রাজধানীর বিভিন্ন যানবাহনে চলাচলকারী যাত্রীদের মোবাইল, ল্যাপটপ, মানিব্যাগসহ দামি জিনিসপত্র ছোঁ-মেরে নিয়ে যাওয়া চক্রের ১৬ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিবি)। শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর উত্তরখান থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, মিজান, আমিরুল ইসলাম বাবু, শরিফ হোসেন, হৃদয়, রাজ, সুমন, সোহেল বাবু, হৃদয়, মনিরুজ্জামান, নাজমুল, মনির, ইমরান, ফারুক, আশরাফুল ইসলাম সজিব, আরিফ ও হাসান। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি নম্বরবিহীন মোটরসাইকেল, ৫০টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল, ৪টি চাকু, দুই জোড়া স্বর্ণের দুল এবং নগদ ২৩ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে বলেও জানায় ডিবি।
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা তথ্য জানান ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ।
তিনি জানান, রাজধানীতে ছোঁ-মারা এ পার্টির প্রায় ১০০ সক্রিয় সদস্যের তথ্য পাওয়া গেছে। প্রত্যেকের দিন প্রতি অন্তত ৩টি মোবাইল চুরির টার্গেট থাকে। সে হিসেবে ঢাকায় প্রতিদিন অন্তত ৩০০ মোবাইল চুরি হয়। বাস-ট্রেন বা প্রাইভেটকারে চলাচলকারী যাত্রীরা মোবাইলে কথা বলার সময় জানালা দিয়ে ছোঁ-মেরে মোবাইল নিয়ে যায় চক্রটি। এছাড়া গাড়ির জানালা দিয়ে যাত্রীদের বা পথচারীদের ব্যাগ, স্বর্ণের চেইন, ল্যাপটপ নিয়ে যায় তারা। ছিনতাইয়ের পর নামমাত্র দামে মোবাইলসহ বিভিন্ন পণ্য মহাজনদের কাছে বিক্রি করে এই চক্রের সদস্যরা। এরপর মহাজনরা নির্ধারিত দোকানে সেসব বিক্রি করে দিতেন। দোকানিরা তুলনামূলক কমদামি মোবাইল খুচরা বাজারে বিক্রি করত। তবে দামি মোবাইলের যন্ত্রাংশ খুলে বাজারে বিক্রি করত। অনেক ক্ষেত্রে দামি মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করেও বিক্রি করত তারা।
মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, উত্তরখানে বিসমিল্লাহ মোবাইল সার্ভিসিং নামে একটি দোকানে অভিযান চালিয়ে ছোঁ-মারা পার্টির দল নেতা ও চোরাই মাল ক্রয়-বিক্রয়কারীসহ চক্রের ১৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। চক্রটি মহাখালী থেকে টঙ্গী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত এলাকায় প্রায় ১৫-১৬টি স্পটে ছিনতাই চালিয়ে আসছিল। চক্রের নেতা মিজান, জয়-বাবু ও শরীফের নেতৃত্বে বাস, প্রাইভেটকার ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার যাত্রীদের কাছ থেকে ছোঁ-মেরে মোবাইল ফোন, ব্যাগ ও গলার চেইনসহ মূল্যবান মালামাল কেড়ে নেয়। এরপর সেসব চোরাই সামগ্রী ক্রয়-বিক্রয়কারী সুমন, ফারুক ও আশরাফুল ইসলাম সজিবের মাধ্যমে বিসমিল্লাহ মোবাইল সার্ভিসিং নামে দোকানে বিক্রয় করত।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তদের বেশিরভাগই মাদকাসক্ত। সাধারণত মাদক কেনার টাকা জোগাড় করতেই ছিনতাই করে তারা। কখনো কখনো দলনেতা তথা মহাজনরাই তাদের মাদক সরবরাহ করে। যাতে তাদের দিয়ে ছিনতাই চালিয়ে নেওয়া যায়। চক্রের সদস্যরা গ্রেপ্তার হলে তাদের জামিন করানো এবং পরিবারকে অর্থ দিয়ে সহায়তাও করে থাকেন এ মহাজনরা।
ডিবি প্রধান বলেন, ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করলে জামিনে বের হয়ে আবার এ কাজে জড়িয়ে পড়ে। এজন্য তাদের শাস্তির পাশাপাশি রিহ্যাব সেন্টারে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। আমাদেরও অন্ধকার জায়গা এড়িয়ে চলা কিংবা গাড়িতে চলাচলের সময় জানালার পাশে ফোনে কথা বলার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া উচিত।
রাজধানী ঢাকা ছিনতাই সক্রিয় ডিবি গ্রেপ্তার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সাবেক ভূমিমন্ত্রী দুর্নীতি দুদক সাইফুজ্জামান চৌধুরী
মন্তব্য করুন
মাহমুদা খানম মিতু পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
দুদক দুর্নীতি রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল
মন্তব্য করুন