ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতদের স্বজনেরাও ওসি প্রদীপের বিচারের আশায়

প্রকাশ: ০৯:০১ এএম, ০২ ফেব্রুয়ারী, ২০২২


Thumbnail ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতদের স্বজনেরাও ওসি প্রদীপের বিচারের আশায়

তৎকালীন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশের কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধ’ কেড়ে নিয়েছিল অনেক তাজা প্রাণ। স্বজন হারিয়ে বিচার পাওয়ার আশায় অপেক্ষার প্রহর গুনছিলেন নিহতদের পরিবার। তাই ওসি প্রদীপের হাতে নির্যাতিত ও হত্যা হওয়া স্বজনদের পরিবারের একটাই চাওয়া সঠিক বিচার যেন হয়। 

উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন বখতিয়ার আহমেদ। তাকে ২০২০ সালের ২৩ জুলাই রাতে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যান টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। পরে টেকনাফের স্থলবন্দর এলাকায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বখতিয়ার নিহত হওয়ার খবর জানায় পুলিশ। 

বখতিয়ারের ছেলে হেলাল উদ্দিন জানান, তার বাবা বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হলেও ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে মামলা করার সাহস পাননি। সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান খুনের মামলায় প্রদীপসহ ১৫ আসামির সাজার রায় হওয়ায় এখন আশাবাদী হেলাল উদ্দিন। বাবার হত্যার বিচারের জন্য মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।

হেলাল উদ্দিন বলেন, সিনহার হত্যার মতো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হলে প্রদীপের ‘ক্রসফায়ার’-বাণিজ্যের ভয়াবহ চিত্র বেরিয়ে আসবে। তার বাবাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় ঘর থেকে ১৪-১৫ লাখ টাকা ছিল, সেগুলো নিয়ে যান প্রদীপ। ওই টাকাটা ছিল বাজার ইজারার।

হেলাল উদ্দিনের মতো টেকনাফে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যক্তিদের অনেকের স্বজনেরা বিচার পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। সিনহা হত্যার দেড় বছরের মাথায় গত সোমবার মামলার রায় হওয়ায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলো সাহস পাচ্ছে, বিচার চাইতে শুরু করেছে।

প্রসঙ্গত, ওসি প্রদীপ টেকনাফ থানায় যোগ দেন ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর। চার দিনের মাথায়, ২৪ অক্টোবর পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন মফিজ আলম (৩২)। সিনহা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার আগপর্যন্ত প্রায় দুই বছর টেকনাফে প্রদীপের কর্মকালে বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারে নিহত হন ১৪৪ জন।

সিনহা হত্যা মামলায় র‍্যাবের দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, অপরাধকর্মের জন্য পুলিশ সদস্যদের নিয়ে নিজস্ব একটি ‘পেটোয়া ও সন্ত্রাসী বাহিনী’ গড়ে তুলেছিলেন ওসি প্রদীপ। তার চাহিদামতো টাকা না দিলে মামলায় ফাঁসানো ও বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে মানুষ খুন করতেন।

সিনহা হত্যার পর ওসি প্রদীপের ক্রসফায়ার-বাণিজ্যের বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে। একে একে মুখ খুলতে শুরু করেন অনেকে। এরপর প্রদীপসহ তার সহযোগী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কক্সবাজারে ১২টি, চট্টগ্রামে ২টিসহ ১৪টি মামলা হয়। কিন্তু সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত যেভাবে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়েছে, এসব মামলার ক্ষেত্রে সেটা দেখা যায়নি। এসব মামলা তদন্ত করছে পুলিশ। এরই মধ্যে কক্সবাজারের ১২টির মধ্যে ৩টিতে প্রদীপসহ আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্তে কিছু পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। বাকি নয়টি এখনো তদন্তাধীন।

এসব তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. হাছানুজ্জামা বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিতে হবে। এর বেশি কিছু বলতে চাননি তিনি।

দুই ভাইকে চট্টগ্রাম থেকে ‘হত্যা’

চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়ন থেকে দুই ভাইকে ধরে নিয়ে টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধের মাধ্যমে হত্যার অভিযোগে মামলা হয় ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে। প্রদীপসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যকে এতে আসামি করা হয়।

আমানুল হক ও আজাদুল হক দুই ভাই ছিলেন চন্দনাইশের ফকিরপাড়া গ্রামের আমিনুল হকের ছেলে। আজাদুল হক প্রবাসী। আমানুল হক এলাকায় পেয়ারা চাষ করতেন। আজাদ বিদেশ থেকে এসেছেন জানতে পেরে চাঁদার জন্য টেকনাফ থানার পুলিশ তাদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। এর মধ্যে আমানুলকে ১৩ জুলাই সন্ধ্যা সাতটার দিকে এবং আজাদকে ১৫ জুলাই বেলা দুইটার দিকে ধরে নিয়ে যায় বলে পরিবারের অভিযোগ। ১৬ জুলাই কক্সবাজার সরকারি হাসপাতালে দুই ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করেন স্বজনেরা। তখন পুলিশ বলেছিল, টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধে দুজন নিহত হন।

চট্টগ্রামে মামলার করার আগে কক্সবাজার আদালতে মামলা করেন নিহতের বোন জিনাত সুলতানা। তিনি বলেন, দেড় বছরের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সিনহা হত্যায় প্রদীপসহ অন্য আসামিদের সাজা হতে পারলে আমার দুই ভাই কী দোষ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। গরিব বলে আমাদের মামলার তদন্ত কি থেমে থাকবে? 

তিনি দাবি করেন, আমার ভাইদের যে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়, সিসিটিভির ফুটেজ রয়েছে। ওসি প্রদীপ আট লাখ টাকা দাবি করেন। নইলে ক্রসফায়ার দেওয়ার হুমকি দেন। অনেক চেষ্টা করেও এত টাকা জোগাড় করতে পারিনি। পরে দুই ভাইয়ের লাশ পাই।

কক্সবাজারের মামলাটি তদন্ত করছেন উখিয়া-টেকনাফ অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাকিল আহমেদ। তদন্তের অগ্রগতি জানতে একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল করেও যোগাযোগ স্থাপন করা যায়নি। 

মামলার বাদী জানান, তারা মামলার বিষয়ে কোনো কিছু জানতে পারেননি। এ ছাড়া চট্টগ্রামে করা মামলাটি আদেশের জন্য রয়েছে।

এক পরিবারের তিনজনকে হত্যা

সিনহা হত্যার আগের মাসে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের এক পরিবারের তিনজনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে।

প্রদীপ কারাগারে যাওয়ার পর ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট এই ঘটনায় মামলা করেন নিহতদের একজন ছৈয়দ আলমের স্ত্রী সুলতানা রাবিয়া। তার অভিযোগ, ওই বছরের ৬ মে রাতে ছৈয়দ আলম, তাঁর ভাই নুরুল আলম ও ভাগনে আবদুল মোনাফকে ওসি প্রদীপের নেতৃত্বে তুলে নেওয়া হয়। তখন তাঁদের কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছিল। টাকা না দেওয়ায় বাড়ির পাশের পাহাড়ের নিচে বন্দুকযুদ্ধের ‘নাটক সাজিয়ে’ গুলি করে তিনজনকে হত্যা করা হয়। খুনের পর বাড়াবাড়ি করলে অথবা আইনের আশ্রয় নিলে প্রাণনাশেরও হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন সুলতানা রাবিয়া। 

তিনি বলেন, সিনহা হত্যার মতো তার স্বামী, ভাই ও ভাগনে হত্যার বিচার চান।

একইভাবে টেকনাফের জিয়াউর রহমান, ইউসুফ জালাল, সাইফুল করিম, সাদ্দাম হোসেন, আবদুল জলিল, মুছা আকবরসহ বন্দুকযুদ্ধে নিহতের স্বজনেরা নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে শাস্তি দাবি করেছেন। এ রকম ১০টি ভুক্তভোগী পরিবার এমন দাবির কথা বলেছে। তারা সবাই চায় ওসি প্রদীপের আগের অপরাধগুলো সামনে আসুক, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার হোক।

প্রদীপ বর্তমানে কক্সবাজার জেলা কারাগারে। তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তার আইনজীবী সমীর দাশগুপ্ত বলেন, ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালানোর কারণে অনেকে প্রদীপের প্রতি ক্ষুব্ধ হন। তারাই প্রদীপের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে একের পর এক মামলা করছেন।

তবে কক্সবাজারের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মতে, সিনহা হত্যা মামলার রায়ের মধ্য দিয়ে টেকনাফে বিচারবহির্ভূত হত্যার অন্তত একটা ঘটনার প্রমাণ মিলেছে। তাই অন্য অভিযোগগুলোর বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত এখন সময়ের দাবি।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) কক্সবাজার জেলার সহসভাপতি অজিত দাশ বলেন, কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে নিরীহ মানুষ যাতে আর কক্সবাজারে খুন না হয়, সে জন্য সিনহা হত্যার মতো সব ঘটনার নিরপেক্ষ ও যথাযথ তদন্ত হতে হবে।

ওসি প্রদীপ   ‘বন্দুকযুদ্ধ’  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া তথ্যে রাজশাহীতে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৯:৫৮ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংস্থার দেওয়া তথ্য থেকে রাজশাহীতে এক শিশু যৌন নিপীড়নকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শনিবার (১৮ মে) রাজশাহী নগরের ডাঁশমারী এলাকা থেকে আবদুল ওয়াকেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। আব্দুল ওয়াকেল পেশায় একজন শিক্ষক। নিজের কোচিং সেন্টারে শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন চালাতেন তিনি।

সিআইডি বলছে, যৌন নিপীড়নের দৃশ্যগুলো ওই শিক্ষক ভিডিও ধারণ করে নিজের মুঠোফোন, পেনড্রাইভ, কম্পিউটার এবং এক্সটার্নাল হার্ডডিস্কে সংরক্ষণ করতেন। এসব ডিজিটাল ডিভাইস থেকে সার্চ ইঞ্জিন গুগল, মাইক্রোসফট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এসব তথ্য পৌঁছে দেয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড অ্যাক্সপ্লয়েট চিলড্রেন (এনসিএমইসি) নামের এক প্রতিষ্ঠানের কাছে। এনসিএমইসি বাংলাদেশে সিআইডিকে এসব তথ্য সরবরাহ করে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এনসিএমইসির তথ্যের ভিত্তিতে সিআইডির একটি বিশেষায়িত দল তদন্ত শুরু করে। স্থানীয় ভুক্তভোগী অনেক ছাত্র ও তাদের অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্তকারী দলের কাছে শিক্ষক ওয়াকেলের বিরুদ্ধে ‘ভয়ংকর’ সব তথ্য দেন।

ওয়াকেলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সিআইডি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, স্নাতক পড়ার সময় থেকে শিশুদের যৌন নিপীড়ন করে আসছিলেন তিনি। ছাত্রদের পড়ানোর জন্য তিনি একটি কোচিং সেন্টার খোলেন। কোচিং সেন্টারের ছাত্রদের চকলেট ও পছন্দের মোবাইল গেম খেলতে দিয়ে ব্যস্ত রেখে যৌন নিপীড়ন করতেন। যৌন নিপীড়নের এসব দৃশ্য তিনি ভিডিও করে রাখতেন। এ ঘটনায় ওয়াকেলের বিরুদ্ধে তার বর্তমান কর্মস্থলের প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্র   যৌন নিপীড়ন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

দুবাইতে বাংলাদেশের কারা সম্পদের পাহাড় গড়েছেন?

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

সম্প্রতি ‘দুবাই আনলকড’ শিরোনামে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দুবাইয়ে সারা বিশ্ব থেকে অর্থপাচারকারীদের অর্থের এক ফিরিস্তি দেওয়া হয়েছে। সেই তালিকায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যক্তিদের নাম যেমন আছে তেমনি আছে বাংলাদেশের নামও। ‘দুবাই আনলকড’ শীর্ষক এই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ৩৯৪ জন বাংলাদেশির ২ হাজার ছয়শ ৩৬ কোটি টাকা মূল্যের ৬৪১ টি সম্পত্তি রয়েছে বলে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। তবে এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের যারা দুবাইয়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। 

বিভিন্ন সূত্র থেকে অনুসন্ধান করে দুবাইয়ে যে সমস্ত বাংলাদেশিরা অবৈধভাবে সম্পদ করেছেন, তাদের কয়েক জনের তালিকা পেয়েছি। এই তালিকার মধ্যে আছেন রাজনীতিবিদ, বিরোধী দলের নেতা, সাবেক সেনা কর্মকর্তা, ঋণখেলাপী ব্যবসায়ী এবং আমলা। 

৩৯৪ জনের মধ্যে ব্যবসায়ীদের সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ জন বলে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে। এই সমস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্তত তিন জন ঋণখেলাপি এবং পলাতক। ঋণ খেলাপের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে এবং এই সমস্ত মামলা মোকাবেলা না করে তারা বিদেশে পালিয়ে গেছেন। ঋণ খেলাপিদের মধ্যে একজন ব্যাংকের মালিকও রয়েছেন বলে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে। ৩৯৪ জনের তালিকার মধ্যে রাজনীতিবিদের নাম আছে এবং রাজনীতিবিদদের মধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ দুবাইতে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। 

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং মন্ত্রিসভার সদস্যের মধ্যে অন্তত ১০ জনের দুবাইয়ে সম্পদ রয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে। এছাড়াও আওয়ামী সমর্থক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত এরকম আরও ১০ জনের দুবাইয়ে বিভিন্ন ধরণের সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। বিএনপির একাধিক নেতার দুবাইতে সম্পত্তি রয়েছে এবং এই সম্পদের পরিমাণ আওয়ামী লীগের নেতাদের চেয়েও বেশি বলেই প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্তত দু জন সদস্যের দুবাইয়ে সম্পদ রয়েছে। এছাড়াও বেগম খালেদা জিয়ার একান্ত অনুগত হিসেবে পরিচিত একসময় বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসাবে পরিচিত একজন ব্যক্তিরও দুবাইয়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। সাবেক সেনা কর্মকর্তার তথ্য পাওয়া গেছে। এগারোর সময় সক্রিয় একজন সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার ব্যক্তি এখন দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। তিনি বিপুল সম্পদের মালিক বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া অন্তত ১২ জন সাবেক আমলা রয়েছেন। যারা দুবাইয়ে বিপুল পরিমাণ নিনিয়োগ করেছেন এবং সম্পদের মালিক হয়েছে। তবে যেহেতু ‘দুবাই আনলকড’ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই সমস্ত ব্যক্তিদের সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যানি। সেজন্য বাংলাদেশ থেকে যারা অর্থ দুবাইয়ে পাচার করেছেন তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত কোন পরিচয় বা বিবরণ প্রকাশ করেনি।

দুবাই   বাংলাদেশ   অর্থ পাচার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

কুকি-চিনের নারী শাখার প্রধান সমন্বয়ক গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৫:২৫ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

পাহাড়ি উগ্রবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) নারী শাখার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক আকিম বমকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। 

শুক্রবার (১৭ মে) বান্দরবান জেলার লাইমী পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-১৫। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান।

তিনি জানান, কুকি-চিনের নারী শাখার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক আকিম বমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি দেশে-বিদেশে সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।

উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল বান্দরবানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক চেওসিম বমকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

কুকি-চিন   র‍্যাব  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

চাকরির নামে ভারতে পাচার, পরে কিডনি বিক্রি

প্রকাশ: ০৮:০৩ পিএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

দরিদ্র মানুষকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ভারতে নিয়ে যেত একটি চক্র। সেখানে নেওয়ার পর চাকরিতো দুরের কথা উল্টো জিম্মি করে কৌশলে কিডনি নেওয়া হতো পাচার হওয়া ব্যক্তিদের। চক্রটি এ পর্যন্ত ১০ জনের কিডনি নিয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

সম্প্রতি রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় এ চক্রের বিরুদ্ধে মামলা করেন রবিন নামের এক ভুক্তভোগী। এর পরিপ্রেক্ষিতে শনি (১১ মে) ও রোববার (১২ মে) ধানমন্ডি এবং বাগেরহাটে অভিযান চালিয়ে চক্রটির তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- মো. রাজু হাওলাদার (৩২), শাহেদ উদ্দীন (২২) ও মো. আতাহার হোসেন বাপ্পী (২৮)। পলাতক রয়েছেন মো. মাছুম (২৭), শাহীন (৩৫), সাগর ওরফে মোস্তফাসহ (৩৭) ১০–১২ জন।

ধানমন্ডি থানা পুলিশ সূত্রে জানায়, ভারতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রথমে দিল্লির ফরিদাবাদ এলাকায় নেওয়া হয় রবিনকে। পরে নানা কৌশলে কিডনি বিক্রির জন্য তাকে রাজি করায় চক্রটি। এ জন্য তার সঙ্গে চক্রটি ৬ লাখ টাকা দেওয়ার একটি চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী ভুক্তভোগীকে ৬ লাখ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও কিডনি নেওয়ার পর দেয় ৩ লাখ টাকা।

রোববার (১২ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মহিদ উদ্দিন বলেন, ২০২৩ সালের এপ্রিলে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে শাহ আলী মার্কেটের পেছনে একটি চায়ের দোকানে বন্ধুর সঙ্গে চা পান করছিলেন রবিন। বন্ধুর সঙ্গে আলাপ করছিলেন সংসারের অভাব–অনটন নিয়ে। এ সময় পাশেই চা পান করছিলেন মাছুম। মাছুম রবিনকে বলেন, ভারতে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানে তাকে চাকরি দিতে পারবেন। মোবাইল ফোন নম্বর আদান-প্রদান করেন তারা। এরপর মাছুমের সঙ্গে নিয়মিত কথা হতো রবিনের। পরে ভারতে চাকরি করার বিষয়ে রাজি হন।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, ভারতে যেতে কিছু ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে বলে রবিনকে জানান মাছুম। গত সেপ্টেম্বরে তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে যায় মাছুম। সেখানে রাজু হাওলাদারের (গ্রেপ্তার করা আসামি) সঙ্গে রবিনের পরিচয় করিয়ে দেয় সে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে ভিসার জন্য রবিনের পাসপোর্ট নিয়ে নেয় চক্রটি। ভিসা নিশ্চিত করার পর তাকে চক্রের আরও দুই সদস্য শাহেদ ও আতাহারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। অবশেষে রবিনকে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিতে। নয়াদিল্লির একটি হাসপাতালে কিডনিসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পরীক্ষা করানো হয়। কিছুদিন পর ভুক্তভোগীকে গুজরাটের মুক্তিনগর এলাকার একটি বাসায় নেয় চক্রটি। এরপর আসামিরা ভয়ভীতি দেখিয়ে এ বছরের ৪ মার্চ গুজরাটের এক হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ভুক্তভোগীর একটি কিডনি নিয়ে নেয়।

হাসপাতাল থেকে চার দিন পর রবিন ছাড়া পান জানিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মহিদ উদ্দিন বলেন, পরে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ১০–১১ দিন তাকে আটক রাখে অভিযুক্ত আসামিরা। হাসপাতালে থাকা অবস্থায় রবিন জানতে পারেন, তার কিডনি আসামিরা দালাল চক্রের কাছে বড় অঙ্কের অর্থে বিক্রি করে দিয়েছে। পরে বাংলাদেশে অবস্থান করা চক্রের কয়েকজন সদস্য রবিনের স্ত্রীকে তিন লাখ টাকা দেন। এরপর দেশে ফেরেন রবিন।

পাচার   কিডনি বিক্রি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

সাবেক ভূমিমন্ত্রীর দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে দুদকে আবেদন

প্রকাশ: ০৪:১১ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি এবং সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদকে) আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান।

বুধবার (১ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

চিঠিতে আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান বলেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি দৈনিক সমকাল পত্রিকায় “সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সাম্রাজ্য যুক্তরাজ্যে” শিরোনামে এবং মানবজমিন পত্রিকায় “ব্রিটেনে বাংলাদেশি রাজনীতিবিদের ২০০ মিলিয়ন পাউন্ডের সাম্রাজ্য" শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ব্লুমবার্গের অনুসন্ধান প্রতিবেদন থেকে এ দুটি সংবাদ প্রকাশিত হবার পরেও কর্তৃপক্ষ যথাযথ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এর ফলে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি দমন কমিশনের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ক্ষুণ্ণ করে। 

এ কারণে চিঠির মাধ্যমে এ বিষয়ে যথাযথ অনুসন্ধান করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দুদককে বিশেষভাবে অনুরোধ করেন এই আইনজীবী।

সাবেক ভূমিমন্ত্রী   দুর্নীতি   দুদক   সাইফুজ্জামান চৌধুরী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন