক্রিপশনে লেখা ওষুধ না দিয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে অন্য কোম্পানি বা একই ধরনের ওষুধ দিয়ে দেন। এটা কখনোই মেনে নেবেন না। চিকিৎসক যা দেবে, আপনি সেটাই কিনবেন।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/এমআর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা গ্রহণের কারণে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়
ভুগে বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে এই
টিকা যারা নিয়েছেন তাদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কি না, তা খুঁজে দেখতে স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
বুধবার (৮ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সার্বজনীন
স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে টিকাদান কর্মসূচিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আয়োজিত সভায়
মন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন।
সামন্ত লাল সেন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। কিছু দেশে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গেছে। আমরাও যেহেতু অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা গ্রহণ করেছি, আমাদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কি না, তা খুঁজে দেখতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে এই বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা
মন্তব্য করুন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তস্বল্পতাজনিত
দুরারোগ্য ব্যাধি। এ রোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান
রেখে চলেছে। বাংলাদেশে এই রোগের জিন বাহকের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। বাহকের সংখ্যা দিন
দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশের সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। বাহকে-বাহকে
বিয়ে হলে দম্পতির সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিধায় বিয়ের আগে এই
রোগের জিন বাহক কি না তা জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
বুধবার (৮ মে) বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে
তিনি এই আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্য খাতে ‘রূপকল্প-২০৪১’
বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা সক্ষম হব,
ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাসহ
বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা
পৌঁছে দিতে এবং জনসাধারণকে সুলভে মানসম্মত স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার কল্যাণ (এইচএনপি)
সেবা দেওয়ার মাধ্যমে একটি সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার লক্ষ্যে আওয়ামী
লীগ সরকার ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। আমরা একটি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি
প্রণয়ন করে যুগোপযোগী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন নতুন হাসপাতাল, নার্সিং
ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে হাসপাতালগুলোর শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধিসহ
চিকিৎসক, নার্স, সাপোর্ট স্টাফের সংখ্যাও বৃদ্ধি করেছি। গ্রামপর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায়
স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারা দেশে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন
স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের
মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ফ্রি স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ ও পুষ্টি সেবা দেওয়া হচ্ছে।
জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোন ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা
চালু করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে গত ১৫ বছরে স্বাস্থ্য
খাতের উন্নয়নে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, মানুষের
গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ মাতৃমৃত্যু, নবজাতকের মৃত্যু ও অনূর্ধ্ব ৫ বছর বয়সী শিশুমৃত্যু হার,
অপুষ্টি, খর্বতা, কম ওজন ইত্যাদি হ্রাসে ক্রমাগত উন্নতি হচ্ছে। সম্পদের সীমাবদ্ধতা
থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এমডিজি লক্ষ্য অর্জনে অসাধারণ সফলতা দেখিয়েছে।
২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টগুলো (এসডিজি) অর্জনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
মন্তব্য করুন
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সমাজের সচেতন নাগরিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে
থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার (৮ মে) বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে
তিনি এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি এবং অনেক
ক্ষেত্রেই তা জটিল আকার ধারণ করতে পারে। তাই এ রোগ প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার
বিকল্প নেই। থ্যালাসেমিয়া বিস্তার রোধে বাহকদের এবং আত্মীয়ের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ককে
নিরুৎসাহিত করতে হবে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রে সন্তান ধারণের পর প্রয়োজনীয় সতর্কতা
অবলম্বন করতে হবে।
বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি কর্তৃক ‘বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস’
উদযাপনের উদ্যোগকে রাষ্ট্রপতি স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘সবাই মিলে থ্যালাসেমিয়া মুক্ত বাংলাদেশ
গড়ব-এটাই হোক এবারের বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবসের অঙ্গীকার।’
তিনি বলেন, থ্যালাসেমিয়া একটি জিনবাহিত রোগ যা বাহকের মাধ্যমে ছড়ায়।
স্বামী-স্ত্রী উভয়ই থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক হলে সন্তানদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা
থাকে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে থ্যালাসেমিয়া জিনবাহক নারী-পুরুষের
মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়ে থাকে। এজন্য বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ
হওয়ার আগেই পরীক্ষার মাধ্যমে পুরুষ বা নারী কেউ এ রোগের বাহক কিনা তা নির্ণয় করা জরুরি।
এছাড়া রক্তস্বল্পতাজনিত ভয়াবহ এ রোগটি প্রতিরোধে জনসচেতনতা গড়ে তোলাও প্রয়োজন।
রাষ্ট্রপতি ‘বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন থ্যালাসেমিয়া
মন্তব্য করুন
গত পাঁচ বছরে চিকিৎসাসেবা খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের ৩৫ শতাংশ
নিষ্পত্তি করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। অন্যদিকে ৬৫ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।
কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন
বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
অভিযোগ নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রতার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আগ্রহে ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।
আরও পড়ুন: অসুস্থতা নিয়েও পুরুষের তুলনায় বেশিদিন বাঁচে নারী: গবেষণা
বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে চিকিৎসাসেবাসংক্রান্ত
৬৬টি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ সময় নিষ্পত্তি হয়েছে ২৩টি অভিযোগ।
সে হিসাবে ৩৫ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে। নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে ৪৩টি অভিযোগ,
যা মোট অভিযোগের ৬৫ শতাংশ।
এর মধ্যে ২০২৩ সালে চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত ২৫টি অভিযোগ নিয়ে কাজ
করেছে মানবাধিকার কমিশন, যা গত পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ। চলতি বছরের ৩১ মার্চ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে ২০২৩ সালের (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) বার্ষিক প্রতিবেদন হস্তান্তর
করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।
এদিকে ২০২৩ সালের ২৫টি অভিযোগের মধ্যে ভুক্তভোগী কর্তৃক দায়ের করা
অভিযোগ দুটি।
অন্যদিকে কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমটো) হয়ে গ্রহণ করা অভিযোগের
সংখ্যা ২৩, যা এ সময় কমিশন কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন সুয়োমটো অভিযোগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ।
ভুক্তভোগীদের দায়ের করা দুটি অভিযোগ নিষ্পত্তি হলেও কমিশন কর্তৃক গৃহীত ২৩টি অভিযোগের
মধ্যে মাত্র তিনটি অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে।
নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে আরও ২০টি অভিযোগ। সে হিসাবে গত বছর চিকিৎসাসেবা
সংক্রান্ত অভিযোগের ৮০ শতাংশ নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।
এদিকে, ২০২০ সালে করোনাকালীন সর্বনিম্ন দুটি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে
কমিশন।
এর মধ্যে একটি অভিযোগ জমা পড়ে আর কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দায়ের
করে অন্যটি। ওই বছর কোনো অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়নি।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯-এর ধারা ১২ অনুযায়ী, দেশের নাগরিকরা কমিশনে চিকিৎসাসেবা খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবা খাতের অব্যবস্থাপনার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এসবের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করে সংস্থাটি। প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে কমিশন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। প্রতিবেদন পাওয়ার পর কোন কোন ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হয়েছেন তার গুরুত্ব বিবেচনা করে উচ্চ আদালতে রিট করে কমিশন।
আরও পড়ুন: করোনা টিকা ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
চিকিৎসাসেবা খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতার
জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আগ্রহের ঘাটতিকে দায়ী করছেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন
আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘যেসব অভিযোগ কমিশনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট
কর্তৃপক্ষের কাছে জমা পড়েছে, সেগুলো নিষ্পত্তির জন্য আমরা নিয়মিত তাগিদ দিয়ে থাকি।
চিকিৎসাসেবা খাতের অভিযোগগুলো নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আরো বেশি আগ্রহী
হতে হবে।’
এ খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে কমিশন
অনেক ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসাসেবা নিতে এসে অনিয়মের শিকার রোগীদের
অভিযোগ জমা পড়তে পড়তে পাহাড় হয়েছে। আবার ভুল চিকিৎসা, সেবা নিতে গিয়ে অনিয়মের শিকার
হয়েছেন এমন অভিযোগও অনেক। স্বাস্থ্যসেবার প্রকৃত চিত্র শিগগিরই পরিসংখ্যানের মাধ্যমে
তুলে ধরবে কমিশন। এরপর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘জনসাধারণকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে মনে করে কমিশন। গত বছর আমরা জরায়ু ক্যান্সারের ভুয়া ভ্যাকসিন, হাসপাতালের শয্যা নিয়ে বাণিজ্য, ওষুধের মোড়ক পরিবর্তন করে বিদেশি ওষুধ বলে বিক্রি, অনুমোদন ছাড়া ক্লিনিক এবং বেসরকারি হাসপাতাল বন্ধে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে আইনের সীমাবদ্ধতার কারণে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে পারে না কমিশন। এ জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে কার্যকর ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে প্যারিস নীতিমালার আলোকে আইনের সংশোধন জরুরি।’
চিকিৎসাসেবা জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
মন্তব্য করুন
অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা গ্রহণের কারণে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগে বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে এই টিকা যারা নিয়েছেন তাদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কি না, তা খুঁজে দেখতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তস্বল্পতাজনিত দুরারোগ্য ব্যাধি। এ রোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশে এই রোগের জিন বাহকের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। বাহকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশের সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। বাহকে-বাহকে বিয়ে হলে দম্পতির সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিধায় বিয়ের আগে এই রোগের জিন বাহক কি না তা জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।