ইনসাইড হেলথ

চসিকের আইসোলেশন সেন্টারে রোগী প্রতি ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১:১১ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০


Thumbnail

 

করোনা চিকিৎসার নাম দিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে (চসিক) পুকুরচুরির ঘটনা যেন রূপকথার গল্পকেও হার মানিয়েছে।  চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আইসোলেশন সেন্টারে সাধারণ উপসর্গ নিয়ে আসা একেকজন করোনারোগীর পেছনে ব্যয়  দেখানো হয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। অথচ তুলনামূলক জটিল করোনা রোগী সামাল দিয়েও ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা আরেক আইসোলেশন সেন্টারে একেকজন করোনারোগীর পেছনে খরচ হয়েছে মাত্র ৬ হাজার ১৭৮ টাকা!

অবিশ্বাস্য ব্যায়ের ঘটনা তদন্তে চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে আইসোলেশন সেন্টারের ব্যায়ে অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।

গত ২১ জুন চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের সিটি কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে একটি আইসোলেশন সেন্টার চালু করা হয়।

কাঙ্খিত রোগী না পাওয়ায় ৫৫ দিনের মাথায় আড়াইশ শয্যার আইসোলেশন সেন্টারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ওই ৫৫ দিনে ১২০ জন রোগীর জন্য খরচ দেখানো হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এ হিসেবে মাথাপিছু প্রতিজন রোগীর পেছনে খরচ দেখানো হয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। অথচ চিকিৎসাখাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সামান্য ওষুধ ও অক্সিজেন সেবায় এর ভগ্নাংশও খরচ হওয়ার কথা নয়। অন্যদিকে এর বিপরীতে তুলনামূলক জটিল করোনা রোগী সামাল দিয়েও হালিশহরে কিছু তরুণের উদ্যোগে পরিচালিত ‘আইসোলেশন সেন্টার চট্টগ্রামে’ রোগীপ্রতি খরচ হয়েছে মাত্র ৬ হাজার ১৭৮ টাকা। তিন মাসে অনুদাননির্ভর ওই প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নিয়েছে ৭৬৫ জন রোগী। সবমিলিয়ে সেখানে খরচ হয়েছে ৪৭ লাখ ২৬ হাজার ৫০০ টাকা। আইসোলেশন সেন্টারের মুখপাত্র জিনাত সোহানা চৌধুরী এই তথ্য জানিয়েছেন। অনেকটা হেলাফেলায় গড়ে ওঠা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নামমাত্র আইসোলেশন সেন্টারে মাত্র ৫৫ দিনে জনপ্রতি রোগীর খরচ কিভাবে ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা হতে পারে— এ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। চিকিৎসাখাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই টাকায় একজন করোনা রোগী উন্নতমানের প্রাইভেট ক্লিনিকে আইসিইউ ভেন্টিলেটর সুবিধাসহ অন্তত ১৫ দিনের চিকিৎসাসেবা নিতে পারতেন।

চট্টগ্রাম নগরজুড়ে হাসপাতালে-ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়ে হাহাকার, এমনকি চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর একাধিক ঘটনার মধ্যে চসিকের আইসোলেশন সেন্টারটি চালু করা হয়। তবুও ১৩ জুন উদ্ধোধনের পর বিস্ময়করভাবে নিদারুণ রোগী সংকটে পড়ে আইলোশন সেন্টারটি।  

চসিকের হিসাব অনুযায়ী, ৫৫ দিনে সেখানে চিকিৎসা নিয়েছে মাত্র ১২০ জন রোগী। এতো রোগী আদৌ সেখানে চিকিৎসা নিয়েছিল কিনা— এ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও চসিকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রতিদিন গড়ে ২ জন রোগী সেখানে সেবা পেয়েছে।

চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদের এক্সেস রোডে সিটি কর্পোরেশনের ওই আইসোলেশন সেন্টারের সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন যান্ত্রিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক শুরুতেই দরপত্রবিহীন ২ কোটি টাকার বেশি খরচ দেখানো ছাড়াও হিসাবের গরমিলসহ নানা অভিযোগ ওঠে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সেলিম আক্তার চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সিটি কর্পোরেশনের আইসোলেশন সেন্টারে অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এতে যান্ত্রিক শাখার ভারপ্রাপ্ত তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক, ডা. সুশান্ত বড়ুয়া, প্রকৌশলী সালমা, বিদ্যুৎ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার, স্টোরের দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রকৌশলী ও নেজারত শাখার একজনসহ সবার কাছ লিখিত আকারে আইসোলেশন সেন্টারের কেনাকাটা ও খরচের তথ্য চাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকেই লিখিত আকারে দিয়েছেন এসব তথ্য।’

সেলিম আক্তার চৌধুরী আরও বলেন, ‘তাদের কাছ থেকে নেওয়া এসব তথ্য বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্য আছে কিনা তদারকি করা হবে। একই সঙ্গে বাজার কমিটির সঙ্গে তাদের তথ্যগুলো মিলিয়ে দেখা হবে। পরবর্তীতে এসব যাচাইবাচাই করার পর রিপোর্ট দেওয়া হবে। শিগগিরই প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদুল আলম সুজন বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর আইসোলেশন সেন্টারের খরচ ও কেনাকাটার বিষয়টি আমলে নিয়ে একটি তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। সেখানে টেন্ডার ছাড়াই কিভাবে ৩-৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গঠিত কমিটি তদন্তের কাজ ইতিমধ্যে অনেকটা সম্পন্ন করেছে। তদন্তের প্রমাণ পেলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

চিকিৎসাসেবা খাতে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ৬৫ শতাংশ অভিযোগ

প্রকাশ: ১২:০০ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

গত পাঁচ বছরে চিকিৎসাসেবা খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের ৩৫ শতাংশ নিষ্পত্তি করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। অন্যদিকে ৬৫ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।

কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

অভিযোগ নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রতার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আগ্রহে ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।

আরও পড়ুন: অসুস্থতা নিয়েও পুরুষের তুলনায় বেশিদিন বাঁচে নারী: গবেষণা

বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে চিকিৎসাসেবাসংক্রান্ত ৬৬টি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ সময় নিষ্পত্তি হয়েছে ২৩টি অভিযোগ। সে হিসাবে ৩৫ শতাংশ অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে। নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে ৪৩টি অভিযোগ, যা মোট অভিযোগের ৬৫ শতাংশ।

এর মধ্যে ২০২৩ সালে চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত ২৫টি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে মানবাধিকার কমিশন, যা গত পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ। চলতি বছরের ৩১ মার্চ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে ২০২৩ সালের (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) বার্ষিক প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।

এদিকে ২০২৩ সালের ২৫টি অভিযোগের মধ্যে ভুক্তভোগী কর্তৃক দায়ের করা অভিযোগ দুটি।

অন্যদিকে কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমটো) হয়ে গ্রহণ করা অভিযোগের সংখ্যা ২৩, যা এ সময় কমিশন কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন সুয়োমটো অভিযোগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ। ভুক্তভোগীদের দায়ের করা দুটি অভিযোগ নিষ্পত্তি হলেও কমিশন কর্তৃক গৃহীত ২৩টি অভিযোগের মধ্যে মাত্র তিনটি অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে।

নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে আরও ২০টি অভিযোগ। সে হিসাবে গত বছর চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত অভিযোগের ৮০ শতাংশ নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।

এদিকে, ২০২০ সালে করোনাকালীন সর্বনিম্ন দুটি অভিযোগ নিয়ে কাজ করেছে কমিশন।

এর মধ্যে একটি অভিযোগ জমা পড়ে আর কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দায়ের করে অন্যটি। ওই বছর কোনো অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়নি।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯-এর ধারা ১২ অনুযায়ী, দেশের নাগরিকরা কমিশনে চিকিৎসাসেবা খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবা খাতের অব্যবস্থাপনার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এসবের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করে সংস্থাটি। প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে কমিশন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়। প্রতিবেদন পাওয়ার পর কোন কোন ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হয়েছেন তার গুরুত্ব বিবেচনা করে উচ্চ আদালতে রিট করে কমিশন।

আরও পড়ুন: করোনা টিকা ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

চিকিৎসাসেবা খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আগ্রহের ঘাটতিকে দায়ী করছেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘যেসব অভিযোগ কমিশনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা পড়েছে, সেগুলো নিষ্পত্তির জন্য আমরা নিয়মিত তাগিদ দিয়ে থাকি। চিকিৎসাসেবা খাতের অভিযোগগুলো নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আরো বেশি আগ্রহী হতে হবে।’

এ খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে কমিশন অনেক ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসাসেবা নিতে এসে অনিয়মের শিকার রোগীদের অভিযোগ জমা পড়তে পড়তে পাহাড় হয়েছে। আবার ভুল চিকিৎসা, সেবা নিতে গিয়ে অনিয়মের শিকার হয়েছেন এমন অভিযোগও অনেক। স্বাস্থ্যসেবার প্রকৃত চিত্র শিগগিরই পরিসংখ্যানের মাধ্যমে তুলে ধরবে কমিশন। এরপর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘জনসাধারণকে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে মনে করে কমিশন। গত বছর আমরা জরায়ু ক্যান্সারের ভুয়া ভ্যাকসিন, হাসপাতালের শয্যা নিয়ে বাণিজ্য, ওষুধের মোড়ক পরিবর্তন করে বিদেশি ওষুধ বলে বিক্রি, অনুমোদন ছাড়া ক্লিনিক এবং বেসরকারি হাসপাতাল বন্ধে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে আইনের সীমাবদ্ধতার কারণে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে পারে না কমিশন। এ জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে কার্যকর ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে প্যারিস নীতিমালার আলোকে আইনের সংশোধন জরুরি।’


চিকিৎসাসেবা   জাতীয় মানবাধিকার কমিশন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

অসুস্থতা নিয়েও পুরুষের তুলনায় বেশিদিন বাঁচে নারী: গবেষণা

প্রকাশ: ০৪:১৯ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

নারী পুরুষের তুলনায় বেশি বছর বাঁচলেও অসুস্থতায় বেশি ভোগেন। জনস্বাস্থ্যবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নারীরা পেশির সমস্যা, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং মাথাব্যথার মতো রোগগুলোতে বেশি ভোগেন। যদিও এসব রোগ প্রাণঘাতী না হলেও তা অসুস্থতা ও শারীরিক অক্ষমতা তৈরি করে।

অন্যদিকে পুরুষেরা হৃদরোগ, শ্বাসযন্ত্র, যকৃতের রোগ, কোভিড-১৯–এর মতো রোগে আক্রান্ত হওয়া এবং সড়ক দুর্ঘটনায় অকাল প্রাণ হারায়। 

নারী ও পুরুষের মধ্যে স্বাস্থ্যগত অবস্থার যে ভিন্নতা আছে, তা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায়। এতে নারীরা জীবনভর অপেক্ষাকৃত উচ্চ মাত্রার অসুস্থতা ও শারীরিক অক্ষমতায় ভোগেন। আর এ অবস্থা নিয়েই তারা পুরুষদের চেয়ে বেশি বছর বাঁচেন।

গবেষণার সাথে যুক্ত ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশন (আইএইচএমই)-এর গবেষক ড. লুইসা সোরিও ফ্লর বলেছেন, ‘এই প্রতিবেদনটি স্পষ্ট করে দেখিয়ে দিয়েছে যে গত ৩০ বছরে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ইস্যুতে বৈশ্বিকভাবে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা অসম। নারীরা দীর্ঘ আয়ু পেলেও তারা অপেক্ষাকৃত বেশি বছর অসুস্থ থাকে। যেসব পরিস্থিতির কারণে তাদের অসুস্থতা ও অক্ষমতা তৈরি হয়, তা সামাল দিতে সীমিত অগ্রগতি হয়েছে। যেসব পরিস্থিতির (প্রাণঘাতী নয়) কারণে নারীদের বিশেষ করে বয়স্ক অবস্থায় তাদের যে শারীরিক ও মানসিক কার্যক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়ে, তার দিকে নজর দেওয়াটা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। একইভাবে পুরুষেরা অপেক্ষাকৃত উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন এবং প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হন।’

গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২১ সালে অসুস্থতা ও মৃত্যুর শীর্ষ ২০টি কারণের মধ্যে ১৩টি কারণই পুরুষের মধ্যে বেশি দেখা গেছে। যেমন- কোভিড-১৯, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়া, হৃদরোগ, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, যকৃতের রোগের মতো সমস্যাগুলো নারীর চেয়ে পুরুষের মধ্যে বেশি দেখা গেছে। নারীরা মেরুদণ্ডের নিচের দিকে ব্যথা, বিষণ্নতা, মাথাব্যথা, উদ্বেগ, হাড় ও পেশির সমস্যা, স্মৃতিভ্রম, এইচআইভির মতো রোগে ভোগেন বেশি। গবেষণা বলছে, এসব কারণে নারীরা অসুস্থতা ও অক্ষমতায় ভুগলেও অকাল মৃত্যু হয় না।

জনস্বাস্থ্য   ল্যানসেট  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

করোনা টিকা ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

প্রকাশ: ১০:৫৫ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

করোনা অতিমারি পর্বে মৃত্যুমিছিল দেখেছিল বিশ্ব। প্রিয়জনকে হারানোর ঘা এখনও দগদগে। সেই পর্বে জীবনদায়ী করোনা টিকা কোভিশিল্ড বহু মানুষকে করোনা আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়েছিল। সেই টিকা নিয়ে এবার বড়সড় তথ্য ফাঁস। জানা গেল কোভিশিল্ডের যথেষ্ঠ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। আর কেউ নয়, এ কথা খোদ স্বীকার করে নিল টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা।

কোভিশিল্ডে কোন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা?

জানা গিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে আদালতে জমা দেওয়া একটি নথিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থা জানায়, তাদের তৈরি করা প্রতিষেধকের কারণে বিরল রোগ থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমে (TTS)-এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এই রোগে আক্রান্ত হলে রক্তে অণুচক্রিকার পরিমাণ কমে যায় এবং রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। সূত্রের খবর, এই কারণে প্রস্তুতকারী সংস্থাকে গুনতে হতে পারে বিপুল অঙ্কের জরিমানাও।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সহযোগিতায় এই প্রতিষেধক তৈরি করেছিল অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থাটি। করোনা অতিমারি পর্বে আশীর্বাদ স্বরূপ মনে করা হয়েছিল এই টিকাকে। কোভিশিল্ড ছাড়াও ভ্যাক্সেজেরিয়া নামে একটি প্রতিষেধকও বাজারে এনেছিল এই সংস্থা। করোনা পর্বের ভারতে কোভিশিল্ড সর্বাধিক জনপ্রিয় হয়েছিল। ঘরে ঘরে মানুষ এই টিকার দু'টি এবং অনেকেই তিনটি অর্থাৎ বুস্টার ডোজও গ্রঙণ করেছেন। সে ক্ষেত্রে এতদিন পর টিকা সম্পর্কিত এই ভয়ংকর তথ্য প্রকাশ্যে আসতে শিউরে উঠছেন সকলে।

কী ভাবে ধরা পড়ল অ্যাস্ট্রেজেনেকার এই তথ্য?

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে জেমি স্কট নামে এক ব্যক্তি অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থার ভ্যাকসিন নেওয়ার পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে যায় তাঁর। জেমি স্কটের মতো আরও অনেক টিকাগ্রহীতাই এরপর অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থদের পরিবারের তরফে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও দায়ের হয়। সেই থেকে এই মামলাটি বিচারাধীন। বিভিন্ন নথি এবং তথ্যপ্রমাণ দেখিয়ে নিজেদের নির্দোষের প্রমাণ করার চেষ্টা করে চলেছে সংস্থা। তবে মামলা চলাকালীন, আদালত জানিয়ে দেয়, সংস্থার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ যদি সত্যি প্রমাণিত হয় তা হলে মোটা অঙ্কের জরিমানা দিতে হবে।

শেষ পর্যন্ত আর সাইড এফেক্টের কথা চেপে রাখতে পারল না অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থাটি। কোভিশিল্ড প্রস্তুতকারী সংস্থা আদালতে স্বীকার করে নিতে বাধ্য হল, তাদের তৈরি প্রতিষেধকে কঠিন রোগের ঝুঁকি রয়েছে। খবর ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র আতঙ্ক তৈরি হয়েছে ভারতেও।



করোনা টিকা   অ্যাস্ট্রাজেনেকা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

চিকিৎসকদের কোন অবহেলা আমি সহ্য করবো না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশ: ০১:৪৮ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, আমরা চিকিৎসক সুরক্ষা আইন পাস করাবো। আমাদের দায়িত্ব চিকিৎসকদের সুরক্ষা দেওয়া। তেমনি চিকিৎসকদেরও দায়িত্ব রোগীকে সুরক্ষা দেওয়া। তাই চিকিৎসকদের কোনো অবহেলাও আমি সহ্য করবো না।

বুধবার (০১ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরো সায়েন্সের ১২তম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘ভুল চিকিৎসা বলার অধিকার কারো নেই এমনকি আমারও। এটা বলার অধিকার আছে শুধু বিএমডিসির। এই ভুল চিকিৎসার অজুহাতে চিকিৎসকদের ওপর যেভাবে আক্রমণ করা হয়, এটা খুবই ন্যক্কারজনক। ভুল চিকিৎসার নামে চিকিৎসককে মারধর, এটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না’।

তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমার একটাই দাবি, আপনারা সেবা দেন, আমি আপনাদের জন্য সব কিছু করবো। চিকিৎসকদের সুরক্ষায় আইন পাস করানো হবে’।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরো সায়েন্সের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক বদরুল আলম, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব এহতেশামুল হক চৌধুরী, অধ্যাপক শফিউল আলম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরো সায়েন্সের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন।


স্বাস্থ্যমন্ত্রী   চিকিৎসক   বিএমডিসি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড হেলথ

গরমে যেসব উপকার পেতে আনারস খাবেন

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

গরমে আনারস খেয়েই আপনি পেতে পারেন কয়েক রকম পুষ্টিগুণ। প্রতিদিন যদি ১ কাপ আনারস খান তাহলেই দূরে করা যাবে গরম-ঠান্ডার জ্বর, জ্বর-জ্বর ভাবসহ নানা সমস্যা। প্রচণ্ড তাপদাহে শরীর ও ত্বকের জন্য আনারস উপকারি। পুষ্টিবিদরা বলছেন, এই সমস্যা দূর করতে আনারসের জুড়ি মেলা ভার। এই সুস্বাদু রসাল ফলটি শরীরে নানান পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি নিশ্চিত করে ত্বকের সুরক্ষাও।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তীব্র গরমে দেহের পুষ্টিসাধন এবং দেহকে সুস্থ, সবল ও রোগমুক্ত রাখার জন্য আনারস একটি কার্যকরী ফল। তাই গরমের এই সময়টাতে আনারস খাওয়া শরীরে জন্য অত্যন্ত জরুরি।

পুষ্টিগুণে ভরপুর আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস, যা দেহের পুষ্টির অভাব পূরণ করে, ভাইরাসজনিত ঠাণ্ডা ও কাশি কমাতে সাহায্য করে।

ঋতু পরিবর্তনের এই সময়টাতে জ্বর ও জন্ডিসের প্রকোপ বেড়ে যায়। এ সময়টাতে আনারস বেশ উপকারে আসে। এ ছাড়া নাক দিয়ে পানি পড়া, গলাব্যথা এবং ব্রংকাইটিসের বিকল্প ওষুধ হিসেবে আনারসের রস কাজ করে।

গবেষকরা বলছেন, , আনারস ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন হওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে। এই রোগটি আমাদের চোখের রেটিনা নষ্ট করে দেয় এবং আমরা ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাই। আনারসে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন। প্রতিদিন আনারস খেলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।

দেহের কোষের ওপর ফ্রি রেডিকেলের বিরূপ প্রভাবে ক্যানসার এবং হৃদ্রোগের মতো মারাত্মক রোগ দেখা দিতে পারে, যা প্রতিরোধ করে আনারস।

ওজন নিয়ন্ত্রণ, দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়, মজবুত হাঁড়ের গঠনে, হজম শক্তি বৃদ্ধিতে, ব্রনের সমস্যা দূর করতে নিয়মিত আনারস খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। আনারসের আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড বা এএইচএ ত্বকে বয়সের ছাপ ও বলিরেখা দূর করতে পারে। তাই ত্বকের জেল্লা বাড়াতেও রসাল ও পুষ্টিকর এই ফলটি রাখতে পারেন গরমের ডায়েটে।

পুষ্টির অভাব দূর করে: আনারস পুষ্টির বেশ বড় একটি উৎস। আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। এ সব উপাদান আমাদের দেহের পুষ্টির অভাব পূরণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন অল্প পরিমাণে আনারস খেলে দেহে এ সব পুষ্টি উপাদানের অভাব থাকবে না।

হজমশক্তি বাড়ায়: আনারস আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে বেশ কার্যকরী। আনারসে রয়েছে ব্রোমেলিন যা আমাদের হজমশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে।

হাড়ের সুস্থতায়: আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাংগানিজ। ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ম্যাংগানিজ হাড়কে করে তোলে মজবুত। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পরিমিত পরিমাণ আনারস রাখলে হাড়ের সমস্যাজনিত যে কোনো রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ওজন কমায়: শুনতে বেশ অবাক লাগলেও আনারস আমাদের ওজন কমানোয় বেশ সাহায্য করে। কারণ আনারসে প্রচুর ফাইবার রয়েছে এবং অনেক কম ফ্যাট। সকালের যে সময়ে ফলমূল খাওয়া হয় সে সময় আনারস এবং সালাদে আনারস ব্যবহার অথবা আনারসের জুস অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। তাই ওজন কমাতে চাইলে আনারস খান।

চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায়: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায় যে আনারস ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন হওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে। এ রোগটি আমাদের চোখের রেটিনা নষ্ট করে দেয় এবং আমরা ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাই। আনারসে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন। প্রতিদিন আনারস খেলে এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এতে সুস্থ থাকে আমাদের চোখ।

দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: আনারসের ক্যালসিয়াম দাঁতের সুরক্ষায় কাজ করে। মাড়ির যে কোনো সমস্যা সমাধান করতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন আনারস খেলে দাঁতে জীবাণুর আক্রমণ কম হয় এবং দাঁত ঠিক থাকে।


আনারস   গরম   উপকার  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন